Logo
শিরোনাম

তুফানের ‘মুণ্ডু কাটা’ দৃশ্য সংশোধন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৫ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

পবিত্র ঈদুল আজহায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত সিনেমা তুফান। এরই মধ্যে সিনেমাটির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ সিনেমাটির মুণ্ডু কাটা দৃশ্য নিয়ে তৈরি হয় আলোচনা। এবার ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য অস্পষ্ট করা হলো।

সংবাদমাধ্যমে মুণ্ডু কাটা দৃশ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরই সমালোচনা করেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকেই। স্পর্শকাতর দৃশ্যগুলো অস্পষ্ট করে সিনেমা প্রদর্শনের নিয়ম। ব্লার না করে প্রদর্শন না করায় কেউ কেউ আঙুল তুলেন চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের দিকেও।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সেন্সর বোর্ডের পক্ষ থেকে দৃশ্যটি ব্লার করার কথা মৌখিকভাবে বলা হয়েছিল। কিন্তু নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ভয়ঙ্কর দৃশ্যটি প্রচার করা হয়। এতে করে অনেক শিশু ও নারী ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

রবিবার কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে খবর নিয়ে জানা যায়, সিনেমার সেই মুণ্ডু কাটা দৃশ্য ব্লার করে তুফান সিনেমা প্রদর্শন করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, রায়হান রাফি পরিচালিত ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তুফান সিনেমা এখন প্রেক্ষাগৃহে হাউজফুল চলছে। ঈদে মুক্তি পাওয়া ৫টি সিনেমার মধ্যে দর্শক আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে সিনেমাটি।


আরও খবর



শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে কিশোরী মা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

কয়েক বছরের ধারাবাহিক অগ্রগতির পর গত দুই বছরে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে শিশুমৃত্যুর হারও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর বড় কারণ বাল্য ও কিশোরী বিয়ে। অল্প বয়সে বিয়ে ও গর্ভধারণের কারণে সন্তান প্রসব করার সময় রক্তক্ষরণ বেশি হয়, যে কারণে তাদের মৃত্যুর হার বেশি। এছাড়া কিশোরী মায়েদের বিভিন্ন সমস্যার প্রভাব শিশুর স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ে। ফলে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, এখনো বিশ্বে প্রতি বছর তিন লাখ নারী গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর পরই মারা যান। বছরে ২০ লাখ শিশু জন্মের প্রথম মাসেই মারা যায়। আর মৃত শিশু জন্ম নেয় ২০ লাখেরও বেশি। অর্থাৎ প্রতি ৭ সেকেন্ডে একটি এমন শিশু মারা যায়, যার মৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেটারনাল অ্যান্ড পেরিনেটাল ডেথ সার্ভিলেন্স অ্যান্ড রেসপন্সের (এমপিডিএসআর) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ধারাবাহিকভাবে মাতৃমৃত্যু কমলেও গত দুই বছর আবার বাড়তে শুরু করেছে। ২০২২ সালে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যু হার ছিল ৬২ জন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল লাখে ৭৫। ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৯০-এ পৌঁছেছে। গত বছর মাতৃমৃত্যু সবচেয়ে বেশি ছিল সিলেট বিভাগে। এ বিভাগে লাখে ১১ জন নারী মারা যান।

যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৩ সালের হিসাব অনুসারে, প্রতি ১ লাখ জীবিত শিশু জন্ম দিতে গিয়ে ১৩৬ জন মা মারা যান। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১৫৩। ২০২১ সালে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ১৬৮।

নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কিশোরীদের গর্ভধারণের হার বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। ১৯ বছর বয়সের আগে প্রতি হাজারে ১১৩ কিশোরী গর্ভধারণ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিশোরী অবস্থায় বিয়ে ও গর্ভধারণের হার বেড়ে যাওয়ায় মাতৃমৃত্যু বাড়ছে।

লালকুঠি মা ও ‍শিশু হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. শাহনাজ খান বলেন, যে হারে মা ও নবজাতক মৃত্যুহার কমার কথা ছিল তা কমছে না। যারা অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ করে তাদের নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। যেমন খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ, পায়ে পানি আসা। মায়েদের এ ধরনের সমস্যা থাকলে সেটার প্রভাব শিশুর স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ে। ফলে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি দেখা দেয়। কিশোরী অবস্থায় বিয়ে হলে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ। যে কারণে মাতৃমৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। এমপিডিএসআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সন্তান জন্মদানের সময় যেসব নারী মারা গেছেন তাদের মধ্যে প্রায় ৪৬ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। ২০২২ ও ২০২৩ সালে এ হার ছিল যথাক্রমে ৩১ দশমিক ৮ ও ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে যেসব নারী মারা যান তাদের বেশির ভাগই প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের একটি বড় অংশ আবার গ্রাম পর্যায়ের। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাবে তারা গর্ভবতী নারী ও গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকেন না। প্রসবের আগে চিকিৎসকের অধীনও হন না। তাদের মধ্যে এখনো সচেতনতার অভাব রয়েছে। প্রচার-প্রচারণাও আরো বাড়ানো জরুরি।

অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী দেশে শিশুমৃত্যুর হার বেড়েছে। গত বছর প্রকাশিত বিবিএসের বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস প্রতিবেদনে (২০২৩) বলা হয়েছে, ২০২২ সালে দেশে এক বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার ছিল হাজারে ২৫ জন, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ২৭। পাঁচ বছর আগে এ সংখ্যা ছিল ২১।

অন্যদিকে এক মাসের কম বয়সী নবজাতকের মৃত্যুহার হঠাৎ বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালে প্রতি এক হাজার জীবিত নবজাতকের মধ্যে ২০ জন মারা যায়। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৬। পাঁচ বছর আগে ছিল ১৫। এছাড়া ২০২৩ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ জন। ২০২২ সালে ছিল ৩১ জন। পাঁচ বছর আগে ছিল আরো কম, ২৮ জন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, নিরাপদ পানি না পাওয়া ও ভেজালযুক্ত খাবারে কারণে শিশু ও মাতৃমৃত্যু বাড়ছে। এছাড়া শিশু ও মাতৃমৃত্যু বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বাল্য ও কিশোরী বিয়ে। যে কিশোরী গর্ভধারণ করে স্বাভাবিকভাবেই তারা নিজের ও শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে খুব একটা সচেতন থাকে না। তাদের পুষ্টির অভাব থাকে, রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

২০২৩ সালে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাল্যবিবাহের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সারা বিশ্বে অষ্টম ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের ওপর পরিচালিত ইউনিসেফের জরিপে দেখা যায়, ৫১ শতাংশ নারীর বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। এছাড়া বাংলাদেশে প্রায় ৪8 লাখ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু খর্বাকৃতির শিকার। যার অন্যতম কারণ মায়ের অল্প বয়সে বিয়ে ও গর্ভধারণ, ‍শিক্ষা ও পুষ্টির অভাব। বাংলাদেশে ১২ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের মধ্যে ১২ শতাংশেরই ওজন তাদের বয়স ও উচ্চতার তুলনায় কম। এছাড়া বাংলাদেশে গর্ভবতী নয় এমন প্রজননক্ষম নারীদের মধ্যে উচ্চমাত্রার পুষ্টিহীনতা রয়েছে।


আরও খবর



রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে ফাটল ধরাতে চাইছে সরকার

প্রকাশিত:শনিবার ১০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বললেন, অন্তর্বর্তী সরকার নানা ইস্যু সৃষ্টি করে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানোর ক্ষেত্র হয়তো তৈরি করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ খ্রিষ্টান ফোরামের উদ্যোগে ইস্টার পুনর্মিলনী ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, অভিযোগ উঠেছে- সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে অন্তর্বর্তী সরকার একদিকে পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদের নিরাপদে দেশত্যাগের সুযোগ করে দিচ্ছে। অন্যদিকে অত্যন্ত সুকৌশলে নানা ইস্যু সৃষ্টি করে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের ফাটল ধরানোর একটা ক্ষেত্র তৈরি করতে চাচ্ছে। পলাতক স্বৈরাচারের সহযোগীদেরও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রও হয়তো তৈরি করতে চাইছে। এই বিষয়গুলো ঘুরেফিরে মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন র‌্যাব সদস্যরা ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনকে গুম করে। আজ পর্যন্ত আমাদের এই সহকর্মীর হদিস আমরা পাইনি। স্বৈরাচারের শাসনকালে শুধু একজন সুমন নয়, ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে এ রকম অসংখ্য সুমনদের গুম, খুন ও অপহরণ করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে পলাতক স্বৈরাচারের সময় গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গুম হওয়া সুমনের বোনের নেতৃত্বে ২০১৪ সালে গঠিত হয়েছিল সামাজিক একটি সংগঠন ‘মায়ের ডাক'। অত্যন্ত আশ্চর্য এবং উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, গুম হওয়া সুমনকে ধরার জন্য গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় সুমনের বোনের বাসায় অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।

তিনি বলেন, এখন প্রশাসন বলছে, তারা নাকি সুমন সম্পর্কে জানতো না। তর্কের খাতিরে আমরা ধরে নিলাম যে, প্রশাসন সুমন সম্পর্কে জানতো না। কিন্তু এই যে পলাতক স্বৈরাচারের সময়ের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি (আবদুল হামিদ) বিমানবন্দর দিয়ে চলে গেছেন দেশ ছেড়ে। এর আগে ৫ আগস্ট একইভাবে আরেকজন দেশ ছেড়ে পালিছেন। এবার সাবেক ওই রাষ্ট্রপতিও অনেকটা একই কায়দায় পালিয়ে গেছেন। কিন্তু বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার তার এই দেশত্যাগের ব্যাপারে কিছুই জানে না! প্রত্যেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানেটা কী?

তারেক রহমান বলেন, একটি রাষ্ট্রে সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সদস্য হওয়া না হওয়ার ওপর দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা কিন্তু নির্ভর করে না। দেশে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন না থাকলে কথিত সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু, অর্থাৎ আপনি কিংবা আমি-আমরা কেউ নিরাপদ নই। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বও নিরাপদ নয়। রাষ্ট্রে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনই নিশ্চয়তা দিতে পারে নাগরিকদের নিরাপত্তা। দেশে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করার অন্যতম পূর্ব শর্ত হচ্ছে, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সংসদ এবং সরকার প্রতিষ্ঠা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। এই দেশ জনগণের।

এ সময় তিনি ষড়যন্ত্র রুখে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গঠনের আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, ফ্যাসিস্টরা দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ হয়েছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ ষড়যন্ত্র করতে না পারে। আমাদের যে যার জায়গা থেকে ভূমিকা রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, জনগণের ভোটে তাদের কাছে দায়বদ্ধ একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি প্রতিটি ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি এখনও তাদের সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। তবে বিভিন্ন কারণে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দায়িত্ব পালনে সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারছে কি-না, এ নিয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট জন গমেজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।


আরও খবর



নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না

প্রকাশিত:শনিবার ১৭ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

প্রগতিশীল নারী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলোর আয়োজনে ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’ কর্মসূচিতে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছে। ঘোষণাপত্রে নারীর বিরুদ্ধে যেকোনও সহিংসতা ও বৈষম্য প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন নারী সংগঠন ছাড়াও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নারী ও পুরুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ব্যানার, লিফলেট, স্লোগান, গান ও কবিতার মাধ্যমে নারীর অধিকার ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের দাবি তুলে ধরা হয়, যা পুরো কর্মসূচিকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে আরও সক্রিয় হতে হবে। বিশেষ করে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকি, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনকে ঘিরে গুজব ও অপপ্রচার এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঘোষণায় আরও বলা হয়, যারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায় কিংবা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়, তাদের স্পষ্টভাবে জানাতে হবে—নারী, শ্রমিক, জাতিগত, ধর্মীয়, ভাষাগত ও লিঙ্গীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার ও মুক্তি সম্পর্কে তাদের অবস্থান কী। আসন্ন নির্বাচনসহ ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে হবে। নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

ঘোষণাপত্রে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বৈষম্য চালিয়ে যাওয়ার যেকোনও অপচেষ্টা আমরা মেনে নেব না। মৌলিক অধিকার অস্বীকারের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানো হবে। বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রয়াস, সংস্কৃতি ও ধর্মকে দমনমূলক অস্ত্রে পরিণত করার অপচেষ্টা, এবং সংকীর্ণ মনোভাবকে সার্বজনীন করার প্রয়াস কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে।

সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর নারীনীতি ও অবস্থান আমরা নজরদারিতে রাখবো। যারা ক্ষমতার কাঠামো ব্যবহার করে বৈষম্য ও সহিংসতা জিইয়ে রাখে, সেই কাঠামো ভেঙে দিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। হুমকির মুখে মাথা নত করবো না, এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে পিছপা হবো না।

ঘোষণায় আরও বলা হয়, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে আজ আমরা এক জরুরি মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের দাবি—একটি গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে বৈষম্যবিরোধিতা ও সাম্যের ভিত্তিতে সব নাগরিকের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা স্মরণ করে ঘোষণায় বলা হয়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, তেভাগা, টঙ্ক, নানকার, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, গণঅভ্যুত্থান, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন, সুন্দরবন রক্ষা, নিরাপদ সড়ক ও ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন—প্রতিটিতেই নারীর সাহসী অংশগ্রহণ রয়েছে।

তবে অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়েও নারীর পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে প্রতিক্রিয়াশীল ও পিতৃতান্ত্রিক শক্তি। সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা, ব্যক্তিগত আক্রমণ, অনলাইনে হয়রানি, যৌন নিপীড়ন, এবং প্রকাশ্য হামলার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিসরে নারীর অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা চলছে।

নারী অধিকার বিষয়ক সংস্কার-প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গঠিত নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ৪৩৩টি সুপারিশ পেশ করে। কিন্তু এসব সুপারিশের বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা মূল দাবিগুলোকে আড়াল করে। এ ছাড়া কমিশনের সদস্যদের জনসমক্ষে অবমাননা করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার এই ন্যাক্কারজনক আচরণের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি—এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। এতে স্পষ্ট হয়, সরকারের নির্লিপ্ততা আসলে মৌলিক অধিকারের দাবিদারদের দমন করারই বার্তা বহন করে।

ঘোষণায় বলা হয়, সংবিধান বা সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে নারী ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর অধিকার অস্বীকার করা যাবে না। কৃষকের ভূমি-অধিকার থেকে শুরু করে পরিবেশগত ন্যায্যতা—সবকিছুই নারীর অধিকারের সঙ্গে যুক্ত। তাই সমাজের সবচেয়ে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত না করে কোনোভাবেই ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

সরকার ও ভবিষ্যৎ যেকোনও সরকারের উদ্দেশে বলা হয়—নারী, শ্রমিক, সংখ্যালঘু, হিজড়া ও লিঙ্গীয় বৈচিত্র্যসম্পন্ন নাগরিকদের রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কোনও শর্তসাপেক্ষ নয়।

ঘোষণাপত্রে স্পষ্টভাবে বলা হয়, আমাদের লড়াই শুধু নারীর মর্যাদার জন্য নয়, শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সংগঠনের অধিকার, ভূমি ও সম্পত্তির অধিকার, যৌন ও প্রজনন স্বাধীনতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার অধিকার, এবং প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের জন্যও।

পরিবেশ ধ্বংস, বিচারহীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার খর্বের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর অনেকটিই এসব মৌলিক দাবির অন্তর্ভুক্ত, ফলে কমিশন বিলুপ্ত করার অপচেষ্টা এবং সদস্যদের প্রতি আক্রমণ নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।

ঘৃণা, হুমকি, সংঘবদ্ধ সহিংসতা চালিয়ে এই আন্দোলনকে দমন করার প্রচেষ্টা চলছে—এ অভিযোগ করে প্রশ্ন তোলা হয়, সরকার কাদের তুষ্ট করতে চাইছে? সংখ্যাগরিষ্ঠের উগ্র জাতীয়তাবাদী অংশকে? নাকি সংস্কারের নামে বৈষম্যমূলক কাঠামো টিকিয়ে রাখার পরিকল্পনাকারীদের?

সবশেষে ঘোষণা দেওয়া হয়—অধিকার চেয়ে নয়, আদায় করেই নিতে হয়। আর সেই লড়াইয়ে ভয় নেই—পিছু হটার কোনও জায়গা নেই।


আরও খবর



যুদ্ধবিরতি হলেও স্থগিতই থাকছে সিন্ধু পানি চুক্তি

প্রকাশিত:রবিবার ১১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

ভারত ও পাকিস্তান কয়েকদিনের প্রাণঘাতী লড়াইয়ের পর অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হলেও দুই দেশের পানি ভাগাভাগির গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি স্থগিতই থাকছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে হওয়া সিন্ধু পানি চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সিন্ধু নদ ও এর শাখা নদীগুলোর পানি বন্টন নিয়ন্ত্রণ করে।

কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর এর পেছনে ইসলামাবাদ আছে বলে অভিযোগ করে নয়া দিল্লি সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে।

পাকিস্তান পেহেলগামের সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে। দেশটি জানিয়েছে, তারা ভারতের একতরফাভাবে সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপের দারস্থ হবে।

পাকিস্তানের কৃষি সেচের ৮০ শতাংশ পানি নিশ্চিত হয়েছে এই চুক্তির মাধ্যমে। পাকিস্তানের পানি মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সিন্ধু পানি চুক্তি (যুদ্ধবিরতি) আলোচনার কোনো অংশ না।

ভারতের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকার কর্মকর্তাও রয়টার্সকে জানান, এই চুক্তির বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া দেয়নি আর পাকিস্তানের পানি মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও প্রকাশ্যে কিছু জানাননি।

কাশ্মীর হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে তার অন্যতম এই পানি বণ্টন চুক্তি।

ভারত সরকারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, দুই দেশের সংঘাতের ক্ষেত্রে বিরতি দেওয়া হলেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাণিজ্য, ভিসা স্থগিতের মতো যে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলো সব বহাল আছে।


আরও খবর



মোদি তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে

প্রকাশিত:সোমবার ১২ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের বাসভবনে উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে বসেছেন। বৈঠকে তিন বাহিনীর প্রধান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং উপস্থিত রয়েছেন। এছাড়া সিডিএস অনিল চৌহানও সেখানে উপস্থিত আছেন বলে জানা গেছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিল্লির বাসভবনে উচ্চপর্যায়ের এ নিরাপত্তা বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান এবং তিন বাহিনীর প্রধান—সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং।

বৈঠকে আরও উপস্থিত রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী, গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর তপন ডেকা এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)-এর প্রধান রবি সিনহা।

বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন মাত্র দু’দিন আগে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্ত সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

চার দিন ধরে চলা পাল্টাপাল্টি হামলার পর গত শনিবার দুই দেশ তাৎক্ষণিকভাবে সব সামরিক তৎপরতা বন্ধে সম্মত হয়। এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে জানান, এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতা করেছে।

এই পরিস্থিতিতে সোমবার ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বৈঠকেরও পরিকল্পনা রয়েছে। আলোচনায় উত্তেজনা প্রশমনের পরবর্তী ধাপ ঠিক করা হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের সময় ভারত যে ৩২টি বিমানবন্দর বেসামরিক ফ্লাইটের জন্য বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল, সেগুলো আবার চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।


আরও খবর