শেরপুর জেলা প্রতিনিধি ঃ
বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে দ্বিতীয় দফায় শেরপুরের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশী ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন অফিস, সদর, ধানাশাইল, গৌরীপুর, হাতিবান্দা ও মালিঝিকান্দাসহ ৫ ইউনিয়নের ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার রামেরকুড়া, দিঘীর পাড়, চতলের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে উপজেলা সদর এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পানির তোড়ে শুক্রবার রামেরকূড়া গ্রামের বাঁধের সাথে একটি বাড়ি ও মুরগীর খামার ভেসে গেছে। সেই সাথে ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ায় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বিভাগ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। প্রবল পানির স্রোত থাকায় নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
এদিকে, চেল্লাখালী ও ভোগাই নদীর পানি বেড়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ঝিনাইগাতী বাকাকুড়া গ্রামের বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, রাইতে এল্লা মেঘ আইলো, সহালেই দেহি আমার বাড়ি উডানে পানি, পরে চুলার মধ্যে আগুন দিবার পাইনি। তাই বিস্কুট খাইয়ে আছি।
একই গ্রামের বাসিন্দা আফজাল বলেন, ঢলডা সহালেই আইছে। পরে খালি বাড়তেই আছে, মেলা মানুষ ঘর থনে বাইরে আবার পাইতাছে না।
রামেরকূড়া গ্রামের বাসিন্দা ফকির মিয়া বলেন, হডাত কইরি ঢল আইলো, আইয়ে বাধটা ভাঙ্গিয়ে গেল গা। সাথে সাথে ওইহানে এডা ঘর আছিল, মুরগীর খামার আছিল, সব পানির সাথে গেছে গা।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আল মাসুদ বলেন, বৃষ্টি ও উজানের পানির কারণে কিছু জায়গায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুতই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হবে। আর পানি কমে যাওয়ার পর সংস্কার কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো: শাহজাহান বলেন, গত রাতে জেলা সদরে ৮৫ মিলিমিটার ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সকালে নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালি নদীর পানি বিপদসীমার ১৭৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা সব সময় নির্দেশনা দিচ্ছেন। আশা করি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই পানি স্বাভাবিক হবে, পাশাপাশি ঢলে যে ক্ষতি হবে তা বরাদ্দ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।