Logo
শিরোনাম

শীর্ষ নেতাদের রাজনীতি ছাড়ার বার্তা দিলেন ফখরুল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

মাজহারুল ইসলাম মাসুম / সদরুল আইন:


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন—এমন বার্তা তিনি দিয়েছেন দলের একাধিক শীর্ষ নেতাকে।


 লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকেও তার অভিপ্রায়ের কথা জানিয়েছেন বলে একটি সূত্র  নিশ্চিত করেছে। তবে তারেক জিয়া তাকে এখনই রাজনীতি না ছাড়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন বলেও সেই সূত্রটি জানিয়েছে। 


উল্লেখ্য যে, এখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব। তার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। ২৮ অক্টোবরের বিএনপির তাণ্ডবের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই সময়ে তিনি সাড়ে তিন মাসেরও বেশি জেলে ছিলেন। জেলে থাকাকালীন সময় তার বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে বলে তার পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।


 বিশেষ করে তার হার্টের যে পুরনো সমস্যা তা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। সিঙ্গাপুরে যে চিকিৎসককে মির্জা ফখরুল দেখিয়েছেন বা যাকে তিনি নিয়মিত দেখান, তিনি তাকে এখন বেশি করে বিশ্রাম নেওয়া, চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করা এবং কোন রকম স্ট্রেস না নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে পারিবারিকভাবে তার ওপর চাপ এসেছে যে রাজনীতির চাপ কমিয়ে ফেলার জন্য।



বিএনপির মহাসচিব হিসেবে শুধু নয়, বিএনপির এখন তিনিই প্রধান সার্বক্ষণিক নেতা। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পেয়ে ফিরোজা অবস্থান করছেন। তিনি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে না। 


অন্যদিকে তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক। তিনিও একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা সহ একাধিক মামলায় দণ্ডিত। এরকম বাস্তবতায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর দল পরিচালনার দায়িত্ব এসেছে এবং তিনি সার্বক্ষণিকভাবে দলের জন্য কাজ করছেন। তাই তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে বলে তার বিভিন্ন ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে।


 বিশেষ করে সাড়ে তিন মাস কারা জীবনের সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শরীরে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে বলেও তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। এই সমস্ত শারীরিক সমস্যাগুলো ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করেছে। আর এ কারণে তার দীর্ঘমেয়াদি বিশ্রাম প্রয়োজন বলেও চিকিৎসকরা তাকে পরামর্শ দিচ্ছেন।


 সবকিছু মিলিয়ে রাজনীতির মাঠে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে ভাবে সক্রিয় ছিল, তেমনটি তার পক্ষে সক্রিয় থাকা আর সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। 


চিকিৎসকের সাথে পরামর্শের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় বিএনপির অন্তত দু জন নেতাকে জানিয়েছেন যে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। ডাক্তার তাকে দীর্ঘ বিশ্রামের কথা বলেছেন। এই অবস্থায় মহাসচিবের দায়িত্ব তার পক্ষে পালন করা কতটুকু সম্ভব, সেই নিয়ে তিনি নিজেই সন্দিহান। 


তবে বিএনপি রাজনীতি থেকে তিনি দূরে যাবেন না। বিএনপির সঙ্গেই তার রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকবে। 



একজন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। এই দলের জন্য তিনি জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত এমন বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হল যে তিনি দলের পূর্ণকালীন দায়িত্ব পালনের মতো শারীরিক অবস্থায় নেই। 


উল্লেখ্য যে, বিএনপির একাধিক নেতা এখন শারীরিক ভাবে অসুস্থ এবং দায়িত্ব পালনে অক্ষম। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে রোগ শোকের সঙ্গে লড়াই করছেন। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও তিনি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন না। 


বিএনপির আরেক নেতা জমির উদ্দিন সরকার বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন। তাকেও দলের কর্মকাণ্ডে খুব একটা দেখা যায় না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াও দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। 


এই অবস্থায় ফখরুলও যদি অসুস্থ হয়ে রাজনীতির থেকে দূরে যান তাহলে কিএনপির হাল ধরবে কে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।



আরও খবর

গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণে আসবে সমতা

শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ বেড়েছে

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের প্রবণতা বেড়েছে অভিজাত ধনীদের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অধীন বহিরাগমন অনুবিভাগের হিসাবে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী চার মাসে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আগের চার মাসের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশিতে। এ নাগরিকত্ব পরিত্যাগকারীদের ৭০ শতাংশই নতুন নাগরিকত্ব নিয়েছেন ইউরোপের কয়েকটি দেশে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিরাগমন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চার মাসে ৯৯ ব্যক্তি তাদের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন। আর আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে নাগরিকত্ব পরিত্যাগকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণেরও বেশিতে, ২০৭ জনে। এর মধ্যে অভ্যুত্থানের পর প্রথম মাস অর্থাৎ আগস্টে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ছেড়ে দেন ৩৬ জন। সেপ্টেম্বরে এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় দুজনে। পরের দুই মাসে এ সংখ্যা ব্যাপক মাত্রায় বেড়ে যায়। অক্টোবরে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন ১১২ জন। আর নভেম্বরে ত্যাগ করেছেন ৫৭ জন বাংলাদেশী।

অভ্যুত্থানের পরের চার মাসে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতি জার্মানির নাগরিকত্ব নেয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি। যদিও দেশটিতে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ আছে। এ তালিকায় পরের অবস্থানে আছে জার্মানির প্রতিবেশী অস্ট্রিয়া এবং পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুর। গত বছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১৩২ জন জার্মান নাগরিকত্বের অনুকূলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন। এ দেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে অস্ট্রিয়ার নাগরিকত্ব নিয়েছেন ৪৫ জন। এছাড়া ১৪ জন চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের, চারজন সিঙ্গাপুরের ও দুজন ভারতের নাগরিকত্বের অনুকূলে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন।

বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করতে হলে দেশে অবস্থান করে বা যে দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করা হয়, সেখানে থেকেই বাংলাদেশী দূতাবাসের মাধ্যমে এজন্য আবেদন করা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরকার নাগরিকত্ব পরিত্যাগের বিষয়টি মঞ্জুর করে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বহিরাগমন-২ অধিশাখা) নাসরিন জাহান বলেন, মূলত নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদনগুলো আসে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন গ্রহণ করা হয়। যারা নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন, তাদের পুরো বিষয়টিই দূতাবাস থেকে যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমাদের কাছে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক বছরে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগকারীদের মধ্যে সিংহভাগই অভিজাত ধনী। তাদের মধ্যে বিগত সরকারের আমলের কয়েকজন অলিগার্কও রয়েছেন। শেখ হাসিনার পতনের পর দেশ থেকে অর্থ পাচারসহ নানা আর্থিক অপরাধের দায়ে শাস্তি এড়াতেও কেউ কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন বলে কথিত আছে। আবার দক্ষ কর্মীর ক্যাটাগরিতে বিদেশে অভিবাসন গ্রহণকারীরা সংশ্লিষ্ট দেশের শ্রমবাজারে একক নাগরিকত্বের সুবিধা নিতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের নজিরও আছে অনেক। আবার নিরাপত্তাহীনতা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমাবনতিও অনেকের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে বলে অভিমত রয়েছে।

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগকারীদের অন্যতম সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান। বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতাঘনিষ্ঠ অলিগার্ক হিসেবে পরিচিত তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই সিঙ্গাপুরে স্থায়ী নিবাসী (পারমানেন্ট রেসিডেন্ট) হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। তবে তার নাগরিকত্ব ছিল বাংলাদেশের। কিছুদিন আগেই তিনি সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। দেশটির আইনে দ্বৈত নাগরিকত্বের কোনো সুযোগ নেই। এজন্য গত বছর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন আজিজ খান।

সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী অলিগার্কদের আরেকজন এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল আলম মাসুদ, যিনি এস আলম হিসেবেও পরিচিত। গত নভেম্বরে এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকে তাদের আইনজীবীদের পাঠানো একটি চিঠির তথ্য দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার হুমকি দিয়ে বলা হয়, ১৯৮০ সালে বাংলাদেশের বিদেশী বেসরকারি আইন অনুসারে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে এস আলম ও তার পরিবারের অধিকার ও সুরক্ষা আছে। বিনিয়োগকারী হিসেবে নিজেদের অধিকার রক্ষা করতে এস আলমের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুধু আন্তর্জাতিক সালিশি মামলা নয়, প্রয়োজনে অন্যান্য ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

তবে এস আলম সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব কবে গ্রহণ করেছেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, কেউ সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পেতে চাইলে তাকে আগে বর্তমান নাগরিকত্ব ত্যাগ করে এর তথ্যপ্রমাণ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। এর পরই তিনি দেশটির নাগরিক হওয়ার সুযোগ পান। সিঙ্গাপুরের আইনে দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার সুযোগ না থাকায় ওই ব্যক্তিকে আগে বাংলাদেশের পাসপোর্ট হস্তান্তর করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি অনুমোদন নিতে হবে যে তিনি সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব নেবেন এবং তিনি আর বাংলাদেশের নাগরিক নন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, নিরন্তর রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতির কারণে আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ও উচ্চদক্ষতার ব্যক্তিদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে বা স্থায়ীভাবে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। আবার বিচার এড়াতেও বিগত সরকারের আমলে সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব ত্যাগের প্রবণতা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‌তারা কেন নাগরিকত্ব ত্যাগ করছে সেটি তো অনুমান করে বলা যাচ্ছে না। একেকজনের কারণটা একেক রকম হতে পারে হয়তো। তবে মোটা দাগে আমার যেটা মনে হয়, বিগত সরকারের আমলের অলিগার্করা বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের অনেকেরই বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অনেকেই বিদেশে পালিয়েছেন। ফলে বিচার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যও অনেকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে পারেন। কারণ বাংলাদেশের নাগরিক না হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা বা বিচারের মুখোমুখি করা একটু কঠিন এবং লম্বা প্রক্রিয়া।

অনেকটা একই বক্তব্য অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীরেরও। তিনি বলেন, যখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়, বিশেষ করে সে সময় যদি নিরাপত্তার ইস্যু থাকে তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এখনকার সময়ে বিষয়টি প্রায় একই। প্রথমত, যারা নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছে, তারা মনে করছে বাংলাদেশে থাকা নিরাপদ না। যেহেতু একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে, সুযোগও আছে, সে সুযোগটা তারা নিচ্ছে। এখন এ সুযোগ অনেকেই নিতে পারবে না। আমরা এ-ও দেখেছি যে অনেকেই বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, তারা পারেননি। কিন্তু ব্যবসায়ীসহ অনেকের ক্ষেত্রে সে সুযোগটা আছে। কেননা তাদের পরিবারের অনেকেই বিদেশে থাকে। যেটা আমরা শুনেছি বিভিন্ন সময়ে তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে, সেখানে ব্যাংকে তাদের প্রচুর অর্থ আছে। যেকোনো সময়ের জন্য এমন সুযোগ তারা একটা ট্রাম্প কার্ডের মতো হাতে রাখেন। যাতে যেকোনো সংকটের সময় সেখানে থেকে যেতে পারেন এবং বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে পারেন। নাগরিকত্ব ত্যাগ করার আরেকটি কারণ হতে পারে যে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বা রাজনৈতিক দলের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দেশে ফেরত আনার প্রক্রিয়াটি বাধাগ্রস্ত হয়। হয়তো রাজনৈতিক পটপরিবর্তন না ঘটলে তারা থেকেই যেত। তারা যে দেশেই থাকুক না কেন, সংশ্লিষ্ট দেশে নিয়োজিত বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের কিছুই করতে পারবে না। কারণ তারা পুরোপুরি ওই দেশেরই নাগরিক।

অভিযোগ রয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনেক দুর্নীতিবাজ ও নব্য ধনীর বিদেশে অর্থ পাচারের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যরা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। ওই সরকারের শেষ দিকে বাংলাদেশীদের আরো বেশি দেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব নেয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়। আর কয়েকটি শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কর্ণধার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। বর্তমান আইন অনুযায়ী, কোনো বাংলাদেশী অন্য দেশের পাসপোর্ট (অর্থাৎ নাগরিকত্ব) গ্রহণের পর বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখতে না চাইলেও এ দেশে ৭৫ হাজার ডলার স্থায়ী বিনিয়োগ করে সহজেই স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পান।

বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগের পাশাপাশি গ্রহণের ঘটনাও রয়েছে। যদিও সেটি সংখ্যায় খুবই কম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১৯৮৮ সালে প্রথম চারজন বিদেশীকে নাগরিকত্ব দেয় বাংলাদেশ। ১৯৮৯ সালে নাগরিকত্ব পান ৩৩ বিদেশী। এরপর ২০০৩ ও ২০১০ সাল ছাড়া প্রতি বছরই কিছু না কিছু বিদেশীকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ৪৫২ জন বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নাগরিকত্ব পেয়েছেন বৈবাহিক সূত্রে। দীর্ঘদিন ধরে বসবাসের কারণেও বেশ কয়েকজনকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগকারীরা কোনো অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হলে সেই অপরাধ সংঘটনের পর নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করলেও তাদের নামে ফৌজদারি মামলা চালাতে কোনো বাধা নেই। তবে যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড নেই, কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের শাস্তিযোগ্য অপরাধের দায়ে বিচারের জন্য বন্দি প্রত্যর্পণ করা যায় না। কেবল যেসব দেশের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে, সেসব দেশের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ করা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভারতের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকায় ওইসব দেশ থেকে বন্দি আনতে পারি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকায় বিষয়টি জটিল। যদি কেউ দেশে অভিযুক্ত হওয়ার ভয়ে নাগরিকত্ব ত্যাগ করে, তাহলে নিশ্চয়ই আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়েই কাজটি করবে। বিষয়টি নিয়ে আন্তঃদেশীয় বিবাদ দেখা দিলে তা আইনের জটিল অংশ। এক্ষেত্রে দক্ষ লোকবল ও দক্ষ কূটনীতিক লাগবে। এমনও হতে পারে, আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়েও লড়তে হতে পারে। এটি বেশ জটিল একটি প্রক্রিয়া।

 


আরও খবর



রাজধানীতে আকস্মিক বাস সংকট, চরম দুর্ভোগ যাত্রীদের

প্রকাশিত:সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

রাজধানীর কিছু রুটে শৃঙ্খলা ফেরানো ও শতভাগ যাত্রীসেবা নিশ্চিতে টিকিট কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করায় সড়কে বাস কম ছাড়ছেন মালিকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারছেন না অনেকে। সব থেকে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে নারী যাত্রীদের। বাসে উঠতে না পেরে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন। যাদের সামর্থ্য আছে তারা রিকশা, সিএনজি, রাইড শেয়ারে গন্তব্যে ছুটছেন।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বাড্ডা লিংক রোড থেকে শুরু করে রামপুরা বাজার পর্যন্ত প্রতিটি মোড়ে মোড়েই মানুষের জটলা। এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী রাইদা, তুরাগ, ভিক্টর, আকাশ পরিবহন খুব কম চলছে। মাঝেমধ্যে একটা বাস আসলে ঝাঁপিয়ে পড়ে উঠতে চেষ্টা করছেন যাত্রীরা।

বাড্ডা লিংক রোডে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা জাহিদ নামে একজন যাত্রী বলেন, শুনতেছি কাউন্টারভিত্তিক টিকিট চালু করায় মালিকরা বাস চালাচ্ছে না। এক ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি কোনো রাইদা গাড়ি নেই। তাদের কাছে আমরা জিম্মি।

আরেক যাত্রী বলেন, গুলিস্তান যামু, অনেকক্ষণ ধইরা দাঁড়াই আছি, যাও দু-একটা ভিক্টর ও আকাশ বাস আসতেছে উঠাই যাচ্ছে না।

পুরুষদের দুএকজন বাঁদর ঝোলা হয়ে যেতে পারলেও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নারীরা। বাড্ডা বাজার রোডের যাত্রী নাসিমা বলেন, অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি, যাত্রাবাড়ী যাওয়ার বাস পাচ্ছি না। একটা রাইদা গাড়িও নেই। সিএনজি অনেক ভাড়া চাচ্ছে। কিভাবে যাব বুঝতেছি না।

বাস চালকরা বলছেন, কাউন্টার ও টিকিট সিস্টেম চালু করার কারণে গাড়ি কম চলছে। ভিক্টর পরিবহনের এক কন্টাকটার বলেন, আমাগোর কিছু করার নাই। সরকার মালিক যেভাবে বলছে আমরাও সেভাবে চালাচ্ছি। কাউন্টার ও টিকিট ছাড়া যাত্রী তুলতাছি না। যে অবস্থা এই সিস্টেম বেশিদিন চালু রাখতে পারবো না।

প্রসঙ্গত, রাজধানী ঢাকার সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো ও শতভাগ যাত্রীসেবা নিশ্চিতে টিকিট কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করা হয় বৃহস্পতিবার।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা ২১টি কোম্পানির বাস একক কোম্পানির অধীন পরিচালনা করার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। এর আওতায় প্রায় ২ হাজার ৬১০টি বাস চলাচল করবে। বাসগুলোর রং হবে গোলাপি।

সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব বাস চলবে কাউন্টার–পদ্ধতিতে। যাত্রীদের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বাসে যাতায়াত করতে হবে। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া বাস দাঁড় করানো হবে না। যাত্রী ওঠানামাও করবে নির্দিষ্ট স্থানে। বাসে ওঠানামার জন্য ঢাকার বিভিন্ন অংশে থাকবে প্রায় ১০০টি স্টপেজ। তবে এখনো সব স্টপেজে কাউন্টার বসানোর কাজ এখনো শেষ হয়নি।


আরও খবর

যাত্রী পরিবহনে রেকর্ড গড়ল মেট্রোরেল

শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ছুটির দিনেও দূষণে বিশ্বে দ্বিতীয় ঢাকা

শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




মাইজভান্ডার মহান ২৭ মাঘ পবিত্র খোশরোজ শরীফে লাখো ভক্ত জনতার ঢল

প্রকাশিত:শনিবার ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

"খোদাভীরুতা অর্জন করতে হলে আল্লাহর নেক বান্দাদের সোহবতে যেতে হবে।"

আওলাদে রাসুল (ﷺ), শাহ্জাদায়ে গাউছুল আযম শাহ্সূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী ওয়াল হোসাইনী মাইজভান্ডারী (মাঃজিঃআ)।

মাইজভান্ডার দরবার শরীফের অন্যতম প্রাণপুরুষ হুজুর গাউছুল ওয়ারা শায়খুল ইসলাম হযরত শাহ্সূফী আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানীর (ক.) ৮৮তম খোশরোজ শরীফ উপলক্ষে ৬-১০ ফেব্রুয়ারী বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ৫দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি চলছে মাইজভান্ডার দরবার শরীফে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) খোশরোজ শরীফের সমাপনী দিবসের আখেরি মুনাজাত একইসাথে মাইজভান্ডার রহমানিয়া মইনীয়া দরসে নেজামী আলিম মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানার সালানা জলসা সম্পন্ন হবে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) খোশরোজ শরীফের উদ্বোধনী দিবসের কর্মসূচির মধ্যে বাদ ফজর খতমে কুরআন, খতমে খাজেগান, খতমে গাউছিয়া মাইজভান্ডারীয়া আদায়ের মাধ্যমে বাদ যোহর থেকে খতমে বুখারী, বাদে আছর তাসাউফ ভিত্তিক আলোচনা ও দোয়া মুনাজাতের সাথে ২৭ শে মাঘ খোশরোজ শরীফ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ৫দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে প্রত্যেক দিন বাদ মাগরিব থেকে ওয়াজ মাহফিল, হালকায়ে জিকির ও সেমা মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খোশরোজ শরীফের প্রতিদিন এবং সমাপনী দিবসে ছদারত ও আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন, মাইজভান্ডার দরবার শরীফ গাউছিয়া রহমানিয়া মইনীয়া মনজিলের সাজ্জাদানশীন হযরত শাহসুফি ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভান্ডারী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী) লাখো ভক্ত জনতা ও মুসল্লীকে সাথে নিয়ে তিনি পবিত্র জুমার নামাজের খোৎবা ও ইমামতি করেন। এ সময় তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা সত্যবাদী তথা আল্লাহওয়ালাদের সঙ্গে থাকার আদেশ করেছেন। আর এটি খোদাভীরতা অর্জন করার সহজতম উপায়। তাছাড়া যেকোনো বিষয়ে কারো কাছ থেকে কোনো কিছু শেখার এবং গ্রহণ করার এটি একরকম স্বীকৃত এবং পরীক্ষিত পদ্ধতি। তিনি আরো বলেন, কারো কাছ থেকে কিছু হাসিল করতে হলে তাঁর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে থাক, তাঁর খেদমতে সংযোগ বৃদ্ধি করা আবশ্যক। তবেই তার কাছ থেকে কিছু নিতে পারবে। তাসাউফে ইসলামী শিক্ষার ক্ষেত্রে আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের সোহবতের গুরুত্ব অপরিসীম। মহান আল্লাহ মানুষের হেদায়েতের জন্য কিতাব ও রিজাল (আল্লাহর নির্বাচিত ও প্রিয় বান্দাদের) পাঠিয়েছেন। তাঁদের মাধ্যমেই যুগে যুগে মানুষ আল্লাহর প্রিয় ও ঘনিষ্ঠ হয়েছেন। বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, আল্লাহর নৈকট্য প্রাপ্ত বান্দাদের সোহবত থেকে দূরে থাকলে সত্যিকার অর্থে তাক্বওয়া বা খোদাভীরতা অর্জন অনেকাংশে অসম্ভব বলা যায়। এই খোদাভীরুতা না থাকায় আজকে যুব সমাজের নৈতিক অধঃপতন হচ্ছে। উশৃংখলতা মারামারি হানাহানি লুটপাট ভাঙচুর মব জাস্টিসের মত ফৌজদারি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমেদ মাইজভান্ডারী বলেন, এই অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজ কে আলোকিত সমাজে রূপদান করতে হলে আবাল বৃদ্ধ বণিতা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকেই আল্লাহর ওলিদের সোহবত এখতিয়ার করতে হবে। খোশরোজ শরীফ উপলক্ষে আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়া, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী ট্রাস্ট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও মইনীয়া যুব ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠন খতমে কুরআন, খতমে গাউছিয়া, খতমে খাজেগান, রওজায় গিলাফ চড়ানো, ফ্রি চিকিৎসাসেবা, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, হুজুর কেবলার দেশ বিদেশের দুর্লভ আলোকচিত্র চিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী, মাদকের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। খোশরোজ শরীফে অংশগ্রহণে দেশ বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্ত জনতার উপস্থিতিতে মাইজভান্ডার দরবার শরীফের পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে উঠছে। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় পুরো মাইজভান্ডার দরবার শরীফকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। খোশরোজ শরীফে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি আন্জুমানের এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করবেন। 

সার্বক্ষনিক মনিটরিংয়ের জন্য দরবার শরীফের নায়েবে মুন্তাজেম শাহ্জাদা সৈয়দ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, শাহ্জাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানীর নেতৃত্বে তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৫দিনের খোশরোজ শরীফের কর্মসূচি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে উপজেলা ও থানা প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। খোশরোজ মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে সালাতু সালাম শেষে দুর্দশাগ্রস্থ মুসলিম উম্মাহ্ ও নিপীড়িত মানবতার মুক্তি কামনায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন হযরত শাহসুফি ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী। পরে সকলের মাঝে তবারুক পরিবেশন করা হয়।


আরও খবর



রাজাপুরে এনজিওর কর্মীদের ঋণের চাপে গ্রাহকের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান :

ঝালকাঠির রাজাপুরে এনজিও টিএমএসএস’র কর্মীদের হুমকি ভয়ভীতি ও ঋণের চাপে বাবুল খান নামে এক গ্রাহকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রোববার ভোররাতে উপজেলার পশ্চিম ইন্দ্রপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাবুল ওই গ্রামের মৃত আকুব আলী খানের ছেলে। নিহতের ছেলে রাব্বি খান ও ভাই নান্নু খান ঋণের জামিনদার মোস্তফা কামাল অভিযোগ করে জানান, ঠঙামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) এনজিওর উপজেলা শাখা থেকে ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই বছর ১ লাখ টাকা ঋন উত্তোলন করে। সে নিয়মিত কিস্তি দিলেও পারিবাকির আর্থিক সমস্যার কারনে গত কয়েক মাস ধরে কিস্তি দিতে না পারায় তার কাছে ১৭ টাকার রয়েছে। এ কারনে এনজিও টিএমএসএস’র ম্যানেজার সাইফুল ইসলামসহ ১০/১৫ জন কয়েক দফায় বাড়িতে গিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তার চাকুরিজীবি ছেলে রাব্বির কর্মস্থলে অভিযোগ দিয়ে ও মামলা দিয়ে চাকরি চ্যুত করাসহ নানা রকম হুমকি দেয়। তাছাড়া বিভিন্ন সময় ফোন করে রাতে তাকে পুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে যাবে বলেও হুমকি দেয়। এ কারনে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পরে বাবুল খান। সর্বশেষ তার স্ত্রী রাণী বেগমের নামে বরিশাল টিএমএসএস সহকারি শাখা ব্যবস্থাপক নাঈমা আক্তার বাদি হয়ে বরিশালের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৬০ হাজার টাক কিস্তি পাওয়া দেখিয়ে চেক ডিসওনার মামলা করে। গতকাল সন্ধ্যায় মামলার সমন নোটিশ পেয়ে মানসিকচাপে ও ভয়ে রাতে ঘরে ঘুমাতেও পারতেন না বাবুল খান। এসব কারনে শেষ রাতে তিনি স্ট্রোক করে মারা যায় বলে অভিযোগ স্বজনদের। হুমকি ও ভয়ভীতির অভিযোগ অস্বীকার করে ঠেঙামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) উপজেলা শাখার ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রাহক বাবুল ঠিকমত ঋণ পরিশোধ না করায় কাগজপত্র বরিশাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তার করলে তার স্ত্রীর নামে মামলা করা হয়েছে। ৪ মাসেও তার বাড়িতে কেহ যায়নি, যে সব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সত্য নয়।


আরও খবর



এক মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০৮ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন এক হাজার ১০০ জন আহত হয়েছেন।মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

নিহত ৬০৮ জনের মধ্যে নারী ৭২ জন ও শিশু ৮৪ জন। এ ছাড়া ২৭১ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছ, যা মোট নিহতের ৪৩ দশমিক ৪২ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৬১ জন ঢাকা বিভাগের। সবচেয়ে কম ৩০ জন বরিশাল বিভাগে।

এ ছাড়া একক জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা জেলায় এবং সবচেয়ে কম অর্থাৎ পঞ্চগড় জেলায় কোনো মৃতু ঘটেনি।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, ট্রাফিক আইন না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ বেশি কিছু বিষয় উল্লেখ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

প্রতিবেদনটি নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।


আরও খবর

বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ বেড়েছে

সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫