Logo
শিরোনাম

ট্রাম্পের নীতির ধাক্কা কতটা লাগবে বাংলাদেশে?

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নেবার পর থেকে একের পর এক নির্বাহী আদেশে সই করে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই মধ্যে বাংলাদেশে কতগুলো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ স্থগিত করা হয়েছে। সামনে আর কী অপেক্ষা করছে?

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি নথিতে দেখা গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেবার পর ইসরায়েল ও মিসরে জরুরি খাদ্য সহায়তা ও সামরিক তহবিল ছাড়া তাদের সব বৈদেশিক সহায়তা বা উন্নয়ন তহবিল ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশে মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি-এর অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইউএসএআইডি-বাংলাদেশ কার্যালয়ের পরিচালক ব্রায়ান অ্যারনের স্বাক্ষর করা চিঠিতে রবিবার বলা হয়েছে, ‘পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির আওতাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির মার্কিন অংশের ব্যয় বন্ধ থাকবে।

চিঠির শিরোনাম ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ: যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তার পুনঃ মূল্যায়ন ও পুনঃসামঞ্জস্যকরণ।’ চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এই চিঠিটি ইউএসএআইডি-বাংলাদেশের সব বাস্তবায়ন অংশীদারদের প্রতি একটি নির্দেশিকা হিসেবে পাঠানো হচ্ছে। যাতে আপনার সংশ্লিষ্ট ইউএসএআইডি-বাংলাদেশ চুক্তি, কার্যাদেশ, অনুদান, সমন্বিত চুক্তি বা অন্যান্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা সরঞ্জাম অধীনে করা কোনো কাজ অবিলম্বে বন্ধ, থামানো বা স্থগিত করা হয়।

এতে অংশীদারদের সঙ্গে যেসব কাজ চলছে সেগুলোর ক্ষেত্রে ব্যয় কমানোর জন্য সব যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে ইউএসএআইডির অর্থায়নে চলমান সব প্রকল্প বন্ধ করা হয়েছে নিশ্চিত করে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইউএসএআইডি গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশকে প্রায় ২০ কোটি ২২ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার চুক্তি করে। এর আগে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১-২০২৬ সালের জন্য বাংলাদেশ ও ইউএসএআইডির মধ্যে একটি নতুন ডিওএজি (ডেভেলপমেন্ট অবজেক্টিভ গ্রান্ট এগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষর হয়। ডিওএজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইউএসএআইডি মোট ৯৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পঞ্চম সংশোধনী পর্যন্ত ইউএসআআইডি সাড়ে ৪২ কোটি ডলার দিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত ‘অর্থনৈতিক প্রযুক্তিগত ও সম্পর্কিত সহায়তা’ শীর্ষক একটি চুক্তির অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও শাসনের মতো বিভিন্ন খাতে আজ পর্যন্ত ৮০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ফান্ড দিয়েছে।

সাবেক কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক সাকিব আলী বলেন, ‘ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। এটা সাময়িক তিন মাসের জন্য। ইসরায়েল এবং মিশর ছাড়া সব দেশের জন্যই এই সিদ্ধান্ত। ট্রাম্প আসলে তাদের দেওয়া অর্থ বিভিন্ন দেশে সঠিকভাবে খরচ হচ্ছে কি না এবং দেওয়া যৌক্তিক কি না তাই মার্কিন নাগরিকদের দেখাতে চান। তিনি রিভিউ করবেন। তার কাছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন নাগরিকরাই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে সেটা তিনি বোঝাতে চান।’

‘আসলে যুক্তরাষ্ট্র প্রধানত বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের মাধ্যমে অর্থ দেয়। সেটার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে বলে আমরা মনে হয় না। জাতিসংঘের মাধ্যমেও দেয়। সেটাও ঠিক থাকবে বলে মনে হয়। এখন ট্রাম্প বোঝাতে চাচ্ছেন যারা তাদের সঙ্গে থাকবেন, তাদের কাজে লাগবে তাদের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্র থাকবে,’ বলেন তিনি।

তার কথা, ‘ট্রাম্প খুব লেনদেনে বিশ্বাস করেন। তিনি একজন ‘ট্রানজেকশনাল পার্সন'। তো তিনি লাভ লোকসানের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেবেন। যুক্তরাষ্ট্র তো আর বিনা লাভে কিছু দেয় না। তারা কৌশলগতভাবে এই সহায়তা দিয়ে তাদের স্বার্থ তুলে নেয়।

তবে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের তহবিল সংকট হতে পারে বলে জানান বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম। আর এতে বাংলাদেশ চাপে পড়তে পারে। তার কথা, ‘এখনো রোহিঙ্গাদের জন্য যে সহায়তা পাওয়া যায় তার মধ্যে শীর্ষ দাতা দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সহায়তা বন্ধ হলে ১৪-১৫ লাখ রোহিঙ্গার খাদ্যসহ অন্যান্য প্রয়োজন কীভাবে মিটবে? এর ভেতর মানবিক ও মানবাধিকারের বিষয় আছে।

রোহিঙ্গা রিফিউজি রেসপন্সের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ সহায়তা ২০২১ সাল থেকে অব্যাহতভাবে কমছে। চলতি বছরে ১১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার দেওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের। সেটা পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

তবে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর রোববার এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘ইউএসএআইডিসহ বিদেশে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে (এনজিও) অর্থ সহায়তা দেওয়ার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। তবে বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া বজায় রাখবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী ৯০ দিন বিদেশে অর্থ সহায়তা বন্ধ করার কথা জানিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য তারা যে সহায়তা দেন, সেটা বন্ধ করবে না বলে জানিয়েছে।

অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সহায়তা কতদিন বন্ধ রাখতে পারবে সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। তার ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য ভারতকে প্রয়োজন। তাহলে ভারতে সহায়তা না দিয়ে শুধু কি ব্যবসা তারা করতে পারবে? বাংলাদেশের জন্যও একই কথা। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার ভালোই থাকবে। কারণ এত সস্তায় তো আর কেউ পোশাক দিতে পারবে না।’

‘তবে অভিবাসন নীতির কারণে সেখানে যে বাংলাদেশিরা আছেন তারা সংকটে পড়তে পারেন। অনেক পরিবার আছে সেখানে নানা কাজ করে, ব্যবসা করে। অনেক ছাত্র আছেন। তাদের নিয়ে সমস্যা হলে তার চাপ তো বাংলাদেশের ওপরও পড়বে,’ বলেন তিনি।

আর রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জাহেদ উর রহমান মনে করেন, ‘আসলে এই তিন মাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশে তার উন্নয়ন সহায়তা যাচাই-বাছাই করবে। তারপর আসলে বোঝা যাবে কোন দেশে তার উন্নয়ন সহায়তা কতটুকু থাকবে। কতটুকু বাদ যাবে। আর তা থেকে তখন বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন নীতি স্পষ্ট হবে।

‘তবে বাইডেন প্রশাসনের বাংলাদেশের জন্য যে ফরেইন পলিসি ছিল, ট্রাম্প প্রশাসনের সেই একই ফরেইন পলিসি থাকবে- এটা বোঝাই যায়। সেটা ট্রাম্পের প্রথম টার্মেও হয়েছে। তবে চীন যদি ইস্যু হয় সেই কারণে হলে বাংলাদেশ ট্রাম্পের কাছে গুরুত্ব পেতে পারে। আবার ভারত যদি বাংলাদেশের ব্যাপারে চাপ দেয় সেটারও একটা চাপ বাংলাদেশের ওপর পড়তে পারে। তবে কোনো কিছুই এখনো স্পষ্ট নয়,’ বলেন তিনি।

তার কথা, ‘ভারতের মিডিয়া খুব প্রচার করছে যে, ট্রাম্পের প্রথম নির্বাচনে ড. ইউনূস বিরোধী শিবিরকে ফান্ড দিয়েছে। ট্রাম্প ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক কথা বলেছেন। আসলে এটা প্রচারণা ছাড়া আর কিছু নয়। এর কোনো ডকুমেন্ট নাই।’ সূত্র: ডয়চে ভেলে


আরও খবর



জোভানের প্রেম ও বিয়ের গল্প!

প্রকাশিত:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

বলাই বাহুল্য, জোভান-তটিনী অনস্ক্রিন ভালোই রসায়ন জমিয়ে তুলেছেন। তবে এবারের ঈদে যেন এই জুটি আরও এক ধাপ এগিয়ে নিলেন নিজেদের। যার শেষ নজির হচ্ছে প্রিয় প্রিয়সীনি নাটক।

সিএমভির ব্যানারে নির্মিত ঈদের বিশেষ এই নাটকটির চিত্রনাট্য ও নির্মাণ করেছেন মাহমুদ মাহিন। সিনেমাটোগ্রাফিতে ছিলেন মোস্তাক মোরশেদ। যেখানে জোভানের প্রিয় প্রিয়সীনি চরিত্রে হাজির হচ্ছেন তটিনী।

প্রিয় প্রিয়সীনি নাটকে জোভান অভিনয় করেছেন প্রবাসী ইকবালের চরিত্রে। যিনি ৩ মাসের ছুটি নিয়ে গ্রামে এসেছেন বিয়ে করার জন্য। কিন্তু শিল্পী নামের যে পাত্রীকে ইকবালের পছন্দ হয়েছে, তার পরিবার আবার মানতে নারাজ বিয়ের ৩ মাস পর ইকবালের বিদেশ চলে যাওয়ার বিষয়টি।

এটা গল্পের শুরু মাত্র। ভেতরে ও শেষে রয়েছে অনেক নাটকীয়তা। নির্মাতা মাহমুদ মাহিন জানান, গল্পটির সঙ্গে অবিবাহিত প্রবাসীদের প্রায় সবারই জীবনের ছায়া রয়েছে। কারণ প্রবাসীরা এমন জটিলতায় প্রায় সবাই পড়েন। তবে এখানে সেই জটিলতা ছাড়াও নিখাদ প্রেমের একটা দারুণ গল্পও রয়েছে।

নাটকটির প্রযোজক-পরিবেশক এসকে সাহেদ আলী পাপ্পু জানান, প্রিয় প্রিয়সীনিসহ মোট ২০টি নাটক এবারের ঈদে মুক্তি পাচ্ছে সিএমভির ব্যানারে। যা চাঁদরাত থেকে নিয়মিত উন্মুক্ত হবে প্রতিষ্ঠানটির অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। 


আরও খবর



শানে রিসালাত রাসূল (ﷺ) সর্বপ্রথম সৃষ্টি”

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পূরনুর (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি, যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।


★২৭. অনাদিরূপে এক আল্লাহ তা’আলাই ছিলেন। অন্য কিছু বলিতে আর কিছুই ছিল না। আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই নাই। এই শূন্যতার সমাপ্তি ঘটাইতে ইচ্ছা করিলেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। যেমন, ওলীকুল শিরোমণি শায়েখ আকবর (রঃ) কর্তৃক এলহাম প্রাপ্ত এবং পূর্বাপর ওলী ও সূফী তথা আধ্যাত্মিকতায় ধন্য মহানগণ কর্তৃক গৃহীত আল্লাহ তাআলার একটি বাণীতে উলেখ আছে- “আঁমার সত্তা (জানিবার কেহ না থাকায়) অজানা ছিল; আঁমার ইচ্ছা হইল (আঁমার গুণাবলীর মাধ্যমে আঁমাকে প্রকাশ করা)-আঁমাকে জানান। সেমতে আঁমি সৃষ্টি করি জগত।”

[তথ্য সূত্র:তাফসীরে রুহুল মাআনী, পৃষ্ঠা: ১৪-২১;বুখারী শরীফ,৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ২, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ)]

* এই বাণীর মর্ম কোরআনের একটি আয়াত দ্বারাও সমর্থিত। আল্লাহ তাআলা বলিয়াছেন-“জিন এবং মানুষ এই দুইটি জাতিকে আঁমি একমাত্র আঁমার এবাদত বা গোলামী করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিয়াছি।”

[সূত্র: আল কোরআন,সূরা যারিয়াত, আয়াত নং ৫৬,সূরা নং: ৫১]


✌আল্লাহ তায়ালার এই ইচ্ছার বাস্তবায়নে জগত সৃষ্টির শুভ প্রারম্ভেই আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করিলেন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-এঁর সৃষ্টির মূল নূরকে। এই নূরকেই পরিভাষায় বলা হইয়া থাকে “হাকীকতে মুহাম্মদিয়া”।এই নূর বা হাকীকতে মুহাম্মদীয়া বলিতে কাহারও মতে হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-এঁর পবিত্র রূহ বা আত্মা উদ্দেশ্য। আর কাহারও মতে অন্য কোন বাস্তব বস্তুবিশেষ উদ্দেশ্য। অথবা ঐ পবিত্র রূহ বা আত্মারই বাহন,কিন্তু পদার্থীয় দেহ নহে, বরং হয়ত এক বিশেষ জ্যোতির্বিম্ব, যাহার প্রতিবিম্বের বিকাশ ছিল হযরত মুহাম্মদ(ﷺ)-এঁর নশ্বর দেহ।

[তথ্য সূত্র:যোরকানী,১-৩৭; বোখারী শরীফ,৫ম খন্ড,পৃষ্ঠা: ২, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌উপরোল্লিখিত আল্লাহ প্রদত্ত এলহামী বাণী ও তাহার সমর্থনে আয়াতের মর্ম ইহাই ছিল যে, “আল্লাহকে জানিবে, আল্লাহর গোলামী করিবে এই উদ্দেশেই সৃষ্ট জগতের সৃষ্টি।” সুতরাং সাধারণ নিয়ম মতেই আল্লাহ তাআলা তাঁহার প্রথম সৃষ্টি হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-কে ঐ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের যোগ্যতায় সকলের ঊর্ধ্বে শীর্ষস্থানের অধিকারীরূপে সৃষ্টি করিয়াছেন। বোখারী শরীফের এক হাদীস আছে, নবী (ﷺ)-ফরমাইয়াছেন- “আল্লাহকে ভয় করায় এবং আল্লাহকে জানায় আঁমি তোমাদের তথা নিখিল সৃষ্টির সকলের ঊর্ধ্বে।” আল্লাহকে যে যত বেশী ভয় করিবে,সে তাঁহার তত বেশী গোলামী করিবে।

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌মাওলানা আশরাফ আলী থানভী তাহার সীরাত সস্কলন ‘নশরুত্তীব’ কিতাবে নিজ সংযোজিত টীকায় নূরে মুহাম্মদীকে রূহে মুহাম্মদী সাব্যস্ত করিয়াছেন।

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃঃ ২, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌এই হাকীকতে মুহাম্মদীয়া হইল নিখিল সৃষ্টিজগতের সর্বপ্রথম সৃষ্টি। লৌহ-কলম, বেহেশত-দোযখ, আসমান-যমীন, চন্দ্র -সূর্য, ফেরেশতা এবং মানব-দানব সব কিছুই ঐ হাকীকতে মুহাম্মদিয়া বা নূরে মুহাম্মদীর পরে সৃষ্টি হইয়াছে। এই তথ্য সুস্পষ্টরূপে বিশিষ্ট সাহাবী জাবের (রাঃ) বর্ণিত এক হাদীসে উল্লেখ রহিয়াছে। জাবের (রাঃ) বলিয়াছেন, আমি একদা আরজ করিলাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আঁপনার চরণে উৎসর্গ হউক; সকল বস্তুর পূর্বে সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়ালা কোন জিনিসটি সৃষ্টি করিয়াছেন? রাসূল (ﷺ) বলিলেন, হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা সকল বস্তুর পূর্বে সর্বপ্রথম তোমাদের নবীর নূর সৃষ্টি করিয়াছেন (যাহা) আল্লাহ (বিশেষ কুদরতে সৃষ্ট) নূর হইতে। অতঃপর সেই নূর আল্লাহর কুদরতে আল্লাহ তায়ালার নিয়ন্ত্রণাধীনে চলমান ছিল।ঐ সময় লওহ-কলম, বেহেশত-দোযখ, আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, মানব-দানব এবং ফেরেশতা কিছুই ছিল না।”

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ; যোরকানী, ১-৪৬]


✌এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলতে চাই যে, কোন শিল্পী নিজ দক্ষতায় সুন্দর গঠনের একটি জিনিস তৈয়ার করে; তাহা এতই সুন্দর হয় যে, স্বয়ং গঠনকারী শিল্পী তাহারই হাতে গঠিত জিনিসটির প্রতি আকৃষ্ট হইয়া পড়ে, সে তাহাকে আদর করে, ভালবাসে। শিল্পীর নিজ হাতে গড়া বস্তু তাহার দক্ষতায় এতই সুন্দর ও মনোরম হয় যে, স্বয়ং শিল্পী তাহার ভালবাসায় মুগ্ধ হয়। এমনকি শিল্পী প্রদর্শনী করিয়া তাহার গুণ গরিমারি প্রচার করে। আল্লাহ তাআলাও হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-এঁর ক্ষেত্রে তাহাই করিয়াছেন।


✌নবী (ﷺ) নূরী,তাঁর উপর যে হাদীসটি আছে যেমন: জাবের বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা আমি রাসূল (সাঃ)-কে জিজ্ঞেসা করি,হে আল্লাহর রাসূল! আঁপনার প্রতি আমার বাবা–মা কুরবান হোক, আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর আগে কী সৃষ্টি করেন? নবী (ﷺ) বলেনঃ হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা সমস্ত বস্তুর পূর্বে তাঁর নূর দ্বারা তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেন। তারপর সেই নূর নিঁজ ক্ষমতায় আল্লাহর আদেশে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। সেই সময় লউহ, কলম, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা, আসমান-যমীন, সূর্য-চন্দ্র, জিন, মানুষ কোন কিছুই ছিলনা।” এই হাদীসটি বিংশ শতাব্দীর কথিত শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী বাতিল বলে আখ্যা দিয়েছেন।তিনি বলেন সৃষ্টির প্রথম বস্তু হচ্ছে কলম, নবীর নূর নয়। প্রথম সৃষ্টি নবীর নূর বলে যে হাদীস প্রচার করা হয় তা জাল কথা,হাদীস নয়।

[সূত্র: সিল সিলাতুল আহাদীছ আস স্বহীহা (সহীহ হাদীস সিরিজ), হাদীস: ৪৫৮; গ্রন্থস্বত্ত: নাবী (ﷺ) কি নূরের তৈরী, পৃষ্ঠা: ৩২, প্রণেতা: আবদুর রাকীব (মাদানী), মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ,সউদী আরব]


✌সর্বপ্রথম নাসিরুদ্দীন আলবানীর একটু পরিচয় করিয়ে দেই, তিনি হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি সউদী বংশের শাসকদের প্রস্তাব করেছেন মহানবীর পবিত্র রওযার সবুজ গম্বুজটি ভেঙ্গে ফেলার।সে বলেছে, ‘এটি আফসোসের বিষয় যে,দীর্ঘদিন হল রাসূলের কবরের উপর একটি গম্বুজ প্রস্তুত হয়েছে…আমার বিশ্বাস সউদী সরকারের একত্ববাদের দাবী যদি সত্য হয়ে থাকে তবে তাদের উচিত তা চূর্ণ করে মসজিদে নববীকে তার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা।

[সূত্র: তাহযীরুল মাসাজিদি মিন ইত্তিখাযিল কুবুর মাসাজিদা, আলবানী, পৃষ্ঠা: ৬৮-৬৯; ওয়াহাবীদের সৃষ্ট সংশয়ের অপনোদন (ইসলামী সেবা দপ্তর, কোম, ইরান)]


✌আমার কথা হচ্ছে,আমরা রাসূল (ﷺ) -কে দেখিনি কিন্তু তাঁর স্মৃতি নিয়ে তাঁকে ভালোবাসি,মনেপ্রানে বিশ্বাস করি। তাঁর প্রতি গভীর ভালোবাসার মারফতে তাঁর দর্শন লাভ করি।রাসূল (ﷺ)-আজ আমাদের মধ্যে প্রকাশ্যে নেই কিন্ত তাঁর রওযা শরীফ আছে আর এটাই আমাদের জন্যে আল্লাহকে পাওয়া ও সারা জাহানের মাখলুকাতকে প্রমান দেওয়ার একটি নিদর্শন।যারা রাসূল (ﷺ)-কে ভালোবাসে তাদের জন্যে রাসূলের রওজার গম্বুজতো দূরের কথা তাঁর ছায়াও একটি যিয়ারতের উৎস। তাহলে যে ব্যক্তি তার নিজের চোখে দেখা এই নিদর্শনটিকে মিটিয়ে ফেলতে চায়,তার কাছে রাসূল (ﷺ)-এঁর নূর তো অবিশ্বাসযোগ্য হবেই। আর তারা ‘রাসূল (ﷺ)-এঁর নূর সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয়েছে’ সেটা মানতে রাজি না কিন্তু ‘কলম’ ঠিকই মানতে রাজি আছেন।


👏পাঠকবৃন্দের কাছে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) অসংখ্য নাম সমূহের গুণাবলী থেকে শুধুমাত্র কয়েকটি নামের অর্থ তুলে ধরতে চাই।যেমন,নবীজী(ﷺ)-এঁর এই নামটি ‘সাইয়্যেদ’ অর্থ সর্দার বা প্রধান,নবীজী নিখিল সৃষ্টির প্রধান, নবী ও রাসূলগণের প্রধান। ‘মোকাফফা’ অর্থ সর্বশেষে প্রেরিত। হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) সর্বশেষ পয়গম্বর। ‘সিরাজুম মুনীর’ অর্থ দীপ্ত সূর্য। নবী (ﷺ) দীপ্ত সূর্য অপেক্ষা অধিক ভাস্কর ছিলেন।

[সূত্র: বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৪৭, হাঃ ১৬৬২, হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


🌹নবীকরিম (ﷺ)-এঁর নূর মোবারক মাখলুকাতের মধ্যে সর্বপ্রথম সৃষ্ঠি করা হইয়াছে। যেমন হাদীস শরীফে আছে নবী করীম (ﷺ) বলেন হে জাবের আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম তোমাদের নবীর নূর পয়দা করিয়াছেন।

[তথ্য সূত্র: শানে মাহবুব (সঃ), পৃষ্ঠা ৩৮,তাবলীগী কুতুবখানা,চক বাজার ঢাকা]


✌কাজেই চাঁদ সূরুজের অস্তিত্ব, রৌশনী সবকিছুই নূর নবী হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) ফয়েজের কারণেই বিদ্যমান।নবী করিম (ﷺ) যদিও কবর শায়িত রহিয়াছেন কিন্তু তাঁহার অস্তিত্ব হইতেই চাঁদ সূরুজ আলোক লাভ করিতেছে। সমগ্র বিশ্বজগতের অস্তিত্ব তাঁহার মাধ্যমে লাভ হইয়াছে ইহা যেমন সত্য তেমন বিশ্বজগতের সচল থাকার মূলেও নবী করিম (ﷺ)-এঁর অস্তিত্ব কাজ করিতেছে। আধ্যাত্মিক সাধনা এবং রিয়াজতের মাধ্যমে যে ব্যক্তি নিজের অন্ত:করনকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করিয়া লয় সেই ব্যক্তি ফেরেশতার বৈশিষ্ঠ অর্জন করে।

[তথ্যসূত্র: শানে মাহবুব (সঃ),পৃষ্ঠা ৭১,তাবলীগী কুতুবখানা, চক বাজার ঢাকা)]


✌ইসলাম মাওলানা মোহাম্মদ কাসেম নানুতবী লিখিত কাছিদায়ে বাহরিয়া গ্রন্থের কয়েকটি কবিতার অর্থ নীচে উলেখ করা যাইতেছে। তিনি লিখিয়াছেন,আঁপনি(রাসূল (ﷺ) যমিনের সকল সৃষ্টির গৌরব। আঁপনি সকল পায়গাম্বারের মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ। অন্যান্য নবী যদি ফুল হন তবে আপনি ফুলের ঘ্রান। অন্যান্য নবী সূর্যের কিরণ হইলে আপনি হইলেন সূর্য। আঁপনি সমগ্র সৃষ্টিকুলের প্রানস্বরূপ। আঁপনি দৃশ্যমান নূর। বিশ্বজগত আঁপনার উছিলায় সৃষ্টি হইয়াছে। আঁপনার নূরের বদৌলতে অস্তিত্ব হীনতা হইতে সকল কিছু অস্তিত্ব লাভ করিয়াছে। বিশ্বজগতের সকল প্রকার পূর্ণতার সমাবেশ আপনার মধ্যে রহিয়াছে। আঁপনার মতো কামালাত ও বৈশিষ্ট অন্য কাহারো মধ্যে নাই। আঁপনার মর্তবায় অন্য কোন নবী পৌছিতে পারে নাই। মোজেযার অধিকারী নবীগণও আঁপনার তুলনায় নিশপ্রাণ। আঁপনার পূর্ববতী নবীগণ আঁপনার উম্মত হওয়ার আগ্রহ ও আকাঙ্খা ব্যক্ত করিয়াছেন। আঁপনার নূর প্রকাশ না পাইলে আল্লাহ পাক সৃষ্টির কাজে হাত দিতেন না। হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহ পাকের দীদার পাইতে চান অথচ স্বয়ং আল্লাহ পাক আঁপনার সাক্ষাত চাহিয়াছেন। জমিন ও আসমান কখনো এক সমান হইতে পারেনা।

[তথ্য সূত্র: প্রিয় নবী (সঃ) এর আদর্শ জীবন, পৃষ্ঠা ৮৬, তাবলীগী কুতুবখানা, চক বাজার ঢাকা]


✌রাসূলুলাহ (ﷺ) বলিয়াছেন- আঁমি একটি কথা বলিতেছি; ফখর বা গর্ব করা উদ্দেশ্য নহে। ইব্রাহীম (আঃ) খলীলুলাহ (অর্থাৎ তিঁনি আলাহকে দোস্ত বানাইয়া ছিলেন), মুসা (আঃ) সফিউলাহ (অর্থাৎ তিঁনি আল্লাহ কর্তৃক বৈশিষ্ট প্রদত্ত), আর আমি হাবিবুলাহ (অর্থাৎ আমাকে স্বয়ং আল্লাহ তাঁহার দোস্ত বানাইয়াছেন ভালবাসিয়াছেন)।

[তথ্য সূত্র: মেশকাত শরীফ; বোখারী শরীফ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা:৪, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী,হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ]


✌কোরআন মাজীদে উদ্ধৃত হয়েছে “ওয়ামা খালাকনাস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্ব” এই তাফসীরটি হযরত জাবেরের বর্ণনার অনুকুলে। তিনি বলেছেন, আল্লাহতায়ালা সর্বপ্রথমে আহমাদ মোস্তফার (ﷺ) রূহ সৃষ্টি করেছেন। সেই রূহ থেকে সৃষ্টি করেছেন আরশ, কুরসি, আকাশ, পৃথিবী এবং সমগ্র সৃষ্টি।

[তথ্য সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৩, শায়েখ আবদুল হক মোহাদ্দেছে দেহলভী (রহঃ), সেরহিন্দ প্রকাশন, সন-জুন ১৯৯৯ ইংরেজী]


✌আল্লাহ তায়ালার একটি নাম নূর। নূর শব্দটির রয়েছে বিভিন্নরকম অর্থ। যেমন, নূর বহনকারী, নূরের স্রষ্টা. আকাশ ও পৃথিবীকে নূরের মাধ্যমে আলোকিতকারী, আরেফগণের অন্তরে হেদায়েতে ও রহস্যের আলো প্রজ্জ্বলকারী ইত্যাদী। আল্লাহ পাক মোস্তফা (ﷺ)-কেও নূর নামে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন তিনি এরশাদ করেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট -আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এসেছে নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব।” অন্যত্র এরশাদ হয়েছে, “ওয়া সিরাজাম মুনিরা” অর্থাৎ তিঁনি উজ্জ্বলকারী আলোকবর্তিকা। রাসূল পাক (ﷺ) যে নূর তার কারণ হচ্ছে তিঁনি আল্লাহতায়ালার আহবানকে প্রোজ্জ্বল করেছেন,জ্বালিয়েছেন নবুয়তের নূর এবং সত্য ধর্ম ইসলামের মাধ্যমে আরেফগণের হৃদয়কে করেছেন আলোকিত।

[তথ্য সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৩, শায়েখ আবদুল হক মোহাদ্দেছে দেহলভী (রহঃ), সেরহিন্দ প্রকাশন]


✌রাসূল (ﷺ) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা আঁমার উপর যখন তাঁর নেয়ামতের বহিঃপ্রকাশ চাইলেন,তখন এরশাদ করলেন,হে মুহাম্মদ (ﷺ) আঁপনি যখন ভূত চতুষ্টয়ের মধ্যে ছিলেন তখন আঁমি আঁপনার নূরকে ডাক দিয়েছিলাম আর আঁপনার উম্মতকেও ডাক দিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিলো, আঁপনার উম্মতের কথা মুসা (আঃ)-কে শোনাবো।

[সূত্র: মাদারেজুন্ নবুওয়াত, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৮৮, সেরহিন্দ প্রকাশন, সন-ডিসেম্বার ১৯৯৯]


✌রমযান মাস, অমাবস্যা-পূর্ব অন্ধকার, রজনী গভীর, লোকালয় হইতে বহু দূরে হেরা পর্বতের উচ্চ শৃঙ্গে নিভৃতি প্রকোষ্ঠে নবীজী (ﷺ) ধ্যানমগ্ন। এমন সময় হঠাৎ মহাসত্যের আগমন হইল। ফেরেশতা জিব্রাইল (আঃ) ঐ প্রকোষ্ঠে তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইলেন এবং সালাম করিলেন। ফেরেশতারা নূরের তৈয়ারী; বহন করিয়া আনিয়াছেন আল্লাহ তায়ালার কালাম, তাঁহার নূর; এইসব নূরের আকর্ষণে নবীজী(ﷺ)-এঁর জড় দেহের আবেষ্টনে লুক্কায়িত মহানূরও পৃতিভাত হইয়াছে অসাধারণভাবে।অতএব হেরা গুহায় এখন নূর! নূর! সবই নূর।নবীজী (ﷺ)-এঁর ভিতরে বাহিরে নূরের জৌলুসে নূরই নূর হইয়া গিয়াছে। এই মহা মহূর্তে তাঁহার দেহ-মনের অবস্থা একমাত্র তাঁহারই অনুভব করার কথা। ব্যক্ত বা বর্ণনা করার আয়ত্ত বহির্ভূত। নিভৃত গিরিগহবরের এই অভূতপূর্ব মুহুর্তটি মোস্তফার হৃদয়ে কি রেখাপাত করিয়াছিল তাহা কি কোন মানুষ নির্ণয় করিতে পারে?(স:)!

[তথ্য সূত্র: বোখারী শরীফ,৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৮৩, মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ; ৬৫,চক সারকুলার রোড,ঢাকা- ১২১১ যোরকানী, ১-২০৭] [সংগ্রহকৃত]


♦রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পূরনুর (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি, যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।[১০ম পর্ব দেখুন]

★২৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন: “আল্লাহ পাক হযরত ঈসা (আ:)-কে বলেছেন,ওহে ঈসা! মহানবী (ﷺ)-এঁর প্রতি ঈমান আনো এবং তোমার উম্মতকেও তা করতে বলো।রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-না হলে আঁমি আদমকে সৃষ্টি করতাম না,বেহেশত বা দোযখও সৃষ্টি করতাম না।”

📚দলিল

*১. আল মোসতাদরেক’ হাকিম: ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭

*২.আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২

*৩. ইমাম ইবনে সাদ : তানাকাতুল কোবরা

*৪.ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী : ‘শিফাউস্ সিকাম ৪৫

*৫. শায়খুল ইসলাম আল-বুলকিনী : ফতোওয়ায়ে সিরাজিয়া ১/১৪০

*৬.ইবনে হাজর রচিত ‘আফদালুল কোরা

*৭.আবূ নুয়াইম : ‘হিলইয়াতুল আউলিয়া,

*৮. শায়খ ইউসূফ নাবাহানী :

জাওয়াহিরুল বিহার : ২/১১৪ ও ৪/১৬০

*৯. ইবনে কাসীর : কাসাসুল আম্বিয়া : ১/২৯ পৃ:

*১০.ইবনে কাসীর : সিরাতে নববিয়্যাহ : ১/৩২০

*১১. ইবনে কাসীর :মুজিযাতুন্নবী (দরুদ ) : ১/৪৪১

*১২. ইবনে হাজর আসকালানি : লিসানুল মিযান : ৪/৩৫৪,রাবী, ১০৪০।

*১৩.ইবনে হাজর আসকালানী রচিত ‘আফদাল আল-কুরআন’; ১/১৮৯।

ইমাম কুস্তালানী : মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া; ১/১৮

ইবনে হাজার হাইসামী : শরহে শামায়েল, ১/১৪২।

*১৩. ইমাম যাহাবী : মিজানুল ইতিদাল : ৫/২৯৯, রাবী নং ৬৩৩৬

*১৪. ইবনে হাজর হায়সামী : শরহে শামায়েল : ১/৪২

*১৫. ইমাম যুরকানী :শরহে মাওয়াহিব : ১/১২/২২০

*১৬. আবু সাদ ইব্রাহীম নিশাপুরী : শরহে মোস্তফা : ১/১৬৫

*১৭. খাসায়েসুল কুবরা : ১/১৪ : হাদিস ২১

*২৮. ইমাম ইবনে হাইয়্যান : ‘তাবকাত আল-ইসফাহানী : ৩/২৮৭

*২৯. কানযুল উম্মাল- হাদীস ৩২০২২

*৩০.মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১

*৩১. মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১/২৯৫, হাদিস : ৩৮৫

*৩২. ইবনে শামী সালেহ : সুবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ : ১২/৪০৩

💟হাদিসের মান পর্যালোচনা💟


*১.ইমাম হাকিম তাঁর ‘মোসতাদরেক’ গ্রন্থে তাঁর তাহকিকে হাদিসটিকে সহিহ্ সাব্যস্থ করেছেন।

আল মোসতাদরেক’ হাকিম: ২/৬৭১ : হাদিস ৪২২৭


*২.ইমাম দায়লামী : হাদিসটির মান সনদের দিক থেকে হাসান।

আল মুসনাদিল ফেরদাউস : ৫/২৪২


*৩.আরও অসংখ্য ইমাম, ইমাম হাকিম রহ. এঁর রায়কে গ্রহণ করেছেন।অপরদিকে, কেবলমাত্র ইমাম যাহাবী (রহ:) উক্ত রায়ের বিপরীত বলেছেন।তিনি বিপরীত বলার কারন স্বরুপ বলেন :উক্ত হাদিসের একজন রাবী ‘আমর ইবনূ আউস আল আনসারী’ ‘অপরিচিত’।

একজন রাবী অপরিচিত হওয়াতে একটি হাদিস জাল কোনভাবেই হতে পারে না।উক্ত রাবী ইমাম যাহাবী (রহ:)এর দৃষ্টিতে অপরিচিত।অথচ তাঁর চেয়ে উঁচু স্তরের ইমামগণ উক্ত হাদিসকে সহিহ্ ও উক্ত রাবী (আমর ইবনূ আউস) কে সিকাহ্ বলেছেন।


*৪.বিশ্ববিখ্যাত রিযাল গ্রন্থ ‘তাহযিবুল কামাল ফি আসমাউর রিযাল’ এ বলা হয়েছে, উক্ত রাবী সিকাহ্ বা বিশ্বস্থ।


*৫. ইমাম ইবনে হিব্বান, ইমাম বুখারি, ইমাম আবু নুআইম (রহ:)ও তাঁকে সিকাহ্ বলেছে।

[ইমাম মিযযী : তাহযিবুল কামাল ফি আসমাউর রিযাল; ১৪/১৭৭, রাবী নং : ৪৯১৩]


*৬. তদুপরি,আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:) উক্ত রাবীকে সিকাহ্ বা বিশ্বস্থ বলেছেন।

[ইবনু হাজর আসকালানী : তাকরীবুত তাহযীব; ১/৪৩৬]

বুঝা গেল ইমাম যাহাবী (রহ:) এর নিকট উক্ত রাবী অপরিচিত হলেও আর কারো নিকট পরিচিত হবেন না এমন নয়।আর ইমাম যাহাবী (রহ:) উক্ত রাবীকে মিথ্যাবাদী বলেন নি; বলেছেন,অপরিচিত।


✌সুতরাং হাদিসটি নি:সন্দেহে সহিহ্ এর মান রাখে। আর হাদিসটি যেহেতু আমল ও আহকাম সম্পর্কিত নয়, সেহেতু ‘হাসান’ বলে মানতে ও বিশ্বাস করতে সমস্যা নেই।


★৩০. এবার আমি তাবলীগ জামাতের ‘ফাজায়েলে আমল’ গ্রন্থ থেকে একটি প্রমান দিব।সেখানে একটি শিরোনাম দেওয়া হয়েছে কোন ‘আমালে আদাম (আ:)-এঁর তাওবাহ কবূল হলোঃ

“হযরত ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, হুজুরে পাক (ﷺ) বলেন, যখন হযরত আদম (আঃ) হইতে কিছুটা পদস্খলন হইয়া গেল যাহার দরুণ তিনি বেহেশত হইতে দুনিয়াতে প্রেরিত হইলেন,তখন তিঁনি সব সময় কান্নাকাটি ও এস্তেগফার করিতে থাকেন।একদিন তিঁনি আসমানের দিকে মুখ উঠাইয়া আরজ করিলেন হে আল্লাহ! মোহাম্মাদ (ﷺ)-এঁর উছিলায় আঁমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি।ওহী নাজিল হইল, মোহাম্মদ (ﷺ) কে? যাহার উছিলায় তুমি ক্ষমা চাহিতেছ? হযরত আদম (আঃ) বলিলেন- যখন আঁপনি আমাকে সৃষ্টি করেন তখন আমি আরশের উপর লিখিত দেখিয়াছিলাম ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ মোহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ’, তখনই আমি বুঝিতে পারিয়াছিলাম মোহাম্মদ(ﷺ) হইতে অধিক মর্যাদাশীল আর কেহই হইবে না,যেহেতু আঁপনি তাহার নাম নিঁজের নামের সঙ্গে রাখিয়াছেন।ওহী হইল হে আদম! তিঁনি আখেরী নবী এবং তিঁনি তোমার আওলাদভূক্ত হইবেন অথচ তিনি না হইলে তোমাকেও পায়দা করতাম না”-।

📚দলিল

মৌ:মোহম্মদ জাকারিয়া,ফাজায়েলে আমল; খণ্ড ‘ফাজায়েলে জিকির’, পৃষ্ঠা ৩১৫ (বাংলা), পরিবেশনায় তাবলিগী কুতুবখানা / ফাউণ্ডেশন।

তাবারানী; সাগীর,২/৮২,২০৭।


★৩১. ইবনে আসাকির (রহ:) উদ্ধৃত করেন হযরত সালমান ফারিসী (রা:)-কে, যিনি বলেন: “হযূর পূর নূর (ﷺ)-এঁর কাছে জিবরীল আমীন (আ:) এসে পৌঁছে দেন আল্লাহর বাণী, ‘(হে রাসূল) আঁপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত আর কাউকেই আঁমি সৃষ্টি করিনি।আঁমি বিশ্বজগতও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার সবই সৃষ্টি করেছি যাতে তারা জানতে পারে আঁপনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে। আঁমি এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করতাম না, যদি আঁপনাকে সৃষ্টি না করতাম’।”

📚দলিল

*১.ইবনে আসাকির : তারিখে দামেস্ক : ৩/৫১৭

*২. মোল্লা আলী কারী : মাওজুয়াতুল কবীর : ১০১

৩. ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব : ১/১৮২

৪. ইমাম নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ২/২৮৯

*৫.কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ২/১০৫

★৩২.তাবেয়ী হযরত কাবুল আহবার (রা) থেকে বর্নিত,(বিশাল বর্ননার পর)…


আরও খবর



সয়াবিন তেল লাপাত্তা, ক্রেতার ধরনা দোকানে দোকানে

প্রকাশিত:রবিবার ০২ মার্চ 2০২5 | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে বাজারে ক্রেতার চাপ বেড়েছে। রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন সবাই। কিন্তু রাজধানীর বাজারে সব পণ্যের দেখা মিললেও পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেলের বোতল। রান্নায় দরকারি পণ্যটির খোঁজে তাই ক্রেতাদের ঘুরতে হচ্ছে দোকানে দোকানে। রোজার শুরুতেই ভোজ্যতেলে এমন বিড়ম্বনায় বেজায় ক্ষুব্ধ ভোক্তারা।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অবস্থাও তথৈবচ। বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না বাজারে। দাম বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেলেরও। এর মধ্যে সরিষার তেলের দামও বাড়তির দিকে। রোজা শুরুর দুই সপ্তাহ আগে ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে বলেছিলেন, সরবরাহ খুবই ভালো। তাই এবার একটি পণ্যের দামও বাড়বে না। এ ছাড়া বাড়তি দাম রাখার কারণে প্রতিদিনই জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন দোকান ও বাজারকে জরিমানা করে চলেছেন। কিন্তু কিছুতেই লাগাম টানা যাচ্ছে না।

রাজধানীর কদমতলী এলাকার বাসিন্দা মো. এনামুল হক গতকাল বাজারে গিয়ে অন্তত পাঁচটি দোকান ঘুরেও পাঁচ লিটারের বোতলের সন্ধান পাননি। যে দোকানেই যাচ্ছেন, বলা হচ্ছে বোতল নেই। কথা হলে এনামুল বলেন, রোজার মাস এলেই বাজারে বিভিন্ন পণ্যমূল্যের নাটক-সিনেমা চলে। এবার বাজারে অনেক পণ্যের দাম বাড়েনি। কিন্তু সয়াবিন তেল নিয়ে এখনও খেলাধুলা চলছে। রোজার সময় যেখানে পণ্যের সরবরাহ বাড়ার কথা, সেখানে সয়াবিনের বোতল পাওয়াই যাচ্ছে না। সুপারশপে গিয়েও পাচ্ছি না। এগুলো দেখার কি কেউ নেই? আক্ষেপের সঙ্গে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

পাড়ার মুদি দোকান ঘুরে না পেয়ে সয়াবিনের বোতলের খোঁজে একটি সুপারশপে এসেছেন আশকোনা এলাকার বাসিন্দা মো. আলতাফ হোসেন। সেখানে বোতলের দেখা পেলেও আরেক বিপত্তিতে পড়তে হয় তাকে। তিনি বলেন, এখানে ৫ লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও শর্ত দেওয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা সমপরিমাণ অন্য পণ্যও কিনতে হবে। তা না হলে বোতল বিক্রি করবে না। এটা কেমন কথা? কোথায় আছি আমরা?

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, রোজা শুরু হলেও সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়েনি। আগের মতোই কম তেল সরবরাহ করছে ডিলাররা। কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটেও গতকাল বোতলজাত সয়াবিন তেলের খোঁজে দোকানে দোকানে ঘুরতে দেখা গেছে অসংখ্য ক্রেতাকে। সেখানেও বিক্রেতাদের একই জবাব- সরবরাহ নেই। ডিলাররা যতটুকু দিচ্ছেন তা মুহূর্তেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

কথা হলে কিচেন মার্কেটের বিউটি স্টোরের ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসাইন বলেন, বাজারে কোনো সয়াবিনের বোতল নেই। ডিলাররা সরবরাহ করছে না। কোম্পানির কাছে চাহিদা দিচ্ছি ২০-২৫ কার্টন, কিন্তু পাচ্ছি ২-৩ কার্টন। এগুলো অল্প সময়েই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। রোজায় চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে এ সময়ে সরবরাহ বাড়ার কথা।

বাজারে সয়াবিনের বোতল সরবরাহে ঘাটতির প্রসঙ্গে একাধিক ডিলারের সঙ্গে কথা বললেও তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। অপরদিকে যোগাযোগ করা হলে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকেও সারা পাওয়া যায়নি।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দাম এক দফা বাড়ানো হলেও আরও বাড়াতে চাইছে কোম্পানিগুলো। সে জন্য পুরনো কায়দায় সংকট তৈরি করা হচ্ছে।

খোলা সয়াবিন তেলের মোকাম রাজধানীর মৌলভীবাজারেও তেলের বাজার চড়া যাচ্ছে। আগের মতো সরবরাহ না থাকায় দাম বাড়তি রয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।

এদিকে চট্টগ্রামে তেলেই শুধু তেলেসমাতি চলছে না, এক বছরের ব্যবধানে ছোলার দাম বেড়ে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা হয়েছে। দুদিন ধরে আলুর সরবরাহে সংকট দেখিয়ে প্রতি কেজি ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায় উঠে গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক বছর আগে যে ছোলা প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতো, এবার তা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত দুদিন আলুর সরবরাহে ঘাটতি দেখা যাওয়ায় ২০ টাকার আলুর কেজি ৩০ টাকায় উঠেছে। ক্ষীরার কেজি ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকায়, কাঁচামরিচ ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকায়, বেগুন ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় উঠে গেছে দাম। দেশে ব্যাপক আমদানি সত্ত্বেও সয়াবিন তেল বিশেষ করে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহে সংকট রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, দামি ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ না থাকার সুযোগে রাতারাতি অখ্যাত কোম্পানিগুলো খোলাবাজারের সয়াবিন তেল বোতলজাত করে বাজারে সরবরাহ করছে।

গতকাল চট্টগ্রাম নগরীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই বললেই চলে। বিশেষ করে পাঁচ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই সংকট চলছে বলে জানান বিক্রেতারা। তারা বলেন, চাহিদার বিপরীতে বোতলজাত তেলের সরবরাহ খুব কম। কিন্তু এই মুহূর্তে চাহিদা অনেক। কারণ হিসেবে মোমিন রোডের ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, রমজানে ভাজাভোজির ব্যাপার বেশি। সক্ষম ক্রেতারা ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল নিতে চান। দাম তাদের কাছে ব্যাপার নয়। কিন্তু আমরা তো দিতে পারছি না।

আন্তর্জাতিক বাজারের চিত্র বলছে, সয়াবিন তেলের দর গত তিন মাসে নিম্নমুখী রয়েছে। বিশ্ব বাজারে পণ্যমূল্যের পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে গত নভেম্বর মাসে প্রতিটন সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১১৪৫ ডলার। ডিসেম্বরে যা কমে হয় ১০৬৪ ডলার এবং গত জানুয়ারিতে তা আরও কমে ১০৬১ ডলারে নেমেছে। অথচ দেশে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। আরও বাড়ানোর পাঁয়তারাও চলছে।

এদিকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। রমজানে চাহিদা বেশি থাকে। এ মাসে চাহিদা ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ৩ লাখ টন।

বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট ও সরবরাহ নিয়ে চলতি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, সয়াবিন তেলের আমদানি বেড়েছে। দেশে ভোজ্যতেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে, কোনো ঘাটতি নেই। যেটি হয়েছে তা কৃত্রিম এবং প্রকৃত তথ্যের ঘাটতি থেকে সৃষ্ট। সভায় উৎপাদনকারীরাও জানান, সয়াবিন তেলের সরবরাহ বেড়েছে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রমজান মাস সামনে রেখে বাজারে ভোজ্যতেলের বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অধিক পরিমাণ ভোজ্যতেল সরবরাহ করছে। ভোজ্যতেল সরবরাহের পরিমাণ বিবেচনায় সংকটের কোনো সুযোগ নেই। বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় কিছু ব্যবসায়ীর মজুদের প্রবণতা থেকে যদি সংকট হয়ে থাকে, তা অচিরেই কেটে যাবে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করেছে, যা ৭ থেকে ১০ দিনের ভেতরে বাজারে প্রবেশ করবে। পাইপলাইনে আছে দেড় লাখ মেট্রিক টন।

এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বসির উদ্দিনও আশ্বস্ত করেছিলেন, সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের বাজার স্থিতিশীল থেকে নিম্নমুখী হয়ে যাবে এবং সরবরাহের ঘাটতি দূর হবে। কিন্তু বাজারের চিত্র বলছে, বোতলের তেলের সংকট রয়েই গেছে। খোলা তেলের দামও চড়া। নেপথ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি। সরকারি সংস্থার তদারকি অভিযানেও বেরিয়ে আসছে কারসাজির তথ্য।

গত বৃহস্পতিবার কারওয়ানবাজারে অভিযান চালিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দেখতে পায়, সেখানকার অনেক দোকানে আড়ালে ভোজ্যতেল লুকিয়ে রেখে ক্রেতাকে তেল নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তল্লাশি করে গোপন জায়গায় ৫ লিটারের বোতলের ২০০টিরও অধিক কার্টনের মজুদ খুঁজে পায় সংস্থাটি। আরও দেখা যায়, কিছু খুচরা ব্যবসায়ী সয়াবিন তেল গোপনে বিক্রি করছেন। ৫ লিটারের বোতলে এমআরপি ৮১৮ টাকা লেখা থাকলেও বিক্রি করা হচ্ছে ৮৫০-৮৫২ টাকায়। এর আগে আরেক অভিযানে দেখা গেছে, বেশি লাভের আশায় খুচরা বিক্রেতারা বোতল কেটে ড্রামে ঢেলে খোলা হিসেবে বিক্রি করছেন।

বারবার একই কায়দায় বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেও এ থেকে ভোক্তারা পরিত্রাণ পাচ্ছেন না। এর পেছনে ট্যারিফ কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাই দায়ী বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, বিটিটিসির বৈঠকে ব্যবসায়ীরা জানালেন, সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু সংকট কেন, তা তারা জানেন না। তারা তো এভাবে দায় এড়াতে পারেন না। ডিস্ট্রিবিউটররা তেল নিয়ে কি করেছে, সেটা দেখার দায়িত্বও তাদেরই। এভাবেই কোম্পানি-ডিস্ট্রিবিউটর মিলে ভোক্তার পকেট কাটে। ট্যারিফ কমিশন কিভাবে মূল্য সমন্বয় করছে তা জানা নেই। এর মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসনে ও বাজার মনিটরিংয়ে দুর্বলতা রয়েছে। যদিও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর প্রতিদিন কয়েকটি বাজারে তদারকি করছে, জরিমানা করছে। কিন্তু তাদের জনবল কম। মনিটরিংয়ে এমন দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে অসাধুরা।

 


আরও খবর



নওগাঁয় গ্রামীণ মেঠো রাস্তার উন্নয়ন কাজে বাধাঁ

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর রাণীনগরের সীমান্তবর্তি অবহেলিত একটি গ্রাম হচ্ছে একডালা ইউনিয়নের নিচ তালিমপুর। এই গ্রামটির সঙ্গে বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানার বিষ্ণুপুর নামক আরেকটি গ্রাম সংযুক্ত রয়েছে। গ্রাম দুটি উপজেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় তেমন একটা আধুনিকতার ছোঁয়া স্পর্শ করেনি। সম্প্রতি গ্রামের চলাচলের একমাত্র গ্রামীণ মেঠোপথের পাঁকাকরণ কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজে বালি দেওয়াকে কেন্দ্র করে কতিপয় ব্যক্তিরা বাঁধা দিতে গেলে গ্রামবাসীরা সেই বাঁধাকে প্রতিহত করে। ফলে বহুবছর পর অবহেলিত গ্রামের বাসিন্দাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। অপরদিকে বালু উত্তোলনের চাঁদা না দেওয়ায় ভেকু মেশিনে হামলা করে ভাংচুর করাসহ মারপিট করার ঘটনাও ঘটেছে।  

নিচ তালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত-ওয়াজেদ আলীর ছেলে মিজানুর রহমান জানান গ্রাম দুটি উপজেলার শেষ প্রান্তে হওয়ার কারণে চলাচলের একমাত্র গ্রামীণ রাস্তায় আধুনিকতার ছোঁয়া স্পর্শ করেনি। একসময় রাস্তাটি জমির আইলের মতো ছিলো। এরপর গত ২০০৬ সালে একটি বরাদ্দের মাধ্যমে মাটি কেটে একটু প্রশস্ত করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে কোন মতে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে এক হাটু কাঁদা ভেঙ্গে চলাচল করতে হয়। এতে করে গ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থীসহ পুরো গ্রামবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে গত ২০১৯ সালে আমরা গ্রামবাসীরা নিজেদের অর্থ দিয়ে ভ্যান চলাচল করা যায় এমন ভাবে মাটি কেটে প্রশস্তকরন করা হয়। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছর পৌনে দুই কিলোমিটার রাস্তার এক কিলোমিটার অংশ পাকাকরণ কাজ শুরু হয়েছে। সেই রাস্তার জন্য বালি দিতে আমরা গ্রামবাসীরা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বগুড়ার নাগরনদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে অনুমতি প্রদান করি। সেই বালু উত্তোলন করতে গেলে গত ২৫ফেব্রুয়ারী দিবাগত মধ্যরাতে অন্য দূরবর্তি দামুয়া গ্রামের ধান ব্যবসায়ী সবুজ, রিপন, গুয়াতা গ্রামের আম্মাদ হাজীর ছেলে লিটন বাধা প্রদান করে। ওই দিন রাতে খবর পেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) স্যার আমাদের রাস্তার পরিস্থিতি দেখে নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করে যান। এসিল্যান্ড স্যার আসার আগে সবুজ বাহিনী ভেকুর চালককে বেদম মারপিট করে এবং ভেকু মেশিনের বাটারিসহ বিভিন্ন উপকরণ লুট করে নিয়ে যায়। এতে ভেকু মেশিনের ঠিকাদার সবুজ বাহিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পালিয়ে যায়। সবুজ বাহিনী ও এসিল্যান্ড চলে যাবার পর পাশের ঘাটাগন গ্রামের অছির উদ্দিনের ছেলে দুলাল, একই গ্রামের হামিদুল, স্বপন ও লাদুর ছেলে আকরাম মোটরসাইকেল নিয়ে পুনরায় এসে ভয়ভীতি দেখালে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিহত করে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা সবুজ বাহিনী ও ঘাটাগন গ্রামের কয়েক জনের তান্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অবহেলিত এই গ্রামের মানুষদের চলাচলের জন্য রাস্তাটির অবশিষ্ট অংশও পাঁকাকরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

রাস্তায় বালি সরবরাহকারী উপজেলার নারায়নপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী আকন্দের ছেলে ফারুক হোসেন জানান তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে বালি সরবরাহের কাজ করে আসছেন। নিচ তালিমপুর গ্রামের মেঠো রাস্তার বেহাল দশা দেখে সেখানে বালি দেওয়ার চুক্তি হওয়ার পর থেকে সবুজ বাহিনী ও ঘাটাগন গ্রামের স্বপন বাহিনীকে চাঁদা না দেওয়ায় বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকী দিতে থাকে। গ্রামবাসীদের অনুমতিতে নাগরনদীর বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম থানার অংশ থেকে বালি উত্তোলন করে রাস্তায় সরবরাহের কাজ চলছিলো। তাহলে নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার অন্য গ্রামের বিএনপি সমর্থিত সুবজ বাহিনী ও দুলাল বাহিনীকে চাঁদা দিতে হবে কেন? চাঁদা না দেওয়ার কারণে তারা মধ্যরাতে ভেকু মেশিনে হামলা করে ভাংচুর করেছে। এতে করে ভেকু মেশিনের কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভেকুর চালককে বেদম মারপিট করে আহত করা হয়েছে। তাকেও হুমকি-ধামকী প্রদান করা হয়েছে। অথচ ম্যানেজ করে আবাদপুকুর এলাকার অন্যান্য স্থানে আ’লীগের লোকেরা ভেকু দিয়ে অবৈধ ভাবে মাটি খনন করলেও তাতে কোন সমস্যা নেই।

দামুয়া গ্রামের ধান ব্যবসায়ী সবুজ মুঠোফোনে জানান, ঐ রাতে তারা কয়েকজন পাশের গ্রাম থেকে মাহফিল শেষ করে ফিরছিলেন। পথেমধ্যে এসিল্যান্ড স্যার তাদের সহযোগিতা নিয়ে নিচ তালিমপুর গ্রামের নাগর নদীর বালু উত্তোলনের স্থানে যান। তারা আবার এসিল্যান্ড স্যারের সঙ্গে ফিরে আসেন। তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যে। তারা চাঁদা চাওয়া কিংবা ভেকু মেশিন ভাংচুরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান মুঠোফোনে জানান ঐ রাতে সবুজ ফোনে বালু উত্তোলনের বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য সবুজরা তাকে চয়েনের মোড় থেকে রিসিভ করে নিয়ে যান। গ্রামের মেঠো রাস্তার বেহাল দশা দেখে তিনি নদী থেকে বালু উত্তোলন করে রাস্তায় দেওয়ার অনুমতি প্রদান করে চলে আসেন। এসময় সবুজরা কারো কাছ থেকে চাঁদা দাবী কিংবা ভয়ভীতি প্রদান করেননি। তবে তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর কি হয়েছে সেটা তার অজানা বলে জানান এই কর্মকর্তা। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুঠোফোনে জানান নিচ তালিমপুর গ্রামবাসীরা চরম ভাবে অবহেলিত হয়ে আসছে। তিনি যখন একডালা ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন তখন ওই গ্রামের অভ্যন্তরীণ রাস্তায় ইট বিছিয়ে দিয়েছেন। তাই ওই গ্রামের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির পুরো অংশ পাঁকা হওয়া খুবই জরুরী। এমন বিষয়টি না বুঝে সবুজরা অন্যায় করেছে। তাদের দ্বারা এই ধরণের কর্মকান্ড আর কখনোই হবে না বলে অঙ্গিকার করেছে। পরবর্তিতে যদি সবুজসহ অন্যরা উপজেলার কোন স্থানে এমন অনৈতিক কর্মকান্ড করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



চাল আমদানির সময় বাড়ল আরো এক মাস

প্রকাশিত:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত চার মাসে ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ১৭ নভেম্বর থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে এই চাল আমদানি করা হয়। দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শুল্কমুক্ত কোটায় এ চাল আমদানি করে। তবে ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত থাকলেও দেশের বাজারে দামের উপর কোন প্রভাব পড়ছে না।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৩৫০ টন চাল আমদানি হয়েছে। অর্থাৎ এ নিয়ে গেল চার মাসে ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি হয়েছে এ বন্দর দিয়ে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত গত ৬ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারিভাবে নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল ও আতপ চাল আমদানির জন্য বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে এলসি খোলার সময়সীমা আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হলো।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল ও ক্রেতা সাধারনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সরকার দেশের শীর্ষ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাইরের দেশ থেকে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে বাইরের দেশ থেকে চাল আমদানির এই সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাহাবুব আলম জানান, আটটি চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গত ১৭ নভেম্বর থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি করেছে। সারাদেশে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৯২ প্রতিষ্ঠানকে। দুই লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ এবং এক লাখ ১৯ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তাদের। অনেক প্রতিষ্ঠান এই সময়ের মধ্যে আমদানি করতে পারেনি। তারপরও সরকার ২৫ দিন সময় নির্ধারণ করে দেয় আমদানিকৃত চাল বাজারজাত করার জন্য। আশানুরূপ চাল আমদানি না হওয়ায় প্রথম দফায় ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় সরকার। তারপরও আমদানি ধীরগতির কারনে আবারও সময় বাড়ায় সরকার। এভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানি না হওয়ায় এবারও চতুর্থবারের মতো আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে সরকার। এ সময়ের মধ্যে সব চাল আমদানি হলে বাজারে চালের দাম কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে চাল আমদানি অব্যহত থাকলেও বাজারে দামের উপর এর কোন প্রভাব পড়ছে না। বরং লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। রোজার শুরু থেকেই সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়েছে। অব্যহতভাবে চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, চালের দাম কমানোর জন্য সরকারের নানামুখী উদ্যোগের পরও সুফল মিলছে না। ভারত থেকে চাল আমদানি হলেও দেশীয় চালের দামের উপর তার কোন প্রভাব পড়ছে না। রোজার শুরুতেই সব ধরনরে চালের দাম বেড়েছে। চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে সব চেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। রোজায় সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে পারলেও চাল কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

বেনাপোল বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া বলেন, রোজার শুরুতেই চালের দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়েছে। রোজার আগের ৬৪ টাকা কেজি দরের ২৮ জাতের চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৬৯ টাকা, ৭২ টাকার মিনিকেট ৭৬ টাকা, ৫২ টাকার মোটা চাল ৫৬ টাকা, ৮৪ টাকার বাসমতি চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৮-৯০ টাকা কেজি। আমদানিকৃত ভারতীয় একটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে। তবে বাজারে ক্রেতাদের মধ্যে ভারতীয় চালের চাহিদা কম।

তিনি বলেন, রোজার মধ্যে চালের দাম কমার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। ভারতীয় চাল আমদানি অবহ্যত থাকলেও বাজারে দামের উপর কোন প্রভাব পড়ছেনা। তবে সামনে নতুন চাল বাজারে উঠলে সরবরাহ বাড়লে দাম কমতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম হোসেন জানান, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত চার মাসে ভারত থেকে ১৮ হাজার ৮০০ টন চাল আমদানি হয়েছে। চাল আমদানির জন্য সরকার আবারও একমাস সময় বৃদ্ধি করেছে। ভারত থেকে আসা আমদানিকৃত চালের ট্রাক স্থলবন্দর অভ্যন্তরে ঢুকলেই দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা তা দ্রুত ছাড়করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। যাতে আমদানিকৃত চাল দেশের বাজারে দ্রুত সরবরাহ হতে পারে।



আরও খবর