
জাতীয়
নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আজ আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া তরুণদের
রাজনৈতিক দলের নাম দেয়া হয়েছে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ বা ‘ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি’ (এনসিপি)।
দলটির আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত হয়েছে।
এছাড়া শীর্ষ নেতাদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির একজন কার্যনির্বাহী
সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা
জানান, শুরুতে নতুন দলের নাম ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক নাগরিক সংসদ’ রাখার
বিষয়ে আলোচনা হয়। পরে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ ও ‘বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি’ নাম দুটি
নিয়ে আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত গতকাল বিকালের দিকে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ নামটি
চূড়ান্ত করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ হবে তরুণদের
নতুন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম, রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ
হবে।
জানা গেছে, নতুন দল
এনসিপির প্রথম কমিটি হবে ১০০-১৫০ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি। এরই মধ্যে আলাপ-আলোচনার
মাধ্যমে কমিটির শীর্ষস্থানীয়দের নাম চূড়ান্ত করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি ও
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। নতুন দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পাচ্ছেন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, দলের দায়িত্ব নিতে ২৫
ফেব্রুয়ারি যিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ ছেড়েছেন। নতুন দলের সিনিয়র
যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকছেন সামান্তা শারমিন, যিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্রের
দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়েছে নুসরাত তাবাসসুম,
আরিফুল ইসলাম আদীব, সারোয়ার তুষার, আল আমিন, মনিরা শারমিন, হাসান আলী খানকে।
আহ্বায়ক কমিটির সদস্য
সচিব মনোনীত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক
সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব হিসেবেও তিনি
দায়িত্ব পালন করছেন। সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে থাকছেন ডা. তাসনিম জারা।
কমিটির তৃতীয়
গুরুত্বপূর্ণ পদ ‘প্রধান সমন্বয়কারী’। এ পদে মনোনীত হয়েছেন
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী
হিসেবে থাকছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ।
দলের মুখ্য সংগঠক পদে দায়িত্ব পালন করবেন দুজন। তারা হলেন দেশের উত্তরাঞ্চলের
মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তারা
দুজনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। নতুন দলের দপ্তর
সম্পাদক হিসেবে থাকছেন সালেহ উদ্দিন সিফাত। রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে আজ নতুন
এ দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে দলের শীর্ষ পদে মনোনীতদের
নাম ঘোষণা করা হবে।
নতুন কমিটি আগামী জাতীয়
সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত দলকে নেতৃত্ব দেবে বলে জানা গেছে। এজন্য দলের আহ্বায়ক
কমিটির আকার বাড়ানো হবে। এরই মধ্যে কমিটির একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে
জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সম্মুখযোদ্ধাদের স্থান দেয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ
পদগুলোয়। এছাড়া জুলাই আন্দোলনের আলোচিত নারী নেত্রীরা নতুন দলে জায়গা পাচ্ছেন বলে
জানা গেছে।
এদিকে দলের আত্মপ্রকাশ
অনুষ্ঠান কেন্দ্র করে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে গতকাল সকাল থেকেই পুরোদমে চলে
প্রস্তুতি। আয়োজকরা জানান, অনুষ্ঠানস্থলে মেডিকেল টিম, পুলিশ বুথ, ওয়াশরুম ও
পানির ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে ব্যাকস্টেজে মেয়েদের জন্য অন্য বুথের ব্যবস্থা
থাকবে। পাশাপাশি ভিআইপিদের জন্য থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক
দলের নেতাদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদেরও যোগ দেয়ার কথা
রয়েছে।