রেমিটেন্স আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে বলে
মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, সরকারের রেমিটেন্স আয়
বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে। দেশের যেকোনো অগ্রগতি ও সফলতায় তাদের
গাত্রদাহের বহিঃপ্রকাশ মির্জা ফখরুলদের নেতিবাচক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বারবার
উন্মোচিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি
পাওয়া নিয়ে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
যারা কেবল দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আর্জি নিয়ে চাতক পাখির মতো বিদেশি
প্রভুদের দিকে চেয়ে থাকে, তারা রেমিটেন্স বৃদ্ধির সুখবর
কোনোভাবেই মেনে নিতে পারবে না, সেটাই স্বাভাবিক। প্রবাসীদের
পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর শেখ হাসিনার ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানের সময়োপযোগী
সিদ্ধান্তের কারণেই রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার সফল নেতৃত্বে দেশের
অর্থনৈতিক কাঠামো শক্তিশালী হওয়ায় এবং বিনিয়োগের নিরাপদ স্থান হিসেবে স্বীকৃতি
অর্জন করায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মতোই প্রবাসীরাও দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত
হচ্ছে। বিএনপি সেই রাজনৈতিক দল যারা বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি
করতে চায়, যারা সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে প্রবাসীদের বৈধ
পথে রেমিটেন্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত করে দেশে অর্থনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করতে চায়।
কাজেই রেমিটেন্স বৃদ্ধির সুখবরে বিএনপি নেতারা খুশি নয়।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, বর্তমান সরকার অর্থপাচার রোধে কার্যকর আইন
প্রণয়ন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নজির স্থাপন করেছে। অন্যদিকে
বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট শাসনামলে দুর্নীতি ও অর্থপাচারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ
দেওয়া হয়েছিল। হাওয়া ভবন খুলে খালেদা জিয়ার পুত্ররা দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছিল। তাদের দুর্নীতি ও
অর্থপাচার সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সাক্ষ্য দিয়েছে।
সিঙ্গাপুর থেকে খালেদা জিয়ার পুত্রদের পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। বরং বিএনপিই আতঙ্কিত
হয়ে পড়েছে। আগুন দিয়ে শতশত নিরীহ ও নিরাপরাধ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা ও
ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ এবং উগ্র-সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা ও
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপিই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে
চিহ্নিত হয়েছে। কানাডার উচ্চ আদালত বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে
স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু তারা তাদের অতীত অপকর্ম নিয়ে অনুতপ্ত না হয়ে উল্টো
নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে
দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন গঠনের সুনির্দিষ্ট আইন প্রণিত হয়েছে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ও
কারিগরি সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণসহ নির্বাচনী ব্যবস্থার সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি
পেয়েছে। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ
পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও অনুরূপভাবে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
এটাই শেখ হাসিনা সরকারের সংকল্প।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি নিশ্চিত
পরাজয় জেনে নির্বাচনে অংশগ্রহণে ভয় পায়। এতিমের অর্থ আত্মসাতের কারণে খালেদা
জিয়া দণ্ডিত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একুশে আগস্টের
গ্রেনেড হামলার মাস্টার মাইন্ড। তারেক রহমান বিদেশে পালিয়ে থাকায় নির্বাচনী মাঠে
নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোনো নেতা তাদের নেই; সে কারণে
নির্বাচনে অংশগ্রহণের সৎ সাহস রাখে না বিএনপি। তাই তারা নির্বাচন বানচাল এবং
গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারাকে ব্যাহত করতেই দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র চালিয়ে
যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ যেকোনো মূল্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল ষড়যন্ত্র
প্রতিহত করে অগ্রসরমান উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখবে।