Logo
শিরোনাম

শানে রিসালাত রাসূল (ﷺ) সর্বপ্রথম সৃষ্টি”

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পূরনুর (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি, যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।


★২৭. অনাদিরূপে এক আল্লাহ তা’আলাই ছিলেন। অন্য কিছু বলিতে আর কিছুই ছিল না। আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই নাই। এই শূন্যতার সমাপ্তি ঘটাইতে ইচ্ছা করিলেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। যেমন, ওলীকুল শিরোমণি শায়েখ আকবর (রঃ) কর্তৃক এলহাম প্রাপ্ত এবং পূর্বাপর ওলী ও সূফী তথা আধ্যাত্মিকতায় ধন্য মহানগণ কর্তৃক গৃহীত আল্লাহ তাআলার একটি বাণীতে উলেখ আছে- “আঁমার সত্তা (জানিবার কেহ না থাকায়) অজানা ছিল; আঁমার ইচ্ছা হইল (আঁমার গুণাবলীর মাধ্যমে আঁমাকে প্রকাশ করা)-আঁমাকে জানান। সেমতে আঁমি সৃষ্টি করি জগত।”

[তথ্য সূত্র:তাফসীরে রুহুল মাআনী, পৃষ্ঠা: ১৪-২১;বুখারী শরীফ,৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ২, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ)]

* এই বাণীর মর্ম কোরআনের একটি আয়াত দ্বারাও সমর্থিত। আল্লাহ তাআলা বলিয়াছেন-“জিন এবং মানুষ এই দুইটি জাতিকে আঁমি একমাত্র আঁমার এবাদত বা গোলামী করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিয়াছি।”

[সূত্র: আল কোরআন,সূরা যারিয়াত, আয়াত নং ৫৬,সূরা নং: ৫১]


✌আল্লাহ তায়ালার এই ইচ্ছার বাস্তবায়নে জগত সৃষ্টির শুভ প্রারম্ভেই আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করিলেন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-এঁর সৃষ্টির মূল নূরকে। এই নূরকেই পরিভাষায় বলা হইয়া থাকে “হাকীকতে মুহাম্মদিয়া”।এই নূর বা হাকীকতে মুহাম্মদীয়া বলিতে কাহারও মতে হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-এঁর পবিত্র রূহ বা আত্মা উদ্দেশ্য। আর কাহারও মতে অন্য কোন বাস্তব বস্তুবিশেষ উদ্দেশ্য। অথবা ঐ পবিত্র রূহ বা আত্মারই বাহন,কিন্তু পদার্থীয় দেহ নহে, বরং হয়ত এক বিশেষ জ্যোতির্বিম্ব, যাহার প্রতিবিম্বের বিকাশ ছিল হযরত মুহাম্মদ(ﷺ)-এঁর নশ্বর দেহ।

[তথ্য সূত্র:যোরকানী,১-৩৭; বোখারী শরীফ,৫ম খন্ড,পৃষ্ঠা: ২, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌উপরোল্লিখিত আল্লাহ প্রদত্ত এলহামী বাণী ও তাহার সমর্থনে আয়াতের মর্ম ইহাই ছিল যে, “আল্লাহকে জানিবে, আল্লাহর গোলামী করিবে এই উদ্দেশেই সৃষ্ট জগতের সৃষ্টি।” সুতরাং সাধারণ নিয়ম মতেই আল্লাহ তাআলা তাঁহার প্রথম সৃষ্টি হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-কে ঐ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের যোগ্যতায় সকলের ঊর্ধ্বে শীর্ষস্থানের অধিকারীরূপে সৃষ্টি করিয়াছেন। বোখারী শরীফের এক হাদীস আছে, নবী (ﷺ)-ফরমাইয়াছেন- “আল্লাহকে ভয় করায় এবং আল্লাহকে জানায় আঁমি তোমাদের তথা নিখিল সৃষ্টির সকলের ঊর্ধ্বে।” আল্লাহকে যে যত বেশী ভয় করিবে,সে তাঁহার তত বেশী গোলামী করিবে।

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌মাওলানা আশরাফ আলী থানভী তাহার সীরাত সস্কলন ‘নশরুত্তীব’ কিতাবে নিজ সংযোজিত টীকায় নূরে মুহাম্মদীকে রূহে মুহাম্মদী সাব্যস্ত করিয়াছেন।

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃঃ ২, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌এই হাকীকতে মুহাম্মদীয়া হইল নিখিল সৃষ্টিজগতের সর্বপ্রথম সৃষ্টি। লৌহ-কলম, বেহেশত-দোযখ, আসমান-যমীন, চন্দ্র -সূর্য, ফেরেশতা এবং মানব-দানব সব কিছুই ঐ হাকীকতে মুহাম্মদিয়া বা নূরে মুহাম্মদীর পরে সৃষ্টি হইয়াছে। এই তথ্য সুস্পষ্টরূপে বিশিষ্ট সাহাবী জাবের (রাঃ) বর্ণিত এক হাদীসে উল্লেখ রহিয়াছে। জাবের (রাঃ) বলিয়াছেন, আমি একদা আরজ করিলাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আঁপনার চরণে উৎসর্গ হউক; সকল বস্তুর পূর্বে সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়ালা কোন জিনিসটি সৃষ্টি করিয়াছেন? রাসূল (ﷺ) বলিলেন, হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা সকল বস্তুর পূর্বে সর্বপ্রথম তোমাদের নবীর নূর সৃষ্টি করিয়াছেন (যাহা) আল্লাহ (বিশেষ কুদরতে সৃষ্ট) নূর হইতে। অতঃপর সেই নূর আল্লাহর কুদরতে আল্লাহ তায়ালার নিয়ন্ত্রণাধীনে চলমান ছিল।ঐ সময় লওহ-কলম, বেহেশত-দোযখ, আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, মানব-দানব এবং ফেরেশতা কিছুই ছিল না।”

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ; যোরকানী, ১-৪৬]


✌এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলতে চাই যে, কোন শিল্পী নিজ দক্ষতায় সুন্দর গঠনের একটি জিনিস তৈয়ার করে; তাহা এতই সুন্দর হয় যে, স্বয়ং গঠনকারী শিল্পী তাহারই হাতে গঠিত জিনিসটির প্রতি আকৃষ্ট হইয়া পড়ে, সে তাহাকে আদর করে, ভালবাসে। শিল্পীর নিজ হাতে গড়া বস্তু তাহার দক্ষতায় এতই সুন্দর ও মনোরম হয় যে, স্বয়ং শিল্পী তাহার ভালবাসায় মুগ্ধ হয়। এমনকি শিল্পী প্রদর্শনী করিয়া তাহার গুণ গরিমারি প্রচার করে। আল্লাহ তাআলাও হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-এঁর ক্ষেত্রে তাহাই করিয়াছেন।


✌নবী (ﷺ) নূরী,তাঁর উপর যে হাদীসটি আছে যেমন: জাবের বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা আমি রাসূল (সাঃ)-কে জিজ্ঞেসা করি,হে আল্লাহর রাসূল! আঁপনার প্রতি আমার বাবা–মা কুরবান হোক, আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর আগে কী সৃষ্টি করেন? নবী (ﷺ) বলেনঃ হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা সমস্ত বস্তুর পূর্বে তাঁর নূর দ্বারা তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেন। তারপর সেই নূর নিঁজ ক্ষমতায় আল্লাহর আদেশে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। সেই সময় লউহ, কলম, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা, আসমান-যমীন, সূর্য-চন্দ্র, জিন, মানুষ কোন কিছুই ছিলনা।” এই হাদীসটি বিংশ শতাব্দীর কথিত শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী বাতিল বলে আখ্যা দিয়েছেন।তিনি বলেন সৃষ্টির প্রথম বস্তু হচ্ছে কলম, নবীর নূর নয়। প্রথম সৃষ্টি নবীর নূর বলে যে হাদীস প্রচার করা হয় তা জাল কথা,হাদীস নয়।

[সূত্র: সিল সিলাতুল আহাদীছ আস স্বহীহা (সহীহ হাদীস সিরিজ), হাদীস: ৪৫৮; গ্রন্থস্বত্ত: নাবী (ﷺ) কি নূরের তৈরী, পৃষ্ঠা: ৩২, প্রণেতা: আবদুর রাকীব (মাদানী), মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ,সউদী আরব]


✌সর্বপ্রথম নাসিরুদ্দীন আলবানীর একটু পরিচয় করিয়ে দেই, তিনি হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি সউদী বংশের শাসকদের প্রস্তাব করেছেন মহানবীর পবিত্র রওযার সবুজ গম্বুজটি ভেঙ্গে ফেলার।সে বলেছে, ‘এটি আফসোসের বিষয় যে,দীর্ঘদিন হল রাসূলের কবরের উপর একটি গম্বুজ প্রস্তুত হয়েছে…আমার বিশ্বাস সউদী সরকারের একত্ববাদের দাবী যদি সত্য হয়ে থাকে তবে তাদের উচিত তা চূর্ণ করে মসজিদে নববীকে তার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা।

[সূত্র: তাহযীরুল মাসাজিদি মিন ইত্তিখাযিল কুবুর মাসাজিদা, আলবানী, পৃষ্ঠা: ৬৮-৬৯; ওয়াহাবীদের সৃষ্ট সংশয়ের অপনোদন (ইসলামী সেবা দপ্তর, কোম, ইরান)]


✌আমার কথা হচ্ছে,আমরা রাসূল (ﷺ) -কে দেখিনি কিন্তু তাঁর স্মৃতি নিয়ে তাঁকে ভালোবাসি,মনেপ্রানে বিশ্বাস করি। তাঁর প্রতি গভীর ভালোবাসার মারফতে তাঁর দর্শন লাভ করি।রাসূল (ﷺ)-আজ আমাদের মধ্যে প্রকাশ্যে নেই কিন্ত তাঁর রওযা শরীফ আছে আর এটাই আমাদের জন্যে আল্লাহকে পাওয়া ও সারা জাহানের মাখলুকাতকে প্রমান দেওয়ার একটি নিদর্শন।যারা রাসূল (ﷺ)-কে ভালোবাসে তাদের জন্যে রাসূলের রওজার গম্বুজতো দূরের কথা তাঁর ছায়াও একটি যিয়ারতের উৎস। তাহলে যে ব্যক্তি তার নিজের চোখে দেখা এই নিদর্শনটিকে মিটিয়ে ফেলতে চায়,তার কাছে রাসূল (ﷺ)-এঁর নূর তো অবিশ্বাসযোগ্য হবেই। আর তারা ‘রাসূল (ﷺ)-এঁর নূর সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয়েছে’ সেটা মানতে রাজি না কিন্তু ‘কলম’ ঠিকই মানতে রাজি আছেন।


👏পাঠকবৃন্দের কাছে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) অসংখ্য নাম সমূহের গুণাবলী থেকে শুধুমাত্র কয়েকটি নামের অর্থ তুলে ধরতে চাই।যেমন,নবীজী(ﷺ)-এঁর এই নামটি ‘সাইয়্যেদ’ অর্থ সর্দার বা প্রধান,নবীজী নিখিল সৃষ্টির প্রধান, নবী ও রাসূলগণের প্রধান। ‘মোকাফফা’ অর্থ সর্বশেষে প্রেরিত। হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) সর্বশেষ পয়গম্বর। ‘সিরাজুম মুনীর’ অর্থ দীপ্ত সূর্য। নবী (ﷺ) দীপ্ত সূর্য অপেক্ষা অধিক ভাস্কর ছিলেন।

[সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৪৭, হাঃ ১৬৬২, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


🌹নবীকরিম (ﷺ)-এঁর নূর মোবারক মাখলুকাতের মধ্যে সর্বপ্রথম সৃষ্ঠি করা হইয়াছে। যেমন হাদীস শরীফে আছে নবী করীম (ﷺ) বলেন হে জাবের আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম তোমাদের নবীর নূর পয়দা করিয়াছেন।

[তথ্য সূত্র: শানে মাহবুব (সঃ), পৃষ্ঠা ৩৮,তাবলীগী কুতুবখানা,চক বাজার ঢাকা]


✌কাজেই চাঁদ সূরুজের অস্তিত্ব, রৌশনী সবকিছুই নূর নবী হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) ফয়েজের কারণেই বিদ্যমান।নবী করিম (ﷺ) যদিও কবর শায়িত রহিয়াছেন কিন্তু তাঁহার অস্তিত্ব হইতেই চাঁদ সূরুজ আলোক লাভ করিতেছে। সমগ্র বিশ্বজগতের অস্তিত্ব তাঁহার মাধ্যমে লাভ হইয়াছে ইহা যেমন সত্য তেমন বিশ্বজগতের সচল থাকার মূলেও নবী করিম (ﷺ)-এঁর অস্তিত্ব কাজ করিতেছে। আধ্যাত্মিক সাধনা এবং রিয়াজতের মাধ্যমে যে ব্যক্তি নিজের অন্ত:করনকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করিয়া লয় সেই ব্যক্তি ফেরেশতার বৈশিষ্ঠ অর্জন করে।

[তথ্যসূত্র: শানে মাহবুব (সঃ),পৃষ্ঠা ৭১,তাবলীগী কুতুবখানা, চক বাজার ঢাকা)]


✌ইসলাম মাওলানা মোহাম্মদ কাসেম নানুতবী লিখিত কাছিদায়ে বাহরিয়া গ্রন্থের কয়েকটি কবিতার অর্থ নীচে উলেখ করা যাইতেছে। তিনি লিখিয়াছেন,আঁপনি(রাসূল (ﷺ) যমিনের সকল সৃষ্টির গৌরব। আঁপনি সকল পায়গাম্বারের মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ। অন্যান্য নবী যদি ফুল হন তবে আপনি ফুলের ঘ্রান। অন্যান্য নবী সূর্যের কিরণ হইলে আপনি হইলেন সূর্য। আঁপনি সমগ্র সৃষ্টিকুলের প্রানস্বরূপ। আঁপনি দৃশ্যমান নূর। বিশ্বজগত আঁপনার উছিলায় সৃষ্টি হইয়াছে। আঁপনার নূরের বদৌলতে অস্তিত্ব হীনতা হইতে সকল কিছু অস্তিত্ব লাভ করিয়াছে। বিশ্বজগতের সকল প্রকার পূর্ণতার সমাবেশ আপনার মধ্যে রহিয়াছে। আঁপনার মতো কামালাত ও বৈশিষ্ট অন্য কাহারো মধ্যে নাই। আঁপনার মর্তবায় অন্য কোন নবী পৌছিতে পারে নাই। মোজেযার অধিকারী নবীগণও আঁপনার তুলনায় নিশপ্রাণ। আঁপনার পূর্ববতী নবীগণ আঁপনার উম্মত হওয়ার আগ্রহ ও আকাঙ্খা ব্যক্ত করিয়াছেন। আঁপনার নূর প্রকাশ না পাইলে আল্লাহ পাক সৃষ্টির কাজে হাত দিতেন না। হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহ পাকের দীদার পাইতে চান অথচ স্বয়ং আল্লাহ পাক আঁপনার সাক্ষাত চাহিয়াছেন। জমিন ও আসমান কখনো এক সমান হইতে পারেনা।

[তথ্য সূত্র: প্রিয় নবী (সঃ) এর আদর্শ জীবন, পৃষ্ঠা ৮৬, তাবলীগী কুতুবখানা, চক বাজার ঢাকা]


✌রাসূলুলাহ (ﷺ) বলিয়াছেন- আঁমি একটি কথা বলিতেছি; ফখর বা গর্ব করা উদ্দেশ্য নহে। ইব্রাহীম (আঃ) খলীলুলাহ (অর্থাৎ তিঁনি আলাহকে দোস্ত বানাইয়া ছিলেন), মুসা (আঃ) সফিউলাহ (অর্থাৎ তিঁনি আল্লাহ কর্তৃক বৈশিষ্ট প্রদত্ত), আর আমি হাবিবুলাহ (অর্থাৎ আমাকে স্বয়ং আল্লাহ তাঁহার দোস্ত বানাইয়াছেন ভালবাসিয়াছেন)।

[তথ্য সূত্র: মেশকাত শরীফ; বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা:৪, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌কোরআন মাজীদে উদ্ধৃত হয়েছে “ওয়ামা খালাকনাস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্ব” এই তাফসীরটি হযরত জাবেরের বর্ণনার অনুকুলে। তিনি বলেছেন, আল্লাহতায়ালা সর্বপ্রথমে আহমাদ মোস্তফার (ﷺ) রূহ সৃষ্টি করেছেন। সেই রূহ থেকে সৃষ্টি করেছেন আরশ, কুরসি, আকাশ, পৃথিবী এবং সমগ্র সৃষ্টি।

[তথ্য সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৩, শায়েখ আবদুল হক মোহাদ্দেছে দেহলভী (রহঃ), সেরহিন্দ প্রকাশন, সন-জুন ১৯৯৯ ইংরেজী]


✌আল্লাহ তায়ালার একটি নাম নূর। নূর শব্দটির রয়েছে বিভিন্নরকম অর্থ। যেমন, নূর বহনকারী, নূরের স্রষ্টা. আকাশ ও পৃথিবীকে নূরের মাধ্যমে আলোকিতকারী, আরেফগণের অন্তরে হেদায়েতে ও রহস্যের আলো প্রজ্জ্বলকারী ইত্যাদী। আল্লাহ পাক মোস্তফা (ﷺ)-কেও নূর নামে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন তিনি এরশাদ করেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট -আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এসেছে নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব।” অন্যত্র এরশাদ হয়েছে, “ওয়া সিরাজাম মুনিরা” অর্থাৎ তিঁনি উজ্জ্বলকারী আলোকবর্তিকা। রাসূল পাক (ﷺ) যে নূর তার কারণ হচ্ছে তিঁনি আল্লাহতায়ালার আহবানকে প্রোজ্জ্বল করেছেন,জ্বালিয়েছেন নবুয়তের নূর এবং সত্য ধর্ম ইসলামের মাধ্যমে আরেফগণের হৃদয়কে করেছেন আলোকিত।

[তথ্য সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৩, শায়েখ আবদুল হক মোহাদ্দেছে দেহলভী (রহঃ), সেরহিন্দ প্রকাশন]


✌রাসূল (ﷺ) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা আঁমার উপর যখন তাঁর নেয়ামতের বহিঃপ্রকাশ চাইলেন,তখন এরশাদ করলেন,হে মুহাম্মদ (ﷺ) আঁপনি যখন ভূত চতুষ্টয়ের মধ্যে ছিলেন তখন আঁমি আঁপনার নূরকে ডাক দিয়েছিলাম আর আঁপনার উম্মতকেও ডাক দিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিলো, আঁপনার উম্মতের কথা মুসা (আঃ)-কে শোনাবো।

[সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৮৮, সেরহিন্দ প্রকাশন, সন-ডিসেম্বার ১৯৯৯]


✌রমযান মাস, অমাবস্যা-পূর্ব অন্ধকার, রজনী গভীর, লোকালয় হইতে বহু দূরে হেরা পর্বতের উচ্চ শৃঙ্গে নিভৃতি প্রকোষ্ঠে নবীজী (ﷺ) ধ্যানমগ্ন। এমন সময় হঠাৎ মহাসত্যের আগমন হইল। ফেরেশতা জিব্রাইল (আঃ) ঐ প্রকোষ্ঠে তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইলেন এবং সালাম করিলেন। ফেরেশতারা নূরের তৈয়ারী; বহন করিয়া আনিয়াছেন আল্লাহ তায়ালার কালাম, তাঁহার নূর; এইসব নূরের আকর্ষণে নবীজী(ﷺ)-এঁর জড় দেহের আবেষ্টনে লুক্কায়িত মহানূরও পৃতিভাত হইয়াছে অসাধারণভাবে।অতএব হেরা গুহায় এখন নূর! নূর! সবই নূর।নবীজী (ﷺ)-এঁর ভিতরে বাহিরে নূরের জৌলুসে নূরই নূর হইয়া গিয়াছে। এই মহা মহূর্তে তাঁহার দেহ-মনের অবস্থা একমাত্র তাঁহারই অনুভব করার কথা। ব্যক্ত বা বর্ণনা করার আয়ত্ত বহির্ভূত। নিভৃত গিরিগহবরের এই অভূতপূর্ব মুহুর্তটি মোস্তফার হৃদয়ে কি রেখাপাত করিয়াছিল তাহা কি কোন মানুষ নির্ণয় করিতে পারে?(স:)!

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ,৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৮৩, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ; ৬৫,চক সারকুলার রোড,ঢাকা- ১২১১ যোরকানী, ১-২০৭] [সংগ্রহকৃত]


♦রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পূরনুর (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি, যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।[১০ম পর্ব দেখুন]

★২৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “আল্লাহ পাক হযরত ঈসা (আ:)-কে বলেছেন,ওহে ঈসা! মহানবী (ﷺ)-এঁর প্রতি ঈমান আনো এবং তোমার উম্মতকেও তা করতে বলো।রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-না হলে আঁমি আদমকে সৃষ্টি করতাম না,বেহেশত বা দোযখও সৃষ্টি করতাম না।”

📚দলিল

*১. আল মোসতাদরেক’ হাকিম: ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭

*২.আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২

*৩. ইমাম ইবনে সাদ : তানাকাতুল কোবরা

*৪.ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী : ‘শিফাউস্ সিকাম ৪৫

*৫. শায়খুল ইসলাম আল-বুলকিনী : ফতোওয়ায়ে সিরাজিয়া ১/১৪০

*৬.ইবনে হাজর রচিত ‘আফদালুল কোরা

*৭.আবূ নুয়াইম : ‘হিলইয়াতুল আউলিয়া,

*৮. শায়খ ইউসূফ নাবাহানী :

জাওয়াহিরুল বিহার : ২/১১৪ ও ৪/১৬০

*৯. ইবনে কাসীর : কাসাসুল আম্বিয়া : ১/২৯ পৃ:

*১০.ইবনে কাসীর : সিরাতে নববিয়্যাহ : ১/৩২০

*১১. ইবনে কাসীর :মুজিযাতুন্নবী (দরুদ ) : ১/৪৪১

*১২. ইবনে হাজর আসকালানি : লিসানুল মিযান : ৪/৩৫৪,রাবী, ১০৪০।

*১৩.ইবনে হাজর আসকালানী রচিত ‘আফদাল আল-কুরআন’; ১/১৮৯।

ইমাম কুস্তালানী : মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া; ১/১৮

ইবনে হাজার হাইসামী : শরহে শামায়েল, ১/১৪২।

*১৩. ইমাম যাহাবী : মিজানুল ইতিদাল : ৫/২৯৯, রাবী নং ৬৩৩৬

*১৪. ইবনে হাজর হায়সামী : শরহে শামায়েল : ১/৪২

*১৫. ইমাম যুরকানী :শরহে মাওয়াহিব : ১/১২/২২০

*১৬. আবু সাদ ইব্রাহীম নিশাপুরী : শরহে মোস্তফা : ১/১৬৫

*১৭. খাসায়েসুল কুবরা : ১/১৪ : হাদিস ২১

*২৮. ইমাম ইবনে হাইয়্যান : ‘তাবকাত আল-ইসফাহানী : ৩/২৮৭

*২৯. কানযুল উম্মাল- হাদীস ৩২০২২

*৩০.মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১

*৩১. মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১/২৯৫, হাদিস : ৩৮৫

*৩২. ইবনে শামী সালেহ : সুবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ : ১২/৪০৩

💟হাদিসের মান পর্যালোচনা💟


*১.ইমাম হাকিম তাঁর ‘মোসতাদরেক’ গ্রন্থে তাঁর তাহকিকে হাদিসটিকে সহিহ্ সাব্যস্থ করেছেন।

আল মোসতাদরেক’ হাকিম: ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭


*২.ইমাম দায়লামী : হাদিসটির মান সনদের দিক থেকে হাসান।

আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২


*৩.আরও অসংখ্য ইমাম, ইমাম হাকিম রহ. এঁর রায়কে গ্রহণ করেছেন।অপরদিকে, কেবলমাত্র ইমাম যাহাবী (রহ:) উক্ত রায়ের বিপরীত বলেছেন।তিনি বিপরীত বলার কারন স্বরুপ বলেন :উক্ত হাদিসের একজন রাবী ‘আমর ইবনূ আউস আল আনসারী’ ‘অপরিচিত’।

একজন রাবী অপরিচিত হওয়াতে একটি হাদিস জাল কোনভাবেই হতে পারে না।উক্ত রাবী ইমাম যাহাবী (রহ:)এর দৃষ্টিতে অপরিচিত।অথচ তাঁর চেয়ে উঁচু স্তরের ইমামগণ উক্ত হাদিসকে সহিহ্ ও উক্ত রাবী (আমর ইবনূ আউস) কে সিকাহ্ বলেছেন।


*৪.বিশ্ববিখ্যাত রিযাল গ্রন্থ ‘তাহযিবুল কামাল ফি আসমাউর রিযাল’ এ বলা হয়েছে, উক্ত রাবী সিকাহ্ বা বিশ্বস্থ।


*৫. ইমাম ইবনে হিব্বান, ইমাম বুখারি, ইমাম আবু নুআইম (রহ:)ও তাঁকে সিকাহ্ বলেছে।

[ইমাম মিযযী : তাহযিবুল কামাল ফি আসমাউর রিযাল; ১৪/১৭৭, রাবী নং : ৪৯১৩]


*৬. তদুপরি,আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:) উক্ত রাবীকে সিকাহ্ বা বিশ্বস্থ বলেছেন।

[ইবনু হাজর আসকালানী : তাকরীবুত তাহযীব; ১/৪৩৬]

বুঝা গেল ইমাম যাহাবী (রহ:) এর নিকট উক্ত রাবী অপরিচিত হলেও আর কারো নিকট পরিচিত হবেন না এমন নয়।আর ইমাম যাহাবী (রহ:) উক্ত রাবীকে মিথ্যাবাদী বলেন নি; বলেছেন,অপরিচিত।


✌সুতরাং হাদিসটি নি:সন্দেহে সহিহ্ এর মান রাখে। আর হাদিসটি যেহেতু আমল ও আহকাম সম্পর্কিত নয়, সেহেতু ‘হাসান’ বলে মানতে ও বিশ্বাস করতে সমস্যা নেই।


★৩০. এবার আমি তাবলীগ জামাতের ‘ফাজায়েলে আমল’ গ্রন্থ থেকে একটি প্রমান দিব।সেখানে একটি শিরোনাম দেওয়া হয়েছে কোন ‘আমালে আদাম (আ:)-এঁর তাওবাহ কবূল হলোঃ

“হযরত ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হুজুরে পাক (ﷺ) বলেন, যখন হযরত আদম (আঃ) হইতে কিছুটা পদস্খলন হইয়া গেল যাহার দরুণ তিনি বেহেশত হইতে দুনিয়াতে প্রেরিত হইলেন,তখন তিঁনি সব সময় কান্নাকাটি ও এস্তেগফার করিতে থাকেন।একদিন তিঁনি আসমানের দিকে মুখ উঠাইয়া আরজ করিলেন হে আল্লাহ! মোহাম্মাদ (ﷺ)-এঁর উছিলায় আঁমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি।ওহী নাজিল হইল, মোহাম্মদ (ﷺ) কে? যাহার উছিলায় তুমি ক্ষমা চাহিতেছ? হযরত আদম (আঃ) বলিলেন- যখন আঁপনি আমাকে সৃষ্টি করেন তখন আমি আরশের উপর লিখিত দেখিয়াছিলাম ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ’, তখনই আমি বুঝিতে পারিয়াছিলাম মোহাম্মদ(ﷺ) হইতে অধিক মর্যাদাশীল আর কেহই হইবে না,যেহেতু আঁপনি তাহার নাম নিঁজের নামের সঙ্গে রাখিয়াছেন।ওহী হইল হে আদম! তিঁনি আখেরী নবী এবং তিঁনি তোমার আওলাদভূক্ত হইবেন অথচ তিনি না হইলে তোমাকেও পায়দা করতাম না”-।

📚দলিল

মৌ:মোহম্মদ জাকারিয়া,ফাজায়েলে আমল; খণ্ড ‘ফাজায়েলে জিকির’, পৃষ্ঠা ৩১৫ (বাংলা), পরিবেশনায় তাবলিগী কুতুবখানা / ফাউণ্ডেশন।

তাবারানী; সাগীর,২/৮২,২০৭।


★৩১. ইবনে আসাকির (রহ:) উদ্ধৃত করেন হযরত সালমান ফারিসী (রা:)-কে, যিনি বলেন: “হযূর পূর নূর (ﷺ)-এঁর কাছে জিবরীল আমীন (আ:) এসে পৌঁছে দেন আল্লাহর বাণী, ‘(হে রাসূল) আঁপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত আর কাউকেই আঁমি সৃষ্টি করিনি।আঁমি বিশ্বজগতও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার সবই সৃষ্টি করেছি যাতে তারা জানতে পারে আঁপনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে। আঁমি এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করতাম না, যদি আঁপনাকে সৃষ্টি না করতাম’।”

📚দলিল

*১.ইবনে আসাকির : তারিখে দামেস্ক : ৩/৫১৭

*২. মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১

৩. ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব : ১/১৮২

৪. ইমাম নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ২/২৮৯

*৫.কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ২/১০৫

★৩২.তাবেয়ী হযরত কাবুল আহবার (রা) থেকে বর্নিত,(বিশাল বর্ননার পর)…


আরও খবর

মাইজভান্ডারির মোনাজাত

বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫




ডোপ টেস্ট দিয়ে শাবিপ্রবিতে ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

২০১৯-২০ সেশন থেকে ষষ্ঠবারের মতো ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে এ ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, অনেক শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ জানা থাকে না। সেজন্য প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন সঞ্চালন রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের পরীক্ষা করছে। এরপর ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। এ টেস্টে কোন শিক্ষার্থী পজিটিভ হলে তাকে কাউন্সেলিং করা হবে।

এবার ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস পদ্ধতিতে। ভর্তি কার্যক্রমে সাতটি ধাপের মধ্যে রক্ত পরীক্ষা, ডোপ টেস্ট, স্বাক্ষর যাচাই, তথ্য যাচাই ও রেজিস্ট্রেশন, ভর্তি ফি প্রদান, চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন যাচাই এবং হল সংযুক্তিসহ আবাসন আবেদন রয়েছে।

এদিকে প্রথমদিন ইউনিটে (বিজ্ঞান) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে মেধাক্রম ১ থেকে ৫০০ পর্যন্ত ডাকা হয়েছে। দ্বিতীয় দিন বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম। এদিন ৫০১ থেকে ৯৫৫তম শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে। একই দিনে স্থাপত্য বিভাগে ১ থেকে ৩০তম শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে।

ভর্তির তারিখ ও ফি পরিবর্তন

১৭ এপ্রিল বি ইউনিটের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি কার্যক্রম অনিবার্য কারণে পরিবর্তন করে ২২ এপ্রিল পুননির্ধারণ করা হয়েছে। এবার কোটাসহ ২৮টি বিভাগে এবার মোট আসন এক হাজার ৬৭১টি।

অন্যদিকে গত শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক জরুরী একাডেমিক কাউন্সিলে ২০২৪-২৫ সেশনে ভর্তি ফি পুনর্বিবেচনা করে ১৪ হাজার ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা এর আগে ছিল ১৭ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ সেশন ভর্তি ফি ছিল ১৮ হাজার টাকা। ফলে এবার ভর্তি ফি কমেছে ৩ হাজার ১০০টাকা।


আরও খবর

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দাবি

মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫




উখিয়ায় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে সাংবাদিকের বাড়ি দখলের চেষ্টা

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

কক্সবাজারের উখিয়ায় একটি পরিকল্পিত, বর্বর ও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও পরিচ্ছন্ন সাংবাদিকতার প্রতীক জসিম আজাদ। ভূমিদস্যু ও চাঁদাবাজদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র রবিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে তার রত্নাপালং ইউনিয়নের টেকপাড়াস্থ বসতবাড়িতে ঢুকে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারধর করে এবং বাড়ি থেকে জোর করে উচ্ছেদের চেষ্টা চালায়। নেতৃত্বে ছিলেন কুখ্যাত চাঁদাবাজ ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাফুজ উদ্দিন বাবু।


স্থানীয় সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে বাবু ও তার দলবল জসিম আজাদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছিল। জসিম আজাদ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ও তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, প্রাণনাশের হুমকি দেয়, এমনকি জমি ও বসতঘর দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় “জমি আমাদের, তুই এখানে থাকতে পারবি না” বলে চিৎকার করতে থাকে হামলাকারীরা।


জসিম আজাদ জানান, “বাবু নিজে এসে বলে, পাঁচ লাখ টাকা দিলে তোকে থাকতে দিব, না দিলে জোর করে বাড়ি থেকে তুলে দেব। আমি অপারগতা জানালে ওরা আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তোলে, আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।”


তিনি এ ঘটনায় বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০২৩ সালের ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’-এ মামলা দায়ের করেছেন। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে রত্নাপালংয়ের মৃত মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে তাইমুন উদ্দিন (২৮), তাইফুর উদ্দিন (৩৬), মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে মাহাফুজ উদ্দিন বাবু (৪২), হলদিয়া পালংয়ের মৃত মীর কাশেম চৌধুরীর ছেলে আলা উদ্দিন চৌধুরী (৫৮) এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জন সন্ত্রাসীকে।


অভিযুক্ত বিএনপি নেতা বাবু নিজের দায় অস্বীকার করে বলেন, “আমি নিরপেক্ষ বিচারকের ভূমিকায় ছিলাম।” এটি একধরনের হাস্যকর, ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য ছাড়া কিছু নয়। একজন মানুষ বাড়ি দখল, চাঁদা দাবি এবং নারীর ওপর হামলার সময় “বিচারক” হয়ে উপস্থিত থাকে—এই কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরং বাবুর এই বক্তব্যই প্রমাণ করে, সে পুরো ঘটনার নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ড।


স্থানীয়রা বলছে, উখিয়ায় বিএনপির একাংশ এখন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা। কেউ মুখ খুললেই তার উপর নেমে আসে হামলা, মিথ্যা মামলা কিংবা হত্যার হুমকি। এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে, জসিম আজাদকে ঠাণ্ডা মাথায় টার্গেট করা হয়েছে, কারণ তিনি মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন।


এটি শুধুমাত্র একজন সাংবাদিকের উপর হামলা নয়, এটি মুক্ত সাংবাদিকতা, সত্য প্রকাশ এবং জনস্বার্থে কাজ করা সকল মানুষের উপর সশস্ত্র আগ্রাসন। যারা এই হামলায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে সাংবাদিক সমাজসহ সকল বিবেকবান নাগরিক।


তাদের প্রশ্ন, প্রশাসন কি নীরব দর্শক হয়ে থাকবে? নাকি এই ভূমিদস্যু-চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে প্রমাণ করবে যে রাষ্ট্র এখনো আইনের শাসনে বিশ্বাস করে?


আরও খবর



ইসরায়েলি হামলায় আরো ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরো অন্তত ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বর্বর এ হামলায় আহত হয়েছেন শতাধিক। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে এবং সোমবার ভোর থেকে নিরলস হামলায় কমপক্ষে আরো ৬০ জন নিহত হয়েছেন।

এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল পুনরায় হামলা শুরু করার পর থেকে ৪ লাখেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

এর মধ্যে দেইর আল-বালাহতে একটি বাড়িতে হামলায় নিহত ৯ জন এবং খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের কাছে একটি তাঁবুতে বোমা হামলায় নিহত তিনজনও রয়েছেন।

পৃথক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা আনাদোলু বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরো ৫৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ৭৫২ জনে পৌঁছেছে বলে সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরো ১৩৭ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৭৫ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।


আরও খবর



রাজধানীবাসী ৯ বছরে ৩১ দিন নির্মল বাতাস পেয়েছে

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৫ এপ্রিল 20২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

গত নয় বছরে তিন হাজার ১১৪ দিনের মধ্যে মাত্র ৩১ দিন নির্মল বা ভালো বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পেরেছে রাজধানীর মানুষ। অর্থাৎ বছরের মাত্র এক শতাংশ সময় ঢাকাবাসী বিশুদ্ধ বাতাস পাচ্ছে। অন্যদিকে বছরের অর্ধেকের বেশি সময় অস্বাস্থ্যকর, চরম অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ণ বাতাস ফুসফুসে টেনে নিচ্ছে ঢাকাবাসী।

'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ২০২৫: বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, 'বায়ুদূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বৃদ্ধ ও শিশুরা। আমরা বৃদ্ধরা তো কয়েকদিন পর মরেই যাব। কিন্তু আগামী দিনের নাগরিক শিশুদের অবস্থাটা কি হবে? আমাদের বর্তমান পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন।তিনি (অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে) দায়িত্ব নেওয়ার শুরুতে যে ভাষায় কথা বলতেন, এখন কিন্তু তা পারছেন না। এটা বাস্তবতা।'

নুর মোহাম্মদ বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা দীর্ঘদিন থেকে বলা হচ্ছে। এটা কারা করতে দিচ্ছে না, কেন করতে দিচ্ছে না? সৌরবিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বাধা আসছে।

বাধা দিচ্ছেন যারা বিদ্যুত (ব্যবসা) নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা এদেশের সবচেয়ে বড় পুঁজিপতি। যারা পরিবর্তন করতে দিতে চান সেই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। এজন্য বৃহত্তর আন্দোলন দরকার।

সংবাদ সম্মেলনের বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ভূমিকা নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।

প্রবন্ধে তিনি ঢাকার আমেরিকান দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত ২০১৬ হতে ২০২৪ সালের বায়ুমানসূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) ও তথ্য‌-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে রাজধানীর বায়ুদূষণের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নয় বছরের তিন হাজার ১১৪ দিনের মধ্যে ঢাকাবাসী মাত্র ৩১ দিন নির্মল বায়ু সেবন করতে পেরেছে। এসময় রাজধানীতে সহনীয় বা গ্রহণযোগ্য মানের বাতাস ছিল ৬২৪ দিন যা মোট দিনের ২০ শতাংশ। ২৮ শতাংশ সময়জুড়ে অর্থাৎ, ৮৭৮ দিন রাজধানীর বাতাস ছিল সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর।

গত নয় বছরে ৮৫৩ দিন অস্বাস্থ্যকর ও ৬৩৫ দিন খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাস ছিল রাজধানীতে যা মোট সময়ের ৪৮ শতাংশ। এসময় ঢাকার বাসিন্দারা সবচেয়ে খারাপ অর্থাৎ দুর্যোগপূর্ণ বাতাস সেবন করেছে ৯৩ দিন যা মোট দিনের ৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৪ দিন ছিল অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ন যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ দিনে।

প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে তা ভালো বা বিশুদ্ধ বাতাস। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে সহনীয় বা গ্রহণযোগ্য। সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালেই সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ বিবেচিত।

সংবাদ সম্মেলনে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার-এর বরাত দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি। ২০২১ ও ২০২৩ সালে বায়ুদূষণে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল প্রথম। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় ও দূষিত শহর হিসেবে ঢাকার অবস্থান ছিল তৃতীয়।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে বায়ু দূষণের কারণে ২ লাখ ৩৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) এর গবেষণা বলছে, বায়ুদূষণে দেশে প্রতিবছর ৫ হাজার ২৫৮ শিশুসহ এক লাখ ২ হাজার ৪৫৬ জনের অকালমৃত্যু ঘটে। এক‌ই সঙ্গে তা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার নিয়ে অধ্যাপক কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, 'জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর প্রভাব রোধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর শতভাগ নিশ্চিত করতে পারলেই নির্মল বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি বলতে বোঝায় সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ, ভূ-তাপীয় শক্তি ও বায়োমাস শক্তির মতো প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত শক্তি, যা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ে, যা গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টি করে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করলে কার্বন নিঃসরণ প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব।'

বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, যানবাহনের ধোঁয়া বা অন্যান্য স্থানীয় উৎস ছাড়াও বায়ুদূষণের একটি বড় উৎস আন্তদেশীয় দূষণ। এই দূষণের পরিমাণ অনেক বেশি। এর ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বাংলাদেশে দূষণের সব উৎস বন্ধ করলেও এটা থেকে মুক্তি নেই। এর জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বর্তমান পরিবেশবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান যখন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন তখন যে গতি ছিল, এখন তা দেখা যাচ্ছে না কেন- এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বাপার সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির বলেন, 'খাঁটি বাংলায় বললে, আমরা একটা গ্যাঁড়াকলের মধ্যে আছি। আমরা (পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে) দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর রাজপথে একসঙ্গে এই ইস্যুগুলো নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছি। ফলে আমরা বলছি, রিজ‌ওয়ানা আপাকে ব্যর্থ হ‌ওয়া যাবে না। কারণ, উনি আবার যখন (পরিবেশ আন্দোলনকর্মী হিসেবে) ফিরে আসবেন তখন আমাদের কথা মানুষ শুনবে না। (মানুষ বলবে) আপনি তো ছিলেন ক্ষমতায়, আপনি তো পারেননি।'

এসময় সংবাদ সম্মেলন থেকে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতি আটটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। উল্লেখযোগ্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে মেয়াদউত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন বন্ধ করে বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড যানবাহনের ব্যবহার বাড়ানো, ইটের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব ব্লকের ব্যবহার বাড়ানো, বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ ও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, বিদ্যমান জ্বালানি নীতিগুলো সংশোধন ও নির্মল বায়ু আইন প্রণয়ন করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্প কারখানায় বিশ্বমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নিঃসরণমান নির্ধারণ ও এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা।


আরও খবর



পাকিস্তানকে সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও দেবে না ভারত

প্রকাশিত:শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও যেন পাকিস্তানে না যায় সেই ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ভারত। ২৫ এপ্রিল দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সঙ্গে বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেন ভারতের জলশক্তিমন্ত্রী সিআর পাতিল। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে দেয়া পোস্টে সিআর পতিল লেখেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সঙ্গে বৈঠকে একটি রোপম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। বৈঠকে তিনটি অপশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকার স্বল্পকালীন, মধ্যকালীন এবং দীর্ঘকালীন ব্যবস্থার ওপর কাজ করছে যেন পাকিস্তানে এক ফোঁটা পানিও না যায়। শিগগিরই নদীর প্রবাহ বন্ধ করতে ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন হবে এবং প্রবাহ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়া হবে।”

২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগ্রামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। যার মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি। এটি ২০১৯ সালের পর ভারত-শাসিত কাশ্মীরে সবচেয়ে মারাত্মক হামলার ঘটনা।

এই হামলার পর ভারতীয়রা প্রতিবেশী পাকিস্তানকে দুষছে। দেশটির বিরুদ্ধে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। তার মধ্যে একটি হলো পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদ পানি চুক্তি স্থগিত করা। যদিও এ মুহূর্তে সিন্ধু নদের পানি প্রবাহ আটকানোর মতো অবকাঠামো ভারতের নেই। তবে পানির প্রবাহ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জলশক্তিমন্ত্রী সিআর পাতিল।

এছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে নেয়া পদক্ষেপ নিয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সংসদ ভবনে সর্বদলীয় বৈঠকে হয়। বৈঠকে বিরোধীরা ভারতের যদি পর্যাপ্ত জলাধার না থাকে, তবে কেন সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করা হলো তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। জবাবে সরকার পক্ষ জানায়, এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক ফলের জন্য নয়, বরং এটি একটি প্রতীকী ও কৌশলগত পদক্ষেপ।

এদিকে পাকিস্তান হুমকি দিয়ে বলেছে, যদি সিন্ধু নদের পানির প্রবাহ বন্ধের চেষ্টা চালানো হয় তাহলে এটিকে তারা যুদ্ধের কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করবে এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

শুক্রবার সিনেট অধিবেশনে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানের জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এগুলো ভারতের ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য।

অতীতের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে ভারতকে সতর্ক করেন ইসহাক দার। বলেন, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ‘সম্পূর্ণ প্রস্তুত’। যেকোনো শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডের চূড়ান্ত জবাব দেয়া হবে।


আরও খবর