Logo
শিরোনাম

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমল ২ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে আসার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমেছে। গত এক মাসের ব্যবধানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার (১৯৮ কোটি) বা প্রায় ২ বিলিয়ন কমে গেছে।

২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে,  (২০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৭৩৩ কোটি ডলার। এর আগে গত ২৩ আগস্ট গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৩২ কোটি ডলার।

এছাড়া নিট রিজার্ভ এক দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার কমে ২ হাজার ১৪৫ কোটি ডলারে নেমেছে। এক মাস আগে অর্থাৎ ২৩ আগস্ট নিট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৩১৬ কোটি ডলার। সাম্প্রতিক সময়ে বকেয়া ঋণ পরিশোধ ও আমদানি দেনা মেটানোর কারণে রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ডলার দিতে হচ্ছে। এতেও রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত এক বছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। আমদানি নিয়ন্ত্রণে একাধিক উদ্যোগ নেওয়ার পরও মূলত রেমিট্যান্স প্রবাহে ধীরগতির কারণে রিজার্ভ কমছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে জুলাই-আগস্ট মাসের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ব্যয় পরিশোধে ১৩১ কোটি ডলার দিতে হয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কমে ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে এসেছে।

প্রতি মাসে গড়ে ৬ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে ৩ মাসের মতো আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।

যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার প্রকৃত রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রাখতে হবে।

ব্যাংকাররা জানান, ডলারের আন্তপ্রবাহের চেয়ে বহিঃপ্রবাহ বেশি হচ্ছে। আবার রেকর্ড পরিমাণ বাংলাদেশি শ্রমিক বিদেশে গেলেও সেই তুলনায় রেমিট্যান্স আসছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, তিন মাস আগে প্রবাসীরা গড়ে দৈনিক ৭ কোটি ডলারের বেশি পাঠালেও চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৭৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার মার্কিন ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত তিন মাসের (১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর) ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন রেমিট্যান্স এসেছে গড়ে ৫ কোটি ২৭ লাখ ডলার করে। অর্থাৎ প্রবাসীরা চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে ৩৬ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন। আর জুলাইয়ের প্রথম তিন সপ্তাহে দৈনিক রেমিট্যান্স এসেছে গড়ে পৌনে ৭ কোটি ডলার করে। তার আগের মাস জুনে প্রবাসীরা প্রতিদিন পাঠিয়েছিলেন গড়ে ৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার করে। ওই মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগস্ট মাসে প্রবাসীরা দেশে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৬৯৬ কোটি ডলার। চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ছিল ২ হাজার ৭৩৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত এক বছরের ব্যবধানে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৯৬৩ কোটি ডলার।

রফতানি আয় আগের চেয়ে কমে যাওয়াকে অনেকেই রিজার্ভ কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ বলে উল্লেখ করেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে রফতানি আয় ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ বাড়লেও আগস্টে পূরণ হয়নি রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা।

ডলারের বাজারে অস্থিরতা : এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ ব্যাংকে চাহিদার তুলনায় ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। কিছু ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে বেশি দামে ডলার কিনে ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে আমদানিকারকের কাছে বিক্রি করছে।

রফতানি ও প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রের ডলারের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর আমদানিকারকদের কাছে এখন ১১০ টাকায় ডলার বিক্রি করছে ব্যাংকগুলো। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে কিছু ব্যাংক প্রতি ডলারে ১১৪-১১৫ টাকা দাম নিচ্ছে। কারণ, প্রবাসী ও রফতানি আয় কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। না হলে ঋণপত্র খুলতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ব্যাংকগুলো।

এই ঘটনায় বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধানকে জরিমানা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বাফেদার বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে গিয়ে অনেকে ডলার কেনাবেচা করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না। তিনি বলেন, বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধান দায় এড়াতে পারেন না। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ব্যাংকগুলো যাতে ঘোষিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা না করে, সে জন্য ব্যাংক মালিকদের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। জবাবে ব্যাংক-মালিকরা বলেছেন, ডলারের দাম কিছুটা বাড়ানো হলে তাতে সংকট কমতে পারে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে রাজি হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতাদের সঙ্গে ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র জানায়, সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে ডলারের বাজার পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ও ব্যাংকের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। সভায় বলা হয়, ডলারের সংকট এখন কমে এসেছে। সরবরাহ আগের চেয়ে বেড়েছে। তাই কোনও ব্যাংক যাতে ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় বিএবির পক্ষ থেকে ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আপত্তি জানায়। অবশ্য হুন্ডি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন ব্যাংক মালিকরা। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম বাড়ানো হলে হুন্ডিতে ডলারের দাম আরও বাড়বে।

 


আরও খবর



বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ককে পদ থেকে অব্যাহতি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

জামালপুর প্রতিনিধি :

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক শোয়েব আল হাসান সজলকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সংগঠনের শৃঙ্খলা ও নীতি আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করেছে জেলা ছাত্রলীগ। সেই সাথে কেনো তার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত শাস্তিমুলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না তার উপযুক্ত কারনসহ আগামী তিনদিনের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে স্বহস্তে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খান ও সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করিম রাব্বি স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে অব্যহতি দেয়া হয়। এই নিয়ে ২য় বারের মত অব্যাহতি পেলেন শোয়েব আল হাসান সজল। 

জানা যায়,দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২৩ সালে ১৬ আগস্ট শোয়েব আল হাসান সজলকে প্রথমবার সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর লিখিত জবাবের প্রেক্ষিতে ৩ ডিসেম্বর তার অব্যাহতি প্রত্যাহার করে নেয় জেলা ছাত্রলীগ। প্রত্যাহার পত্রে ভবিষ্যতে দলীয় শৃঙ্খলা কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সতর্ক করা হয় তাকে। এই নিয়ে দুইবার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেলেন উপজেলা ছাত্রলীগের এই নেতা। 

শোয়েব আল হাসান সজলের ভাষ্য, তিনি দলীয় শৃঙ্খলা বা দলের নীতি আদর্শ পরিপন্থী কোন কাজে জড়িত না। কি কারনে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তা জানেননা তিনি। এরপরেও জেলা ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত মেনে লিখিত ভাবে জবাব দিবেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খান বলেন,দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।


আরও খবর



গ্যাস সিলিন্ডারে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ব্যবহারের কারণে প্রতি বছরই অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে। ফুটপাত, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে যেখানে সেখানে ব্যবহার হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। এতে ঘরে ঘরে মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়েছে। দিন দিন বেড়েই চলেছে অগ্নিকাণ্ড। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার পরে বের হচ্ছে নানা কারণ। তাৎক্ষণিক প্রশাসন নরেচরে বসলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার পূর্বের মতো অবস্থা। প্রতি বছর বেশিরভাগ অগ্নিকাণ্ড ঘটছে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ ও বিদ্যুৎ থেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন আগে থেকে সচেতনতা ও কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে এসব বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।

পরিসংখ্যান বলছে বেশিরভাগ অগ্নিকাণ্ড ঘটছে বিদ্যুৎ গোলযোগ, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কিংবা জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণজনিত কারণে। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে ৯ হাজার ৮১৩টি দুর্ঘটনা। এছাড়া গ্যাস সরবরাহ লাইনে আগুন থেকে ঘটেছে ৭৭০টি, স্থির বিদ্যুৎ থেকে ১১টি, গ্যাস ইলেক্ট্রিক ও মাটির চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে চার হাজার ১৭৫টি। তার আগের বছর ২০২২ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ২৪ হাজার ১০২টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে নয় হাজার ২৭৫টি দুর্ঘটনা। এছাড়াও গ্যাস সরবরাহ লাইনে আগুন থেকে ঘটেছে ৭৯৫টি, স্থির বিদ্যুৎ থেকে ১৯টি, সিলিন্ডার ও বয়লার বিস্ফোরণ থেকে ঘটেছে ৯৪টি অগ্নিকাণ্ড। চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তিন হাজার ৩৬৮টি। যার অধিকাংশই গ্যাস ও ইলেকট্রিক চুলা থেকে।

সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে লাগা আগুনে ৪৬ জন নিহতের ঘটনা ঘটে। গেল ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে এই আগুন লাগে। ভবনটিতে থাকা একটি রেস্টুরেন্টে এলপিজি সিলিন্ডার থেকেই এই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হয়। আগুন মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সেখানে। তার কয়েক দিন পরেই গত ১৩ মার্চ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তেলিরচালা এলাকায় শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী জমি ভাড়া নিয়ে কলোনি তৈরি করে ঘর ভাড়া দিয়েছেন। একটি ঘরের সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে যায়। তিনি পাশের দোকান থেকে একটি সিলিন্ডার কিনে আনেন। সিলিন্ডার লাগানোর সময় চাবি খুলে গিয়ে পাশের চুলা থেকে আগুন ধরে যায়। এ সময় আশপাশের উৎসুক নারী, পুরুষ ও শিশুদের শরীরে আগুন লেগে যায়।

গেল বছরও বেশ কয়েকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০২৩ সালের ৭ মার্চ বিকেল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে সাততলা একটি ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় ২৩ জনের মত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন দেড় শতাধিক মানুষ। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা গ্যাসের লাইনের কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি।সিদ্দিকবাজারের ক্যাফে কুইন ভবনের নিচে ছিল গ্যাসের লাইন। সেখানে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন ছিল না। তাই লাইনের লিকেজ থেকে বের হওয়া গ্যাস জমা হয়। সেই গ্যাস থেকেই শর্টসার্কিট বা দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানোর মধ্য দিয়ে হয় বিস্ফোরণের সূত্রপাত।

তারও মাত্র দুই দিন আগে ৫ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডির সায়েন্স ল্যাব এলাকায় একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী চারজনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও এ ঘটনায় আহত হন অন্তত ৪০ জন। জমে থাকা গ্যাস থেকেই সায়েন্স ল্যাব এলাকার ভবনটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল।

২০২২ সালের ৫ জুন সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।আহত হন অনেক। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কারখানার আশপাশের অন্তত এক বর্গকিলোমিটার এলাকা। বিস্ফোরণস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূর পর্যন্ত উড়ে যায় লোহার পাত। ২০২০ সালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এ বিস্ফোরণে শিশুসহ ৩৪ মুসল্লির মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ বিভাগ ও জেলা প্রশাসন পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে তিতাস সংযোগ লাইনের লিকেজে মসজিদের ভেতর গ্যাস জমা এবং হঠাৎ বিদ্যুৎ স্পার্কিংয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটার বিষয়টি সামনে চলে আসে।

এই ধরনের দুর্ঘটনা হরহামেশাই ঘটে চলছে। দুর্ঘটনার পরে বেরিয়ে আসে নানা ধরনের অসঙ্গতির তথ্য। দুর্ঘটনা ঘটার পরে দায় নিতে চায় না কেউ। বিদ্যুৎ গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান, সিলিন্ডার প্রস্তুতকারী, রাজউক, সিটি করপোরেশন, বিস্ফোরক অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো একে অপরকে ঠেলাঠেলি করে। তবে দায় সাধারণ মানুষেরও কম নয়। এই দুর্ঘটনাগুলোতে যেমন বহু মানুষ হতাহত হচ্ছে তেমনি হচ্ছে আর্থিক ক্ষতিও। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শুধু ২০২৩ সালেই অগ্নিদুর্ঘটনায় ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ২০২২ সালে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৮৯ টাকা। এছাড়াও ২০২১ সালে ২১৮ কোটি ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৪০৩ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পান দোকান, মুদি দোকান, ওষুধের দোকানসহ বিভিন্ন অনিরাপদ স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকি না থাকায় লাইসেন্স ছাড়া নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে দেদারছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। শুধু যেখানে সেখানে বিক্রিই নয়, নিয়মনীতির তোয়াক্কা ছাড়াই বিভিন্ন ফুটপাত, চায়ের দোকান, রেস্তোরাঁয় এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে দেদারছে।

২০০৯ সালে পাইপলাইনে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো নতুন সংযোগ বন্ধ করে দেয়। ফলে বেড়েছে এলপি-নির্ভরতা। এলপিজি গ্রাহকের একটি বড় অংশই গ্রামাঞ্চলের। এ মুহূর্তে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩০টি কোম্পানির অন্তত দুই কোটি সিলিন্ডার বাজারে রয়েছে। বিস্ফোরক পরিদফতরের তথ্য বলছে, গত এক বছরে এলপিজি সিলিন্ডার আমদানি করা হয়েছে ছয় লাখের বেশি। এলপিজি ছাড়া অন্যান্য সিলিন্ডার আমদানি করা হয়েছে তিন লাখের বেশি। পাশাপাশি দেশেও সিলিন্ডার নির্মাণের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান বাজারজাত করেছে দেশে নির্মিত সিলিন্ডার। কিন্তু এসব সিলিন্ডারের মান পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত কোনো পরীক্ষা কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি।

শুধু যত্রতত্র এলপিজির ব্যবহারই নয়, যেখানে সেখানে রয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। তিতাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ছয় লাখ দুই হাজার ৮৮৪টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে রীতিমত ইঁদুর বেড়াল খেলা চলে। কর্তৃপক্ষ একদিকে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, অন্যদিকে দুষ্কৃতিকারীরা সংযোগ দিয়ে দেয়। চুরি করে সংযোগ দেওয়ায় থাকে না কোনো নিয়ম নীতির বালাই। এতে দেখা দেয় দুর্ঘটনা। এছাড়াও সারাদেশে জালের মতো ছড়িয়ে আছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগও। বিভিন্ন বস্তি ঘনবসতি এলাকা ও ফুটপাতে যেখানে সেখানে রয়েছে এসব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ৪০ হাজার ৯২টি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ দুর্ঘটনাগুলো মূলত গ্যাস লিকেজ থেকেই ঘটে।সিলিন্ডারের হোসপাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভালভের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণে গ্যাস লিক হয়। সেই লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে বাইরে কোথাও জমতে থাকে। পরে তা সামান্য আগুন, এমনকি স্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে আসতেই জমে থাকা সেই গ্যাস ভয়াবহ বিস্ফোরণ সৃষ্টি করে। সিলিন্ডারের মধ্যে এলপি গ্যাস যে চাপ তৈরি করে, মানসম্পন্ন সিলিন্ডারে তারচেয়ে চারগুণ বেশি চাপ সহ্য করার সক্ষমতা রয়েছে। ফলে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কম। নজিরও তেমন নেই। গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়নি। লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে আগুন ধরে যায়। এজন্য সিলিন্ডারের সঙ্গে যে রেগুলেটর, হোসপাইপ, চুলাসহ অন্যান্য জিনিস ব্যবহৃত হয়, সেগুলো মানসম্মত হতে হবে।এই অনুষঙ্গগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করায় লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটছে। গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন কঠোরভাবে মানার বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বলছে, ২০০৯ সালে দেশে এলপিজির চাহিদা ছিল ৬৫ হাজার টন। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৪ লাখ টন। ২০০৯ সালে এলপিজি ব্যবহারকারী ছিল দুই লাখ ২৫ হাজার, বর্তমানে তা ৪০ লাখ। এসব এলপিজির ৮৪ শতাংশ রান্নার কাজে, ১২ শতাংশ শিল্পে এবং চার শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে যানবাহনে।

এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম তামিম বলেন, এসব ক্ষেত্রে যেমন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা আছে তেমনি বড় দায়বদ্ধতা হচ্ছে কনজ্যুমারদের। গ্যাস দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যেসব বাসায় গ্যাস ব্যবহার করা হয় সেসব বাসা-বাড়িতে ভেন্টিলেশন থাকতে হবে। যেখানে গ্যাসের চুলা আছে সেখানে ভালো ভ্যান্টিলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। উপরে খোলামেলা থাকতে হবে যেন গ্যাস লিকেজ গলে সেটা বের হয়ে যায়। এসব দেখভাল করার দায়িত্ব তিতাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। একটা দুর্ঘটনা ঘটার পরে অনেক ধরনের কথা হয় কিন্তু আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় দেখা যায়, দোকানপাটে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে যেখানে বৈদ্যুতিক তারের যতটুকু সক্ষমতা তার থেকে বেশি ভোল্টেজ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব বিষয় তো দায় সবারই। যে অবৈধ সংযোগ নিচ্ছে তারও। আবার যারা দিচ্ছে তাদেরও। ভোক্তা পর্যায়ে সবকিছু সঠিকভাবে হচ্ছে কি না সেটা দেখার দায়িত্ব বিদ্যুৎ বিভাগের। মূল কথা আগে থেকে সবাই সচেতন হলে এসব দুর্ঘটনা এরানো সম্ভব।

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, দেশজুড়ে অসংখ্য গ্যাস বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ রয়েছে। এসব দুর্ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে, দেশের গ্যাস সরবরাহ ও সংযোগ কতটা ভঙ্গুর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা-প্রাণহানি।


আরও খবর



স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ঢাকার বাতাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। রাজধানী ঢাকাও দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণের কবলে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে শহরটির বাতাসের মানে কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু কয়েক দিনের তীব্র গরম আর শুষ্ক আবহাওয়ায় ঢাকার বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ১৫৭ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে মেগাসিটি ঢাকা, যা অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত।

তবে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ২২৫ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ভারতের দিল্লি শহর। এ ছাড়া দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু শহরের স্কোর ১৭৬, তৃতীয় অবস্থানে থাকা মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরের স্কোর ১৬৩ আর ১৫৭ স্কোর নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহর।

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে অস্বাস্থ্যকর বায়ু বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।


আরও খবর



মেঘনায় ঢাকাগামী লঞ্চে আগুন

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

ভোলা থেকে রাজধানী সদরঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ কর্ণফুলী-৩ এ আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে ৭ যাত্রী আহত হয়েছেন। অনেকে আতঙ্কে নদীতে লাফিয়ে পড়েন। পরে লঞ্চটি চাঁদপুরের হাইমচর সংলগ্ন আবাল বিল নামে একটি চরে নোঙর করা হয়।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে হাইমচর সংলগ্ন আবাল বিল চর এলাকার মেঘনা নদীতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

কর্ণফুলী-৩ লঞ্চের সহকারী মাস্টার মো. রইচ উদ্দিন সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কয়েক শ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটের দিকে লঞ্চটির ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ করে আগুন লেগে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে লঞ্চটি আবাল বিল চরে নোঙর করে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

সহকারী মাস্টার আরও জানান, আগুন লাগার পরই তা পুরো ইঞ্জিনরুমে ছড়িয়ে পড়ে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের সহায়তা চাওয়া হয়। চরে নামিয়ে দেওয়া যাত্রীদের কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ ঢাকায় নিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে লঞ্চটিতে থাকা মনিরুল ইসলাম রুবেল নামে এক যাত্রী জানান, আগুন লাগার খবরে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইঞ্জিনরুমসহ লঞ্চের নিচতলা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে।

ভোলা জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হোসাইন জানান, ঘটনাটি জানার পর তিনি কোস্টগার্ডকে বিষয়টি অবগত করেছেন। চাঁদপুরের একটি কোস্টগার্ড টিম ঘটনাস্থলে যাবে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ঘটনাস্থল ভোলার বাইরে, সেজন্য এখনো নিশ্চিত করে ঘটনার বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব না।


আরও খবর



নওগাঁয় ৬ টি ইটভাটা মালিকের ৯ লাখ টাকা জরিমানা

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নিয়ম না মেনে সারা দেশের মতো নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় নির্মাণ করা হয়েছে অবৈধ ইট ভাটা। যে ইট ভাটা গুলো দীর্ঘদিন যাবত সরকারের বিধি নিষেধকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবৈধ্যভাবে ইট উৎপাদন (তৈরি) করে আসছে। ফলে দিন যতই যাচ্ছে ততই পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক নওগাঁ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন অবৈধ্য ইট ভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। অভিযানে আর্থিক দন্ড প্রদানের পাশাপাশি ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে অবৈধ্য ইট ভাটাগুলো।

পরিবেশ অধিদফতর এর কোনো ছাড়পত্র না থাকা, গাছ পোড়ানো ও সঠিক পদ্ধতিতে ভাটার কার্যক্রম পরিচালনা না করার অপরাধে নওগাঁয় ৬টি ইটভাটার মালিককে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার ও মঙ্গলবার নওগাঁ জেলার পত্নীতলা ও বদলগাছী উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করেন পরিবেশ অধিদফতর এর মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইং-এর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমী। 

অভিযানে বদলগাছী উপজেলার বুড়িগঞ্জ পাহাড়পুর বাজার এলাকায় ৩টি ইটভাটা ভেঙ্গে দিয়ে ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, নওগাঁ পরিবেশ অধিদফতর এর সহকারী পরিচালক মলিন মিয়া, পরিদর্শক উত্তম কুমার, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এর সদস্যরা এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা করেন। 

নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোঃ গোলাম মওলা জানান, যতগুলো অবৈধ্য ইটভাটা রয়েছে পর্যায়ক্রমে সেগুলোতেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। সরকারের নিয়ম-নীতি মেনে ইটভাটা পরিচালনা করতে কোন বাধা নেই। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজে ইটের প্রয়োজন আছে। কিন্তু নিয়ম না মেনে পরিবেশের ক্ষতি করে নিজেদের ইচ্ছে মাফিক ইট ভাটা তৈরি করে কার্যক্রম পরিচালনা করার কোন সুযোগ নেই। তাই এই ধরণের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে যা আগামীতেও অব্যাহত রাখা হবে।


আরও খবর