ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশা
নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং পৌরসভাকে
লম্বা পরিকল্পনা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
ডেঙ্গু নিয়ে মানুষের
মধ্যে মারাত্মক আতঙ্ক রয়েছে। এ নিয়ে আপনারা কী করতে চাচ্ছেন কিংবা ডেঙ্গু
নিয়ন্ত্রণে আপনাদের কোনো অবহেলা আছে কি না —এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পৌরসভা
কিংবা সিটি কর্পোরেশনকে এই প্রশ্নটি করলে সেটা যৌক্তিক হতো। অবহেলা থাকলে সেটা যারা
মশা নিধন করেন, যারা ময়লা ও ড্রেন সাফ করেন এবং যারা ময়লা গাড়িতে করে নিয়ে যান-এটা
তাদের দায়িত্ব। স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব এটা না। কাজেই এ প্রশ্ন স্বাস্থ্যবিভাগে
করবেন না। আমাদের প্রশ্ন করবেন, চিকিৎসায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিংবা চিকিৎসায়
কোনো ঘাটতি আছে কি না? এ প্রশ্ন আমাদের করতে পারেন।
‘চিকিৎসার বিষয়ে বলতে পারি, এখানে কোনো ঘাটতি নেই। আমাদের চিকিৎসক, নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি, হাসপাতালগুলোতে যথেষ্ট শয্যা রয়েছে। কেবল ঢাকায় না, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও ডেঙ্গুর জন্য আলাদা শয্যা তৈরি করেছি। সব জায়গায়, যাতে যথেষ্ট পরিমাণ, ফ্লুইড, মানে স্যালাইন থাকে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা নিজেরা স্যালাইন আমদানি করেছি, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোও প্রায় ৫০ লাখ প্যাকেট স্যালাইন তৈরি করে। স্যালাইনের কোনো ঘাটতি নেই।
তিনি বলেন, ‘আমার অনুরোধ, যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা সময়মতো পরীক্ষা করে নেবেন, তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসবেন, চিকিৎসা নিলে ভালো হয়ে যাবেন। দেরি করে এলে আর কিছু করার থাকে না।
মন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের একটা লম্বা অর্থাৎ সারা বছরের পরিকল্পনা থাকতে হবে। আমি যখন মানিকগঞ্জে গেলাম, সেখানে দেখলাম ৫০০ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে। আগে পাঁচটা রোগী ছিল না। এতো রোগী কোথায় থেকে এসেছে? আশপাশের জেলা থেকে এসেছে। সেখানে ডেঙ্গু ছড়িয়েছে, সেখানে ড্রেন আছে, ময়লা পড়ে আছে। এগুলো যদি সাফসুতরো কিংবা ওষুধ ব্যবহার করা না হয়, তাহলে তো আর ডেঙ্গু কমবে না।
মন্ত্রী বলেন, ‘বড়
বড় কথা বললে তো আর ডেঙ্গু কমবে না। ডেঙ্গুর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত না। যদি পর্যাপ্তই থাকত, তাহলে আড়াই লাখ লোক
এ রোগে আক্রান্ত হতো না। এখন পর্যন্ত এক হাজার ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে।
কাজেই এটা বড় সংখ্যা, আমরা খুবই দুঃখিত। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে
যে পরামর্শ দেওয়ার, কিংবা চিকিৎসা দেওয়ার, সেটা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে গিয়ে বলা
দরকার বা যাদের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়; সেখানে গিয়ে
বলবেন। তারা কী পরিকল্পনা নিয়েছে? বছরব্যাপী পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। কেবল ঢাকা না,
সারা দেশে পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। তবেই ডেঙ্গু কমবে। তাছাড়া ডেঙ্গু কমবে না।