Logo
শিরোনাম
সুন্দরবনে আগুন নেভাতে সময় লাগবে আগামী সপ্তাহে আবারও তাপপ্রবাহের শঙ্কা এবার ২০ লাখ হাজির সমাগম হতে পারে মক্কায় যুক্তরাষ্ট্রের কথাও শুনছে না ইসরায়েল লালমনিরহাটে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের প্রধান গ্রেফতার নওগাঁয় ইটভাঙ্গা মেশিনের চাপায় সিএনজি যাত্রী নিহত হাতীবান্ধায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ; সাংবাদিকের ক্যামেরা ভাংচুর- আহত ১০ আলোকিত সেরা নারীর সম্মাননা পেলেন মাধবদীর আমেনা বেগম জোৎস্না রামগড় সীমান্তে দেড় লক্ষ টাকার ভারতীয় মাদকদ্রব্য জব্দ অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় ভলিবল টুর্নামেন্টে দল পাঠাচ্ছেনা নোবিপ্রবি

উখিয়া ভূমি অফিসে ঘুষ আর দূর্নীতিতে আখড়া; জিম্মি সাধারণ মানুষ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image
  • উখিয়া ভূমি অফিসে প্রতিটি টেবিলে দিতে হয় ঘুষের টাকা। 
  • সহিমুরী খতিয়া নিতে সরকারি ফিঃ ২৪টাকা! ঘুষ দিতে হয় ১৫০০ টাকা। 
  • নাম জারি করতে সরকারি ফি ১১৭০টাকা, ঘুষ দিতে হয় ২০-২৫ হাজার টাকা। 
  • সরকারি নির্ধারিত ফি বাহিরে ঘুষ দিতে হয় ২০গুণ টাকা।

মুসলিম উদ্দিন :

কক্সবাজারের উখিয়া ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে চলছে অনিয়ম, ঘুষ-দুর্নীতি। উখিয়া ভূমি অফিসের টাকার অবৈধ লেনদেনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে কর্মচারী-দালাল সিন্ডিকেট। এতে কানুনগো, সার্ভেয়ার, তহসিলদার, অফিস সহকারী, জারিকারক, পিয়ন সবাই কম-বেশি জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। এইছাড়াও নিরক্ষর মানুষের অসচেতনতার সুযোগে সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দালাল চক্র বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে অফিস ম্যানেজ করার নামে সহজ সরল সাধারণ মানুষের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে প্রতিদিন।

ভূমি অফিসে সরেজমিনে ভোক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়- নাম প্রস্তাব, সার্ভে রিপোর্ট, দাখিলা, নামজারি, ডিসিআর সংগ্রহ, খাজনা দাখিল, খতিয়ান ইস্যু থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে সরকারি ফিঃ চেয়ে অতিরিক্ত ২০গুণ অর্থ দিতে হয়। আর এইভাবে অর্থ আদায় করে যাচ্ছেন কাননগো, ইউনিয়ন তহসিলদার, অফিস সহকারী, পিয়ন থেকে শুরু করে দালাল চক্র। আরো অভিযোগ রয়েছে- টাকা দিলে বদলে যায় মামলার তদন্ত রিপোর্টও।

খতিয়ান ইস্যু/নাম জারি করণে সরকারি ফি ১১৭০/- টাকা (অনলাইন ফি)। সময়কাল সর্বোচ্চ ১ মাস নির্ধারণ থাকলে ও দেখা যাচ্ছে ফি বাবদ ২০-২৫হাজার টাকা আর সময় ক্ষেপন করছে ১০-১১ মাস কিংবা আরো অধিক। এই সমস্ত কার্যক্রমে সরাসরি লিপ্ত হয়েছে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। উখিয়া ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সাধারণ মানুষকে সেবা তো দুরের কথা, কথা বলারও সুযোগ দেয়না। সরাসরি চিহ্নিত দালালদের দিয়ে কাজ করেন৷

সময় ক্ষেপনের বিষয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীরা বলছেন- আপনার ফাইল এসিলেন্ড স্যারের হাতে, স্যার সহজেই ফাইল পাশ করতেছেনা। তাতেই ভুক্তভোগী নিজেই কর্মকর্তাকে আরো টাকার লোভ দিয়ে নাম জারি সম্পূর্ণ করতে চেষ্টা করেন।

হারুনর রশীদ নামের এক ভুক্তভোগী বলেছেন, গত সপ্তাহে একটি খতিয়ানের সহিমুরীর জন্য আমার বাবার নামে দরখাস্ত জমা দিয়েছি নাজিরকে, সাথে দেড় হাজার টাকা দিয়েছি। তার পরেও সে খতিয়ান এখনো পাইনি৷

সুত্রে জানা যায়, দালাল/অসাধু কর্মকর্তার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠলে অস্বীকার করতে সুবিধা হয় কর্মকর্তাদের। উখিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের সচ্ছলতা নিয়ে প্রশ্ন রাখছেন ভুক্তভোগী উখিয়ার সাধারণ মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান- ‘ভূমি অফিসের কোন কাজ টাকা ছাড়া হয়না এটা এসিল্যান্ড নিজেও জানেন। তার পরেও করার কিছু নাই। টাকা নেওয়ার পরেও সময় মত কাজ করে দেয়না। আমার একটা কাজে ৩মাস ধরে ভূমি অফিসে ঘুরতেছি। তবে নাই কোন হয়রানির শেষ।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উখিয়ার এক সার্ভেয়ার জানান, ‘তহসিলদার খালেদা প্রতিটি মামলার প্রতিবেদনের জন্য নেন ২/৩হাজার টাকা। তিনি আরো জানান- ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোবারক হোসেন প্রতিটি কাজে ২/৩হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০-৪০হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেন৷’

উখিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে নিয়মিত কাজ করেন একজন (দালাল) পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান- ‘আমরা মানুষের কাজ থেকে যা পারি নিয়ে ওখানে কর্মকর্তা-কর্মচারী, অফিস সহকারী সানজিদা আফরীন, সার্টিফিকেট সহকারী মোঃ ইয়াছির আরাফাত সিফাত, নাজির বাপ্পারাজ দাশ, অফিস সহকারী নূপুর পাল, সার্ভেয়ার মোবারেক হোসেনসহ অন্যান্য যারা আছে তাদের প্রতিটি টেবিলে টাকা না দিলে কাজ করে না৷ নির্ধারিত টাকা না দিলে আমাদেরও চিনেন না। তাদের প্রতিটি টেবিল ম্যানেজ করে যে টাকা থাকে তা আমরা পায়। তিনি আরো জানান, দুঃখের বিষয় হচ্ছে টাকা দিলেও সময় মত কাজ করে না।

এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা সালেহ আহমদের সাথে ফোনে দিলে কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


আরও খবর



সচেতন ছাত্র সমাজ কর্তৃক বিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াড ২০২৪ অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

মো: হ্নদয় হোসাইন:

সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলায়  বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল, মাদ্রাসা,  সকল ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞান ও   গণিত অলিম্পিয়াডের আমেজ ছড়াতে “ সচেতন ছাত্র সমাজ (সিএসএস)” এর উদ্যোগে  বিজ্ঞান ও গণিত উৎসব- ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৩ এপ্রিল ) সম্ভূদিয়া বহুমুখী  উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উক্ত বিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াড  উৎসব- ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে  ৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণী জুনিয়র, নবম-দশম শ্রেণী   মোট ২ টি ক্যাটাগরিতে সিএসএস কর্তৃক নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয় । এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ৫ এপ্রিল ।

সম্ভূদিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাসরুমে সকাল ১০.৩০ টা থেকে বেলা ১১.৩০ টা  পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে এই বিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল ৯ টার সময়  মাঠে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেন।

বিজ্ঞান ও গণিত  অলিম্পিয়াড উৎসব জুনিয়র  ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ৫০ জন ও সিনিয়র  ক্যাটাগরিতে বিজয়ী  ৫০ জন । 

অনুষ্ঠান শেষে CSS কর্তৃক বিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াড উৎসব প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে বিজয়ীদেরকে পুরষ্কার হিসেবে বই, টি শার্ট ক্রেস্ট, মেডেল এবং সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার  বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি  হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল  বিশেষ অতিথি,  সন্মানিত  অতিথিবৃন্দ আর সিএসএস সদস্যবৃন্দ ও অভিভাবকবৃন্দ।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা BDTODAYS নিউজকে বলেন, “সচেতন ছাত্র সমাজ ” এর উদ্যোগে আয়োজিত “বিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াড” আয়োজনটি খুব সুন্দর ভাবে নিয়েছেন এবং বিভিন্ন স্কুল মাদ্রাসা  থেকে আগত শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিকতাসহ সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে।


আরও খবর



সারাদেশে হিট স্ট্রোকে ৫ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

তীব্র থেকে তীব্রতর দাবদাহে পুড়ছে সারাদেশ। অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই তীব্র দাবদাহে সারাদেশে হিট স্ট্রোকে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদের মধ্যে চট্টগ্রামে ২ জন, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা ও গাজীপুরে একজন করে মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে ভ্যাপসা গরমে হাসফাঁস করছে মানুষ। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে শিশুসহ দুজন। গরমের তীব্রতায় নগরীর বিভিন্ন স্থানে মানুষ ও যানবাহন চলাচল কমে গেছে।

তবে নগরীর হাসপাতালগুলোতে জ্বর, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত মানুষ ভর্তি হচ্ছে। যাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বহির্বিভাগের রেসিডেন্ট ফিজিশিয়ান (আরপি) ডা. মো. শাহেদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষ। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে হিটস্ট্রোকে ছয় মাস বয়সী এক শিশুসহ ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। নিহত বৃদ্ধের নাম ছালেহ আহমদ শাহ (৭০)। ছালেহ আহমদের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর পরুয়াপাড়া এলাকায়।

ছালেহ আহমদের ছেলে নজরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তাঁর বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর তাকে আনোয়ারা হলি হেলথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আনোয়ারা হলি হেলথের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, হাসপাতালে আসার আগেই ছালেহ আহমদের মৃত্যু হয়েছে। তিনি হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।

এদিকে একই জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় সাফা নামের ছয় মাস বয়সী এক কন্যা শিশুর মৃত্যু ঘটে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা ২নং ওয়ার্ড আনজিরমারটেক সৈয়দ আলমের নতুন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তার বাবার নাম মো. নিজাম উদ্দীন।

নিহতের বাবা নিজাম উদ্দীন বলেন, ভোরে মায়ের বুকের দুধ পান করার কিছুক্ষণ পর সাফা ঘুমিয়ে যায়। সে সময় ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। সকাল সাতটায় মেয়েকে কোলে নেওয়ার পর তার শরীর ঠান্ডা অনুভব হলে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাবরিনা আকতার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের ধারণা বিদ্যুৎ না থাকায় সে হিট স্ট্রোকে মারা গেছে।

পাবনা : তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ পাবনার জনজীবন। শনিবার (২০ এপ্রিল) পাবনার ঈশ্বরদীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও তাপদাহে পাবনা শহরে সুকুমার দাস (৬০) নামে এক ব্যক্তি হিট স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা শহরের রুপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিট স্ট্রোক করেন তিনি। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সুকুমার দাস শহরের শালগাড়িয়ার জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ওই ব্যাক্তি হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন। পাবনা শহর থেকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাকে। আমরা উনাকে চিকিৎসা চিকিৎসা দিতে পারিনি। নাম-পরিচয় জানার পর আত্মীয়-স্বজন আসছিল। মরদেহ তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা : চু্য়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপদাহ। টানা চার দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় অতিষ্ঠ এ অঞ্চলের জনজীবন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলেও দাবি করছে দপ্তরটি।

এদিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ তা অতি তীব্র তাপদাহে রূপ নিয়েছে। আজ এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।

এদিকে তীব্র তাপদাহে জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

গাজীপুর : গাজীপু‌র সিটি করপোরেশনের কোনাবা‌ড়ি‌র জেলখানা রোডে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের মৃত্যু হ‌য়ে‌ছে। শ‌নিবার (২০ এপ্রিল) বি‌কে‌লে তার মর‌দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতালের ম‌র্গে পা‌ঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম আশরাফ উদ্দিন।

সোহেল রানা গাজীপুর সি‌টি কর‌পো‌রেশ‌নের এনা‌য়েতপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। খবর পেয়ে পু‌লিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার ক‌রে হাসপাতালের ম‌র্গে পাঠায়।


আরও খবর



রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ দেশ। ঘরে-বাইরে কোথাও নেই স্বস্তি। বৃষ্টি এসে তাপ কমাবে মানুষ সেই আশায় থাকলেও গত এক মাস ধরে বৃষ্টির কোনো দেখা নেই। মাঝেমধ্যে দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হলেও তা গরম কমাতে খুব একটা সহায়ক ছিল না। প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে অধিক আর্দ্রতায় শুকাচ্ছে না ঘাম, কাপড় ভিজে লেপ্টে যাচ্ছে শরীরে, আর দ্বিগুণ হচ্ছে অস্বস্তি। এই যখন পরিস্থিতি, এর মধ্যেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহে। বাসা-বাড়িতে পানি না পেয়ে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।

গত কয়েক দিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বাড্ডা, নতুন বাজার, রামপুরা, মেরুল, ডিআইটি, মালিবাগ, বাসাবো, মিরপুর, পুরান ঢাকা, মুগদা, মান্ডা, লালবাগ, রায়েরবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা পানি পাচ্ছেন না ঠিকঠাক মতো।

হঠাৎ রাজধানীর এতগুলো এলাকায় পানির এ সংকটের কারণ জানতে গেলে ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে বলা হয়, সার্বিকভাবে পানি সরবরাহে ঘাটতি নেই। তবে কয়েক দিনের অসহনীয় গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানির উৎপাদন কিছু কিছু জায়গায় কম হচ্ছে। মূলত যেখানকার ডিপ টিউবওয়েলে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, সেসব এলাকায় কিছুটা পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সার্বিকভাবে পানি সরবরাহে ঘাটতি নেই। তবে কয়েকদিনের অসহনীয় গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানির উৎপাদন কিছু কিছু জায়গায় কম হচ্ছে। সেসব জায়গায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। আবার কিছু এলাকায় ঢাকা ওয়াসার গভীর নলকূপ কম থাকায় সেখানেও পানির সংকট তৈরি হয়েছে।

এদিকে লাইনে পানি না পেয়ে যারা টাকার বিনিময়ে ওয়াসার গাড়ির পানি অর্ডার করছেন তারাও ঠিকমতো পানি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার আওতায় ১০টি মডস জোনে পানির চাহিদা জানানো হলে বিশেষ গাড়ির মাধ্যমে বাসা-বাড়িতে পানি পৌঁছে দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে প্রতি ছয় হাজার লিটারের একটি বড় গাড়ির জন্য নেওয়া হয় ৬০০ টাকা। কিন্তু চাহিদা অনেক বেশি থাকায় সিরিয়াল দিয়ে, ফোন করেও এসব পানির গাড়ি পাচ্ছেন না পানি সংকটে থাকা বাসিন্দারা। অভিযোগ এসেছে, ৬০০ টাকার গাড়ির জন্য হাজার-বারোশ টাকা দিয়েও সিরিয়াল পাচ্ছেন না তারা।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ভাড়া বাসায় থাকেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাফায়েত ইসলাম। গত ৪-৫ দিন ধরে বাসায় পানি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তার। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গত ৪-৫ দিন ধরে ওয়াসার লাইনে পানি পাই না আমরা। এত গরমে মানুষের জীবন যায় যায় অবস্থা, এর মধ্যে বাসায় পানি না থাকা যে কতটা কষ্টের তা বলে বোঝানো সম্ভব না। এই ৪-৫ দিন গোসল নেই ঠিকমতো, বাথরুমে যাওয়া যায় না। আমাদের সমস্যা নিরসনে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না ওয়াসাকে।

যাবির হাওলাদার নামে একই এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, আমরা ওয়াসার মডস জোনে বারবার যোগাযোগ করছি। বারবার অর্ডার দিয়েও আমরা পানি পাচ্ছি না। পানির গাড়ি পেতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ৬০০ টাকার পানির গাড়ি দ্বিগুণ টাকা দিয়েও অনেক সময় পাওয়া যাচ্ছে না।

একই অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়েও। এ ব্যাপারে মডস জোনের আওতায় বাড্ডার বৌবাজার এলাকার ওয়াসার পাম্পের অপারেটর মনিরুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে পানি সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা মেশিন চালিয়ে ঠিকমতো পানি পাচ্ছি না। পানির স্তর নিচে নেমে গেছে কিছু কিছু এলাকায়। গরমে পানির চাহিদাও অনেকগুণ বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে পানি সরবরাহ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা ওয়াসার এক কর্মকর্তা বলেন, সার্বিকভাবে পানি সরবরাহে ঘাটতি নেই। তবে গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানির উৎপাদন কিছু কিছু জায়গায় কম হচ্ছে; মূলত সেই সব এলাকাতেই কিছুটা পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

ঢাকা ওয়াসা বলছে, প্রতিদিন প্রায় ২৯০ কোটি লিটার পানির উৎপাদনের সক্ষমতা আছে তাদের। গরমকাল এলে রাজধানীতে পানির চাহিদা থাকে ২৬০ কোটি লিটার। সে হিসাবে পানি সরবরাহে ঘাটতি থাকার কথা না। তবে, ভূগর্ভস্থ পানির ওপর অতি নির্ভরশীলতাই পানির বর্তমান সংকটের কারণ।

বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার পানি শোধনাগার রয়েছে পাঁচটি। তবে সংস্থাটি পানি পাচ্ছে চারটি শোধনাগার থেকে। উপরিতলের পানির উৎপাদন ৭০ শতাংশে উন্নীত করার কথা থাকলেও সেই লক্ষ্য এখনো পূরণ করতে পারেনি ঢাকা ওয়াসা। বর্তমানে উপরিতলের পানি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩৫ শতাংশ। আর বাকি ৬৫ শতাংশ ওয়াসার সরবরাহ করা পানি আসছে ভূগর্ভ থেকে।

প্রসঙ্গত, শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা মহানগরীর পানি সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার লক্ষ্যে ঢাকা ওয়াসার সব মডস জোনের কার্যক্রম তদারকির জন্য ১০টি মনিটরিং টিম গঠন করেছে ঢাকা ওয়াসা। রাজধানীতে পানির সমস্যা সমাধানে এসব টিম আগামী জুলাই মাস পর্যন্ত পানি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম মনিটরিং করবে। গঠন করা এই ১০টি মনিটরিং টিম জোনভিত্তিক পাম্পগুলো নিয়মিত ও আকস্মিক পরিদর্শন করবে। পাম্প চালকরা যথানিয়মে দায়িত্ব পালন করছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হবে টিমগুলো। পরিদর্শনকালে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করবে ঢাকা ওয়াসার এ কমিটি।

 


আরও খবর



৩১ দিন পর মুক্ত জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ২৩ নাবিক

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 |

Image

অবশেষে মুক্ত হয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটিতে থাকা ২৩ নাবিকই সুস্থ রয়েছেন।

জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ৩৫ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, অল্প কিছুক্ষণ আগে আমরা সুসংবাদ পেয়েছি। আমাদের জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২৩ নাবিকই অক্ষত অবস্থায় আমরা ফেরত পেয়েছি।আগামীকাল (রোববার) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।

জানা গেছে, জলদস্যুদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ নিয়ে একটি বিমান বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে জিম্মি জাহাজের ওপর চক্কর দেয়। এসময় জাহাজের ওপরে ২৩ নাবিক অক্ষত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর বিমান থেকে ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ সাগরে ফেলা হয়। স্পিডবোট দিয়ে এসব ব্যাগ জলদস্যুরা কুড়িয়ে নেয়। জাহাজে উঠে দাবি অনুয়ায়ী মুক্তিপণ গুনে নেয় জলদস্যুরা। তবে চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটি যথাসময়ে ছেড়ে দেয়নি দস্যুরা। পরবর্তীতে আশপাশে কেউ আটক করছে কি না, সেটি নিশ্চিত হয়ে জাহাজ থেকে দস্যুরা নেমে যায়।

মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সময় শনিবার মধ্যরাতে ২৩ নাবিক নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।

যদিও মুক্তিপণ কত এবং কীভাবে দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জাহাজের মালিকপক্ষের কোনো কর্মকর্তা।

কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান বলেন, সমঝোতার পর নাবিকসহ জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। জাহাজের চারপাশে একাধিক আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।

এর আগে গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।

কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন এমভি আবদুল্লাহ আগে গোল্ডেন হক নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেয়। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী এরকম মোট ২৩টি জাহাজ আছে কবির গ্রুপের বহরে।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।


আরও খবর



নারীর জীবনে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ |

Image

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের পানিতে দ্রুত লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি, জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশেষ করে নারীর স্বাস্থ্য জীবন-জীবিকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য

গত কয়েক দশকে উপকূলীয় এলাকায় পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে যে উষ্ণায়ন, পরিবেশের বিপন্নতা তার প্রভাব প্রথম এসে পড়ে নারীর ওপর। পানির স্তর নিচে নেমে যায়, নদীর পানি লবণাক্ত হয়ে যায়, নদী শুকিয়ে যায়, দুই-একটি নলকূপে, যেখানে মিষ্টি পানি ওঠে সেখানেও পানির জন্য হাহাকার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা না হলে কলসি নিয়ে পানির খোঁজে দীর্ঘপথ হাঁটা। জ্বালানির জন্য কাঠ সংগ্রহ করতে নারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বনের ভেতরে যেতে হয়। শুধু খাওয়ার পানিই নয়, সংসারে সব কিছুর জন্য যে পানি, সেই পানি সংগ্রহ করার দায়িত্বও নারীর। তাই সেই বিপর্যয় মোকাবিলায় নারীকে সামনে দাঁড়াতে হয়

পশুর নদী অববাহিকায় সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) এর গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, অঞ্চলের মানুষ ভূগর্ভস্থ পানি অন্যান্য খাবার থেকে দৈনিক ১৬ গ্রামের বেশি লবণ গ্রহণ করছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় অনেক বেশি। ২০০৯-১০ সালে খুলনার দাকোপ উপজেলার ১৩-৪৫ বছর বয়সী ৩৪৫ জন অন্তঃসত্ত্বা নারী নিয়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত নোনাপানি গ্রহণের ফলে নারীদের উচ্চ রক্তচাপ, জরায়ুর প্রদাহ, গর্ভকালীন খিচুনি, গর্ভপাত, এমনকি অপরিণত শিশুও জন্ম নিয়েছে

বিষয়ে অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) এর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসি বেগম বলেন, দীর্ঘদিন অতিরিক্ত নোনাপানি গ্রহণ ব্যবহারের ফলে গর্ভকালীন সময়ে নারীদের উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায় এর ফলে জরায়ুর প্রদাহ, গর্ভকালীন খিচুনি, গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে পাশাপাশি অপরিণত শিশু জন্মের আশঙ্কাও থাকে এই লোনাপানি ব্যবহারের ফলে

এর সমাধান হিসেবে তিনি বলেন, গর্ভাবস্থায় নারীদের লোনাপানি গ্রহণ ব্যবহার কমাতে হবে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যায়, নদীর পানি লবণাক্ত হয়ে যায়, নদী শুকিয়ে যায়। এগুলো রোধ করতে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। মানুষের সুস্থতার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন রোধের কোনো বিকল্প নেই

ছাড়া দীর্ঘদিন লবণাক্ত পানি ব্যবহারের ফলে চুল ত্বকের ক্ষতি হয়। রং কালো হয়ে যায় দ্রুত বার্ধক্য চলে আসে। উপকূলের নারী শিশুদের চিংড়িপোনা ধরার জন্য ভাটার সময় ভোরে দিনের বেলায় প্রায় - ঘণ্টা  লবণাক্ত পানিতে থাকতে হয়। এর ফলে প্রজনন স্বাস্থ্যসহ নারী অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন। লবণাক্ত পানির কারণে নারীরা এখন জরায়ু ক্যানসারের মতো জটিল রোগে ভুগছেন। 

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে প্রতিবছর যে কয়েক লাখ নারী জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকিতে থাকেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ উপকূলীয় অঞ্চলের নারীরা। নারীদের জরায়ুসংক্রান্ত অসুখের তীব্রতা লবণাক্তপ্রবণ গ্রামগুলোতে বেশি। সে জন্য অল্প বয়সেই এলাকার নারীরা জরায়ু কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন। 

জাতিসংঘ জনসংখ্যা কর্মসূচির (ইউএনএফপিএ) প্রতিবেদন অনুসারে, অন্তঃসত্ত্বা স্তন্যদাত্রী নারী এবং কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। ছাড়া শুধু স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে সেখানে পুরুষের তুলনায় নারীর মৃত্যুঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি। ১৯৯১ সালের বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড়ে নিহত লাখ ৪০ হাজার মানুষের মধ্যে ৭৭ শতাংশ ছিলেন নারী। ২০০৪ সালের সুনামিতে নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী। ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের পর মায়ানমারের ৮৭ শতাংশ নারী তাদের কাজ হারান। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় আক্রান্তদের (নিহত আহত) ৭৩ শতাংশই ছিলেন নারী


আরও খবর