শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টারঃ
নওগাঁর মান্দায় সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে কলেজের বিভিন্ন পদে ১৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে মান্দা মহানগর কলেজ’ অধ্যক্ষ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে গত ১ নভেম্বর কলেজের সাবেক সভাপতি সামন্ত কুমার সরকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মান্দা মহানগর কলেজ ২০১২ সালে অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সামন্ত কুমার সরকার। এসময়ে কলেজের বিভিন্ন পদে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৩০ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। এ ছাড়া ২০২০ সালে ৬ মাসের জন্য অ্যাডহক কমিটির প্রধানের পদেও ছিলেন তিনি। তার সময় কালে কলেজের আর কোন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ নিয়োগের কোন কার্যক্রম করেননি।
তিনি অভিযোগে আরো বলেন, আমার দায়িত্ব কালে মোঃ মমিনুল (প্রভাষক), মোঃ আক্কাছ আলী (প্রভাষক ইসলাম শিক্ষা), মোঃ সুলতান মাহাবুব (প্রভাষক), মোঃ রেজাউল করিম (প্রভাষক), মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (প্রভাষক), মোঃ মামুনুর রশিদ (প্রভাষক), আনিছুর রহমান (প্রভাষক), মো জাহিদুল হক (প্রভাষক), মোঃ মাইনুল ইসলাম (প্রভাষক), জয়ন্ত কুমার সাহা (ডেমো), এটিএম কামরুজ্জামান (ডেমো), মোঃ গোলাম রাব্বানী (ডেমো), মোছাঃ জান্নাতুন ফেরদৌসী (অফিস সহকারী) পদে অবৈধ নিয়োগ দেখানো হয়েছে। আমার স্বাক্ষর জাল করে গোপনে রেজুলেশন তৈরী করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও ভূয়া নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে এসব পদে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন অধ্যক্ষ রুহুল আমিন। উক্ত বিষয়টি আমার নিকট সন্দেহাতীত হলে আমি অধ্যক্ষ মহোদয়কে আমার কার্যকালীন সময়ের রেজুলেশন বই দেখতে চাইলে সে অস্বীকৃতি জানায়।
কলেজের সাবেক সভাপতি সামন্ত কুমার সরকার বলেন, আমার কার্যকালে অতিরিক্ত পদে আর কোনো নিয়োগ দেয়া হয়নি। বিষয়টি জানার পর কলেজ অধ্যক্ষ রুহুল আমিনকে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে যাবতীয় কাগজপত্র দেখাতে বলেছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে তিনি আজ নেয় কাল বলে সময়ক্ষেপণ করে টালবাহানা করে চলেছেন। এতে আমার সন্দেহ ঘনিভূত হয়ে আরও বেড়ে যায়।
তিনি অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নিয়োগ সংক্রান্ত রেজুলেশন তৈরি করা হয়েছে। এরপর ভূয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ যোগসাজসী বোর্ড গঠন করে ওইসব পদে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন অধ্যক্ষ রুহুল আমিন। বিষয়টি তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মান্দা মহানগর কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিনকে একাধিক বার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরই বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।