লন্ডনে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সোমবার ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে এ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যানুষ্ঠান শুরুর আগে সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটে দিনের প্রথম শোকযাত্রা শুরু হয়। রানির কফিন নিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার হল থেকে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে যাত্রা করেন স্টেট গান ক্যারেজের নাবিকরা। তাদের পেছনে ছিলেন রাজা চার্লস এবং রাজপরিবারের অন্য জ্যেষ্ঠ সদস্যরা।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটেনে এ ধরনের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য সবশেষ হয়েছিল ৬০ বছর আগে উইনস্টন চার্চিলের ক্ষেত্রে। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, শেষকৃত্যের পরিকল্পনায় রানি ব্যক্তিগতভাবে কিছু সংযোজন করেছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৮টার দিকে অতিথিদের জন্য ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবের দরজা খুলে দেওয়া হয়। এরপর সাড়ে ১০টার দিকে ওয়েস্টমিনস্টার হল থেকে রানির মরদেহ নেওয়া হয় ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে। রয়্যাল নেভির গাড়িবহরে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কর্মসূচিতে অতিথিরাও উপস্থিত ছিলেন। এতে ধর্মীয় বাণী পাঠ করেন আর্চ বিশপ জাস্টিন ওয়েলবি। সদ্য নিযুক্ত ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসও বাণী পাঠ করেন। এরপর শেষ পোস্ট বিউগল বাজানো হবে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে। এরপর পুরো দেশজুড়ে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে অ্যাবে থেকে হাইড পার্কে ওয়েলিংটন আর্কে রানির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় সময় বিকাল ৩টার দিকে রানির মরদেহ উইন্ডসর ক্যাসলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় রানির কফিনের পেছনে সাধারণ মানুষ অংশ নেন। এতে রাজপরিবারের সদস্যরাও যোগ দেন। ক্যাসল থেকে রানিকে নেওয়া হয় সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে। সন্ধ্যায় রানির স্বামী ডিউক অব এডিনবার্গের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
এর আগে দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে ব্রিটিশ রাজপরিবারের দেওয়া অভ্যর্থনায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন এ সময়।
রাজা চালস ও কুইন কনসোর্ট ক্যামিলা পার্কার সদ্য প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও রাজাদের সম্মানে এ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
এদিকে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো লন্ডন। শেষকৃত্যে অংশ নিতে দেশটিতে বিশ্ব নেতাদের অবস্থান আর স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি জনসমাগমে যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানার সঙ্গে দেখা করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সোমবার লন্ডনে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরুর ঠিক আগে তাদের সাক্ষাৎ হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যোগদান শেষে সোমবার রাতেই লন্ডন ত্যাগ করেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি নিউইয়র্কের পথে ইংল্যান্ডের রাজধানী ত্যাগ করেন। এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর সরকারি সফরে লন্ডনে (যুক্তরাজ্য) পৌঁছান শেখ হাসিনা।