মইনুল ইসলাম মিতুল :বাজার সেই আগের মতোই। কোন সুখবর নেই। গ্রাহকদের
অভিযোগ, কোনো পণ্যের দাম বাড়ার ঘোষণা এলে সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর
হয়ে যায়। কিন্তু দাম কমলে দেখা যায় এর উল্টোটা।
প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকার বিপরীতে ১৬৭ টাকায় বিক্রি করতে হবে। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯২৫ টাকার বিপরীতে ৯০৬ টাকায় বিক্রি করতে হবে। আর প্রতি লিটার পাম অয়েল (সুপার) ১২১ টাকার বিপরীতে ১১৭ টাকায় বিক্রি করতে হবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৮ই ডিসেম্বর থেকে এ দাম কার্যকরের কথা বলা হলেও কোনো বাজারেই কার্যকর হয়নি।
খুচরা বাজারের
বিক্রেতারা জানান, প্রতি
লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১৭০-১৭২ টাকায়। পাশাপাশি প্রতি লিটার বোতলজাত
সয়াবিন তেল ১৮৭ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর পাম অয়েল
(সুপার) প্রতি লিটার ১৩৫-১৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
শুধু
বোতলজাত সয়াবিন তেল নয়, খোলা
পাম তেলও নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতি লিটার পাম
তেল বিক্রি হওয়ার কথা ১১৭ টাকায়, যা
১২০ থেকে ১২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদি দোকানিরা জানান, মিল থেকে এখন পর্যন্ত নতুন দামের
তেলের সরবরাহ নেই। এ ছাড়া ডিলাররাও নতুন দামের তেল সরবরাহ করছে না। দোকানে বেশি
দামের কেনা তেল এখনো বিক্রি শেষ হয়নি। এসব কারণে দাম কমানো হলেও বাজারে এর প্রভাব
নেই। নতুন তেল এলে এবং আগের বেশি দামের কেনা তেল শেষ হলে বাজারে সরকার নির্ধারিত
দামে তেল বিক্রি হবে।
সেগুনবাগিচা
বাজারের মুদি দোকানি হোসেন আলী বলেন, সয়াবিন
তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমছে। কিন্তু কোম্পানি সেই তেল এখনো সরবরাহ করেনি। সে
কারণে পুরনো দরের তেল বিক্রি হচ্ছে। চিনিও নির্ধারিত দামে আমরা কিনতে পারছি না। এ
কারণে বিক্রি করতে পারছি না। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে পণ্য কিনে এনে বেশি
দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সেটা বাধ্য হয়েই।
এদিকে বাজারে কমেনি
মসুর ডাল ও আটা-ময়দার দাম। খুচরায় প্রতি কেজি মসুর ডাল এখনো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আটা ৭২ টাকা ও ময়দা ৭৫ টাকা।
পাইজাম চাল প্রতি
কেজি ৫৮ টাকা,
আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬২
টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, হাসকি প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬২
টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদিবাজারে
অস্বস্তি থাকলেও কিছুটা সুখবর আছে সবজি আর মাছের বাজারে। কারণ শীতের প্রচুর সবজি
বাজারে, সরবরাহ বাড়ায় কমেছে টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, নতুন আলু ও গাজরের দাম। বাজারে
মাঝারি আকারের প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কিছুদিন আগেও সবজি দুটির দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০
টাকায়।
শিমের
দাম তিন থেকে চার ভাগ কমেছে। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
মৌসুমের শুরুতে এর কেজি ছিল ১২০ টাকা। পেঁপের কেজি ২০ টাকা, লম্বা বেগুনের কেজি ৪০ টাকা, গোল বেগুন বা তাল বেগুনের কেজি
৬০ টাকা,
নতুন আলুর কেজি ২৫
থেকে ৩০ টাকা। লাউয়ের পিস ৫০ টাকা, করলার
কেজি মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচকলার
হালি ৩০ টাকা,
দেশি গাজর কেজিতে ২০
টাকা কমে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, চিচিঙ্গা
ও ধুন্দুলের কেজি ৬০ টাকা, শালগমের
কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
এদিকে
পিয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। নতুন পিয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩৫
টাকা। রকমভেদে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। এ ছাড়া ভালো
মানের আদা ও রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বাজারে
বেশকিছু চাষের মাছ ওঠায় দাম কমতে দেখা গেছে। চাষের কই, তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে
২০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া রুই, কাতলা
কার্প জাতীয় চাষের মাছ ২৬০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে খুব একটা
হেরফের হয়নি দেশি জাতের মাছগুলোর দামে।
মাছ বিক্রেতা আব্দুল
খালেক বলেন,
সরবরাহের কারণে এখন
মাছের দাম কম। সব ধরনের চাষের মাছের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে।
এ
ছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া লেয়ার ২৮০ থেকে
৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ।