কুষ্টিয়ার চালের বাজার একেবারেই নিয়ন্ত্রণহীন। প্রতি সপ্তাহে চালের দাম বাড়ছে। গত এক মাস ধরেই বাজারের এই অবস্থা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম হচ্ছে কুষ্টিয়ার খাজানগরে। এই মোকাম থেকেই দেশের সিংহভাগ চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে। এখানকার মোকামে চালের দাম বাড়লে সারাদেশের বাজারে চালের দাম বাড়বে।
কুষ্টিয়ায় চালের বাজারে চলছে চালবাজি। প্রতিনিয়ত হু হু করে বাড়ছে দাম। কুষ্টিয়ার বাজারে এখন এক সপ্তাহ পর পর বাড়ছে চালের দাম। আর গত এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কুষ্টিয়ার চালের বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই গত সপ্তাহে তারা মিলগেট থেকে যে দরে চাল কিনেছেন পরের সপ্তাহে আর সেই দামে চাল কিনতে পারছেন না। সর্বনিম্ন কেজিতে ৫০ পয়সা বেশি দরে চাল কিনতে হচ্ছে। গত এক মাস ধরেই কুষ্টিয়ার বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির এমন অবস্থা বিরাজ করছে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, চালের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি পেলেও এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। আর এই সুযোগে কুষ্টিয়ার মিলাররা সিন্ডিকেট করে তাদের খেয়াল-খুশিমতো চালের দাম বাড়িয়ে অধিক মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
সকালে কুষ্টিয়ার পৌর বাজার এবং বড় বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহে কুষ্টিয়ার বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি এক থেকে দুই টাকা বেড়েছে। আর গত এক মাসে বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই বাজারে সব ধরনের চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, মিনিকেট সরু চিকন চাল, চাল ৫৮ টাকা কেজি ছিল, সেই চাল এখন সাধারণ মানের ৬২ টাকা এবং ভালো মানের ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাজললতা চাল আগে যেখানে ৫৫ টাকা কেজি ছিল, এখন তা বেড়ে গিয়ে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আটাশ চাল ৪৮ টাকা কেজির পরিবর্তে ৫২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাসমতি চাল ৬৮ টাকা থেকে কেজি প্রতি চার টাকা বেড়ে ৭২ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর নাজির শাইল চাল আগে যেখানে ৫৮ টাকা ছিল এখন সেখানে ৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার চালের বাজার একেবারেই নিয়ন্ত্রণহীন। প্রতি সপ্তাহে চালের দাম বাড়ছে। গত এক মাস ধরেই বাজারের এই অবস্থা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম হচ্ছে কুষ্টিয়ার খাজানগরে। এই মোকাম থেকেই দেশের সিংহভাগ চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে। এখানকার মোকামে চালের দাম বাড়লে সারাদেশের বাজারে চালের দাম বাড়বে।
কুষ্টিয়ার খাজানগর মিলগেটে মিনিকেট চাল পাইকারি ৬১ টাকা ৫০ পয়সা, কাজললতা ৬০ টাকা, আটাশ চাল ৪৮ টাকা এবং বাসমতি চাল ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বড় বাজার এলাকার চাল ব্যবসায়ী টিপু সুলতান জানান, পৌর বাজার এবং বড় বাজারের ব্যবসায়ীদের কুষ্টিয়ার চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো ক্ষমতা নেই। বাজারে চালের দাম বাড়া-কমা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন খাজানগর মোকামের ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, দফায় দফায় চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতা-সাধারণের মধ্যে নাভিশ্বাস দেখা দিয়েছে। পৌর বাজারে চাল কিনতে আসা হাফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় সরকারের খাদ্য অধিদফতরের কোনো মনিটরিং নেই। করোনার দোহায় দিয়েও অনেক অসাধু ব্যবসায়ী ধানের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ যেন অনেকটাই মগের মুল্লুক।
কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চালের বাজারের এই অস্থিরতার কথা স্বীকার করে বলেন, ধানের বাজার এখনও চড়া রয়েছে। যে কারণে দাম বাড়ছে। ঈদের পর সরকার যদি চাল আমদানি করে তাহলে বাজারের এই অস্থিরতা অনেকটাই কেটে যাবে।