
শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :
নওগাঁর বদলগাছীর বেগুন জোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকার বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে অনৈতিক কর্মকান্ডের বেশ কয়েকটি ভিডিও খন্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয় এবং ঘটনার পর থেকেই শিক্ষার্থী - অভিভাবক সহ এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয় এবং এঘটনায় শিক্ষকের স্থায়ী বহিস্কার দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ এলাকার সচেতন মহল। এরিমাঝে লিখিত অভিযোগের সত্যতা পেয়ে চাকরিবিধির ১১ এর (ই) এবং (এইচ) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এ তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার অঞ্জন কুমার কুন্ডু এবং ঐ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিঠন কুমার।
এঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তাগণ গত ১২ জুলাই সরেজমিনে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের বক্তব্য, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বক্তব্য ও স্থানীয়দের বক্তব্য নেয়। তাদের বক্তব্যে তারা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের অফিস রুমে করা অনৈতিক কর্মকান্ডে কথা জানিয়ে দুই শিক্ষকের বিচার দাবী করেন। এরপর গত ২৮ জুলাই সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরা ও গত ৫ আগস্ট প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামীম আহমেদ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে তাদের বক্তব্য দিয়ে আসেন। বক্তব্যে তারা ভাইরাল হওয়া ঐ ভিডিও এডিট করা হয়েছে বলে দাবি করেন। তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট সকলের দেওয়া তথ্য প্রমাণাদি দীর্ঘ দেড়মাস সময় নিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে ভিডিও'র সত্যতা আছে বলে নিশ্চিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য যে, অভিযোগে বলা হয় বিগত কয়েক বছর যাবৎ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছেন এবং বেশ কয়েকবার বিচারের মুখামুখি হয়েছেন। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির কারণে প্রতিবারেই ছাড় পেয়ে বিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ রিফাত আরার সাথে তিনি অফিস রুমে একাধিক দিন অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনার পরেও মানেজিং কমিটির নিকট অভিযোগ দিলে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এলাকাবাসীরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিদ্যালয়ের অফিস রুমে প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামীম আহমেদ ও সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরা'র অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়ে একটি অভিযোগ হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তদন্তকালে যাচাই-বাছাই করে তার সত্যতা পাওয়া যায়। এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন গত ২৩ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পেরণ করা হয়েছে। তাঁরা এবিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তদন্ত কমিটি আপনাদের দাবি বা অভিযোগ সহ ভাইরাল ভিডিও এর সত্যতা পেয়েছে এবং আইনানুগ পদক্ষেপ চলমান এবিষয়ে মতামত জানতে চাইলে বেশ কয়েক জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বলেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কে স্থায়ী বহিস্কার না করা পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ সন্মান ফিরে আসবে না। এজন্য একটাই দাবি স্থায়ী বহিস্কার।