Logo
শিরোনাম

ভালো ঘুম না হলে করণীয়

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

কখনো কখনো মনে হতে পারে ঘুমানোর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিন্তু তারপরও ঘুম হচ্ছে না। এমনটা অনেকেরই হয়ে থাকে। তবে এ থেকে পরিত্রাণের বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে।

জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক খবরে বলা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তির ফলে মস্তিষ্কে উঁকি মারতে পারি আমরা। মাথার খুলির ওপর ইলেকট্রোড মস্তিষ্কের তরঙ্গ নথিভুক্ত করতে পারে। একই সঙ্গে পেশির টান, নড়াচড়া ও নিশ্বাস-প্রশ্বাসও রেকর্ড করা হয়।

একজন মানুষ ঘুমিয়ে পড়ার প্রতি ১০০ মিনিট পরপর শুরুতে কম গভীর, এরপর গভীর এবং শেষ পর্যায়ে স্বপ্নের ঘুমে আচ্ছন্ন হয়। প্রতি একরাতে এ রকম চক্রের কয়েকবার পুনরাবৃত্তি হয়ে থাকে।

ঘুম বিজ্ঞানী আলিনে লিপ্স বলেন, ভালো ঘুম ও খারাপ ঘুমের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারার জন্য শেষে এক হিপনোগ্রাম বিশ্লেষণ করা হয়। এতে গুমের ধরণ সম্পর্কে জানা যায়। রাতে ঘুমের পর্যায়ের ধরনও শনাক্ত করা হয়। সেখান থেকে রাতে গভীর ঘুমের পর্যায় কতটুকু যথেষ্ট ছিল, সেটি স্পষ্ট বোঝা যায়। হালকা ঘুমের জন্য শরীর চাঙা হয়ে না উঠলে, এর কারণ সম্পর্কেও জানা যায়। আর রাতে যদি ভালো ঘুম না হয় তাহলে দিনে এর প্রভাব পড়ে।

কোলবালিশ: অধিকাংশ মানুষ পাশ ফিরে ঘুমাতে পছন্দ করেন। এ কারণে দুই হাঁটুতে ঘষা লাগে এবং পশ্চাৎদেশ কাত হয়ে থাকে। ফলে হাঁটুতে ব্যথা হয়ে থাকে। চিকিৎসকরা দুই হাঁটুর মাঝে ছোট একটি বালিশ কিংবা কোল বালিশ রাখতে বলে থাকেন। এতে পশ্চাৎদেশের অবস্থান ঠিক থাকে এবং হাঁটুতে ঘষা লাগে না।

তোশকের অবস্থান পরিবর্তন করা: ভালো ঘুমের জন্য তোশকের অবস্থান ঠিক হওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এতে ঘুমানোর সময় তিন আঙুল পরিমাণ ব্যবধান থাকলে সেটি আরামদায়ক হয় না। এ কারণে প্রতি ছয় মাসে একবার করে তোশক উল্টানো উচিত। আবার ঘাড়ে বা শরীরে যদি কখনো ব্যথা হয়, সেক্ষেত্রে তোশক উল্টিয়ে দেয়া ভালো।

আকস্মিক শব্দ: রাতে ঘুমানোর সময় কিছু শব্দ ঘুমে বাধা হতে পারে। যেমন হঠাৎ রেলগাড়ি বা উচ্চশব্দে সাউন্ডবক্স বাজানোর কিছু শব্দ। যদি এ শব্দ প্রতিদিন একই সময়ে হয়, তাহলে অনেকে অভ্যস্ত হয়ে যান এর সঙ্গে। হঠাৎ বিড়াল বা কুকুর ডেকে উঠলেও ঘুম ভেঙে যায়। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে একটি অডিও রেকর্ড চালানো। যাতে করে নির্দিষ্ট কিছু শব্দ তরঙ্গ প্রবাহিত হয়।

বাতি বন্ধ করা: রাতে ঘুমানোর আগে ঘরের বাতি বন্ধ করা একটি জরুরি বিষয়। ঘুমের জন্য মেলাটোনিন হরমোনের প্রয়োজন হয়। তাই ঘুমানোর অন্তত আধা ঘণ্টা আগে বাতি নিভিয়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে ডিজিটাল ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ ইত্যাদি বন্ধ রাখা উচিত।

অতিরিক্ত খাওয়া: গবেষণা অনুসারে, অতিরিক্ত খাওয়ার পরে কখনোই ভালো ঘুম হয় না। কারণ, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পাকস্থলী এতটাই ভরা থাকে যে, মস্তিষ্ক তখন দুঃস্বপ্নের জন্ম দিয়ে থাকে।


আরও খবর

তীব্র তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার উপায়

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪

ঈদে বালুচর এর পাঞ্জাবি

রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪




সংশোধনী আসছে কাবিননামায়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

হাইকোর্টের নির্দেশে মুসলিম বিয়ে নিবন্ধন ফরম বা কাবিননামা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। চলতি মাসেই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে এ নিয়ে।

সংশোধনীতে কাবিননামার ফরম থেকে নারীর জন্য অবমাননাকর কুমারী শব্দটি বাদ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বরের বর্তমান স্ত্রী কতজন, তা-ও জানাতে হবে সংশোধিত ফরমে। এর আগে বরের বিয়ে বা বউ আছে কি না, এমন তথ্য চাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসেই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। এরই মধ্যে খসড়া (সংশোধিত) ফরম প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া নিকাহ রেজিস্ট্রারদের (কাজি) শিক্ষাগত যোগ্যতা আলিম থেকে বাড়িয়ে ফাজিল এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভায় সুবিধাজনক স্থানে নিজ খরচে একাধিক অফিস স্থাপনের পরিবর্তে একটি কাজি অফিস করতে বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন, ১৯৭৪-এর আলোকে ২০০৯ সালে নিকাহনামা বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। নিকাহনামা ফরমে ২৫ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়। ফরমের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে কন্যা কুমারী, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কি না তথ্য চাওয়া হয়।

২০২২ সালে এক রায়ে এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন ও সংশোধন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। খসড়া ফরমে এটি সংশোধন করে কন্যা অবিবাহিত, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কি না? লেখা হয়েছে।

এছাড়া বর্তমান নিকাহনামা ফরমের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে জানতে চাওয়া হয়, বরের কোনো স্ত্রী বর্তমানে আছে কি না এবং থাকিলে অন্য বিবাহে আবদ্ধ হইবার জন্য বর ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ মোতাবেক সালিশি কাউন্সিলের অনুমতি লইয়াছে কি না?

খসড়া ফরমে এই অনুচ্ছেদে জানতে চাওয়া হয়েছে, বর বিবাহিত, অবিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত কিংবা বিপত্নীক কি না? স্ত্রী থাকিলে কতটি এবং অন্য বিবাহে আবদ্ধ হইবার জন্য বর ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ মোতাবেক সালিশি কাউন্সিলের অনুমতি লইয়াছে কি না? এছাড়া বরের যে কজন স্ত্রী বর্তমান থাকবে, তাদের বিষয়েও তথ্য দিতে হবে নতুন ফরমে।

উল্লেখ্য, কাবিননামা ফরম সংশোধন চেয়ে ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নারীপক্ষ ও মহিলা পরিষদ। এর প্রেক্ষিতে ওই বছরই সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট রায়ে মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে কাবিননামায় ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে থাকা কুমারী শব্দটি লেখা বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করেন।


আরও খবর



সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সাংসদ নজির হোসেনের দাফন সম্পন্ন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

শফিউল আলম, স্টাফ রিপোর্টার :

সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। 

সুনামগঞ্জ-১(জামালগঞ্জ,তাহিরপুর,মধ্যনগর ও ধর্মপাশা) আসনের কমিউনিষ্ট পার্টি ও বিএনপি থেকে তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা নজির হোসেনের প্রথম  জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্রেশন এলাকায়। 

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রথম  জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পুলিশের একটি চৌকুস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। 

জানাযায় মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ আওয়ামীলীগ বিএনপি জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন সংগঠনের কয়েক হাজার নেতৃবৃন্দ একাকার হয়ে জানাযায় অংশগ্রহন করেন। 

 এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট,বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হোসেন জীবন,জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী,প্রমুখ। 

উল্লেখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেন  বৃহস্পতিবার ভোররাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী সন্তান আত্মীয় স্বজনসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে যান। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সুনামগঞ্জের ট্যাকেরঘাট সাব সেক্টরের সহকারী অধিনায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বে দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে কমিউনিষ্ট পার্টি থেকে সুনামগঞ্জ-১ আসনে  সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৩ সালের ১৫ই অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল বিএনপিতে যোগদান করেন। পরে ১৯৯৬ সালে ঐ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে এবং ২০০২ সালে তিনি আবারও মোট তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 

পরবর্তীতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সাতগাঁও শাহাপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানযার ইমামতি করেন মাওলানা শায়খ বাহাউদ্দীন। জানাযা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।


আরও খবর



বাগেরহাটের রামপালে লোকালয়ে ঘুরছে দুটি হনুমান

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

এম.পলাশ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউনিয়নের কুমলাই গাববুনিয়া গ্রামে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে দুটি হনুমান।  হনুমান দুটিকে দেখতে এলাকার ছোট বড় সবাই ভিড় জমাচ্ছে।

শনিবার(৩০ মার্চ) ভোররাত থেকে গাববুনিয়া গ্রামের আতিয়ার তালুকদারের বাড়িতে হনুমান দুটিকে দেখা যায়। 

আতিয়ার তালুকদারের বাড়িতে দুটি হনুমানের আগমন ঘটেছে খবরটি মুহূর্তে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর পেয়ে এলাকার ছোট বড় অনেকেই হনুমান দুটিকে দেখতে ভিড় জমায়। উৎসুক জনতা হনুমান কলা, রুটি, বাদাম,  বিস্কুট,  পাকা টমেটোসহ নানান খাদ্য খাবার খেতে দিচ্ছে। হনুমান দুটি নির্ভয়ে মানুষের সে খাদ্য খাবার খাচ্ছে। 

এ ঘটনা জানতে পেরে এ প্রতিবেদক সরেজমিনে উপস্থিত হয় এবং হনুমানের উপস্থিতর ঘটনার সত্যতা দেখতে পায়। হনুমান দুটি সকালে বেলা আতিয়ার তালুকদারের বাড়িতে অবস্থান করলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাদের চলাফেরার স্থান পরিবর্তন করতে থাকে।

স্থানীয় বাসিন্দা ফেরদৌস ফকির জানান, সকাল বেলা জানতে পারি আমাদের গ্রামে দুটি হনুমান এসেছে৷ আমরা খবর পেয়ে আতিয়ারের বাড়িতে দেখতে যাই। অনেকে অনেক খাদ্য খাবার খেতে দিচ্ছে এবং সে হনুমান সেই খাবার খাচ্ছে। 

আরেক স্থায়ী বাসিন্দা কুলছুম বেগম জানান, হনুমান গ্রামে এসেছে শুনতে পেয়েই আমাদের মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হয় এবং আমরা দ্রুত হনুমান দুটিকে দেখতে ছুটে যাই। 

হনুমান দুটি কোথা থেকে লোকালয়ে এসেছে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। হনুমানকে দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় জমানোর ফলে মাঝে মধ্যে হনুমান দুটি ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক হাওলাদার আজাদ কবিরের সাথে কথা হলে তিনি জানান, হনুমান সাধারনত যশোরের কেশবপুর এলাকা থেকে কলা বা কাঁঠাল বোঝাই ট্রাকে করে বিভিন্ন চলে যায়। 

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ মোঃ মফিজুর রহমান চৌধুরীর সাথে তার ব্যবহৃত ০১৭২১-০৮৮৮৪৪ নম্বরে একাধিক বার ফোন করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


আরও খবর



নেশাগ্রস্ত স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

পুলক ঘটক, সিনিয়র সাংবাদিক :

নেশাগ্রস্ত ও বিকৃত স্বভাবের স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে গতকাল (১৭ এপ্রিল বুধবার) ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রিয়ন্তী সাহা নামে ১৯ বছর বয়সের এক তরুণী। অত্যাচারিত মেয়েটি স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স চায়। কিন্তু হিন্দু আইনে ডিভোর্স নেই। পরে “শ্বশুরবাড়িতে হামলা করার সময় চার বোতল ফেনসিডিলসহ” মেয়েটির স্বামী দীপকে প্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আচ্ছা বলুন দেখি, দীপ “ফেনসিডিলসহ শশুরবাড়িতে হামলা”র ঘটনাটি না ঘটালে আর কোন আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত? হিন্দু আইনে প্রিয়ন্তী সাহা প্রতিকার পাবে কিভাবে? প্রকৃত আইনে প্রতিকারের সুযোগ না থাকলে বিকৃত পন্থায় কিভাবে কি করতে হয় সে বিষয়ে আমাদের দেশের মানুষ সিদ্ধহস্ত। সবকিছুতেই বিকৃত পন্থার অনুশীলন!

শুরুতেই ঝরে গেছে মেয়েটির মধুময় দাম্পত্য জীবনের সকল সম্ভাবনা। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী মাত্র এক মাস আগে গরীবের মেয়ে প্রিয়ন্তীর বিয়ে হয়েছিল এক কোটিপতির নেশাগ্রস্ত ছেলে দীপের সাথে। বিয়ের প্রথম রাত থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ অনুযায়ী, দীপ তাকে জোর করে নেশা করাতো; এমনকি স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের গোপন মুহুর্তগুলো ফিল্মিং করে ফেসবুকে দিত। 

মেয়েটি ঐ স্বামীর সাথে সংসার করতে রাজি নয়। ছেলের কাকাও নেশাগ্রস্ত দীপের দুরাচারের কথা স্বীকার করেছে। এ পর্যন্ত এই তথ্যগুলি মিডিয়ায় এসেছে। এরপর দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব যখন দীর্ঘায়িত হবে, তখন হয়তো ছেলের পক্ষ থেকে মেয়েটির চরিত্রের দোষ ছড়ানো হবে। এসব নিয়ে সমাজে খোশগল্প হবে। কিন্তু এর স্থায়ী আইনগত সমাধান এবং এধরনের অবস্থার শিকার হওয়া মেয়েদের সুস্থ্য স্বাভাবিক দাম্পত্য ভবিষ্যৎ তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাববে না! 

আমরা যখন হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ ও মেয়েদের পুনঃবিবাহের আইন চাচ্ছি তখন আমাদের দেশের শিক্ষিত-অশিক্ষিত তথাকথিত প্রগতিশীল কিছু হিন্দু বলছে “হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের অবিচ্ছেদ্য বন্ধন।” হিন্দু বিয়ে ভাঙা সম্ভব নয়। মেয়েদের পুনরায় বিয়ে হতে পারে না। বাটপারদের এসব কথা বাস্তবসন্মত নয়, প্রিয়ন্তী ও দীপের ঘটনা তার প্রমাণ। এরকম প্রমাণ অসংখ্য। 

প্রিয়ন্তী নামক ১৯ বছরের এই মেয়েটির জন্য বাকি জীবন একাকি কাটানো কতটা ভাল এবং নিরাপদ? বর্তমান স্বামীর সাথে বৈধভাবে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে তাকে অন্য কোনো ভাল যুবকের সাথে বিয়ে দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ দিলে কি অধর্ম হবে? অথচ বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিবাহের বিধান নেই। ভারতের হিন্দু আইনে আছে; হিন্দু শাস্ত্রেও বিধান আছে। 

বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ না থাকা সত্ত্বেও এখন আইনকে পাশ কাটিয়ে বহু দম্পত্তি অবৈধপন্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে। অবৈধভাবে মেয়েদের নতুন করে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। জীবনের বাস্তবতায় যে বিষয়ের চাহিদা আছে বা অনিবার্যতা আছে, তাকে শুধু আইনগতভাবে বাঁধা দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যায় না। 

হিন্দু বাটপাররা অবৈধ বিবাহ বিচ্ছেদ, মেয়েদের অবৈধভাবে দ্বিতীয় বিয়ে দেয়া, অবৈধভাবে দাম্পত্য সম্পর্ক করা, অবৈধভাবে সন্তান উৎপাদন এবং সেই অবৈধ সন্তানের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা ইত্যাদি সব জিইয়ে রাখতে চায়। সব অবৈধকর্ম মানবে, কিন্তু বৈধ বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আইন প্রণয়ন মানবে না। ইংরেজদের ভগবান হিসেবে বিশ্বাস করে হিংরেজদের রেখে যাওয়া আইন মানবে! 

হিন্দুদের বড় বড় সংগঠন আছে। অথচ বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ ছাড়া হিন্দুদের কোনো সংগঠনের দাবিনামায় প্রিয়ন্তীর মতো বিড়ম্বিত জীবনের মেয়েদের মুক্তির জন্য বা নারী অধিকারের পক্ষে একটিও দাবি নেই। সবচেয়ে বড় বাটপার সেইসব হিন্দু, যারা নিজেদেরকে শিক্ষিত ও প্রগতিশীল দাবি করে; ইসলামী মৌলবাদের বিপক্ষে কথা বলে অথচ হিন্দু সমাজের সমস্যাগুলোর বিষয়ে নিরব থাকে। শুধু নিরব নয়, এরা কেউ প্রকাশ্যে, কেউ নিরবে এবং কেউ কেউ ইনিয়েবিনিয়ে ”হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” গল্পই চালিয়ে যাচ্ছে। 

মন্ত্র পরে নাকি নারী ও পুরুষের দুই আত্মা এক করে দেয়া যায়! দুই আত্মার বন্ধন হলেও সেটা আবার পুরুষের জন্য নয়। পুরুষ বিয়ে করে এক বউকে ঘরে পৌঁছে দিয়েই চাইলে এক ঘন্টার মধ্যে আবার আরেকটি বিয়ের জন্য দৌড় দিতে পারে। এক পিঁড়িতে বসেই একাধিক মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। আরও বহু নারীর সঙ্গে “জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” তৈরি করতে পারে। সবগুলো বিবাহবন্ধনে শুধু নারী আটকাবে, পুরুষ মুক্ত। হিন্দু আইনে পুরুষের জন্য যতখুশি বিয়ে করতে বাধা নেই। বিয়ে ছাড়াও যত্রতত্র গমণে পুরুষের বাধা নেই; কারণ পুরুষের জন্য “সতীত্ব” নয়। 

হিন্দু পুরুষের বহুবিবাহের সুযোগ বন্ধ করার কথা বললে জন্মজন্মান্তরের বন্ধনবাদী দাদারা হৈ হৈ করে বাধা দিতে আসে। বিবাহ বিচ্ছেদ আইনের দাবি জানালেও প্রগতিশীলতার মুখোশে প্রতিক্রিয়াশীল শয়তনরা আপত্তি করে। আমরা বহুবার শাস্ত্রবিধি দেখিয়ে বলেছি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিয়ে দেয়া সনাতন ধর্মে বৈধ। শাস্ত্রগ্রন্থে এর সুস্পষ্ট বিধান আছে; পৌরাণিক আমলে বিবাহ বিচ্ছেদের নজিরও আছে। একজনেরও সামর্থ্য হয়নি শাস্ত্র দেখিয়ে আমাদের দাবি ভুল প্রমাণ করার। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক কায়েমি স্বার্থ ও হীনমন্যতার ঊর্দ্ধে তারা উঠবে না। 

এরা গরু-বাছুর ও পণ্যসামগ্রির মতো মেয়েকে দান করার পক্ষে। শুধু দান নয়, এর নাম আবার “সম্প্রদান”! অর্থাৎ কোনও প্রকার শর্ত ছাড়া, সম্পূর্ণভাবে স্বত্ত্ব ত্যাগ করে ধর্মার্থে কন্যাদান। মেয়ে নাকি দানের বস্তু! দানের মধ্য দিয়ে মেয়ের উপর বাবার আর কোনও স্বত্ব থাকবে না; কন্যা দান করে বাবা পুণ্য অর্জন করবে। বাবার গোত্রেও মেয়েটির আর পরিচয় থাকবে না। একদম গোত্রান্তর! 

অনেকবার বলেছি, তোমরা একটি প্র্যাকটিক্যাল দৃষ্টান্ত আমাকে দেখাও যেখানে, বিয়ের মন্ত্রের মাধ্যমে মেয়েটির গোত্র বদলে গেছে। মেয়েটির শরীরে আর বাবা-মায়ের ডিএনএ নেই –পরীক্ষা করার পর দেখা গেছে বিয়ের পর মেয়েটির সঙ্গে তার স্বামীর অথবা তার শশুর- শাশুড়ির ডিএনএ মিলছে। একজনও ডিএনএ টেস্ট করে পরীক্ষা দিতে রাজি নয়। মেয়েকে দান করেছ, তার সাথে তোমার আর সম্পর্ক নেই! দান করে মেয়েকে কি পর করে দেয়া যায়? তুমি কি বিয়ে দেয়ার পর তোমার মেয়েকে ভিন্ন সম্পর্কে বউদি ডাকতে পারবে? তাহলে গোত্রান্তর কি আসলে মিথ্যা নয়? তোমার মেয়ের গোত্রান্তর হবে কেন বন্ধু? 

শাস্ত্রে কন্যাদানের বিধান আছে, আমরা তা অস্বীকার করছি না। যজ্ঞের পুরোহিতকে স্বালঙ্করা কন্যা দান করলে পুণ্য বেশি হয়। শাস্ত্রে তাই বলা আছে। কিন্তু উপযুক্ত ছেলের কাছে বিয়ে না দিয়ে পুরোহিতকে কন্যাদান করতে কেউ রাজি হয় না। শাস্ত্রে শিশু কন্যাদানকে আরও বেশি মহিমান্বিত করা হয়েছে। আট বছর বয়সী কন্যাদানে পুণ্য অনেক বেশি। অষ্টম বর্ষীয় কন্যার বুড়ো স্বামী মারা গেলে সেই বাচ্চা মেয়েটাকে স্বামীর চিতায় পুড়িয়ে মারলে আরও বেশি পুণ্য অর্জন করা যায়। শাস্ত্রে এসব আছে। কিন্তু সরকার আইন করে সতীদাহ ও বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করেছে। ভারতে পুরুষের বহুবিবহাও নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন কন্যাদানের মতো অসভ্যতা বন্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করার সময় এসেছে। মানুষকে উন্নত হতে হবে, আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞানবিজ্ঞানের সমান্তরালে চলতে জানতে হবে। 

আমি বহুবার শাস্ত্র দেখিয়ে বলেছি, কন্যাদান ছাড়াও বিয়ের বিধান আছে। শাস্ত্রে আট প্রকার বিয়ের বিধান আছে। প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর পারস্পরিক পছন্দে ও সন্মতিতে বিয়ের স্বীকৃতি শাস্ত্রে আছে। সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বিশেষ একটি শাস্ত্রের নির্দিষ্ট কোনো বিধান অনুসরণ করার বাধ্যবাদকতা নেই। 

সনাতন ধর্মে উদ্ভট প্রাচীন কিছু প্রথার নজির যেমন আছে তেমনি প্রথার বাইরে গিয়ে উন্নত হওয়ার তাগিদও আছে। সনাতন ধর্ম প্রগতিশীল। পরিবর্তন ও যুগধর্ম অনুসরণ সনাতন শাস্ত্রে অনুমোদিত। যারা সনাতন শাস্ত্রকে প্রতিক্রিয়াশীলতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নারীর জীবনকে দুর্বিষহ করতে চায় এবং হিন্দু নারীদের দাসীর মতো ব্যবহার করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই এবং জয় আমাদের প্রাপ্য।


আরও খবর



কলেরার প্রাদুর্ভাবে বৈশ্বিক কর্মসূচি ঘোষণা

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। পানিবাহিত এই প্রাণঘাতী রোগটির প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে তাই বড় আকারের টেস্ট কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈশ্বিক এই সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচওর হিসেব অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪ লাখ ৭৩ হাজার জন। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ ৭ লাখ। চলতি ২০২৪ সালে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আলামত পাওয়া যাচ্ছে।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত দুতিন বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমরা কলেরার অনাকাঙিক্ষত ও উদ্বেগজনক প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করছি। এই প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে কলেরার বৈশ্বিক টেস্ট কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো কলেরা নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা এবং নিয়মিত নজরদারি এবং কলেরা টেস্ট বিষয়ক সক্ষমতা বাড়ানো।

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন দেশে কলেরা টেস্টের সরঞ্জাম পৌঁছে যাবে। প্রাথমিক ভাবে মালাউই, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, জাম্বিয়াসহ মোট ১৪টি দেশে পাঠানো হবে সরঞ্জাম।

এ কর্মসূচিতে ডব্লিউএইচওর অংশীদার হিসেবে রয়েছে আন্তর্জাতিক টিকা সহায়তা সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গ্যাভি), জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এবং কলেরা প্রতিরোধ সংক্রান্ত বৈশ্বিক সংস্থা গ্লোবাল টাস্কফোর্স অন কলেরা কন্ট্রোল।


আরও খবর

তীব্র তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার উপায়

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪