Logo
শিরোনাম

ঢাকার যানজট থেকে মুক্তি মিলবে কি ?

প্রকাশিত:বুধবার ২৩ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

মাজহারুল ইসলাম মাসুম :  ঢাকার যানজট নিরসনে স্বল্পমেয়াদি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাগত উদ্যোগের পাশাপাশি পরিবহন পরিকল্পনা ও নগর পরিকল্পনার কার্যকর সমন্বয় প্রয়োজন। পরিকল্পিতভাবে কাজ করা না গেলে যানজট নিরসনে সফলভাবে সব প্রকল্প বাস্তবায় করেও ঢাকার যানজট নিরসন করা যাবে না। যদি না সারা দেশের আঞ্চলিক উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ঢাকামুখী জনস্রোত কমানো না যায়।

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) এর আয়োজনে ‌‌‌'স্বাভাবিক ঢাকায় অসহনীয় যানজট : পরিবহন পরিকল্পনা ও নগর পরিকল্পনার প্রেক্ষিত বিশ্লেষণ ও প্রস্তাবনা' শীর্ষক নগর সংলাপে আলোচকরা এই প্রস্তবনা দেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে নগর পরিকল্পনা ও পরিবহন পরিকল্পনা সংশ্লিষ্টরা অনলাইন মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

ঢাকা শহরের ট্রাফিক সমস্যা নিরসনে নগরের বাস সার্ভিস এর তাৎপর্য উন্নয়ন নিশ্চিত করা ও বিদ্যমান বাস রুট রেশনালাইজেশন এর উদ্যোগকে অতি দ্রুত প্রস্তাবিত শহরের সকল রুটে সম্প্রসারিত করার বিষয়ে আলোচকরা গুরুত্ব দেন। পাশাপাশি রুট পারমিটবিহীন বাস সার্ভিসসমূহকে চিহ্নিত করে নগরের সমগ্র বাস সার্ভিসকে শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়।

নাগরিক সংলাপে মেট্রো রেল, নগর পরিবহন বাস সার্ভিসসহ গণপরিবহনের সাথে অন্যান্য পরিবহন মাধ্যম এর সমন্বিত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এবং কমিউনিটিভিত্তিক মানসম্মত প্যারাট্রানজিট পরিকল্পনা তৈরি করা ও কমিউনিটি মবিলিটি প্ল্যান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবার মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা আনা সম্ভব হতে পারে বলে মত দেন বক্তরা। একইসাথে পথচারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে পরিবহন পরিকল্পনা করা ও সড়কগুলোর ডিজাইন তৈরি করবার পাশাপাশি সড়কের প্রশস্ততা বাড়ানো কিংবা অন্য কোনো অবকাঠোমো উন্নয়ন এর কারণ দেখিয়ে কোনোভাবেই ফুটপাথ কমানো কিংবা অকার্যকর করে না রাখার বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার চাহিদা ভিত্তিক নগর পরিবহন চালু করা ও পরিধি বাড়ানোর বিষয়ে পরামর্শ তুলে ধরা হয়। যেমন ছাত্র-ছাত্রীদের বাস সার্ভিস, মহিলাদের বাস সার্ভিস, প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ বাস সার্ভিস, শিল্প শ্রমিক বাস সার্ভিস প্রভৃতি সার্ভিস নগরে পরিচালনার মাধ্যমে নগরের ট্রাফিক ব্যবস্থা একটা পর্যায়ে উন্নত করা সম্ভব। তবে যানজট সমস্যার কার্যকর সমাধান পেতে হলে পরিবহন পরিকল্পনা ও নগর পরিকল্পনার মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় করতে হবে বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনা ও পরিবহন পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

আয়োজক প্রতিষ্ঠান জানান, যানজট ঢাকা মহানগরীর অন্যতম সমস্যা। বিগত দিনগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পরিবহন পরিকল্পনা ও নগর পরিকল্পনার নানাবিধ উদ্যোগ এবং যানজট সমাধানে অনেক সড়ক ও অবকাঠামোগত প্রকল্প নেওয়া হলেও এর সুফল তেমন একটা দৃশ্যমান হচ্ছে না। করোনার কারণে বিগত বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ থাকলেও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক সময়ের মতো চালু হবার পর নগরে যানজট বেড়েছে তীব্রভাবে, যা নগর জীবনকে স্তব্ধ করে দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে আইপিডি নগর সংলাপের আয়োজন করেছে।

নগর সংলাপের মূল প্রবন্ধে আইপিডি’র পক্ষ থেকে ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নগরে সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সড়ক এলাকার বরাদ্দকৃত ভূমি ২০-২৫ ভাগ হওয়া প্রয়োজনীয় হলেও ঢাকায় ১০ ভাগের ও কম সড়ক বিদ্যমান। এরপরও সেবাসংস্থা, সড়ক সংস্থা ও নগর সংস্থাসমূহের সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ি, অনিয়ন্ত্রিত পার্কিং ও হকার অব্যবস্থাপনার কারণে ঢাকার সড়কগুলো সক্ষমতার ৬০-৭০ ভাগ এর বেশি কার্যকারিতা দেখাতে পারে না। আবার বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নগর এলাকার জনঘনত্ব ৬০-৮০ জন প্রতি একরে যা অল্প কিছু আরবান ডিস্ট্রিক্ট এ সর্বোচ্চ ১২০ হতে পারে। কিন্তু ঢাকায় জনঘনত্ব একর প্রতি ৩০০-৪০০, কোনো কোনো এলাকায় ৬০০-৭০০ প্রতি একরে। তিনি বলেন, ঢাকার সড়কগুলো তার কার্যকর সক্ষমতার ৬-৭ গুণ ট্রাফিক ধারণ করবার চ্যালেঞ্জের সামনে। পাশাপাশি নগর জনসংখ্যা ৭০ লাখ অতিক্রম করলে ডিজইকোনমিস অফ স্কেল কার্যকর হতে থাকে। অর্থাৎ তখন সড়ক, অবকাঠামো ও অন্যান্য বিনিয়োগ ব্যয় এর তুলনায় নগর তথা রাষ্ট্রের উন্নয়ন এর সুফল অপেক্ষাকৃতভাবে অনেক কমে যায়। ঢাকার ট্রাফিক সমস্যার সমাধানে সমন্বয়হীন প্রকল্প উদ্যোগ চলমান থাকলেও বাস্তবিকভাবে যানজট সমস্যার সমাধান পাওয়াটা খুবই দুরূহ।

মূল প্রবন্ধে আদিল মোহাম্মদ খান আরো বলেন, ঢাকার যানজট সমাধানের দ্রুত স্বস্তি খুজতে গেলে ট্রাভেল ডিমান্ড ম্যানেজমেন্টের (ভ্রমণ চাহিদা ব্যবস্থাপনা) যেমন, স্কুল-কলেজগুলোর সময়সীমা ও ছুটির সূচি, মার্কেটসমূহের খোলা-বন্ধ ও বন্ধের সূচিতে বাস্তবসম্মত পরিবর্তন আনা যেতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে সমাধান খুঁজতে গেলে পরিবহন পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হওয়া প্রয়োজন গণপরিবহনকে কেন্দ্র করে হাঁটা-সাইকেল-বাস-কমিউনিটিভিত্তিক প্যারাট্রানজিট ব্যবস্থা তৈরি করা। সাম্প্রতিক আলোচিত জোড়-বেজোড় ভিত্তিক ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবস্থাপনা কার্যকর হবার মূল শর্ত মানসম্মত গণপরিবহন এই নগরে নিশ্চিত না করা পর্যন্ত এই ধরনের ব্যবস্থা ঢাকা শহরে সফলতা পাবার সম্ভাবনা কম।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) এর প্রকল্প পরিচালক ও ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) এর পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকার ভৌত পরিকল্পনা ও যোগাযোগ পরিকল্পনার যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে ঢাকাকে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খলার মধ্যে আনা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত এলাকার ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা এখনই চূড়ান্ত করে ফেলা দরকার। না হয় এই সেতুকে কেন্দ্র করে ঢাকামুখী অভিগমনের চাপ সামাল দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও পরিবহন পরিকল্পনা না করা গেলে ভবিষ্যতে ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় আরো চাপ পড়ে যাবে, যা সামাল দেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। পাশাপাশি এই পরিকল্পনাবিদ যত্রতত্র বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে পরিকল্পনামাফিক বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) এর পরিচালক ও শেলটেক কনসালটেন্টস লিমিটেড এর প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিকল্পনা ও নীতি বিষয়ক পরামর্শ প্রদান ও গণসচেতনতা তৈরির জন্য আন্তরিকভাবে সামনের দিনগুলোতে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) কাজ করে যাবে।   ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কার্যকর করতে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ভিত্তিক জোনিং ব্যবস্থা কার্যকর করবার পাশাপাশি অধিক ব্যয়নির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিবর্তে সাশ্রয়ী গণপরিবহন ব্যবস্থা কার্যকর করবার পরামর্শ দেন।

পরিকল্পনাবিদ ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক, বাংলাদেশ পুলিশ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উন্নয়ন) এবং পরিচালক, ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) বলেন, ট্রাফিক মোড়গুলোতে ডিজাইন ও পরিকল্পনাগত সমাধান করা প্রয়োজন। ঢাকা শহরে গাড়ির অনিয়ন্ত্রিত পার্কিং নগর বিশৃংখলার জন্য দায়ী। এক্ষেত্রে পার্কিং ব্যবস্থাপনাকে কার্যকর নীতিমালা ও ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসা জরুরি।

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) এর উপদেষ্টা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, ঢাকার ট্রাফিক ও পরিবহন পরিকল্পনায় যতগুলো সম্ভাব্য প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে, সেগুলো যদি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলেও ঢাকার যানজট নিরসন করা যাবে না। যদি না সারা দেশের আঞ্চলিক উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ঢাকামুখী জনস্রোত না কমানো যায়। ঢাকাতে যেকোনো বড় অবকাঠামো নির্মাণের সম্ভাবনা ব্যয়সমূহের নির্মোহ বিশ্লেষণ করেই ঢাকার ট্রাফিক সমস্যা নিরসনে প্রকল্প প্রণয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।

ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রকল্প ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান বলেন, ঢাকা শহরে বিগত বছরগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের তুলনায় পাবলিক বাস তুলনামূলকভাবে অনেক কম সংখ্যক নগরের রাস্তায় যুক্ত হয়েছে, ফলে যানজট অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি যে কেবল যানজট এর কারণ তা নয়, বরং তা পরিবেশকেও মারাত্মকভাবে দূষিত করে । ঢাকা নগর পরিবহনে আরো বাস বাড়ানোর মাধ্যমে এই সার্ভিসকে টেকসই ও ঢাকার ট্রাফিক নিরসনে সাশ্রয়ী ও কার্যকর পরিবহন হতে পারে।

সেভ দ্য চিলড্রেন এর ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিগত বছরগুলোতে ট্রাফিক সমস্যা নিরসনে গৃহীত অধিকাংশ প্রকল্প কতিপয় গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করলে নগরের যানজট নিরসনে কার্যকর সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তার মূল কারণ সামগ্রিক জনস্বার্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে উপেক্ষিত হয়েছে। সড়ক সংক্রান্ত অবকাঠামো নির্মাণে ধূলা দূষণ, পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে জনস্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা বিবেচনায় নিয়েই প্রকল্প সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রণয়ন করা উচিত।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এর যুগ্ম সম্পাদক ও পরিবহন পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ রাসেল কবির বলেন, আমাদের সড়ক সংক্রান্ত পরিকল্পনা ও প্রকল্পসমূহ বিদেশি প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে প্রণয়ন করা হয়, অথচ আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক-পরিকল্পনাগত বাস্তবতায় এ ধরনের অনেক উদ্যোগ স্বভাবতই পরবর্তীতে ব্যর্থ বলে প্রতীয়মান হয়। সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত সাবওয়ে পরিকল্পনার সাথে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের শহর নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনার রূপরেখার কার্যকর সমন্বয় অনুপস্থিত বলে মন্তব্য করেন এই পরিকল্পনাবিদ।

বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) প্রকল্প এর পরামর্শক পরিকল্পনাবিদ আবু মুসা বলেন, সারা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলবার বিদ্যমান উদ্যোগকে সফলভাবে পরিচালিত করা গেলে ঢাকার উপর চাপ কমানো সম্ভব। পাশাপাশি ঢাকাকে ঘিরে রিং রোড ও রেডিয়াল রোডসমূহের প্রস্তাবনাসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকার ট্রাফিক সমস্যার সমাধান কিছুটা সম্ভবপর হতে পারে।

নাগরিক সংলাপে ঢাকার ট্রাফিক সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে নগরের বাস সার্ভিস এর তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন নিশ্চিত করা। বিদ্যমান বাস রুট রেশনালাইজেশন এর উদ্যোগকে অতি দ্রুত প্রস্তাবিত শহরের সকল রুটে সম্প্রসারিত করা। রুট পারমিটবিহীন বাস সার্ভিসসমূহকে চিহ্নিত করে নগরের সমগ্র বাস সার্ভিসকে শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসা। গণপরিবহন সার্ভিসসমূহ যেমন- মেট্রো রেল, নগর পরিবহন বাস সার্ভিস প্রভৃতি পরিবহনসমূহের সাথে অন্যান্য পরিবহন মাধ্যম এর সমন্বিত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা। কমিউনিটিভিত্তিক মানসম্মত প্যারাট্রানজিট পরিকল্পনা তৈরি করা ও কমিউনিটি মবিলিটি প্ল্যান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। পথচারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে পরিবহন পরিকল্পনা করা ও সড়কগুলোর ডিজাইন তৈরি করা। সড়কের প্রশস্ততা বাড়ানো কিংবা অন্য কোন অবকাঠোমো উন্নয়ন এর কারণ দেখিয়ে কোনভাবেই ফুটপাথ কমানো কিংবা অকার্যকর না করা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার চাহিদা ভিত্তিক নগর পরিবহন চালু করা ও পরিধি বাড়ানো, যেমন- ছাত্র-ছাত্রীদের বাস সার্ভিস, মহিলাদের বাস সার্ভিস, প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ বাস সার্ভিস, শিল্প শ্রমিক বাস সার্ভিস প্রভৃতি।

গণ পরিবহনের পর্যাপ্ত উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে নগরে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস এর উপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা। অযান্ত্রিক বাহন পরিকল্পনা প্রণয়ন এর মাধ্যমে রিকশা ও অন্যান্য অযান্ত্রিক বাহনসমূহকে শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসা। বাসস্টপগুলো সুনির্ধারিত করার মাধ্যমে যত্রতত্র যাত্রী-উঠানো নামানো বন্ধের মাধ্যমে রুটসমূহের কার্যকারিতা বাড়ানো। সেবা সংস্থাগুলোর উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ এর যথাযথ সমন্বয় এর মাধ্যমে বিদ্যমান রাস্তাগুলোর সর্বোচ্চ কার্যকারিতা নিশ্চিত করা। পার্কিং ব্যবস্থাকে শৃংখলার মাধ্যমে আনার মাধ্যমে অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা ও যত্রতত্র পার্কিং কিংবা রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবার বিষয়ে যথাযথ আইন প্রয়োগ করা। হকার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন এর মাধ্যমে রাস্তা ও ফুটপাথসমূহের কার্যকর সক্ষমতা বাড়ানো। বিভিন্ন অফিস ও সংস্থাসমূহ কর্তৃক ব্যক্তিগত গাড়িক্রয়ের প্রণোদনা দেবার বিদ্যমান সংস্কৃতি বন্ধ করে বিভিন্ন রুটে অফিস বাস চালু করবার উদ্যোগ করার জন্য নীতি কাঠামো তৈরি করা।

ঢাকার আশপাশের অঞ্চলসমূহের সাথে দ্রুত যোগাযোগ বৃদ্ধি করার উদ্দ্যেশ্যে কমিউটার ট্রেন বাড়ানো এবং বৈশ্বিকভাবে কার্যকর লাইট রেল ট্রানজিট (এলআরটি) তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ। পরিবহন ব্যবস্থার মানোন্নয়নে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের দিকে না ঝুঁকে আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও সংগতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরিকল্পনা, প্রকল্প ও উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা। বহুতল ভবন নির্মাণ ও বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন এর পূর্বে নির্মোহ ট্রাফিক ইম্প্যাক্ট এসেসমেন্ট (পরিবহনগত প্রভাব বিশ্লেষণ) নিশ্চিত করা। এজন্য প্রয়োজনীয় আইন ও নীতি কাঠামো প্রণয়ন করা। পরিকল্পনা প্রণয়ন এর সময় এলাকাভিত্তিক জনসংখ্যা নির্ধারণ এর পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক ট্রাভেল ডিমান্ড এর প্রক্ষেপণ এর মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক যানবাহন ধারণ ক্ষমতা নির্ণয় এর মাধ্যমে পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন । পরিবহন পরিকল্পনা এবং ভূমি-ব্যবহার ও ভৌত পরিকল্পনার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় সাধন এর উদ্যোগ গ্রহণ। বিষয়গুলোকে সুনির্দিষ্ট একটি সংস্থার অধীনে নিয়ে আসার জন্য সরকারি প্রচেষ্টা জরুরি। বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার প্রস্তাবনা অনুযায়ী, স্কুল জোনিং, কমিউনিটি কার পার্কিং, প্রস্তাবিত অযান্ত্রিক পরিবহন নেটওয়ার্ক, অগ্রাধিকারমূলক বাইসাইকেল লেন প্রস্তাবনাসমূহের আশু বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। বহুমাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলবার জন্য সড়কপথ, রেলপথ ও জলপথ এর কার্যকর সমন্বয় তৈরি করা।

এসটিপির প্রস্তাবনা অনুযায়ী নগরের সকল রেল ক্রসিং সমূহকে গ্রেড সেপারেটেড ব্যবস্থায় নিয়ে যাওয়া। সড়ক ব্যবস্থাপনা ও ট্রাভেল ডিমাণ্ড ম্যানেজমেন্ট (পরিবহন চাহিদা ব্যবস্থাপনা)’কে প্রাধিকার দিয়ে পরিবহন ব্যবস্থা সাজানো। জনঘনত্ব পরিকল্পনা ও ঢাকার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ব্যবস্থাপনার সঠিক পরিকল্পনাগত কৌশল নির্ধারণের মাধ্যমে ঢাকার জনসংখ্যাকে আর বাড়তে না দিয়েপরিবহন ব্যবস্থার উপর চাপ কমানো। ট্রাফিক সিগন্যালিং ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা। ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন এর সময় আমাদের আর্থ-সামাজিক-পরিকল্পনাগত প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন।

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) মনে করে পরিবহন আইন, মহাপরিকল্পনা ও ভূমি ব্যবহার প্রস্তাবনাসমূহের ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও আইনের শাসন নিশ্চিত করবার পাশাপাশি পরিবহন পরিকল্পনা ও নগর পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা এবং দেশের উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ঢাকার ওপর চাপ কমানোর মাধ্যমে ঢাকার ট্রাফিক সমস্যার কার্যকর ও টেকসই সমাধান করা সম্ভব। এক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাগত উদ্যোগের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাগত সমাধানের কার্যকর বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।


আরও খবর



সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরল ঢাবি

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

সারা দেশে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ সহনশীল পর্যায়ে আসায় বুধবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্লাস ও পরীক্ষা যথারীতি সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে। গত সোমবার ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, তীব্র তাপপ্রবাহ (হিট ওয়েভ) সহনশীল পর্যায়ে আসায় ৮ মে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা যথারীতি সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে সব ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ২১ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস চলবে। তবে চলমান পরীক্ষা সরাসরি নেওয়া হবে। তাপপ্রবাহ সহনশীল পর্যায়ে আসায় সশরীরে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাবি কর্তৃপক্ষ।


আরও খবর



সূর্যোদয়ের ১৩ মিনিট পরই আরব আমিরাতে ঈদের জামাত

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ঈদ জামাতের সময়সূচি ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। দেশটির বিভিন্ন শহরে বা বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

তবে দেশটিতে প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সূর্যোদয়ের ১৩ মিনিট পর। এছাড়া অন্যান্য শহর বা স্থানে সূর্যোদয়ের সময় ভেদে ১৯ মিনিট পর পর্যন্তও ঈদ জামাতের সময়সূচী ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদন এবং সার্চ ইঞ্জিন গুগলের সূর্যোদয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই বিষয়টি সামনে এসেছে।

মূলত সোমবার আরব আমিরাতের আকাশে শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখা যায়নি। আর তাই আজ মঙ্গলবার ৩০ রোজা পালন শেষে আগামীকাল বুধবার দেশটিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে।

গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে এবং দেশটির জেনারেল অথরিটি অব দ্য ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এন্ডোমেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের নামাজের সময় ঘোষণা করেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে আরব আমিরাতের এই কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে সকল আমিরাতের (এবং কিছু প্রধান অঞ্চলের জন্য) ঈদের নামাজের সময়সূচী ভাগ করে দিয়েছে।

ঘোষণা অনুযায়ী, আবুধাবিতে ঈদের জামাত সকাল ৬টা ২২ মিনিটে, দুবাইয়ে ৬টা ২০ মিনিটে, শারজাহ ও আজমানে ৬টা ১৭ মিনিটে, রাস আল খাইমাহতে ৬টা ১৫ মিনিটে, ফুজাইরাহ ও খোরফাক্কানে ৬টা ১৪ মিনিটে এবং উম্মে আল কুওয়াইনে ৬টা ১৩ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া আল আইনে ৬টা ১৫ মিনিটে এবং জায়েদ সিটিতে বুধবার সকাল ৬টা ২৬ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত।

জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের তথ্য অনুযায়ী, উম্মে আল কুওয়াইন বুধবার সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টায়। অর্থাৎ সূর্যোদয়ের ১৩ মিনিট পর ৬টা ১৩ মিনিটে সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বুধবার সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৫ মিনিটে। এর ১৭ মিনিট পর ৬টা ২২ মিনিটে সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া একইদিন দুবাইয়ে সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০১ মিনিটে। এর ১৯ মিনিট পর ৬টা ২০ মিনিটে সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে শারজাহ ও আজমানের পাশাপাশি রাস আল খাইমাহ ও ফুজাইরাহ ও খোরফাক্কানেও সূর্যোদয়ের ১৭ মিনিট পর ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে রোজা শেষে ঈদের দিনকে ঘিরে আরব আমিরাতের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রবাসী বাঙালিরাসহ স্থানীয়রা ঈদ ঘিরে বিভিন্ন আয়োজন করেছেন।

 


আরও খবর



৫৪ জেলায় বইছে তাপদাহ

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

সবচেয়ে উষ্ণতম মাস এপ্রিল তাই দেশের প্রায় সবখানে এখন তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে অবস্থায় দেশের ৫৪ জেলায় বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ আগামী তিনদিন তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা দেখছে না আবহাওয়া অফিস

সোমবার সকালে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলামের দেওয়া পূর্বাভাসে তথ্য জানানো হয়েছে। রাঙামাটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্ব্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে

এদিকে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। তীব্র গরমে উপেক্ষা করেই কাজে বের হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ। এতে ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুন

আবহাওয়া অফিস বলছে, রংপুর ,নীলফামারী, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা,বরিশাল ,চট্টগ্রাম, সিলেটে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ পরবর্তীতে সারা দেশে বিস্তার লাভ করতে পারে কোনো কোনো জেলায় তাপমাত্রা  উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রির ওপরে

আবহাওয়াবিদ শাহীনুর ইসলাম জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে

তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার রংপুর, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

এদিকে গত চারদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু মাঝারি তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে মানুষ বাইরে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। সকাল ১০টার পর থেকে রোদের তাপে তেতে উঠছে চারপাশ। জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশিরভাগ দিনই ৩৮ ডিগ্রির ওপরে থাকছে

এছাড়া গত দুইদিনের প্রচণ্ড তাপদাহে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে  কুষ্টিয়ার জনজীবন। ঈদের পরদিন থেকে জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপদহের কারণে চরম বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তারা বলছেন, প্রচন্ড তাপদাহের কারণে তাদের রাস্তায় বের হয়ে কাজ কর্ম করতে চরম কষ্ট হচ্ছে

কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিস বলছে, কুষ্টিয়ায় সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে


আরও খবর



শূন্য থেকে কোটিপতি যাত্রী কল্যাণের মোজাম্মেল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব সংগঠনের নামে প্রভাব বিস্তার করে গোপনে নিজে গড়েছেন টাকার পাহাড়। কিনেছেন কোটি টাকার সম্পত্তি। রয়েছে পরিবহন ব্যবসা। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির নামে লাইসেন্সবিহীন সিএনজি অটোরিকশার রমরমা ব্যবসা ছাড়াও সাংবাদিক পরিচয়ে করেছেন অঢেল সম্পত্তি। তিনি মোজাম্মেল হক চৌধুরী। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে অর্থ, সম্পদ ও ব্যবসার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার আদালতে হয়েছে মামলা। জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের ইমামুল্লাহ চরের পূর্ব পাড়ায়। বাড়িতে দুটি ঘর, এর মধ্যে বড় ঘরটির চারপাশে মাটির দেয়াল, ওপরে টিনের ছাউনি। সামনে ছোট দুই কক্ষের একটি ঘর। সেই ঘরের চারপাশে কাঠ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বাঁশের বেড়া। স্বাভাবিক জীবনযাপন করা মোজাম্মেল গত এক যুগ ধরে পরিবহনের যাত্রীদের অধিকার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে সোচ্চার আছেন। যাত্রীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে করেন আন্দোলন। তবে এই যাত্রী কল্যাণ সমিতির আড়ালে গুছিয়েছেন নিজের আখের। বিভিন্ন দপ্তরে তদবির বাণিজ্য, সড়কে নিয়ম ভেঙে সুবিধা আদায়, বিআরটিএর মিরপুরসহ বিভিন্ন অফিসে দালালি, জমি কেনাবেচায় দালালি, নামসর্বস্ব পত্রিকায় সাংবাদিক পরিচয়ে সরকারি বিজ্ঞাপন আদায়, লাইসেন্সবিহীন সিএনজি অটোরিকশার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব পরিচয়ে খাটান প্রভাব।

২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় মোজাম্মেল গ্রেপ্তার হলে ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে তার স্ত্রী রিজু আক্তার চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তার স্বামী (মোজাম্মেল হক চৌধুরী) একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে অল্প টাকা বেতনে কাজ করেন। সেই টাকা দিয়ে সংসার চালানো বেশ কষ্টকর।

মাত্র ৬ মাসে কিনেন কোটি টাকার জমি :মোজাম্মেল হক চৌধুরীর গোপন সম্পত্তির অনুসন্ধান করে প্রতিদিনের সংবাদ। হাতে আসে বেশ কয়েকটি জমির দলিল। তাতে বেরিয়ে আসে কোটি টাকার সম্পত্তির তথ্য। দেখা যায়, মোজাম্মেলের অর্থের বেশিরভাগই ব্যয় হয়েছে জমি ক্রয়ে। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর মৌজায় দেড় কোটি টাকায় ৩৪৫ শতক জমি কিনেছেন মোজাম্মেল। দলিলে মৌজা অনুযায়ী, জমির যে দাম দেখানো হয়েছে প্রকৃতপক্ষে সেই জমির আনুমানিক মূল্য ৮ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নামে রেজিস্ট্রি হওয়া জমির দলিলে দেখা গেছে, মোজাম্মেল চার দফায় ৪টি দলিলের মাধ্যমে হাশিমপুর মৌজায় বিভিন্ন দাগে ৩৪৫ শতক জমি কিনেন। রেজিস্ট্রি দলিলে ওই জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা। তবে স্থানীয়দের দাবি, মোজাম্মেলের কেনা জমির প্রকৃত বাজারমূল্য তার কয়েকগুণ বেশি।

দলিলে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ জুন চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসে মোজাম্মেলের নামে প্রথম দলিলটি রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ১৬৬২) করা হয়। ওই দলিলে ১ একর ৬০ শতাংশ (চার কানি) জমি কেনেন মোজাম্মেল। যার দাম দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা। এরপর একই বছরের ২৩ জুলাই ১৫ শতক জমির দ্বিতীয় দলিলটি রেজিস্ট্রি (দলিল নং ১৯০৮) করা হয় মোজাম্মেলের নামে। দলিলে জমির দাম উল্লেখ করা হয় ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

এর মাত্র এক মাসের মাথায় ১৬ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দলিল রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ২৪৪১) করা হয় তার নামে। জমির পরিমাণ ৩৭ দশমিক ৫০ শতক। দলিলে এই জমির দাম দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। চতুর্থ দফায় ৮ দিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর আরেকটি জমি কিনেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। রেজিস্ট্রেশন (নম্বর ২৫৩৮) হওয়া জমির পরিমাণ ১৩২ দশমিক ৫০ শতক। জমিটির দাম উল্লেখ করা হয়েছে ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

মোট হিসাবে দেখা যায়, চার দফায় ৪টি দলিলে ৩৪৫ শতক জমি কিনেছেন মোজাম্মেল হক এবং দলিলে এই জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা। অথচ আরো কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রাখা হয়েছে গোপনে। ঢাকায় নিজেকে পরিচয় দেন গোবেচারা হিসেবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আগে মোজাম্মেলের অবস্থা ছিল শোচনীয়। ২০০৯ সালের দিকে তৎকালীন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাকারিয়ার পাওনা টাকা না দেওয়ায় মোজাম্মেলকে আটকে রেখেছিলেন। পরে টাকা পেতে স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয়। তারপর থেকে মোজাম্মেলকে এলাকায় দেখা যেত না।

অটোরিকশা নিবন্ধন দালালিতে আয় কোটি টাকা

অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট ছাড়া প্রায় ২ শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলে বাংলাদেশ উন্নয়ন সাংবাদিক সমিতির নামে। প্রতিটি গাড়িতে সাঁটানো হয়েছে সমিতির ব্যানার। ওই ব্যানারে সাংবাদিক মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নাম ও ফোন নম্বর রয়েছে। তবে তিনি কোন পত্রিকার বা অনলাইনের সাংবাদিক সে পরিচয় ব্যানারে উল্লেখ করা হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলে মোজাম্মেলের ইশারায়। সেখান থেকে মাসিক চাঁদা আসে তার পকেটে। স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু মানুষের সহযোগিতায় রাজ্য গড়েছেন মোজাম্মেল। তার অপকর্মের বিরোধিতার জবাব হিসেবে কয়েকজনকে হুমকি দেওয়ারও তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন সাংবাদিক সমিতির ব্যানারে সেখানেও রয়েছে তার প্রভাব। নিজে কোন পত্রিকার সাংবাদিক তা প্রকাশ না করলেও ওঠাণ্ডবসা মূলধারার সাংবাদিকদের সঙ্গে। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতে সাংবাদিক ঘেঁষা হিসেবেই নিজেকে গড়ে তুলেছেন মোজাম্মেল।

স্থানীয়রা বলছেন, মোজাম্মেল হক চৌধুরী অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। প্রভাবশালী মানুষদের সঙ্গে করেন ওঠাণ্ডবসা। নিজেকে পরিচয় দেন সাংবাদিক ও পরিবহন সমিতির নেতা হিসেবে। কোটি টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপন রাখতেই সাধারণ জীবনযাপন করেন মোজাম্মেল। তবে পাল্টে গেছে তার কথার ধরন।

জানা যায়, টাকার বিনিময়ে মোজাম্মেল সিএনজি অটোরিকশার নম্বর পাইয়ে দেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রভাব খাটিয়ে বিআরটিএতে দালালি করেই তিনি এত টাকার মালিক হয়েছেন। আর সেই টাকায় কিনেছেন কোটি টাকার সম্পত্তি। মোজাম্মেল হক বর্তমানে জমি বেচাকেনা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ঢাকাতে রয়েছে একটি প্রাইভেট কার যার আনুমানিক মূল্য ১২-১৫ লাখ, একটি নোহা গাড়ি যার আনুমানিক মূল্য ২৫ লাখ ও চট্টগ্রামে একটি অত্যাধুনিক প্রাইভেট কার রয়েছে যার আনুমানিক দাম প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাছাকাছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোজাম্মেলের স্ত্রী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার পদে প্রার্থী হয়ে ৩০ ভোট পেয়েছিলেন। মোজাম্মেল নিজেও উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে খুব অল্প ভোট পেয়েছিলেন। তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

সেতুমন্ত্রীকে নিয়ে মন্তব্য, থানায় জিডি ও মামলা

সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্য করার অভিযোগে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন। গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার শাহবাগ থানায় জিডি করেন তিনি।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ২০ বছর ধরে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই। যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।

জিডিতে শ্রমিক লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফ বলেন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো দেশের ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।

জানা গেছে, মোজাম্মেল হক চৌধুরী সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রকে নিয়ে মন্তব্য করায় জিডির পরে সিএমএ আদালতে মামলা করেছেন মোহাম্মদ হানিফ খোকন। ৫৫১ নাম্বার মামলায় ৫০০, ৫০১ ও ৫০৬ তিনটি ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন মোহাম্মদ হানিফ খোকন। মামলার তদন্তে নেমেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বিস্তর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আমি জমির দালালি করি। ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই টাকায় জমি কিনেছি। দেশের কোন আইনে জমি কিনতে মানা আছে নাকি?


আরও খবর



কমেছে মুরগির দাম, চড়া সবজির বাজার

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

তীব্র গরমে সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। প্রতি কেজিতে ২০ টাকা কমে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে চলতি সপ্তাহে সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর শেওড়াপাড়া ও তালতলা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। বাজারগুলোতে সোনালির কেজি ৩৭০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা, লেয়ার ৩৫০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তীব্র গরমের কারণে মুরগি মরে যাওয়ার শঙ্কায় কম দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান শেওড়াপাড়ার মুরগি বিক্রেতা মো. মিলন। তিনি বলেন, এ সময়ে দাম কমার কথা না, গত সপ্তাহেও ২৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গরমে হিট স্ট্রোক করছে মুরগি। তাই ক্ষতি এড়াতে ছোট ছোট মুরগি কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

শুক্রবার বাজারে সব ধরনের সবজি গত সপ্তাহের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখীর কেজি ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, শসা ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপের কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা, সজনে ১৬০ টাকা এবং কাঁচা আম প্রকারভেদে ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি মুলা ৫০ টাকা, শিমের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ব্রোকলি ৪০ টাকা, পাকা টমেটোর কেজি প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা এবং গাজর ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ২০ থেকে ৬০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

লাল শাক ১০ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, আলু ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৫০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে এক ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকা, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সপ্তাহ ব্যবধানে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের শিং (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙাশ ২১০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৬০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম মাছ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার ২০০ টাকা, মেনি ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, আইড় মাছ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, বেলে ৭০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


আরও খবর

দাম বাড়ল জ্বালানি তেলের

সোমবার ০৬ মে ২০২৪