Logo
শিরোনাম

ভারতে বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা

প্রকাশিত:শনিবার ২৫ জানুয়ারী 20২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে রামমূর্তি নগরের কেলকেরে লেকের কাছে ২৮ বছর ওই বয়সী বাংলাদেশি নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারী একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন এবং গত বৃহস্পতিবার বাড়ি ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা নির্জন এলাকায় তার মরদেহ আবিষ্কার করে এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেয়।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিহত নারী একজন বিবাহিত ছিলেন এবং তার স্বামী ব্রুহাত বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকার পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তারা তিন সন্তানসহ শহরে বসবাস করতেন।

এক পুলিশ কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ওই নারী বাংলাদেশি নাগরিক এবং গত ছয় বছর ধরে এখানে বসবাস করছিলেন। তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি চিকিৎসা ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার ওই নারী তার সহকর্মীকে জানিয়েছিলেন যে তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং তার দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে আগে চলে যেতে বলেন। তবে রাতে বাড়ি না ফেরায় তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তিনি পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করতে সেখানে গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে মাথায় বড় পাথরের আঘাতসহ তার মরদেহ পাওয়া যায়। সম্ভবত কোনো তর্ক-বিতর্কের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা বিএনএস ধারা ৬৩ (ধর্ষণ) এবং ১০৩ (হত্যা)-এর অধীনে মামলা দায়ের করেছি এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।

এদিকে ঘটনার খবর পাওয়ার পর পূর্ব বিভাগের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (ডিসিপি) দেবরাজ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে ১১২ নম্বরে কল পেয়ে আমরা একটি পরিত্যক্ত স্থানে এক নারীর মরদেহ পাওয়ার তথ্য পাই। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এটি একটি নৃশংস অপরাধ। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে।


আরও খবর

রোহিঙ্গারা মায়ানমারে ফিরতে চায়

শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫




নিখোঁজ ৩৩০ জনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

গুমের শিকার হওয়ার পর এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি এমন ব্যক্তির সংখ্যা ৩৩০। তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি অসরপ্রাপ্ত বিচারক মইনুল ইসলাম চৌধুরী। রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ঘুমের শিকার হয়ে ফিরে না আসা ৩৩০ জন ব্যক্তির অবস্থান বা ভাগ্য সম্পর্কে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

দেশ থেকে গুম হওয়া কোনো ব্যক্তি ভারতের কারাগারে আছে কিনা তা অনুসন্ধান করে দেখবে গুম সংক্রান্ত কমিশন। ইতিমধ্যে ভারতের কারাগারে থাকা বাংলাদেশি বন্দিদের তালিকা চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারত এক হাজার ৬৭ জনের বন্দির তালিকা দিয়েছে। সেই তালিকায় গুম হওয়া কোনো ব্যক্তি আছে কিনা তা মিলিয়ে দেখছে কমিশন।

বিচারপতি (অব.) মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের কারাগারে বন্দি বাংলাদেশি নাগরিকদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। ভারত এক হাজার ৬৭ জনের একটি তালিকা দিয়েছে, সেটি গুম সংক্রান্ত কমিশন মিলিয়ে দেখছে, সেই তালিকায় গুম হওয়া কোনো ব্যক্তি আছে কি না, তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এই তালিকা ভারত আরও দেবে।

এর আগে তিনি বলেন, ধামরাই থেকে গুম হওয়া মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে গত ২২ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিশন অনুসন্ধান করছে।

তবে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপার ও বিজিবির সেক্টর কমান্ডারদের কাছ থেকে আগস্টের পর ভারত বাংলাদেশে পুশইন করা ব্যক্তিদের তথ্য চাওয়া হলে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ হতে ১৪০ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এই তথ্যের প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে কোনো গুমের শিকার ব্যক্তির নাম এখনো পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, কমিশনে ১ হাজার ৭৫২টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার মধ্যে ১০০০টি অভিযোগ ও তার সঙ্গে সংযুক্ত কাগজপত্রের যাচাই-বাছাই প্রাথমিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কমিশনে ২৮০ জন অভিযোগকারীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রায় ৪৫ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে।


আরও খবর



ঝালকাঠিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫৮৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠি জেলায় ৫৮৫ সদস্যের কমিটি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে আল তৌফিক লিখনকে আহ্বায়ক ও রাইয়ান বিন কামালকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। রোববার (২ মার্চ) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে কমিটি প্রকাশ করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল কমিটির অনুমোদন দেন। আগামী ছয় মাসের জন্য এ কমিটি দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে খালেদ সাইফুল্লাহকে সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক, ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতিকে সিনিয়র যুগ্ম-সদস্যসচিব, শাহরিয়ার দিপুকে মুখ্য সংগঠক ও সাকিবুল ইসলাম রায়হানকে মুখপাত্র করা হয়েছে । এ ছাড়া যুগ্ম-আহ্বায়ক করা হয়েছে, গোলাম রাব্বি রিশব ,মিরাজ আহমেদ রনি ,সামির আব্দুস সালাম ,পিয়াল মাহমুদ অনিক ,ইমামুল হক মেশকাত ,তানজিলা আক্তার অরভি ,মাইশা মেহজাবিন ,তাসনিয়া তানহা ,তাসফিয়া আকন ,মাহাদি সাকিব ,অর্না ,আজিজুল হক ,মোঃ মেহেরাব হোসেন ,সাব্বির আহমেদ ,মেহেদী হাসান ,নাঈম হোসেন সংগ্রাম ,নাইম মাহমুদ ,বাইজিদুর রহমান শান্ত ,শাহিনুর রহমান রাজু ,তাসকিন তাবাসসুম মাইশা ,শফিউল আলম নাহিদ ,আব্দুল্লাহ আল হাদি গোলাম রাব্বি রিশব, অনুম ,সাকিবুল ইসলাম ,নওশীম আঞ্জুম রোহান ,আল শাহরিয়ার নিবির ,মুক্তা ,মুনায়েম ,পলাশ ,সিনথিয়া রিধি। 


আরও খবর



আবরার ফাহাদ হত্যায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

প্রকাশিত:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

রবিবার বেলা ১১টায় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে রায় ঘোষণা শুরু হয়। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান রায় পাঠ করে শোনান।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মোজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান মাজেদ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোর্সে‌স, ১৬ ব্যাচ), শামছুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং এসএম মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)।

এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়। গত বছরের অক্টোবরে এ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ উদ্যোগ নেন।


আরও খবর



আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অস্বস্তি কাটেনি

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫ |

Image

একের পর এক ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মব সৃষ্টি করে ভাঙচুর ও লুটপাটসহ অপরাধ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে দেশজুড়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট নামে বিশেষ অভিযান শুরু হয়। গতকাল শনিবার এই বিশেষ অভিযানের এক মাস পূর্ণ হয়েছে। এই সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয়েছে, অভিযানের লক্ষ্য কতটা পূরণ হয়েছে তা নিয়ে চলছে আলোচনা। সমাজ চিন্তক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশেষ অভিযান সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। এখনও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অস্বস্তি কাটেনি, বরং আতঙ্ক বেড়েছে। এ সময়েই কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অঞ্চলে চরমপন্থিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। প্রকাশ্যে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই, ডাকাতি, প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া, তৌহিদী জনতার নামে মব সৃষ্টি করে মানুষের বাড়িঘরে হামলা-লুটপাট হচ্ছে। কয়েকটি স্থানে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। বেড়েছে নারী হেনস্থা এবং ধর্ষণের ঘটনাও।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনার পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে অপারেশন ডেভিল হান্ট নামে বিশেষ অভিযান শুরু হয়। এই বিশেষ অভিযান এখনও চলমান আছে। তবে ডেভিল হান্ট নামে আর অভিযান হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত অপারেশন ডেভিল হান্ট বিশেষ অভিযানে সারাদেশে ১১ হাজার ৮৮২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সময়ে সারাদেশে মোট গ্রেপ্তার করা হয় ৩০ হাজার ৭২৩ জনকে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জুলাই-আগস্ট মামলার আসামিও রয়েছে।

সমাজবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল হক বলেন, ডেভিল হান্ট অপারেশন নামটা যতটা প্রভাবশালী; অভিযানটা তেমন প্রভাব ফেলতে পারছে না। কারণ ১১ হাজারের বেশি গ্রেপ্তার হওয়ার পরও যদি একই ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়, তা হলে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে কোন অপরাধীদের? তিনি বলেন, অভিযানটা সামগ্রিকভাবে হওয়া উচিত ছিল। পেশাদার অপরাধীদেরও যদি একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হতো, তা হলে অবস্থার আরও উন্নতি হতো।

তবে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বিত টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রমের কারণে কয়েক দিন ধরে ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আপাতত ঢাকাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ঢাকার বাইরেও পুলিশের কার্যক্রম আগের তুলনায় আরও গতিশীল করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের দেওয়া তথ্য বলছে, অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হওয়ার আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে ৪২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ফেব্রুয়ারিতে সেটি বেড়ে ৫৭টি হয়। জানুয়ারিতে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ১৫টি। ফেব্রুয়ারিতে তা ১৭ হয়েছে। এর মধ্যে দুই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হতে হয়েছে। বেড়েছে দলবেঁধে ধর্ষণচেষ্টার সংখ্যাও। সর্বশেষ গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সমুদ্রসৈকত এলাকায় ঘুরতে গিয়ে এক কলেজছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে বিকেল তিনটার দিকে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করা হয়।

বিশেষ অভিযানের মধ্যে গণপিটুনির ঘটনাও কমেনি। এক সপ্তাহ আগে শরীয়তপুরে ডাকাত সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আহত হয় আরও কয়েক জন। গত সপ্তাহে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ডাকাত সন্দেহে আরও দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বুধবার রাতে ঢাকার মগবাজারে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার সময় জনতা একজনকে ধরে গণপিটুনি দেয়।

পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারিতে গণপিটুনিতে ১২ জন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়েছিল। আর ফেব্রুয়ারিতে গণপিটুনির ঘটনায় আটজনের প্রাণ যায়। আহত হয় কমপক্ষে ২০ জন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুজনকে আটক করে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। পরে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাদেরকে ফুটওভার ব্রিজের রেলিংয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে গভীর রাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর তীরে অন্তত তিনটি ডাকাতি ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে একদল অস্ত্রধারী বালুর ঘাটে হামলা চালিয়ে ক্যাশ কাউন্টারের দুই লাখ টাকা লুট করে নেয়। ওই ঘটনায় বাধা দিতে গিয়ে স্থানীয় একজন গুলিতে আহতও হন।

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বেড়া-সাঁথিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের তলট এলাকায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত একটার দিকে গাছ ফেলে অন্তত ১০টি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতদের মারধরে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের শশানঘাট এলাকায় ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করে শক্তির জানান দেয় চরমপন্থি দলের নেতা কালু। হত্যার দায় স্বীকারও করে সে। গতকাল পর্যন্ত কালু গ্রেপ্তার হয়নি। ফলে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জেলায় এই বাহিনীর হাতে আরও প্রাণহানির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোর কমিটি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর পরই যৌথ বাহিনীসহ র‌্যাব-পুলিশ দৃশ্যমান তৎপরতা শুরু করে। গভীর রাতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শুরু করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রাত্রিকালীন টহলও বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন সড়কে বসেছে চেকপোস্ট। এ অবস্থার মধ্যেই শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডির একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে সেখান থেকে ১৪ জন সমন্বয়ককে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের নানামুখী ব্যবস্থার কারণে ঢাকায় পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। ছিনতাই কমে আসছে।

তবে ঢাকার একাধিক এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জেনেছে, রাতে ঢাকার রাস্তায় র‌্যাব-পুলিশের দৃশ্যমান তৎপরতা বেড়েছে। তবে পাড়া-মহল্লায় তাদের উপস্থিতি বাড়েনি। ফলে আগের মতোই আতঙ্ক নিয়ে তাদের ঘর থেকে বের হতে হয়। ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মাঠে কাজ করা পুলিশ সদস্যরাও বিভিন্ন জায়গায় মার খাচ্ছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবককে তল্লাশি চৌকিতে থামার জন্য ইশারা দেন পুলিশের এসআই ইউসুফ আলী। এর কিছুক্ষণ পর ১০-১৫ জন এসে ভুয়া পুলিশ অপবাদ দিয়ে ওই কর্মকর্তাকে মারধর শুরু করেন। ছিনিয়ে নেওয়া হয় সঙ্গে থাকা মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও ওয়াকিটকি। সারাদেশে আরও কয়েক জায়গায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত ছয় মাসে পুলিশের ওপর এ ধরনের ২২৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটানো হয়েছে উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ আক্রমণে বা মব তৈরি করে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য বলছে, গত ছয় মাসে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ২২৫টি ঘটনার মধ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ২৪টি, অক্টোবরে ৩৪, নভেম্বরে ৪৯, ডিসেম্বরে ৪৩, জানুয়ারিতে ৩৮ এবং ফেব্রুয়ারিতে ৩৭টি হামলার ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার এআইজি ইনামুল হক সাগর  বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আন্তরিকতা এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে লক্ষ করেছেন বিভিন্ন আভিযানিক কার্যক্রমে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অপরাধ প্রতিরোধে কৌশলগত বিভিন্ন কার্যক্রমের মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মব জাস্টিস কোনোমতেই সমর্থনযোগ্য নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ অপরাধ করলে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে পুলিশকে জানাতে হবে। পুলিশ এক্ষেত্রে অবশ্যই দ্রুততার সঙ্গে রেসপন্স করবে। পুলিশের আইনি দায়িত্ব পালনে যারা বাধা সৃষ্টি করবে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, তাদেরকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।

 


আরও খবর



তামিমের হার্টে ব্লক, পরানো হয়েছে রিং

প্রকাশিত:সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে মোহামেডানের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু শাইনপুকুরের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালে হুট করেই বুকে ব্যথা অনুভব করেন মোহামেডানের অধিনায়ক। এরপর ঢাকা থেকে তাকে আনতে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে বিকেএসপির পাশে শেখ ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে নেওয়া হয়।

সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। এক পর্যায়ে অবস্থার কিঞ্চিত অবনতি হলে তাকে স্থানান্তর করা হয় লাইফ সাপোর্টে। চিকিৎসকরা জানান, হার্ট অ্যাটাক করেছেন তামিম। তবে তাকে রাখা হয়েছে নিবিড় পর্যবেক্ষণে।

জানা গেছে, এনজিওগ্রাম পরীক্ষার মাধ্যমে তামিমের হার্টে একটি ব্লক খুঁজে পায় ডাক্তাররা। তৎক্ষণাৎ তাকে একটি রিং পরানো হয়েছে। এরপর কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে তামিমকে পর্যবেক্ষণে রাখে চিকিৎসকরা। অবস্থার খানিকটা উন্নতি হলে ঢাকায় নিয়ে আসা হতে পারে বাঁহাতি এই ওপেনারকে।

আজ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) একটি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) অবস্থান করছিলেন জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক। মাঠে ফিল্ডিং করার সময়ে অসুস্থতা অনুভব করলে তিনি মাঠ থেকে উঠে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন, এরপর আবারও নামেন ফিল্ডিং করতে। তখনই ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনা।

এদিকে, তামিমের অসুস্থতার খবরে স্থগিত করা হয়েছে বিসিবির আজকের বোর্ডসভা। দুপুর ১২টায় এ বোর্ডসভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।


আরও খবর

আইপিএলের নিয়মে পরিবর্তন

শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫