বছর ঘুরে আবারও এলো মা
দিবস। যদিও প্রতিটি দিনই হওয়া উচিত মা দিবস! তবু মায়ের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা
জানাতে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার বিশ্ব মা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
এই
দিনটি মাকে বিশেষভাবে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানানোর দিন। দিবসটি বিশ্বজুড়ে মাতৃত্ব
ও মাতৃসত্তার গুরুত্ব এবং তাৎপর্য স্মরণ করে দেয়। আমাদের আবারও একবার স্মরণ করে দেয়
পৃথিবীতে আমাদের পদচারণার মূল কাণ্ডারিকে। বিশেষ এই দিবসটি কীভাবে এলো তা হয়তো
অনেকেরই অজানা। ইতিহাস বলছে, অনেক পথ পেরিয়ে এই দিবসটি নতুন রূপ পেয়েছে।
ধারণা
করা হয়, মা দিবসের সূচনা প্রাচীন গ্রিসের মাতৃরূপী দেবী সিবেলের এবং প্রাচীন রোমান
দেবী জুনোর আরাধনা থেকে। এ ছাড়া ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য অনেক আগে থেকেই মায়েদের এবং
মাতৃত্বকে সম্মান জানানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট রবিবারকে বেছে নিয়েছিলেন। ষোড়শ শতকে
এটি ইংল্যান্ডে মাদারিং সানডে বলে পরিচিতি লাভ করে। অনেকেই ক্যাথলিক পঞ্জিকা
অনুযায়ী এটিকে লেতারে সানডে যা লেন্টের সময়ে চতুর্থ রবিবারে পালন করতে শুরু করে।
তবে
ইতিহাসবিদদের মতে, জুলিয়া ওয়ার্ড হোই রচিত ‘মাদার্স ডে প্রক্লামেশন’
বা ‘মা দিবসের ঘোষণাপত্র’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের গোড়ার দিকের প্রচেষ্টাগুলোর
মধ্যে অন্যতম। ১৮৭০ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পৈশাচিকতার মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে
শান্তির প্রত্যাশায় জুলিয়া একটি ঘোষণাপত্র লেখেন। এরপর যুদ্ধ শেষে পরিবারহীন
অনাথদের সেবায় ও একত্রীকরণে নিয়োজিত হন মার্কিন সমাজকর্মী আনা রিভিজ জার্ভিস ও তার
মেয়ে আনা মেরি জার্ভিস। এ সময় তারা জুলিয়া ওয়ার্ড ঘোষিত মা দিবস পালন করতে শুরু
করেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আনা রিভিজ জার্ভিস ১৯০৫ সালের ৫ মে মারা
যান।
মায়ের
মৃত্যুর পর আনা মেরি জার্ভিস মায়ের শান্তি কামনায় ও তার সম্মানে সরকারিভাবে মা
দিবস পালনের জন্য প্রচারণা চালান। তিন বছর পর ১৯০৮ সালের ১০ মে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার
আন্দ্রেউজ মেথডিস্ট এপিসকোপাল চার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম মা দিবস পালিত হয়।
বর্তমান কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই মাকে যথেষ্ট সময় দিতে পারেন না কিংবা তার মনের
কথাগুলো শোনার সময়টুকুও হয়তো পান না কেউ কেউ। তাই সব কর্মব্যস্ততা ঠেলে এবারের মা
দিবসটি কাটান মায়ের সঙ্গে। এদিনটিই মায়ের জন্য বরাদ্দ রাখবেন তা কিন্তু নয়।
সপ্তাহে একদিন কিংবা মাসে একবার হলেও মায়ের সঙ্গে সময় কাটানো উচিত সবারই। এতে
আপনার মা খুশি হবেন।