Logo
শিরোনাম

ভিয়েতনাম থেকে এলো ২৯ হাজার টন চাল

প্রকাশিত:রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ভিয়েতনাম থেকে ২৯ হাজার টন চাল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। চাল নিয়ে এমভি ওবিই জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি জি টু জি (সরকারের সঙ্গে সরকার) চুক্তির আওতায় এসব চাল কেনা হয়েছে। এটি ভিয়েতনাম থেকে কেনা তৃতীয় চালান।

ভিয়েতনাম থেকে জি টু জি ভিত্তিতে মোট এক লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে দুই চালানে মোট ৩০ হাজার ৩০০ টন চাল এরই মধ্যে দেশে পৌঁছেছে।

জাহাজে আনা চালের নমুনা পরীক্ষা শেষে খালাসের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।


আরও খবর



নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত:সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

দেশের সব জায়গায় ঈদের জামাতে যারা শরীক হয়েছেন ও নারী-প্রবাসী শ্রমিকসহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ নৈকট্য ও ভালোবাসার দিন। আমাদের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে স্থায়ীভাবে সেই ঐক্য গড়ে তুলতে চাই।

জাতীয় ঈদগাহ ঈদুল ফিতরের নামাজের পর দেওয়া এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস।তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে,‌ সব প্রতিকূলতার সত্ত্বেও সেই ঐক্য অটুট রাখতে হবে।

সেই সঙ্গে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি ও বাধা সত্ত্বেও নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা করেন তিনি।

এ সময় জাতীয় ঈদগাহে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এর আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে দুই ঘণ্টা আগে থেকেই মুসল্লিরা রাজধানীর হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পল্টন মোড়, মৎস্য ভবন এবং হাইকোর্টের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মুসল্লিরা ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করেছেন। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রান্তেও দীর্ঘ লাইন ছিল।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক ইমাম হিসেবে এ জামাতে দায়িত্ব পালন করেন, এবং ক্বারী হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের এই মাঠে একসাথে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।


আরও খবর



খেলাধুলা শিশু ও তরুণদের মেধা বিকাশে অবদান রাখে

প্রকাশিত:রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, খেলাধুলা শিশু ও তরুণদের মেধা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব, শৃঙ্খলাবোধ, অধ্যবসায়, দায়িত্বজ্ঞান ও কর্তব্যপরায়ণতার সৃষ্টি হয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস-২০২৫ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। তারুণ্যের শক্তি ধারণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস আয়োজন করায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, দেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, ক্রীড়া ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন, বোর্ড, ক্রীড়া সংগঠকসহ সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবারের ক্রীড়া দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘তারুণ্যের অংশগ্রহণ, খেলাধুলার মানোন্নয়ন’ নির্ধারণ করা সময়োপযোগী ও যথাযথ হয়েছে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, দেশ বদলের প্রত্যয়ে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশের এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে পুনরুজ্জীবিত করতে দেশব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ উদযাপন করেছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত মূল্যবোধের মেলবন্ধনে আয়োজিত এই উৎসবে তরুণরা তাদের সৃজনশীলতা, মেধা, যোগ্যতা ও মননশীলতার স্বাক্ষর রেখেছে।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের তরুণরা আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করছে। ক্রিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে গৌরব ও সুনাম অর্জন করেছে। আমাদের নারীরা গত বছর নেপালে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেছে।

দাবায়ও সাফল্য এসেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুই দশক পর ইরানের তেহরানে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ জাতীয় নারী কাবাডি দল ব্রোঞ্জ পদক পুনরুদ্ধার করেছে। সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবলে যৌথ চ্যাম্পিয়ন এবং নেপালে অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান অনূর্ধ্ব-২১ হকির ছেলেদের বিভাগে প্রথমবার বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে বাংলাদেশ যুব হকি দল। নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতেছে আমাদের তরুণরা।


আরও খবর



ডিম মুরগির ন্যায্য দাম না পাওয়ায়, বিপিএর উদ্বেগ প্রকাশ

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, দেশের প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিরা অবহেলিত হচ্ছেন এবং বর্তমানে কর্পোরেট কোম্পানি ও সিন্ডিকেটের চক্রের কারণে তারা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশের কৃষির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ পোল্ট্রি খাত, যেখানে লাখো প্রান্তিক খামারি তাদের কঠোর পরিশ্রম, বিনিয়োগ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন করছেন, কিন্তু তাদের অমূল্য পরিশ্রমের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না।

পোল্ট্রি খামারিরা এখন নানা সমস্যার মুখোমুখি। প্রথমত, অত্যধিক খরচ এবং কম দামে বিক্রি হচ্ছে তাদের পণ্য। অধিকাংশ খামারি তাদের উৎপাদিত মুরগি, ডিম, খাদ্য এবং অন্যান্য পণ্য সঠিক মূল্যে বিক্রি করতে পারছেন না। এদিকে, কর্পোরেট কোম্পানি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারের মূল্যের ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে খামারিদের সঠিক দাম না পাওয়ার কারণে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছেন না।

দ্বিতীয়ত, খামারিদের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার অধিকার প্রতি পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। কর্পোরেট সিন্ডিকেট এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের মধ্যে লেনদেনের ফলে খামারি তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত লোকসানের শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া, প্রান্তিক খামারিরা খুবই সীমিত সম্পদ নিয়ে কাজ করেন এবং তারা তাদের পণ্যের যথাযথ মূল্য পেলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।

এছাড়া, খামারিদের কাছে যথাযথ তথ্যের অভাব, প্রযুক্তির অভাব, বাজার বিশ্লেষণ এবং দিকনির্দেশনার অভাব তাদের আরও বেশি অসহায় করে তুলেছে। প্রান্তিক খামারিরা জানেন না কখন এবং কীভাবে তাদের পণ্য বাজারে বিক্রি করা উচিত, এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সহায়তা পেতে তারা উপেক্ষিত হচ্ছেন।

এসব পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে এবং পোল্ট্রি খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং ন্যায্য বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজন। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছে, খামারিদের জন্য একটি টেকসই নীতি বাস্তবায়ন করা হোক, যেখানে সিন্ডিকেটের অবৈধ প্রভাবকে প্রতিহত করা হবে এবং তারা সঠিক মূল্য পাবে।

এছাড়া, প্রযুক্তির উন্নয়ন, ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস, বাজার বিশ্লেষণ এবং নির্দেশনা প্রদান—এই সব কিছুই খামারিদের সহায়তায় প্রয়োগ করা জরুরি। সরকারের পাশাপাশি, আমাদের সকল ব্যবসায়ী, প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই খাতের উন্নয়ন সম্ভব।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সশব্দ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। খামারিরা যদি তাদের ন্যায্য মূল্য পায়, তবে তারা শুধু তাদের পরিবারের জন্য না, বরং পুরো দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের সমস্যাগুলি সমাধান করতে আমরা সবাই একসাথে কাজ করতে পারলে পোল্ট্রি খামারিরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে এবং পোল্ট্রি খাত একটি সুষ্ঠু এবং শক্তিশালী খাত হিসেবে গড়ে উঠবে।


আরও খবর



নওগাঁয় অঙ্কে শিক্ষকের ভুল ধরায় ছাত্রকে পেটালেন শিক্ষক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর মান্দায় গণিত ক্লাসে শিক্ষকের ভুল ধরায় এক শিক্ষার্থীকে মারধরে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত শিক্ষার্থীকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় আজ মঙ্গলবার ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকমহলে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আহত শিক্ষার্থীর নাম মোহাম্মদ সাফি (১১)। সে গোবিন্দপুর গ্রামের আনিছুর রহমান মণ্ডলের ছেলে ও গোবিন্দপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার ভর্তি রোল ৪৪ বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক ইয়ামিন হোসেন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষক (গণিত) হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গণিপুর গ্রামের আছির উদ্দিনের ছেলে।  

শিক্ষার্থী সাফি জানায়, সোমবার টিফিনের পর আড়াইটার দিকে সহকারী শিক্ষক ইয়ামিন স্যারের গণিত ক্লাস চলছিল। ক্লাসে লসাগু’র পূর্ণরূপ স্যার ভুলভাবে উপস্থাপন করছিলেন। সেই ভুল ধরিয়ে দেওয়ায় ইয়ামিন স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে বাঁশের ছড়ি দিয়ে আমাকে বেদম মারধর করেন।

শিক্ষার্থী সাফির মা নাদিরা বেগম বলেন, ছেলে সাফি স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অঙ্ক ক্লাসে ভুল ধরায় শিক্ষক ইয়ামিন হোসেন ছেলের শরীরের বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। সন্ধ্যার দিকে তাকে মান্দা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক ইয়ামিন হোসেন বলেন, গণিত ক্লাস চলাকালিন শিক্ষার্থী সাফি আমার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। তাই তাকে একটু শাসন করা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলেছি। অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। স্থানীয় প্রসাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন মণ্ডল বলেন বিষয়টি শুনেছি। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীকে মারধর করা ঠিক হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম মিয়া বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর



বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশে স্বর্ণের দরে হের ফের

প্রকাশিত:রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

দেশের বাজারে বেশ ঘন ঘন ওঠানামা করছে স্বর্ণের দাম। তবে যে পরিমাণ কমে, তার চেয়ে বেশি বাড়ে। এভাবে গেল এক বছরে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণের দর বেড়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের দামের এমন ঊর্ধ্বগতি মূলত বিশ্ববাজারের কারণে ঘটছে বলে দাবি করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের ভাষ্য, দাম বাড়ার কারণে বেচাকেনায় ভাটা পড়েছে। বিক্রি কমে অর্ধেকে নেমেছে।

বিশ্ববাজারের তুলনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভরিতে ৬০ হাজার টাকারও ব্যবধান রয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশে কোন যুক্তিতে বা মানদণ্ডের ভিত্তিতে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়? অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশের বাজারে দাম কীভাবে সমন্বয় করা হয়, তা অস্পষ্ট। এতে মূলত ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও ক্রেতারা ঠকছেন। এই পরিস্থিতিতে দাম নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট কাঠামো দাঁড় করানো এবং আমদানির ক্ষেত্রে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ দেন তারা।

করোনা অতিমারির পর থেকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়তে থাকে। কয়েক বছর ধরে স্বর্ণের দাম বেশ ওঠানামা করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দর ওঠানামা করছে অস্বাভাবিকভাবে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশেও অস্থির হয়ে উঠছে মূল্যবান ধাতুটির বাজার। ফলে দাম এত বাড়ছে কেন, আর কত দিন বাড়তে পারে, শেষ পর্যন্ত দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্বর্ণপ্রেমীদের মনে। আবার যারা বিনিয়োগ নিয়ে ভাবছেন, তারাও রয়েছেন দোলাচলে। বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতে এখন বিনিয়োগ করার উত্তম সময় কিনা, হঠাৎ আবার দাম পড়ে যাবে কিনা, এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে দেশে অস্বাভাবিক দাম বাড়া নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

দেশে এক বছরে দাম কত বাড়ল

গত এক বছরে বেশ কয়েকবার উত্থান-পতন ঘটেছে দামের। তবে যতবার দাম কমেছে, অর্থাৎ যে পরিমাণ কমেছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে। দেখা গেছে, দুই দফায় পাঁচ হাজার টাকা বাড়ার পর কমেছে এক বা দেড় হাজার টাকা। এভাবে গত এক বছরে দাম বেড়ে এখন ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। সেই হিসাবে, এক বছরে প্রতি ভরিতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা দাম বেড়েছে।

বিশ্ববাজারের চেয়ে দেশে স্বর্ণের দাম বেশি

দেশে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চে উঠেছে গত ২২ এপ্রিল। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ওই দিন দুপুরে ২২ ক্যারেট মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের (১১.৬৬৪ গ্রাম) দাম ঘোষণা করে ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তবে ওই  দিনই সন্ধ্যায় ফের দাম কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা। এখন পর্যন্ত এই দরে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণের ভরি।

আন্তর্জাতিক বাজারদর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজুস নির্ধারিত স্বর্ণের এ দাম শুধু দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নয়, বর্তমান আন্তর্জাতিক দরকেও ছাড়িয়েছে। এমনকি প্রতিবেশী ভারতের তুলনায়ও স্বর্ণের এ দর অনেক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্পট মার্কেটে সর্বশেষ প্রতি আউন্স (২৮.৩৪৯৫ গ্রাম) ২২ ক্যারেট স্বর্ণ সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৩৩৪ ডলারে কেনাবেচা হয়েছে। ডলারের বিনিময় মূল্য ১২২ টাকা দরে প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৫১ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। অর্থাৎ দেশে প্রতি ভরি স্বর্ণ অন্তত ৫ হাজার টাকা বেশি দরে কেনাবেচা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনজেলওয়ান বাংলার অনলাইন পোর্টালের খবর অনুযায়ী, সে দেশের জুয়েলার্স সমিতির বেঁধে দেওয়া বাজারদর অনুযায়ী, গতকাল প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণ কেনাবেচা হয়েছে ৯ হাজার ৮৯ রুপিতে। রুপির বিনিময় মূল্য ১ টাকা ৪৩ পয়সা হিসাবে প্রতি ভরির দাম ভারতে ১ লাখ ৫২ হাজার ৬৬১ টাকা। এই হিসাবে বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে ভরিতে প্রায় ২০ হাজার টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের খালিজ টাইমসের তথ্যমতে, দুবাইয়ে বর্তমানে প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দর ৩৬৭ দশমিক ৭৫ দিরহাম। প্রতি দিরহামের বিনিময় মূল্য ৩৩ দশমিক ৩৪ টাকা হিসাবে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্র দুবাইয়ে বাংলাদেশের চেয়ে প্রতি ভরি স্বর্ণের দর কম প্রায় ২৯ হাজার টাকা। বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনটি দেশেই স্বর্ণের দর বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশে কোন মানদণ্ডে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে? 

ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মূলত তেজাবি স্বর্ণের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা নতুন ও পুরোনো স্বর্ণ কেনেন। নিয়ন্ত্রণ মূলত তাদের হাতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শীর্ষ স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বর্ণের বাজার ওঠানামা করছে। কলকাতার ব্যবসায়ীরা সাধারণত দুপুরের দিকে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে থাকেন। এরপর পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা স্থানীয় দর নির্ধারণ করেন। এই দাম অলংকার ব্যবসায়ীদের জন্য, খুচরা ক্রেতাদের জন্য নয়। ওই দরের ওপর ভিত্তি করেই বাজুস স্বর্ণের দাম ঘোষণা করে। 

বাজুসের সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে দেশে এর প্রভাব পড়ে। মূলত তেজাবি স্বর্ণের দাম বাড়লে বাজুস দাম বাড়ায়। এখানে বাজুসের কোনো কৌশল নেই। বরং দাম বাড়ার কারণে গত কয়েক বছরে বিক্রি কমে অর্ধেকে নেমেছে। তবে স্বর্ণ আমদানিতে এলসি জটিলতা, করহারসহ নানা সমস্যা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববাজারে দাম কেন বাড়ছে

অর্থনীতিবিদ এবং অলংকার ব্যবসায়ীদের মতে, বিশ্বব্যাপী ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ, বিভিন্ন দেশের রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপ, ডলারের দর কমে যাওয়াসহ নানা কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ডলার মজুত রাখে। গত তিন বছরের মধ্যে ডলারের দাম এখন সর্বনিম্ন। বৈশ্বিক এই অস্থিরতার কারণে দর আরও পড়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণের মজুত বাড়াচ্ছে। দাম বাড়ার পেছনে এটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। বিশেষ করে চীনের ওপরে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ানোর কারণে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের পরিবর্তে ধারাবাহিকভাবে স্বর্ণ কিনছে। 

বিশ্ববাজারে আরও বাড়ার পূর্বাভাস

মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা ৩৫ শতাংশে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছে, যা আগে ছিল ২০ শতাংশ। সংস্থাটি বলছে, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সুদহার কমাতে পারে, যা স্বর্ণের চাহিদা আরও বাড়িয়ে দেবে। 

এই ধারণা থেকে সংস্থাটি স্বর্ণের দাম নিয়ে তাদের আগের পূর্বাভাস আবার সংশোধন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আগে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩০০ ডলার পর্যন্ত উঠবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। নতুন বিশ্লেষণে তারা বলছে, প্রতি আউন্সের দাম ৩ হাজার ৬৫০ থেকে ৩ হাজার ৯৫০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে। বছর শেষে এটি গড়ে ৩ হাজার ৭০০ ডলারে স্থির হতে পারে। 

দেশে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি নিয়ম বা কাঠামো প্রণয়ন করা দরকার বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ বুঝে না ঠিক কী পদ্ধতিতে দেশে স্বর্ণ বেচাকেনা কিংবা দাম নির্ধারণ করা হয়। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কিছুদিন পরপর দেশে দাম বাড়ানো হচ্ছে। বিশ্ববাজারের কথা বলে দাম বাড়ানো হলেও বিশ্ববাজারের সঙ্গে দামের ব্যাপক ফারাক থাকে। তাহলে কীসের ভিত্তিতে আসলে দেশে স্বর্ণের দাম বাড়ে বা কমে তা স্পষ্ট নয়। 

হঠাৎ দাম বাড়লে ক্রেতা বিপাকে পড়েন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, কেউ হয়তো পরিকল্পনা করছেন আগামী সপ্তাহে তিনি এক ভরির গহনা কিনবেন। এক সপ্তাহ পর কিনতে গিয়ে দেখা গেছে ভরিতে চার-পাঁচ হাজার টাকা বেড়ে গেছে। তখন দেখা যায় তাঁর গহনা কেনার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। এমনটা নিয়মিতই ঘটছে। তাই কোন কোন যুক্তি বা মানদণ্ডে দেশে স্বর্ণের দাম নির্ধারিত হচ্ছে, বৈশ্বিক দামের সঙ্গে দেশের দর কতটা সংগতিপূর্ণ, সেসব বিষয় খতিয়ে দেখা খুবই জরুরি। 

ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, এখন হয়তো ব্যাগেজ রুলে বা বিভিন্ন উপায়ে বিদেশ থেকে স্বর্ণ আসে। বৈধ পথে আমদানির জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার, তাহলে বৈধ চ্যানেলে আমদানি বাড়বে। তখন দর সম্পর্কে সবাই অবগত থাকবে। একই সঙ্গে এতে অবৈধ পথে স্বর্ণ চোরাচালান কমে আসবে। তা ছাড়া দেশে কী পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, কী পরিমাণ আমদানি হচ্ছে, সে বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি। 

বিশ্ববাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের দরে সমন্বয়হীনতা থাকে উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বৈশ্বিক অস্থিরতা, পুঁজিবাজারে মন্দাসহ নানা কারণে স্বর্ণে বিনিয়োগমুখী হন বিনিয়োগকারীরা। এতে স্বর্ণের দাম বাড়ে ঠিক, কিন্তু বাংলাদেশে দাম বাড়ানো কতটা যৌক্তিক, তা বিবেচনা প্রয়োজন। বিশ্ববাজারের দরের সঙ্গে কতটা সমন্বয় হয়েছে, তা দেখতে হবে।


আরও খবর

সবজিতে আর স্বস্তি নেই

মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫