Logo
শিরোনাম

সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামী বাবুর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

জামালপুর প্রতিনিধি :

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বহিস্কৃত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে পরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামী আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেফতারের দাবি জানান।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজীউর রহমান মোল্লা, সহ-সভাপতি রাশেদুজ্জামান সোনা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন খান ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আনার আলী প্রমূখ। মানববন্ধনে নাদিমের বাবা, স্ত্রী ও সন্তানরাসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন খান বলেন,মাহমুদুল আলম বাবুর ভাই পুলিশের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তার দাপটে নানা অপকর্ম করেছেন খুনী বাবু। এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। আবারও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার দখলের পাঁয়তারা করছেন। দ্রুত বাবুকে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানান তিনি।

উল্লেখ্য,২০২৩ সালের ১৪ জুন পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে নিজ বাসায় ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। পথে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পাটহাটি এলাকায় তাঁর ওপর হামলা হয়। তাঁকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে হামলাকারীরা। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে জামালপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। জামালপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জুন বিকেল ৩ টার দিকে মারা যান সাংবাদিক নাদিম। এ ঘটনায় ১৭ জুন ২২ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ২০ থেকে ২৫ জনকে। মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু।


আরও খবর



আবার নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-পাকিস্তান গোলাগুলি

প্রকাশিত:শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে।সম্প্রতি ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহাড়ি শহর পহেলগামের কাছে এক সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হওয়ায় চলমান উত্তেজনার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ভারত ও পাকিস্তান ২০২১ সালে এই অঞ্চলে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। তবে এর পরেও একাধিকবার এই চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে।

গতকাল ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের এক কর্মকর্তাও রাতভর দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিয়ন্ত্রণরেখার ঠিক কোন এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে পৃথক গোলাগুলির ঘটনায় বান্দিপোরায় দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ঝিলম উপত্যকা জেলার ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা সৈয়দ আশফাক গিলানি বলেন, লিপা উপত্যকায় রাতভর পোস্ট-টু-পোস্ট গুলিবর্ষণ চলছে। তিনি বলেন, বেসামরিক জনগণের উপর কোনও গুলিবর্ষণ হয়নি। জীবনযাপন স্বাভাবিকভাবে চলছে। স্কুল খোলা রয়েছে।

পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রশাসনিক কেন্দ্র মুজাফ্ফরাবাদ শহর থেকে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার পূর্বে ভারতের সাথে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর অবস্থিত লিপা উপত্যকা।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হওয়ার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ১৯৭২ সালে নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদের মধ্যে একটি চুক্তি যুদ্ধবিরতির সময়কার রেখাকে সামরিকায়িত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) রূপান্তরিত করে।

এই অঞ্চল নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ একাধিক যুদ্ধ করেছে এবং আরও বেশ কয়েকটি ছোট সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। তবে ২০১৯ সালে কাশ্মীরে একটি গাড়ি বোমা হামলায় অন্তত ৪০ জন ভারতীয় আধাসামরিক পুলিশ নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে সবচেয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তার দুই বছর পর ২০২১ সালে উত্তেজনা কমে আসলে দুই দেশই আবার এলওসি দ্বারা বহাল যুদ যুদ্ধবিরতিতে ফিরে যায়।


আরও খবর



অলিম্পিয়াডের আদলে জাতীয় পর্যায়ে শুরু হচ্ছে এমওএস

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

অলিম্পিয়াডের আদলে জাতীয় পর্যায়ে আগামী ১০ মে থেকে প্রথমবারে শুরু হচ্ছে মাইক্রোসফট অফিস স্পেশালিস্ট বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ (MOS)।

রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন ক্যাটগরিতে অনুষ্ঠিত হবে এই প্রতিযোগিতা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস প্রফেশনালস, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩০০ জন। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে গ্রুমিং শেসন। এজন্য ইউটিউবে মাইক্রসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ার পয়েন্ট প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন টিউটোরিয়াল। প্রতিযোগিতার কাঠামো অনুযায়ী, বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ তিনজনকে “চ্যাম্পিয়ন” হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। সেখান থেকে জাতীয় পর্যায়ের জন্য বাছাই করা হবে শীর্ষ ১০ জনকে। জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ীরা পাবেন মাইক্রোসফট সার্টিফিকেশন অর্জনের সুযোগ। এ ছাড়া এলএস (লং লিস্টেড) প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে সেরা ৩ জনকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ‘গালা রাউন্ড’, যার আগে আয়োজন করা হবে একটি বিশেষ গ্রুমিং সেশন। গালা রাউন্ডের বিজয়ীরা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রতিযোগিতার মোট পুরস্কার মূল্য যুক্তরাষ্ট্র সফরসহ ২০ লক্ষ টাকা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম স্থানের জন্য ৮,০০০ ডলার, দ্বিতীয় স্থান ৪,০০০ ডলার এবং তৃতীয় স্থান ২,০০০ ডলার পাবেন।

ব্যক্তিগত ইমেইল ও ফোন নম্বর দিয়ে ক্যারিয়ার গঠনের ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ভি-টিউটরের ওয়েবে নিবন্ধন করে বাংলাদেশের ১৩ থেকে ২২ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। অংশগ্রহণকারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকলেও নিবন্ধন ফি হিসেবে দিতে হবে ৩০০ টাকা। দ্বিতীয় রাউন্ড চলবে ২১ মে পর্যন্ত। জাতীয় রাউন্ড হবে ২৩ মে এবং ২৪ মে গালা রাউন্ড।

বুধবার (৭ মে) সকালে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তুলে ধরেন ভি টিউটরের কো-ফাউন্ডার ও চিফ লার্নিং অফিসার কাজী শামীম।

এ সময় প্রতিযোগিতার লোগো উন্মোচন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোশতাক জহির। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ (এমডিপি) চেয়ারম্যান ড. রিদওয়ানুল হক, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্চিনিয়ারিং-এর ডিন ড. আহমেদ ওয়াসিফ রেজা এবং আয়োজনের প্রধান স্পন্সর মেঘনা গ্রুপ অফ ইনডাস্ট্রিজ-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী মো. মহিউদ্দিন ও হসপিটালিটি পার্টনার রেডিসন ব্লু-র সেলস ও মার্কেটিং পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে ডিজিটাল দক্ষতায় পারদর্শী ও আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বক্তারা। এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোশতাক জহির তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুথবদ্ধ মেলবন্ধনের ও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, তরুণদের শিক্ষাগত যোগ্যতার চেয়ে সামনের দিনে দক্ষতাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হবে। এআই এর মতো ভবিষ্যতমুখী সফটস্কিল রপ্ত করতে হবে। এজন্য আমাদের মন্ত্রণালয় এ ধরনের উদ্যোগে সবসময় পাশে থাকে। আমার বিশ্বাস, এই উদ্যোগ ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান ও উচ্চশিক্ষার জন্য তরুণদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডিজিটাল দক্ষতায় প্রস্তুত ও সার্টিফাইড করা এবং বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে গ্লোবাল আইটি প্রতিযোগিতায় নেতৃত্ব দেওয়ার পথে এগিয়ে নেবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেদোয়ান হক বলেন, ৩৭তম বিসিএসে এত বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ হয়েছিল যে তা ব্রুনাইয়ের জনসংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এই প্রবণতা আমাদের জনশক্তিকে অকার্যকর করে তুলছে। আমাদের নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, বদলাতে হবে চিন্তাধারা।

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের ডিন ড. ওয়াসিফ রেজা বলেন, “এই উদ্যোগ দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি যুগান্তকরী পরিবর্তন আনবে। তরুণদের প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলার পথে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

মেঘনা গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ কাজী মোহাম্মদ মোহিউদ্দিন বলেন, “বর্তমান পৃথিবীতে শুধু জ্ঞান নয়, দক্ষতা বা স্কিলসও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি, তরুণরাই আগামী দিনের নেতৃত্ব দেবে।”

চিফ ইয়ুথ অ্যাডভাইজার কাজী মুস্তাক জহির বলেন, “এই সরকার এখন পর্যন্ত বড়দের জন্য ৫০,০০০ এবং ছোটদের জন্য ২,০০,০০০-এর বেশি প্রযুক্তিভিত্তিক ইভেন্ট আয়োজন করেছে। তরুণরাই আমাদের পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। আমি বিশ্বাস করি, তারাই আগামী দিনের প্রযুক্তিগত বিপ্লব ঘটাবে। এই বিপ্লব ঘটাতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।


আরও খবর



জনসমর্থন নেই-এমন কাজ করলে ব্যবস্থা

প্রকাশিত:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫ |

Image

জনগণের সমর্থন নেই– এমন কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, রাজনীতিতে ধীরে ধীরে অদৃশ্য শক্তি দৃশ্যমান হচ্ছে। ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রকারীরাও সক্রিয় হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জনসমর্থন নেই এমন কাজ দলের কেউ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার রংপুর বিভাগের তিন জেলা– লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখার ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এ কর্মশালা আয়োজন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি।

তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচারের ভয়ে কেউ যখন কথা বলতে সাহস পায়নি, তখন আওয়ামী লীগের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল বিএনপি। ৩১ দফা দেশ ও জাতির জন্য বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজনীতিবিদসহ পেশাজীবীরা এটি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবেন। যে কোনো মূল্যে আমাদের সুদৃঢ় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে ইস্পাত-দৃঢ় ঐক্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে। না হলে সব অর্জন ব্যর্থ হবে।

তিনি বলেন, তিস্তা নদী নিয়ে বহু রাজনীতি হয়েছে। কিন্তু বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে এ দেশের মানুষের কষ্ট লাঘবের লক্ষ্যে। তিস্তা নদী ঘিরে প্রায় তিন কোটি মানুষের জীবনে প্রভাব পড়ে। কখনও অতিরিক্ত পানি, কখনও পানির তীব্র সংকট। খালখনন ও নদীশাসন আমাদের করতে হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ সুবিধা এবং পানির সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বিএনপি সরকার গঠনের সুযোগ পেলে এ কাজ যে কোনো মূল্যে শুরু করবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কৃষক যেন শুষ্ক মৌসুমে পানি ব্যবহার করতে পারে, বন্যার ক্ষতি থেকে মানুষ যেন রক্ষা পায়, সেজন্য পরিকল্পিতভাবে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করব।

কর্মশালায় নেতাকর্মীর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আয়তনে বড় না হলেও জনসংখ্যার ভিত্তিতে একটি বড় দেশ। এ দেশের প্রতিটি অঞ্চলের রয়েছে আলাদা কৃষ্টি ও সংস্কৃতি, যা আমাদের জাতিগত ঐতিহ্য। বিএনপি অতীতে ক্ষমতায় থাকাকালে সংস্কৃতি বিকাশে নানা উদ্যোগ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।

তারেক রহমান আরও বলেন, সংস্কৃতি ও খেলাধুলাকে প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে, যাতে শিশুরা মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

এর আগে সকালে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে কর্মশালা উদ্বোধন করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন শ্যামলের সঞ্চালনায় কর্মশালায় সাবেক তিন সংসদ সদস্য– রাশেদা বেগম হীরা, নেওয়াজ হালিমা আরলি, শাম্মী আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



এই প্রজন্মই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ

প্রকাশিত:শনিবার ১০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

এই প্রজন্মই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে ‘কয়েকটি কথা’ শিরোনামে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন।

মাহফুজ আলম লিখেছেন, একটি দলের অ্যাক্টিভিস্টরা বারবার লীগ নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ছাত্ররা রাজি ছিল না, এটা বলে বেড়াচ্ছেন। মিথ্যা কথা। ক্যাবিনেটে প্রথম মিটিং ছিল আমার। আমি স্পষ্টভাবে এই আইনের অনেকগুলো ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। নাহিদ-আসিফও আমার পক্ষে ছিল স্বভাবতই।

তিনি আরও লিখেছেন, দল হিসেবে বিচারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলে একজন প্রবীণ উপদেষ্টার জবাব ছিল ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মতো পশ্চাৎপদ উদাহরণ আমরা আমলে নিতে পারি কি না। পরবর্তীতে দল হিসেবে লীগকে নিষিদ্ধ করার কয়েকটা আইনি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রাথমিক ঐকমত্য হয় যে, ফ্যাসিবাদ দূর করতে ও ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে আমরা সেগুলো অনুসরণ করব। গতকাল বিকালে কথা হয়েছে। দল হিসেবে লীগের বিচারের প্রভিশন অচিরেই যুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা। উনাকে ধন্যবাদ।

অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা লিখেছেন, মিথ্যা বলা বন্ধ করুন। ঘোষণাপত্র নিয়ে আপনাদের দুই মাস টালবাহানা নিয়ে আমরা বলব। ছাত্রদের দল ঘোষণার প্রাক্কালে আপনারা দলীয় বয়ানের একটি ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন। সমস্যা নেই, আমরাও চাই সবাই স্বীকৃত হোক। কিন্তু, এখন সেটাও হতে দেবেন না। দোষ আমাদেরও কম না। আমরা আপনাদের দলীয় প্রধানের আশ্বাসে আস্থা রেখেছিলাম।

তিনি লিখেছেন, পুনশ্চ: আমরা নির্বাচন পেছাতে চাইনা। ডিসেম্বর টু জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই। আপনারা যদি মনে করেন, ছাত্ররা নিজেদের আদর্শ ও পরিকল্পনা নিতে পারে না বরং এখান থেকে ওখান থেকে অহি আসলে আমরা কিছু করি, তাহলে আপনারা হয় ছাত্রদের খাটো করে দেখছেন, নয়তো ছাত্রদের ডিলেজিটিমাইজ করার পরিকল্পনায় আছেন।

মাহফুজ আলম লিখেছেন, সেই আগস্ট থেকেই আমরা জাতির জন্য যা ভালো মনে করেছি, সবার পরামর্শ নিয়েই করেছি। বরং, উক্ত দলকেই আমরা বেশি ভরসা করেছি। সবার আগে উনাদের সঙ্গেই পরামর্শ করেছি। ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব। সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ!

আমরা উক্ত দলকে বিশ্বাস করতে চাই উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও লিখেছেন, উক্ত দলের প্রধানকে আমরা বিশ্বাস করতে চাই। উনি আমাদের বিশ্বাসের মূল্য দিয়ে লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ও ঘোষণাপত্র প্রকাশে দেশপ্রেমিক ও প্রাগমাটিক ভূমিকা রাখবেন বলেই আস্থা রাখি। উক্ত দলকে নিয়ে কে কি বলবে জানি না। কিন্তু আমরা চাই উক্ত দল ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে দেশের পক্ষে, অভ্যুত্থানের শত্রুদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐকমত্যের নেতৃত্ব দিক। দেশপ্রেমিক ও সার্বভৌমত্বের পক্ষের শক্তি হিসেবে নেতৃত্ব দিলে ছাত্ররা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উনাদের সঙ্গে চলবেন।

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ঐক্যবদ্ধ হোন। নেতৃত্ব দিন। এই প্রজন্মকে হতাশ করবেন না। এই প্রজন্ম দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।

প্রসঙ্গত, মাহফুজ আলম ২০২৪ এর জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। বর্তমানে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


আরও খবর



আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, এরপরে কে?

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

আলি শরিয়তির বিশ্লেষণ :

গত বছরের ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একই সঙ্গে এই ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ৫ আগস্টের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বারবার। কিন্তু সরকার এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। সম্ভবত দ্রুতই নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জানাবে। এর আগে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ও আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে। অর্থাৎ, আওয়ামী লীগের ডালপালা, কাণ্ড, পাতা এগুলো আগে ছাঁটাই করে, এরপরে মূল বা গোড়া ধরে টান দিবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করবে।

২.

পাকিস্তানের সামরিক শাসনামলে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এবং বাংলাদেশের সামরিক শাসনামলেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের জন্য এটা নতুন অভিজ্ঞতা নয়। গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে একটি সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটেছে, একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করেছে। যা মূলত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ৭ নভেম্বরের ধারাবাহিকতা। ফলে এই প্রতিক্রিয়াশীল চক্র সকল প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তিকে ধীরে ধীরে নিষিদ্ধ করবে, নির্যাতন করবে এবং নির্মূলের পথে যাবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশ আরও কিছু নতুন দৃশ্য দেখছে। যা বাংলাদেশ আগে কখনও দেখেনি।

প্রায় নয় মাস চলে গেছে, কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেনি। এখন কেন করছে বা করবে? এর পেছনের কিছু ঘটনা আছে। ইউনূস সরকার আগামী বছরের (২০২৬) সালের জুনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিবে বলে জানিয়েছে। সরকার চায় এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিক। সরকারের পরিকল্পনা হলো আওয়ামী লীগকে নির্যাতনের মাধ্যমে এতটা কোণঠাসা করে রাখা হবে যে, নির্বাচনে প্রার্থী খুঁজে পাবে না, কর্মী সমর্থক খুঁজে পাবে না। এরকম হা-পা বেঁধে নির্বাচনে আনতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের অবস্থান স্পষ্ট, তারা এরকম নির্বাচনে অংশ নিবে না এবং আরও একধাপ এগিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে যে, ড. ইউনূসের অধীনে কোন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিবে না। প্যাঁচটা এখানেই লেগেছে।

ড. ইউনূস চায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক। বিএনপি তো আসবেই। জামায়াত এবং এনসিপি তো আছেই। এই নির্বাচনী খেলায় ৪/৫টি আসন আওয়ামী লীগকে দিয়ে, ৮০/৮২টি আসন বিএনপিকে দিয়ে, কিছু খুচরা দলকে ১/২টা করে আসন দিয়ে, জামায়াতে ইসলামকে ৬০/৬১টি এবং এনসিপিকে ১৫১ এর বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতিয়ে আনবেন। নির্বাচন হবে একদম ১৯৭৯ সালের স্টাইলে। ষণ্ডা গুণ্ডা হোন্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা! 

এনসিপি সরকার গঠন করবে। সংরক্ষিত নারী আসন মিলিয়ে আসন সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। আর সংবিধান সংশোধনের জন্য জামায়াতের শর্তহীন পূর্ণ সমর্থন পাবে। নাহিদ ইসলাম প্রধানমন্ত্রী এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস হবেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।

কিন্তু আওয়ামী লীগ এই ফাঁদে পা দেয়নি। আর এজন্যই আওয়ামী লীগের উপরে নিষিদ্ধ সহ মামলা-হামলা-গ্রেফতার-চাঁদাবাজি ইত্যাদি নির্যাতনের মাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হচ্ছে। 

কিন্তু এরপরে কে?

৩.

জাতীয় পার্টি, জাসদ (ইনু), ওয়ার্কার্স পার্টি, তরিকত ফেডারেশন, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, জাপা (মঞ্জু), গণ আজাদী লীগ, ন্যাপ (মোজাফফর) প্রভৃতি দলগুলোকেও ক্রমান্বয়ে নিষিদ্ধ করা হবে।

তৃতীয় ধাপে কিছু সামাজিক ও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হবে, বা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে। যেমন- উদীচী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ ইত্যাদি থাকবে এই তালিকায়।

চতুর্থ ধাপে নিষিদ্ধ করবে চব্বিশের আন্দোলনকারী স্টেকহোল্ডার কিছু রাজনৈতিক দলকে। যেমন- সিপিবি, বাসদ, জাসদ(আম্বিয়া-প্রধান), জাসদ (রব) এরকম কিছু রাজনৈতিক দল ও দলগুলোর ছাত্র-যুব সংগঠন। গণসংহতি আন্দোলনও ২০১৩ সালের গণজাগরণে সম্পৃক্ত হবার কারণে নিষিদ্ধের তালিকায় যুক্ত হতে পারে।   

এভাবে প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী দলগুলোকে মোটামুটি নিষিদ্ধ করে ফেলবে। দেশে তখন একচেটিয়াভেব সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বাম্পার ফলন ফলবে।

ইতোমধ্যে সংসদ নির্বাচনের আলাপ থেমে যাবে। এগুলো ঘটবে ২০২৫ সালের মধ্যেই। এরপরে সুবিধামতো সময়ে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির দিকে ১৯৭৭ সালের আস্থা ভোটের মতো একটা নামকাওয়াস্তে গণভোট আয়োজন করে সরকারের ম্যান্ডেট নিয়ে নিবে। মনে রাখতে হবে ড. ইউনূস কিন্তু জিয়াউর রহমানের রাজনীতিই ফলো করতেছে। তাছাড়া বিএনপির প্রথম গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রের অন্যতম রচয়িতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাছাড়া সারাবিশ্বে সামাজিক ব্যবসার মতো ফটকা ব্যবসার তাবিজ বিক্রি করা ব্যক্তি তিনি। তাই এই মহাজনকে অতটা কাঁচা রাজনীতিক মনে করলে বোকামী হবে।

এভাবেই ইউনূস সাহেব তাঁর শাসনকাল চালিয়ে যাবেন।

৪.

যত সহজভাবে এগুলো লিখলাম বাস্তবেও কী এরকম সহজেই সবকিছু ঘটে যাবে? সহজেই ঘটে যেতে পারে আবার কঠিনও হতে পারে। তবে ঘটবেই, এটা নিশ্চিত। কারণ এই সরকার ওয়ান ইলেভেনের এক্সটেনশন সরকার। ২০০৭ সালে ইউনূস সাহেব মাত্র দুই বছরের জন্য প্রধান উপদেষ্টা হবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তাহলে কীভাবে বিশ্বাস করেন এখন তিনি ২ বছরেই ক্ষমতা ছেড়ে দিবে? পাগলের প্রলাপ, অসম্ভব। তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চান এবং আধুনিক বাংলাদেশের জাতির পিতা হতে চান। মাহাথির মোহাম্মদ ও লী কুয়ানের মতো। 

একটু আগে বলেছি কঠিনও হতে পারে। এই কঠিন হবে বিএনপির বাধা দিলে এবং তারা একপর্যায়ে বাধা দিবেও। তারেক রহমান ফিরলে ইউনূসের লক্ষ্য পূরণে সমস্যা হতে পারে, তারেক নিজেই দেশের ডানপন্থী রাজনৈতিক শক্তির প্রধান নেতা বনে যেতে পারেন; এবং আরও কিছু আশঙ্কায় ট্র্যাভেল পাশ থাকা সত্ত্বেও তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে দেয়নি ইউনূস। এরপরেও বিএনপি কান্নাকাটি করবে, নির্বাচন চাইবে, রাজপথে নামবে। কিন্তু ইউনূসের কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না। এই বাস্তবতা বুঝেই বিএনপির নেতারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিপক্ষে কথা বলেছে। বিএনপির জোটসঙ্গী দলগুলোকে নানারকম সুবিধা দিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে ইউনূস কাছে টেনে নিবে। মাঠে থাকবে বিএনপি একা। ইউনূস সরকার সম্ভবত বেগম খালেদা জিয়াকে সিনিয়র মন্ত্রীর মর্যাদায় বিশেষ দূত বানাবে। এতে বিএনপি আরও একধাপ দুর্বল হবে।

তাছাড়া নির্বাচনে জিতে নিশ্চিত মন্ত্রী ও এমপি হবে, এরকম বিএনপি নেতা ছাড়া বাদবাকী একজন বিএনপির কর্মীও নির্বাচন চায় না। কারণ তাদের আয় রোজগার এখন নির্বিঘ্নে চলছে, তাই তারা নির্বাচন নিয়ে একদমই আন্দোলনে আগ্রহী না। পরে যদি চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও লুটপাটের ক্ষেত্রগুলো ফসকে যায়! বিএনপি পড়বে মহাফ্যাসাদে।

তাছাড়া বিএনপিপন্থী সাবেক ও বর্তমান আমলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যে নিজেদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছেন, সবাই চেয়ারে বসেছেন। তাহলে নির্বাচনের দরকার কি? 

তবুও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আর যদি বেশি শক্তি দেখাতে চায়, তাহলে বিএনপির কপালেও নিষিদ্ধ হবার তকমা জুটবে। ইউনূস ক্ষমতায় থাকার জন্য যা করা দরকার সবই করবে। ফ্যাসিবাদ, জ#ঙ্গিবাদ ও নৈরাজ্যবাদ কাকে বলে ও কত প্রকার তা দেখিয়ে দেবে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারলে, বিএনপির মতো কিংস পার্টিকে নিষিদ্ধ করা ইউনূসের কাছে এক্কা দোক্কা খেলার মতোই পানিভাত।

৫.

জমায়াতে ইসলাম মহাখুশি, কারণ তাদের নেতাদের ফাঁসি ও কারাদণ্ডের বদলা নিতে পারছে, ইউনূস এটা নিশ্চিত করেছে। ইতোমধ্যে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে। দ্রুতই বিচার কার্য শুরু ও শেষ করবে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও জাতীয় নেতাদের ফাঁসির রায় দিয়ে দিবেন। সুযোগ পেলে ফাঁসি কার্যকরও করবেন। এটাই জামায়াতের একমাত্র চাওয়া। এনসিপি এমনিতেই ক্ষমতায় আছে এবং যদি পাতানো নির্বাচন হয় তাহলে নিশ্চিত ক্ষমতায় যাবে।

ইউনূসের উদ্দেশ্য পরিস্কার। পাতানো সংসদ নির্বাচনে এনসিপিকে ক্ষমতায় বসানো, অথবা গণভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার বৈধতা নিয়ে নেওয়া। দুটি প্রক্রিয়ার যেকোন একটি বাস্তবায়ন করেই তিনি ক্ষমতা উপভোগ করবেন।

তবে হ্যাঁ, একটা বাধা আছে। এখন পর্যন্ত এটাই বড় বাধা। সামরিক বাহিনী তথা জেনারেল ওয়াকার। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ, রাখাইনে মানবিক করিডোর, জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের অফিস স্থাপন, US Military Corps এর ঘাঁটি স্থাপন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেওয়া ইত্যাদি যখন সম্পন্ন হতে থাকবে ততদিনে সামরিক বাহিনী ও জেনারেল ওয়াকার সাহেবও নতজানু হয়ে যাবেন। গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য তাঁর তেমন কিছু করার থাকবে না। কারণ সময় গেলে সাধন হবে না।

শেষকথাঃ

যে কোন মূল্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় থাকবেন। এজন্য প্রধান বাধা আওয়ামী লীগ, তাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে ক্রমান্বয়ে বাধা হতে পারে এরকম অন্যান্য দলগুলোও নিষিদ্ধ করবে। গণতন্ত্রের কবর রচনা করে বাংলাদেশকে বানাবে পাকিস্তানের মতো ধ্বংসপ্রায় একটি রাষ্ট্র তথা অস্তিত্ব!


আরও খবর