Logo
শিরোনাম

ঠাকুরগাঁওয়ে আলুতে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান মধ্যস্বত্তভোগী, ব্যবসায়ী ও ফরিয়ারা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১০ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

মোঃ মজিবর রহমান শেখঃইতিমধ্যে কোল্ড ষ্টোরেজগুলোতে আলু সংরক্ষণ শুরু হয়েছে। জেলার কোল্ড ষ্টোরেজগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকের পাশাপাশি ফরিয়া, মধ্যস্বত্তভোগী ও ব্যবসায়িরা আলু সংরক্ষণে ভীড় জমিয়েছেন।

তারা কৃষকের কাছে ৫০ কেজির বস্তায় দেড় থেকে ৩ কেজি আলু ‘ধলতা’ হিসেবে বেশি নেন। মৌসুম শেষে আলু বিক্রি করে অতিরিক্ত আলু থেকে কোটি টাকা মুনাফা হয় বলে জানা যায়। জেলায় মোট ১৫-১৬টি কোল্ড ষ্টোরেজ রয়েছে।

সরেজমিনে জেলার বেশ কয়েকটি ষ্টোরেজ ঘুরে জানা যায়, গত বছর ১৫ ষ্টোরেজে ২৬ লাখ বাস্তা আলু সংরক্ষন করা হয়। এ থেকে ২০-৩০ শতাংশ আলু বীজ হিসেবে ধরেও প্রায় ২০ লাখ বস্তায় গড়ে ২ কেজি হারে ৪০ লাখ কেজি আলু ধলতা হিসেবে বেশি নেওয়া হয়।

বিক্রির মৌসুমে (কেজি প্রতি ১৫ টাকা হিসেবে) যা থেকে মধ্যস্বত্তভোগী, ব্যবসায়ি ও ফরিয়ারা প্রায় ৬ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে। এর বদৌলতে বিনা পূজিতে অনেক ফরিয়ারা আলু কিনে তা ব্যবসায়িদের দিয়ে আর্থিক অবস্থার উন্নতি করেছেন।

এক সময় জেলায় একটি মাত্র কোল্ড স্টোরেজ থাকায় সেটিতে আলু সংরক্ষণে ¯প্রতি কেজি পাওয়া ছিল সোনার হরিন পাওয়ার মত। বেশিরভাগ প্রতি কেজি চলে যেত কালোবাজারীদের হাতে। ফলে অনেক বেশি মূল্যে প্রতি কেজি পেত কৃষকেরা। পরবর্তিতে শাহী হিমাগারের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা সহ আরো কয়েকজন ঠাকুরগাঁওয়ে বেশ কয়েকটি কোল্ড ষ্টোরেজ দেন এবং কৃষকদের নানাভাবে আলু উৎপাদনে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।

ফলে কৃষকেরা সংরক্ষনের সুবিধা ও সহযোগিতা পেয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে আলু চাষে এক বিপ্লব সাধিত হয়। যার সুফল কৃষক, আলু ব্যবসায়িসহ সকলেই পায়। ঠাকুরগাঁওয়ের বেশ কয়েকজন কোল্ড ষ্টোরেজের মালিক জানান, কল্যাণ সমিতির অন্তরালে আলু নিয়ে জেলায় একটি সিন্ডিকেট পাটি তৈরী করা হয়েছে। যাদের কাজ কৃষকদের ব্যবহার করে নিজেদের লাভ করা।

গত বছর থেকে কল্যাণ সমিতির লোকজন নতুন নিয়ম চালু করে। ঢাকা বা দেশের অন্যান্য জেলার ব্যবসায়ি বা ফরিয়ারা ঠাকুরগাঁও জেলায় তাদের নিজস্ব প্রতিনিধি দিয়ে কৃষকের কাছ থেকে আলু কেনার সময় ধলতা হিসেবে ২-৩ কেজি আলু নেওয়া শুরু করে।

সমিতির লোকজন বাধ্যতামূলক এটি ব্যবসায়ি ও ফরিয়াদের নিতে বাধ্য করেন। এতে করে অতিরিক্ত আলু থেকে লাভ কৃষক পায় না। জেলায় কিছু আলু বিক্রি হলেও এই সিন্ডিকেট পাটি বেশিরভাগ আলু দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠিয়ে দেয়। 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আরাজী পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক নূর আলম বলেন, প্রতি বছর আমি কোল্ড ষ্টোরেজে ২ হাজারের মত বস্তা সংরক্ষণ করি। দাম কমলে ব্যবসায়িরা ১-৪ কেজি ধলতা নেয়।

সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বাকুন্দা গ্রামের কৃষক নরেশ চন্দ্র রায় বলেন, কোল্ড ষ্টোরেজে ৫৮ বস্তা আলু সংরক্ষণ করলাম। এই আলু বিক্রির সময় ব্যবসায়িরা ২-৩ কেজি আলু ধলতা হিসেবে বেশি নিবে।ষ্টোরেজ মালিকগণ আমাদের কাছে ধলতা নেয়না।

এসবি কোল্ড ষ্টোরেজের ম্যানেজার দবিদুর রহমান বলেন, এ বছর আলু সংরক্ষণ শুরু হলেও গত বছরের চেয়ে কম কৃষক আলু রাখছেন। আলু বিক্রির সময় ফরিয়ারা বস্তা প্রতি ২-৩ কেজি আলু ধলতা হিসেবে বেশি নেন। আমরা চাই কৃষকেরা লাভবান হোক। মূলত কল্যাণ পাটির লোকজন এখানে সিন্ডিকেট তৈরী করেছে। অনেক সময় স্যাম্পল দেখার পর ২/১টি খারাপ আলু ঢুকিয়ে দিয়ে দাম কমিয়ে দেয়। এ জাতীয় কারনে কৃষকেরা অনেক সময় বাজারদরের থেকেও কম মূল্যে আলু বিক্রি করে দেয়। 

ঠাকুরগাঁও আলুচাষী ও ব্যবসায়ি কল্যাণ সমিতির সভাপতি রমজান আলী জানান, দেশের অন্যান্য স্থানে ভাড়া কম থাকলেও ঠাকুরগাঁওয়ের কোল্ড ষ্টোরেজের মালিকগন ভাড়া ঠিকমত নেন না। জেলার কৃষকদের কাছ থেকে যাতে করে ভাড়া বেশি নিতে না পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে সংগঠন এবং কৃষকের কাছ থেকে ষ্টোরেজে আলু সংরক্ষণ ও বের করার সময় কল্যাণ সমিতির চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। 

ঠাকুরগাঁও কোল্ড ষ্টোরেজ মালিক সমিতির সভাপতি মো: আব্দুল্লাহ জানান, ষ্টোরেজে ধলতা নেওয়ার কোন সুযোগ নাই। এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যে ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে তার থেকে বেশি নেওয়া হয় না বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, জেলায় এ মৌসুমে গত বছরের চেয়ে বেশি পরিমানে আলুর আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের যাবতীয় পরমর্শ প্রদান করা হয়েছিল। বর্তমানে জেলার কৃষক, হিমাগার মালিক ও কল্যাণ সমিতির সমন্বয়ের মাধ্যমে আলু ফসল থেকে জেলাবাসী উপকৃত হবে বলে মনে করছেন তিনি।  

উল্লেখ্য, কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এ বছর জেলায় আলুর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭৯৮ মেট্রিক টন।



বিডি/টুডেইস/নিউজ



আরও খবর



রাত ৮টার পর শপিংমল বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

চলমান দাবদাহ ও গ্রীষ্ম মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে রাত ৮টার পর শপিংমল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবহারে গ্রাহকদের সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, বিগত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন সত্ত্বেও চলমান দাবদাহে বিদ্যুতের চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। তা সত্ত্বেও গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে বিদ্যুৎ বিভাগ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। একই সঙ্গে গ্রাহকদের আরও পরিমিত ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহারে আহ্বান জানাচ্ছে।

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সেগুলো হলো-

রাত ৮টার পর শপিংমল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা। নিম্নহারে বিদ্যুৎ বিল সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে দোকান, শপিংমল, পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনে অতিরিক্ত বাতি ব্যবহারে বিরত থাকা। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী হলিডে স্ট্যাগারিং প্রতিপালন করা।

এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর উপরে রাখা। দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে হুকিং বা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বিরত থাকা। বেআইনিভাবে ইজিবাইক ও মোটরচালিত রিকশার ব্যাটারি চার্জিং থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া বিদ্যুতের অপচয় রোধে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

বিদ্যুৎ সেবা প্রাপ্তিতে যে কোনো অভিযোগ বা তথ্যের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের হট লাইন নম্বর ১৬৯৯৯ যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে।


আরও খবর



১৫ মে থেকে আবার আসছে তাপপ্রবাহ

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

বৈশাখে ছিলো না কোনো কালবৈশাখী বা বৃষ্টি। উল্টো পুরো এপ্রিলজুড়ে সারাদেশের মানুষ পুড়েছে তীব্র তাপপ্রবাহে। গরমের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে জনজীবন এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলো। সেই তাপপ্রবাহ দুর করে চলতি মাসে শুরু হয় স্বস্তির বৃষ্টি। বর্তমানে অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছে মানুষ। তবে সেই স্বস্তি বেশিদিন থাকবে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আগামী কয়েক দিনে দেশে বৃষ্টির প্রবণতা কমবে; মধ্য মে থেকে গরম বাড়বে। মাসের শেষাংশের পুরোটাজুড়েই থাকতে পারে তাপপ্রবাহ। আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এখন বৃষ্টির প্রবণতা অনেকটা কমে গেছে। এটা আরও কমে যাবে। রোববার থেকে দেশের তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। আর ১৫ তারিখের পর থেকে মাসজুড়েই তাপপ্রবাহ থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন,  রাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে; তবে রোববার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। তখন রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেটের কিছু কিছু জায়গায় হয়তো বৃষ্টি থাকবে, কিন্তু অন্যান্য জায়গা থেকে কমে যাবে। ১৫ তারিখ থেকে পুরো মাস জুড়েই তাপপ্রবাহ থাকতে পারে।

আরেক আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, মে মাসের তাপমাত্রা এপ্রিলের মতো প্রকট হবে না। কারণ, এর মধ্যেই কোনো কোনো দিন বৃষ্টি হবে। তবে মে মাসের শেষের দিকে এবং জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাপমাত্রা বাড়বে আরও এক ধাপ। কারণ, জুনের ১৫ তারিখ থেকে বর্ষাকাল শুরু হয়। এর আগে প্রকৃতি ড্রাইআউট হয়। তখন তাপমাত্রা বাড়বে।


আরও খবর



যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিবের বিরুদ্ধে জিডি

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন। মঙ্গলবার ঢাকার শাহবাগ থানায় তিনি এ জিডি করেন।

১৪২৭ নম্বর জিডিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে মোজাম্মেল হক চৌধুরী মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

জিডিতে বলা হয়, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ২০ বছর যাবত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই। এক পর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরেো বলেন, যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরো বলেন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতায় থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এ মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।

শাহবাগ থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, এখন আইন অনুযায়ী জিডির কপি আদালতে পাঠানো হবে। আদালত অনুমোদন দিলে তদন্ত শুরু হবে।

 


আরও খবর



ট্রেন দুর্ঘটনায় ইমেজ সংকট

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ |

Image

ট্রেন দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ভুল সিগন্যালে পর পর কয়েকটি দুর্ঘটনা এবং এর জেরে টানা কয়েক দিন ধরে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে রীতিমতো ইমেজ সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নিরাপদ বাহন হিসেবে রেলের সুনাম মুছতে শুরু করেছে। হারানো এই ইমেজ দ্রুত ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম। সাম্প্রতিক ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে গতকাল দুপুরে রেলভবনে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। বৈঠকে রেলমন্ত্রীর পাশাপাশি রেলসচিব ড. হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলীসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, বারবার ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে যেন ভীতির সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন রেলমন্ত্রী। ট্রেন চলে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলকিং সিস্টেমের (সিআইবিএস) ভিত্তিতে। কিন্তু অনেক স্টেশন এখনো চলছে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। এসব স্টেশনকে দ্রুতই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আনার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

সূত্র আরও জানায়, নির্মাণকাজ চলাকালে অনেক স্থানে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রেন চালাতে হচ্ছে। এমন স্থানেই সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার খবর এসেছে। পয়েন্টসম্যান ও স্টেশনমাস্টারের ভুলে এমনটি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এসব স্থানে দ্রুত তদারকি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের এ ক্ষেত্রে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে বলে হুশিয়ার করেছেন রেলমন্ত্রী।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলী জানান, বৈঠক হয়েছে দুর্ঘটনা নিয়ে। সেখানে নিরাপদ বাহন হিসাবে ট্রেনের ইমেজ ধরে রাখতে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জানা গেছে, প্রচলিত আইনকানুন অনুসারে ট্রেন পরিচালনার বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া হয় গতকালের বৈঠকে। টিএলআর তথা অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের দায়বদ্ধতা কম। অনেক ক্ষেত্রে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের দিয়ে অপারেশনাল কাজ চালাতে হয়। অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ঘাটতি যেমন রয়েছে, তেমনি অবসরপ্রাপ্ত অনেক কর্র্মচারীও বর্তমানে মাঠপর্যায়ে কর্মরত। তাই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তদারকি বাড়ানোয় জোর দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রেন চালাতে এমন নির্মাণাধীন রেলপথে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজার ও জয়দেবপুরে সিগন্যালের ভুলে ট্রেন দুর্ঘটনায় নড়েচড়ে বসে রেল। এর পর বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনে মৈত্রী ও ধূমকেতু এক্সপ্রেসের মধ্যে দুর্ঘটনার যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল, তাতেও ছিল প্রায় একই রকম ভুল। রেলকর্মীদের এমন ভুলের খেসারত দিচ্ছেন যাত্রীরা। দুর্ঘটনায় হতাহত এবং ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের ভোগান্তি নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায় রেল থেকে যাত্রীরা যেন মুখ ফিরিয়ে না নেয়, তেমন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, নন-ইন্টারলকিং বা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রেন চালনায় চলে পেপার লাইন ক্লিয়ার বা পিএলসি। একটি চলন্ত ট্রেন সামনের স্টেশন অতিক্রম করবে কিনা, অথবা ট্রেনটিকে ক্রসিংয়ের জন্য কোথায় থামতে হবে, অথবা ট্রেনটির অনির্ধারিত স্টপেজ কোন স্টেশনে দেওয়া হয়েছে- এসব বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা একটি কাগজে লেখেন স্টেশনমাস্টার। এরপর ওই কাগজটি নিয়ে স্টেশনের রেললাইনের পাশে উঁচু করে ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন স্টেশনমাস্টার। চলন্ত ট্রেনটি স্টেশন অতিক্রম করার সময় ইঞ্জিনে থাকা লোকোমাস্টার নেন সেটি। সেখান থেকে সামনের স্টেশন সম্পর্কে ধারণা মেলে। আর পয়েন্ট তৈরির কাজটি করেন পয়েন্টসম্যান। তাদের ভুলেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এখানে বড় সমস্যা জনবল সংকট। ২০২২ সালের আগ পর্যন্ত দীর্ঘদিন জনবল নিয়োগ বন্ধ ছিল। সহকারী স্টেশনমাস্টার ও পয়েন্টসম্যানসহ অপারেশনাল কাজে নিয়োজিতরা প্রশিক্ষিত হয়ে ওঠতে পারেননি। দক্ষতা অর্জনের অভাবে ভুল করছেন কর্মক্ষেত্রে। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে- অনেকে অবসরে চলে যাওয়ার পর প্রকল্পের অধীনে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করছেন। তাদের জবাবদিহিতা ওই অর্থে রেলের কাছে নেই। পুরনো সংকেত (ম্যানুয়াল) পদ্ধতিতে দক্ষ নয়, নতুন নিয়োগ পাওয়া জনবল। আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ঠিকাদারের সরবরাহ করা পয়েন্টসম্যান রেলের বিশেষায়িত কাজ জানে না। এসব কারণে ভুল হচ্ছে।

দেশে মোট যাত্রীর ৮ শতাংশ রেলের। অথচ স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এ হার ছিল ৩০ শতাংশ। একই সঙ্গে মোট পণ্য পরিবহনে রেলের অবদান ২৮ থেকে নেমে এসেছে ১৬ শতাংশে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেলওয়ের আয় ছিল ৫৬১ কোটি টাকা। যাত্রী ও মালপত্র পরিবহন করে এই আয় করেছে রেল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয় হয়েছে ১৭৮৩ কোটি টাকা। আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিচালন ব্যয়ও বেড়েছে। বিপুল অর্থ খরচ করে তৈরি করা রেলপথে ট্রেনের সংখ্যা তুলনামূলক কম। সময়মতো ট্রেন চালনা রেলের অন্যতম কাজ। এ কাজে গুরুত্ব কম। বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেন আসা-যাওয়ায় বিলম্বের ঘটনা বেড়েছে। যাত্রাবিলম্ব ঘটে নানা কারণে। ইঞ্জিন ফেইলিওর, রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি, কোচের ত্রুটি, চালকের দুর্বলতাসহ নানা কারণ রেলসেবায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।


আরও খবর



সাগরে মিলছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

জাটকা রক্ষায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরতে নদীতে নেমে হতাশ জেলেরা। তারা বলছেন, জালে মাছ ধরা পড়েছে না। যে দু-চারটা ইলিশ পড়ছে, তা বেচে নৌকার (ইঞ্জিনচালিত) তেল খরচই উঠছে না।

জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে সপ্তাহ দুয়েক আগে। তাই বুকভরা আশা নিয়ে নদীতে নেমে হতাশ হয়ে ফিরছেন। জেলেরা জানান, নৌকায় ১৫শ টাকার তেল নিয়ে গেলে মাছ পাওয়া যায় ৮শ টাকার। তাই তারা এখন নদীতে যেতে পারছে না। এ ছাড়া ২-৩ হাজার টাকার মাছ সংগ্রহ করতে হলে তেল খরচ হয়ে যায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার। মাছ না পাওয়া তাদের চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে।

মৌসুমের এই সময়টাতে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম হয়ে ওঠে ভোলার মেঘনা পাড়ের অর্ধশতাধিক ছোট-বড় মাছঘাট। কিন্তু সেখানে এখন সুনসান নীরবতা। খালি পড়ে আছে মাছের বাক্স। অলস সময় পার করছেন আড়ৎদাররা।

আড়ৎদাররা জানান, তুলনামূলক মাছ না হওয়ায় জেলেরা নদীতে যাচ্ছে না। ফলে বাজারে মাছের দাম বাড়তি।

মাছের এমন খরার বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, তীব্র তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে বেড়েছে লবণাক্ততা। ফলে গভীর জলাশয়ের খোঁজে সাগরমুখী হচ্ছে মাছ। আর তাই ধরা পড়ছে না জেলেদের জালে।

ভোলা সদরের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এফ এম নাজমুস সালেহীন বলেন, ইলিশের অভয়াশ্রমে ছোট মাছ আশ্রয় নেয়। এই ছোটমাছগুলো সাগরের দিকে চলে গেছে। এর ফলে নদীতে ইলিশের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত এই মৌসুমে বৃষ্টিপাতের সংখ্যা অনেক কম। এই কম হওয়ার কারণে সাগরের নোনা পানিটা এখন বেশি প্রবেশ করছে। এর ফলে মাছ যে ডিম পাড়তে আসে এই সংখ্যা খুবই কম। এই কারণে বর্তমানে জেলেরা ইলিশ খুব কম পাচ্ছে।

চলতি বছর জেলায় ১লাখ ৯২ হাজার টন ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।


আরও খবর