Logo
শিরোনাম

রাজপুর উপজেলা কৃষক দলের নেতা কর্মীদের সতর্ক করে নোটিশ

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নসিম আকনের সদস্য পদ স্থগিত করার প্রতিবাদে গত ২৫ জানুয়ারি কৃষক দলের প্যাডে একটি নোটিশ করা হয়। 

ঝালকাঠী জেলা বিএনপি কর্তৃক রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ নাসিম উদ্দিন আকনের দলীয় পদ স্থগিত করার কারণে রাজাপুর উপজেলা বিএনপি ও সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের সিদ্বান্তে অংশ এক প্রতিবাদ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদল রাজাপুর উপজেলার সকল কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ তারিখ বিকেলে ঝালকাঠি জেলা কৃষক দল রাজাপুর উপজেলা কৃষক দলকে সতর্ক করে নোটিশ করে।   নোটিশে বলা  হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদল ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলা শাখা কমিটি গত ০১/০৯/২০২৪ইং তারিখে বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়। অথচ গত ২৫/০১/২০২৫ই তারিখ রাজাপুর উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফেইজবুক এর মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে একটি পোষ্ট করেছেন। উহা সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি ও ভিত্তিহীন। জাতীয়তাবাদী কৃষকদল ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলা শাখার কোন কমিটির অনুমোদন নেই। অতএব যাহারা এ ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছেন তাদেরকে আগামীদিন গুলোর জন্য সর্তক করা হইল। ভবিষতে এহেন কর্মকান্ড সংঘঠিত হলে জেলা কৃষকদল আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ বিষয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক জানান, আমাদের কমিটি বিলুপ্ত করার পরেও জেলা - উপজেলার কর্মসূচী পালন করেছি। জেলার প্রোগ্রামে আমাদের ডাকে। আমরা নতুন করে জেলাতে অনুমোদনের নতুন কমিটিও সাবমিট করেছি। আমরা সেই অনুযায়ী বিবৃতি দিয়েছি।


আরও খবর



নানা আয়োজনে নওগাঁয় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

দিনব্যাপী নানা আয়োজন ও যথাযোগ্য মর্যাদায় নওগাঁয় পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বুধবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নওগাঁ জেলা শহরের মুক্তির মোড় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। পরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাব, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে ফুলে ফুলে ভরে উঠে এই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ। পরে সকাল ৯টায় জেলা স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দল, স্কাউটসের দল অংশ গ্রহণ করে। দিবসটি উপলক্ষ্যে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা প্রশাসন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। সকালের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল ৯টায় উপজেলার শের-এ বাংলা সরকারি মহাবিদ্যালয় মাঠে পায়রা, ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে মাঠের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল হাসান।

এসময় প্যারেড সালাম গ্রহণ করেন অতিথিরা। প্যারেড ও কুচকাওয়াজ শেষে বিজয়ী দলগুলোর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এসময় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ, থানা পুলিশ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ, সাংবাদিকবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। একই ভাবে জেলার অন্যান্য উপজেলায় দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে।


আরও খবর



নওগাঁয় ট্রাক চাপায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁ শহর বাইপাস সড়কের খলিসাকুড়ি মোড় এলাকায় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মোটরসাইকেল আরোহী স্বামী-স্ত্রী'র মৃত্যু হয়েছে। মর্মান্তিক এ সড়ক দূর্ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুর ২টারদিকে।

নিহত স্বামী ও স্ত্রী হলেন, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কোলাহাট এলাকার পালসা গ্রামের আফাজ উদ্দিন (৫৬) ও তার স্ত্রী বিলকিস বানু (৪৯)। 

প্রত্যক্ষদর্শী  ও নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে আফাজ উদ্দিন তার স্ত্রী বিলকিস বিবিকে সাথে নিয়ে নওগাঁ শহর থেকে মোটরসাইকেল যোগে নিজ বাড়ি পালসা গ্রামে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে বাইপাস সড়কের খলিসাকুড়ি মোড় এলাকায় আলহেরা রাইচ মিলের সামনে পৌছালে এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে তাদের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে দূর্ঘনাস্থলেই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে স্বামী-স্ত্রী'র মৃত্যু হয়। নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দূর্ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার কাজ শেষ করে মৃতদেহ থানায় নিয়ে এসেছে। এখান থেকে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। স্বজনেরা আসলে ময়না তদন্ত শেষে মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও মোটরসাইকেল টি পুলিশি (থানা) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।


আরও খবর



নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণসহ ১০ বিষয়ে ইশতেহার ঘোষণা এনপিসির

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বড় জমায়েতের মধ্য দিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে। এর পরদিন ১ মার্চ গভীর রাতে ২১৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে দলটির দর্শন, ইশতেহার, গঠনতন্ত্র সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা পাওয়া যায়নি। শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, চলতি মাসের মধ্যেই সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে।

এনসিপি সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে নতুন দেশ গড়তে মোটাদাগে ১০ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে ইশতেহার তৈরির কাজ চলছে। যেখানে থাকবে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিকভাবে দেশকে তারা কীভাবে গড়ে তুলতে চান, সেসব বিষয়। থাকবে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণের পথরেখা। পারিবারিক পরিচয় নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে যেন তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে উঠে আসতে পারে—এমন বিষয় প্রাধান্য পাবে দলের গঠনতন্ত্রে। এনসিপির ইশতেহারে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে সেকেন্ড রিপাবলিক, গণপরিষদ নির্বাচন এবং নতুন সংবিধানকে। সেকেন্ডে রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা ও গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান রচনার সংকল্প তুলে ধরবেন তারা। যেটি তাদের ঘোষণাপত্রেও উল্লেখ করতে দেখা যায়। এ ছাড়া পরিবারতন্ত্রের অবসান, সিন্ডিকেট ও গোষ্ঠীস্বার্থ নির্মূল, ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্নির্মাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অগ্রগতি, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, জাতীয় অর্থনীতির পুনর্গঠন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় অন্তর্ভুক্তি করাকে প্রাধান্য দিচ্ছে দলটি।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল, তা আসলে প্রথম ব্যর্থ হয়েছে মুজিববাদী সংবিধানের মাধ্যমে। তাই সেকেন্ড রিপাবলিক গঠনের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে ব্যক্তিতান্ত্রিক ও পরিবারতন্ত্রবিহীন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরির জন্যে কাজ করবে এনসিপি।

তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধান এবং রাষ্ট্রব্যবস্থাতে সংবিধানে যেভাবে এক ব্যক্তির কাছে সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত থাকে তাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও হয় একক ব্যক্তির দাস। যেভাবে মুজিব পরিবারকে দেবতার আসনে বসানো হয়েছিল, ভবিষ্যতেও যেন এরকম কোনো কাল্ট গড়ে না ওঠে এবং প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্র গড়ে ওঠে, সে লক্ষ্যে এনসিপির অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে।

পরিবারতন্ত্র বিলোপের কথা জানিয়ে এনসিপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, পরিবারতন্ত্র ও গোষ্ঠীতন্ত্রের মাধ্যমে যে ফ্যাসিবাদ তা পূর্ণাঙ্গ বিলোপের লক্ষ্যে প্রচেষ্টার পাশাপাশি একুশ শতকের সময়োপযোগী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গুরুত্বারোপের মাধ্যমে আধুনিক জাতি গঠনের লড়াইয়ে এনসিপি থাকবে। বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান, অর্থনীতি, পাশাপাশি বহিঃশত্রুর মোকাবিলায় নিজস্ব প্রতিরক্ষার ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার লিডিংয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়া হবে অন্যতম প্রধান কাজ। বাংলাদেশের সব জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী তথা পাহাড়ি, তপশিলি এবং চা বাগান শ্রমিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করবে এনসিপি।

আরেক যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে (ইমিডিয়েট) ১০টি লক্ষ্য ঠিক করেছি। গত সাত মাসের কার্যকলাপে আমরা দেখেছি এখানে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিদ্যমান যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, এগুলো অটুট রেখে আমরা বড় ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাব না। এরই প্রেক্ষাপটে আমাদের রাজনৈতিক দল তৈরি করা। এখন আমাদের প্রধান কাজ হলো গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান রচনা করা। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও সেটি আছে। এ ছাড়া স্বাভাবিকভাবে আমরা পরিবারতন্ত্রের অবসান চাই। স্বাধীনতার পর থেকেই এই দেশ একটি গোষ্ঠীর কাছে বন্দি হয়ে আছে। তারাই পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। আমরা এর পরিবর্তন চাই। এ ছাড়া বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্নির্মাণ করাই আমাদের লক্ষ্য।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া বলেন, আমরা কেন বলছি নতুন সংবিধান প্রয়োজন এবং তার জন্য গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন। বিএনপির ক্ষেত্রে যদি দেখেন তারা সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রায় ৬২ জায়গায় সংস্কার চায়। সংবিধানে আছেই ১৫৪টি আর্টিকেল, তার মধ্যে তারা ৬২ জায়গায় সংস্কার চায়। তার মানে বিএনপিও চায় সংবিধানের বড় একটি অংশ পরিবর্তন হোক। জামায়াতও ৩০ থেকে ৩৫ জায়গায় সংবিধান সংস্কার চায়। জাতীয় নাগরিক কমিটির যে সংবিধান প্রস্তাবনা দিয়েছে, সেখানে তারা ৭০ জায়গায় সংস্কার চেয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক দল কিংবা সংগঠনগুলো বিদ্যমান সংবিধানের কোনো একটি ধারার সংশোধন চায় না, তারা বৃহৎ পরিবর্তন চায়। তাই আমরা বলছি এই পরিবর্তন যেহেতু পার্লামেন্ট করতে পারে না, যে কারণে পার্লামেন্টের সদস্যরাই প্রথম একটা নির্দিষ্ট সময় তারা গণপরিষদ হিসেবে কাজ করবে এবং সংবিধানটা প্রণয়ন করবে।

নতুন সংবিধানের কথা উল্লেখ করে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা বিশ্বাস করি, নতুন একটি সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে। এর ভিত্তিতে আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছি। একই সঙ্গে সেই গণপরিষদ নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন, তারা সংসদ সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন এমন প্রস্তাবও আমাদের আছে।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বারবার দীর্ঘায়িত করা হয়েছে জানিয়ে এমসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পুরোনো সংবিধান এবং পুরোনো শাসনকাঠামো রেখে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। কেবল সরকার পরিবর্তন করেই জনগণের কল্যাণ ও প্রকৃত গণতন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এ জন্য আমরা বলছি, চব্বিশের যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে—তাতে কেবল সরকার পরিবর্তন নয়, বরং শাসনকাঠামো ও সাংবিধানিক পরিবর্তন করে নতুন একটি বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই, যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র, ইনসাফ ও সাম্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।


আরও খবর



ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক

ঈদযাত্রায় গলার কাঁটা হতে পারে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার

প্রকাশিত:রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক। প্রতিবছর ঈদে এ মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন, যা বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। যার কারণে এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়।

অপরদিকে, মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার চার লেনের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন না হওয়ায় গত বারের মতো এবারও ঈদযাত্রা ঘরমুখো মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।

এদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নে ও স্বস্তিদায়ক করতে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন ও যমুনা সেতু সাইট অফিসের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঈদে মহাসড়ককে ৪টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। মহাসড়কটিতে সাড়ে ৭০০ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশের পাশাপাশি টাঙ্গাইল শ্রমিক ফেডারেশন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবে।

পরিবহন চালকরা বলছেন, ঈদ এলেই মহাসড়কে তড়িঘড়ি কাজ শুরু হয়। এতে গাড়ির গতি ঠিক থাকে না এবং দেবে যাওয়া রাস্তায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। আর মহাসড়কের চার লেনের কাজ শেষ হয়েছে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত। এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত ৪ লেনের কাজ করছে। এর ফলে মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের সফটওয়ারে সমস্যার কারণে টোল আদায় দীর্ঘক্ষণ বন্ধ এবং সেতুর উপর দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকা থাকলে যানজটের সৃষ্টি হয়। যমুনা সেতু পশ্চিম প্রান্তে সিরাজগঞ্জ অংশে যদি গাড়ি ঠিক মতো পাস না হয় তাহলে যানজটের শঙ্কা রয়েই যায়। গত কয়েক ঈদেও সিরাজগঞ্জের প্রান্তের গাড়ি ঠিক মতো পাস হওয়ার কারণে যমুনা সেতুতে টোল আদায় বন্ধ থাকে। ফলে টাঙ্গাইলের অংশে দীর্ঘ যানজট হয়। ঈদযাত্রায় যমুনা সেতুর উপর দুর্ঘটনা ও যানজট এড়ানোর লক্ষ্যে ১৯টি পদক্ষেপ নিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, এলেঙ্গার পর থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। উত্তরবঙ্গগামী লেনে পুরোদমে কাজ চলছে। বিশেষ করে ব্রিজের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে।

আনালিয়াবাড়ী এলাকায় ব্রিজের কাজ করা শ্রমিক সেলিম মিয়া বলেন, ঈদের আগে ব্রিজের কাজ শেষ করার তাগিদ রয়েছে। আমরা আটজন শ্রমিক মিলে এখানে সার্বক্ষণিক কাজ করছি। আশা করছি যথা সময়ে কাজ শেষ করতে পারবো। আমরা যতটা সম্ভব দ্রুত কাজ করছি।

নীলফামারীর তয়েজ এন্টারপ্রাইজের চালক ইকবাল হোসেন বলেন, মহাসড়কে পুলিশের সঠিক তদারকি প্রয়োজন। এছাড়া এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত কাজ করছে। কাজ শেষ না হলে এবারও মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করছি। গতবছরও এ মহাসড়কে যানজট হয়েছিল। প্রতিবছরই আমাদের যানজটের কবলে পড়তে হয়।

এ প্রসঙ্গে চার লেন বাস্তবায়ন প্রকল্পের আবদুল মোনেম লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেঞ্জার রবিউল আওয়াল জানান, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের সাড়ে ১৩ কিলোমিটারের ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে ঈদের আগেই মহাসড়কের এই অংশের উত্তরঙ্গগামী পুরো চারলেন চলাচলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘœ ও স্বস্তিদায়ক করতে ১৯টি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য যমুনা সেতু দিয়ে সার্বক্ষণিক টোল চালু রাখার চেষ্টা করা হবে। এবার সেতু পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের ১৮টি বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হবে। এর মধ্যে ৪টি করে উভয় প্রান্তে ৮টি বুথে ফাস্ট ট্রাক লেন এবং মোটরসাইকেলের জন্য ২টি করে আলাদা ৪টি বুথ থাকবে।

টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় করা হয়েছে। যানজট নিরসনে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশে ৬৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জেলা পুলিশের সাড়ে ৭’শ সদস্য দায়িত্ব পালন করাসহ মোবাইল টিম ও প্রিকেট টিম কাজ করবেন।

তিনি আরও জানান, আগামী ২৫ মার্চ থেকে পুলিশ মহাসড়কে ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে। ঈদের পরেও যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। তিনি আশা করেন এবার মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হবে না।


আরও খবর



সয়াবিন তেল লাপাত্তা, ক্রেতার ধরনা দোকানে দোকানে

প্রকাশিত:রবিবার ০২ মার্চ 2০২5 | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে বাজারে ক্রেতার চাপ বেড়েছে। রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন সবাই। কিন্তু রাজধানীর বাজারে সব পণ্যের দেখা মিললেও পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেলের বোতল। রান্নায় দরকারি পণ্যটির খোঁজে তাই ক্রেতাদের ঘুরতে হচ্ছে দোকানে দোকানে। রোজার শুরুতেই ভোজ্যতেলে এমন বিড়ম্বনায় বেজায় ক্ষুব্ধ ভোক্তারা।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অবস্থাও তথৈবচ। বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না বাজারে। দাম বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেলেরও। এর মধ্যে সরিষার তেলের দামও বাড়তির দিকে। রোজা শুরুর দুই সপ্তাহ আগে ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে বলেছিলেন, সরবরাহ খুবই ভালো। তাই এবার একটি পণ্যের দামও বাড়বে না। এ ছাড়া বাড়তি দাম রাখার কারণে প্রতিদিনই জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন দোকান ও বাজারকে জরিমানা করে চলেছেন। কিন্তু কিছুতেই লাগাম টানা যাচ্ছে না।

রাজধানীর কদমতলী এলাকার বাসিন্দা মো. এনামুল হক গতকাল বাজারে গিয়ে অন্তত পাঁচটি দোকান ঘুরেও পাঁচ লিটারের বোতলের সন্ধান পাননি। যে দোকানেই যাচ্ছেন, বলা হচ্ছে বোতল নেই। কথা হলে এনামুল বলেন, রোজার মাস এলেই বাজারে বিভিন্ন পণ্যমূল্যের নাটক-সিনেমা চলে। এবার বাজারে অনেক পণ্যের দাম বাড়েনি। কিন্তু সয়াবিন তেল নিয়ে এখনও খেলাধুলা চলছে। রোজার সময় যেখানে পণ্যের সরবরাহ বাড়ার কথা, সেখানে সয়াবিনের বোতল পাওয়াই যাচ্ছে না। সুপারশপে গিয়েও পাচ্ছি না। এগুলো দেখার কি কেউ নেই? আক্ষেপের সঙ্গে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

পাড়ার মুদি দোকান ঘুরে না পেয়ে সয়াবিনের বোতলের খোঁজে একটি সুপারশপে এসেছেন আশকোনা এলাকার বাসিন্দা মো. আলতাফ হোসেন। সেখানে বোতলের দেখা পেলেও আরেক বিপত্তিতে পড়তে হয় তাকে। তিনি বলেন, এখানে ৫ লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও শর্ত দেওয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা সমপরিমাণ অন্য পণ্যও কিনতে হবে। তা না হলে বোতল বিক্রি করবে না। এটা কেমন কথা? কোথায় আছি আমরা?

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, রোজা শুরু হলেও সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়েনি। আগের মতোই কম তেল সরবরাহ করছে ডিলাররা। কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটেও গতকাল বোতলজাত সয়াবিন তেলের খোঁজে দোকানে দোকানে ঘুরতে দেখা গেছে অসংখ্য ক্রেতাকে। সেখানেও বিক্রেতাদের একই জবাব- সরবরাহ নেই। ডিলাররা যতটুকু দিচ্ছেন তা মুহূর্তেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

কথা হলে কিচেন মার্কেটের বিউটি স্টোরের ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসাইন বলেন, বাজারে কোনো সয়াবিনের বোতল নেই। ডিলাররা সরবরাহ করছে না। কোম্পানির কাছে চাহিদা দিচ্ছি ২০-২৫ কার্টন, কিন্তু পাচ্ছি ২-৩ কার্টন। এগুলো অল্প সময়েই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। রোজায় চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে এ সময়ে সরবরাহ বাড়ার কথা।

বাজারে সয়াবিনের বোতল সরবরাহে ঘাটতির প্রসঙ্গে একাধিক ডিলারের সঙ্গে কথা বললেও তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। অপরদিকে যোগাযোগ করা হলে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকেও সারা পাওয়া যায়নি।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দাম এক দফা বাড়ানো হলেও আরও বাড়াতে চাইছে কোম্পানিগুলো। সে জন্য পুরনো কায়দায় সংকট তৈরি করা হচ্ছে।

খোলা সয়াবিন তেলের মোকাম রাজধানীর মৌলভীবাজারেও তেলের বাজার চড়া যাচ্ছে। আগের মতো সরবরাহ না থাকায় দাম বাড়তি রয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।

এদিকে চট্টগ্রামে তেলেই শুধু তেলেসমাতি চলছে না, এক বছরের ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়ে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা হয়েছে। দুদিন ধরে আলুর সরবরাহে সংকট দেখিয়ে প্রতি কেজি ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায় উঠে গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক বছর আগে যে ছোলা প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতো, এবার তা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত দুদিন আলুর সরবরাহে ঘাটতি দেখা যাওয়ায় ২০ টাকার আলুর কেজি ৩০ টাকায় উঠেছে। ক্ষীরার কেজি ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকায়, কাঁচামরিচ ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকায়, বেগুন ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় উঠে গেছে দাম। দেশে ব্যাপক আমদানি সত্ত্বেও সয়াবিন তেল বিশেষ করে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহে সংকট রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, দামি ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ না থাকার সুযোগে রাতারাতি অখ্যাত কোম্পানিগুলো খোলাবাজারের সয়াবিন তেল বোতলজাত করে বাজারে সরবরাহ করছে।

গতকাল চট্টগ্রাম নগরীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই বললেই চলে। বিশেষ করে পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই সংকট চলছে বলে জানান বিক্রেতারা। তারা বলেন, চাহিদার বিপরীতে বোতলজাত তেলের সরবরাহ খুব কম। কিন্তু এই মুহূর্তে চাহিদা অনেক। কারণ হিসেবে মোমিন রোডের ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, রমজানে ভাজাভোজির ব্যাপার বেশি। সক্ষম ক্রেতারা ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল নিতে চান। দাম তাদের কাছে ব্যাপার নয়। কিন্তু আমরা তো দিতে পারছি না।

আন্তর্জাতিক বাজারের চিত্র বলছে, সয়াবিন তেলের দর গত তিন মাসে নিম্নমুখী রয়েছে। বিশ্ব বাজারে পণ্যমূল্যের পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে গত নভেম্বর মাসে প্রতিটন সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১১৪৫ ডলার। ডিসেম্বরে যা কমে হয় ১০৬৪ ডলার এবং গত জানুয়ারিতে তা আরও কমে ১০৬১ ডলারে নেমেছে। অথচ দেশে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। আরও বাড়ানোর পাঁয়তারাও চলছে।

এদিকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। রমজানে চাহিদা বেশি থাকে। এ মাসে চাহিদা ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ৩ লাখ টন।

বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট ও সরবরাহ নিয়ে চলতি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, সয়াবিন তেলের আমদানি বেড়েছে। দেশে ভোজ্যতেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে, কোনো ঘাটতি নেই। যেটি হয়েছে তা কৃত্রিম এবং প্রকৃত তথ্যের ঘাটতি থেকে সৃষ্ট। সভায় উৎপাদনকারীরাও জানান, সয়াবিন তেলের সরবরাহ বেড়েছে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রমজান মাস সামনে রেখে বাজারে ভোজ্যতেলের বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অধিক পরিমাণ ভোজ্যতেল সরবরাহ করছে। ভোজ্যতেল সরবরাহের পরিমাণ বিবেচনায় সংকটের কোনো সুযোগ নেই। বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় কিছু ব্যবসায়ীর মজুদের প্রবণতা থেকে যদি সংকট হয়ে থাকে, তা অচিরেই কেটে যাবে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করেছে, যা ৭ থেকে ১০ দিনের ভেতরে বাজারে প্রবেশ করবে। পাইপলাইনে আছে দেড় লাখ মেট্রিক টন।

এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বসির উদ্দিনও আশ্বস্ত করেছিলেন, সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের বাজার স্থিতিশীল থেকে নিম্নমুখী হয়ে যাবে এবং সরবরাহের ঘাটতি দূর হবে। কিন্তু বাজারের চিত্র বলছে, বোতলের তেলের সংকট রয়েই গেছে। খোলা তেলের দামও চড়া। নেপথ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি। সরকারি সংস্থার তদারকি অভিযানেও বেরিয়ে আসছে কারসাজির তথ্য।

গত বৃহস্পতিবার কারওয়ানবাজারে অভিযান চালিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দেখতে পায়, সেখানকার অনেক দোকানে আড়ালে ভোজ্যতেল লুকিয়ে রেখে ক্রেতাকে তেল নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তল্লাশি করে গোপন জায়গায় ৫ লিটারের বোতলের ২০০টিরও অধিক কার্টনের মজুদ খুঁজে পায় সংস্থাটি। আরও দেখা যায়, কিছু খুচরা ব্যবসায়ী সয়াবিন তেল গোপনে বিক্রি করছেন। ৫ লিটারের বোতলে এমআরপি ৮১৮ টাকা লেখা থাকলেও বিক্রি করা হচ্ছে ৮৫০-৮৫২ টাকায়। এর আগে আরেক অভিযানে দেখা গেছে, বেশি লাভের আশায় খুচরা বিক্রেতারা বোতল কেটে ড্রামে ঢেলে খোলা হিসেবে বিক্রি করছেন।

বারবার একই কায়দায় বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেও এ থেকে ভোক্তারা পরিত্রাণ পাচ্ছেন না। এর পেছনে ট্যারিফ কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাই দায়ী বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, বিটিটিসির বৈঠকে ব্যবসায়ীরা জানালেন, সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু সংকট কেন, তা তারা জানেন না। তারা তো এভাবে দায় এড়াতে পারেন না। ডিস্ট্রিবিউটররা তেল নিয়ে কি করেছে, সেটা দেখার দায়িত্বও তাদেরই। এভাবেই কোম্পানি-ডিস্ট্রিবিউটর মিলে ভোক্তার পকেট কাটে। ট্যারিফ কমিশন কিভাবে মূল্য সমন্বয় করছে তা জানা নেই। এর মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসনে ও বাজার মনিটরিংয়ে দুর্বলতা রয়েছে। যদিও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর প্রতিদিন কয়েকটি বাজারে তদারকি করছে, জরিমানা করছে। কিন্তু তাদের জনবল কম। মনিটরিংয়ে এমন দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে অসাধুরা।

 


আরও খবর