ডেঙ্গুজ্বরের প্রভাব এবার
ডাবের বাজারে। হাসপাতাল আর বাসা-বাড়িতে মানুষের যখন ত্রাহী অবস্থা, তখন সুযোগ বুঝে
বাড়ানো হচ্ছে ডাবের দাম। চার হাত ঘুরে ৫০ টাকার ডাব হয়ে যাচ্ছে ২শ’
টাকার বেশি। কিন্তু দেখার যেন কেউ নেই ?
ডেঙ্গুর
প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে বেড়েছে, নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর ডাবের চাহিদা। যা মরার উপর
খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের কাছে।
ক্রেতারা
বলেন, যখনই কিনতে আসি ২০০ টাকা দাম চায়। আমরা দর-দাম করে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়
কিনে নিয়ে যাই।
এক
ক্রেতা বলেন, রক্ত দেয়ার পর দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও ডাব কিনতে হচ্ছে। অপর এক ক্রেতা
বলেন, ডাক্তার বলছে প্রতিদিন ডাব খাওয়াতে তাই দাম যত বেশিই
হোক আমাদের কিনতে হচ্ছে।
ডাবের
দাম বাড়ানোর এই প্রতিযোগিতা সবচেয়ে বেশি চলে রাজধানীর হাসপাতাল পাড়াগুলোতে। এই
যেমন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনের রাস্তার এপার-ওপারেই দামের পার্থক্য ২০
থেকে ৩০ টাকায় ঠেকেছে।
খুচরা
বিক্রেতারা বলেন, শ’ প্রতি ১৩০০ টাকায়
কিনে নিয়ে আসছি। ১৫০০ টাকার মধ্যেই বিক্রি করি। আমাদের প্রতি সপ্তাহে ২০০ টাকা
চাঁদা দেয়া লাগে।
ঢাকায়
সবচেয়ে বেশি ডাব আসে লক্ষ্মীপুর, ভোলা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ উপকূলীয় এলাকা থেকে। এরপর তা ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে হাত বদল হয়,
চারবার।
অনুসন্ধানে
দেখা যায়, ডাব বাণিজ্যের পেছনের দুষ্টু চক্রে জড়িত আড়ৎদার ও ব্যবসায়ীরা। গাছ থেকে
সর্বোচ্চ ৫০ টাকায় কেনা একটি ডাব ব্যাপারীর হাত ঘুরে আড়তে এসে হয়ে যায় ৭০ থেকে ৯০
টাকা। আর আড়ত থেকে খুচরা বিক্রেতার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০
টাকা। খুচরা পর্যায়ে যে যেভাবে পারছেন, দাম বাড়িয়ে তা ২০০
টাকা পর্যন্ত ঠেকাচ্ছেন।
এসব
জেনে ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালকের আশ্বাস ব্যবস্থা নেয়ার।
ভোক্তা-অধিকার
সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এই ধরেনের যে
অনৈতিক ব্যবসা বা মুনাফা এটার বিরুদ্ধে কাজ করার আছে। এর ফলে যেহেতু সরাসরি
ভোক্তার অতিরিক্ত পয়সা খরচ হচ্ছে এই বিষয়টি আমদের নজরে আসছে এর বিরুদ্ধে অবশ্যই
ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কৃষি
সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গেল ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের ৩৮ হাজার ২২১ হেক্টর
জমিতে ডাব বা নারিকেলের উৎপাদন হয়েছে, প্রায় ৫ লাখ ১০ হাজার
৩৬০ টন।