Logo
শিরোনাম

পথের কাঁটা তিন চাকার যানবাহন

প্রকাশিত:বুধবার ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

রোকসানা মনোয়ার : উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দেশের প্রধান মহাসড়কগুলোতে প্রায় অবাধে চলছে তিন চাকার বিভিন্ন যানবাহন। এসব বাহনের কারণে মহাসড়কে দ্রুতগতির বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, ঘটছে দুর্ঘটনাও। আসন্ন ঈদে স্বাভাবিকের তুলনায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে কয়েক গুণ।

তখন এই তিন চাকার যান মহাসড়কগুলোতে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

রেজমিনে গিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে তিন চাকার যান চলাচল করতে দেখা যায়। এসব যানের মধ্যে রয়েছে তিন চাকার ব্যাটারিচালিত ইজি বাইক, পায়ে ও মোটরচালিত রিকশা, ভটভটি, টেম্পো, সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রভৃতি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার ২০১৫ সালে দেশের ২২টি মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

এরপর হাইকোর্ট ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দেশের সব প্রধান মহাসড়কে তিন চাকার যান না চালানোর আদেশ দিয়ে সেই নিষেধাজ্ঞা আরো জোরদার করেন। সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত এক আদেশে বলেন, ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান মহাসড়কে উঠতে পারবে না।

তিন চাকার যানের কারণে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্য বলছে, দিন দিন পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠছে যে তিন চাকার যানবাহনের দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০২১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে তিন গুণ বেড়েছে। তবে এত কিছুর পরও মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করা যায়নি।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

এই মহাসড়কের ১০৫ কিলোমিটার অংশ রয়েছে কুমিল্লাজুড়ে। এর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি এলাকায়ই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইঞ্জিনচালিত থ্রি-হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান। কোথাও কোথাও প্রকাশ্যেই চলছে নছিমন, করিমন, ভটভটিও।

মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওপরেই সারি সারি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে রয়েছে।

এসব তিন চাকার যানবাহনের চালকরা ডেকে ডেকে যাত্রী তুলছেন বিভিন্ন গন্তব্যের। এরপর মহাসড়ক হয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে বিভিন্ন স্থানে। এই এলাকায় মহাসড়কের ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী দুটি লেনই অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে। এ কারণে মহাসড়কের এই অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে, ঘটে দুর্ঘটনাও।

দাউদকান্দির গৌরীপুর এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, তিন চাকার যানবাহনের কারণে মহাসড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া মহাসড়কের দাউদকান্দি অংশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই যানজট লাগে। সামনের ঈদ যাত্রায় মহাসড়কে যাত্রীদের দুর্ভোগের অন্যতম কারণ হতে পারে এই তিন চাকার যান।

চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার, সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজি, পদুয়ার বাজার, কুমিল্লা সদরের আলেখারচর বিশ্বরোড, সেনানিবাস এলাকা, বুড়িচংয়ের নিমসার, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড, দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুর, বলদাখাল, শহীদনগর ,গজারিয়ার ভবেরচর এলাকায়ও অবাধে তিন চাকার যানবাহন চলাচল

করতে দেখা গেছে। এসব জায়গার বেশির ভাগ স্থানেই মহাসড়কের ওপরে সিএনজিচালিত অটোরিকশার অঘোষিত স্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছে।

কুমিল্লা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী একটি পরিবহনের বাসচালক কবির হোসেন বলেন, অবৈধ এসব তিন চাকার যানবাহনের অনেক চালক আছে, তারা জানেই না কিভাবে মহাসড়কে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক সময় তারা হুট করে দ্রুতগতির গাড়ির সামনে চলে আসে। যখন ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে একটি বাস চলে তখন এসব নিষিদ্ধ যান হুট করে সামনে চলে এলে হার্ড ব্রেক করে গাড়ি থামাতেও বেকায়দায় পড়তে হয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এখনই এগুলো বন্ধ করা না গেলে ঈদের সময় চরম সমস্যায় পড়তে হবে চালক ও যাত্রীদের।

গাজীপুরে তিন মহাসড়ক

ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও টঙ্গী-ঘোড়াশাল-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে নিত্য যানজট ও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তিন চাকার যানবাহন।

গতকাল শুক্রবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী স্টেশন রোড পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, শত শত ইজি বাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব যানবাহন সংযোগ সড়কে মুখে, বাসস্ট্যান্ডে, বাজারে এবং গুরুত্ব্বপূর্ণ স্থানে যখন-তখন থামার কারণে মহাসড়কে যানজট লেগেই আছে।

নগরীর গাজীপুরার একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে কথা হয় ইজি বাইকচালক লাল মিয়ার (৪৫) সঙ্গে। তিনি জানান, টঙ্গীর স্টেশন রোড থেকে বাসনের ভোগড়া চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রতিদিন কমপক্ষে চার হাজার ইজি বাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। এ

বলেন, এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো শুরু করেছি। আগের চেয়ে হাইওয়ে পুলিশের বেশি সদস্য মহাসড়কে তৎপর রয়েছে। কোথাও এসব তিন চাকার যানবাহনকে মহাসড়কে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া যেসব এলাকায় অবৈধ স্ট্যান্ড আছে, সেগুলো উচ্ছেদে আমাদের অভিযান চলবে। আশা করছি, মানুষ কোনো সমস্যা ছাড়াই এবারের ঈদ যাত্রায় ঘরে ফিরতে পারবে। 

জন্য তাঁদের প্রতিদিন স্টেশন রোডে ৫০ এবং বোর্ডবাজারে ৪০ টাকা চাঁদা দিতে হয়।

গাজীপুরা এলাকার বাসিন্দা একটি তৈরি পোশাক কারখানার উৎপাদন কর্মকর্তা আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, ইজি বাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা মহাসড়কে অত্যন্ত বেপরোয়া। তারা ট্রাফিক আইন-কানুনের ধার ধারে না। তাদের কারণে মহাসড়কে যানজট লেগেই থাকে। ১০ মিনিটের পথ যেতে এক ঘণ্টা লাগে।

একই অবস্থা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সালনা, পোড়াবাড়ী, মাস্টারবাড়ি, রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা, হোতাপাড়া, বাঘের বাজার ও মাওনা চৌরাস্তা এলাকায়। অবাধে মহাসড়কে চলছে নিষিদ্ধ ওই সব যানবাহন।  

কালিয়াকৈর পরিবহনের বাসচালক আবদুল লতিফ বলেন, গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তার নিত্য যানজটের অন্যতম কারণ এসব অবৈধ তিন চাকার যানবাহন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই মহাসড়ক

ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় ৭৪ কিলোমিটার অংশ রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। আশুগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগরের সাতবর্গ পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় ৩৪ কিলোমিটার এবং বিশ্বরোড থেকে কসবার কুটি পর্যন্ত কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় ৪০ কিলোমিটার সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশার বেশ দাপট।

হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়ক দুটিতে বেশি দুর্ঘটনা ঘটার যে ১৩টি কারণ চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে তিন চাকার যানের অবাধ চলাচল উল্লেখযোগ্য। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুই মহাসড়কেই অবাধে তিন চাকার যানবাহন চলাচল করছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাউতলী, বিশ্বরোড মোড়, আশুগঞ্জ গোলচত্বর এলাকায় মহাসড়কের ওপরেই অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশাস্ট্যান্ড। কাউতলীতে অবৈধ স্ট্যান্ডের কারণে একটি সেতু দিয়ে অন্য কোনো যানবাহন চলাচলই করতে পারে না।

বিশ্বরোড মোড়ে কথা হয়, কুমিল্লা ট্রান্সপোর্ট নামের একটি বাসের চালক দুলাল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, অটোরিকশাগুলো যত্রতত্র ব্রেক কষে। যেখানে-সেখানে যাত্রী নামায়। এ কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে যায়।

সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি বলেন, মহাসড়কে তিন চাকার যান পুরোপুরি বন্ধ না হলেও নিয়ন্ত্রণে আছে। হাইওয়ে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালালেও লোকবলের সংকটে তিন চাকার যান পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বারবাড়িয়া থেকে আরিচা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার অংশ পড়েছে মানিকগঞ্জ জেলায়। গত দুই দিন এই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অবাধে চলাচল করছে তিন চাকার ব্যাটারিচালিত ইজি বাইক, পায়ে ও ইঞ্জিনচালিত রিকশা, ভটভটি, টেম্পো, সিএনজিচালিত অটোরিকশা।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের টেপড়া বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন শিবালয় উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স। আজমত আলী এখানে একটি দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। তাঁর বাড়ি প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে মানিকনগর গ্রামে। তিনি জানান, গ্রাম থেকে অফিসে আসতে ইজি বাইক কিংবা মোটরচালিত রিকশা ছাড়া গতি নেই। প্রায় তিন কিলোমিটার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে আসতে হয়। দুর্ঘটনার ভয় থাকলেও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধরেই তাঁকে নিয়মিত অফিস করতে হয়।   

আজমত আলীর মতো অনেককে নিয়েই মহাসড়কে এভাবে দাপিয়ে বেড়ায় তিন চাকার যানবাহন।   

মানিকগঞ্জের গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এখন পর্যন্ত তিন চাকার যান চলাচলের জন্য আলাদা লেন নির্মাণ করা হয়নি। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এ কারণেই তিন চাকার যানবাহন মহাসড়কে ওঠে। এদের বিরুদ্ধে মামলা বা জরিমানা করেও ঠেকানো যাচ্ছে না।

 

 


আরও খবর



৯ মে থেকে হজের প্রথম ফ্লাইট শুরু

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

চলতি মৌসুমে হজযাত্রীদের নিয়ে প্রথম হজ ফ্লাইট সৌদি আরবের উদ্দেশে রওয়ানা দেবে ৯ মে। হজযাত্রীদের নিয়ে ওইদিন প্রথম ফ্লাইট সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে। তবে হজের প্রথম ফ্লাইটের তারিখ ঘোষণা করা হলেও চূড়ান্ত হয়নি ফ্লাইট শিডিউল।

৯ মে হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এখনো শিডিউল ঘোষণা হয়নি। দ্রুত এই শিডিউল যাত্রীদের জানানো হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, গত বছর এক লাখ ১৯ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রীকে বহন করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া) ও সৌদির বেসরকারি এয়ারলাইন্স ফ্লাইনাস মোট ৩৩৫ হজ ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা করে। চুক্তি অনুযায়ী, মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বাকি অর্ধেক বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ার। এবারও এই তিন এয়ারলাইনস হজযাত্রীদের বহন করবে।

জানা গেছে, চলতি বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করতে যাবেন ৮৩ হাজার ২০২ জন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ৪ হাজার ৩০৭ জন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পালিত হতে পারে পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রতিবছর ঈদের একমাস আগে থেকেই শুরু হয় হজ ফ্লাইট। তার আগে হজযাত্রীদের ভিসা, ফ্লাইট শিডিউল সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও এয়ারলাইন্সগুলো। অথচ এবার এখনো শুরু হয়নি ভিসা কার্যক্রম। চূড়ান্ত হজযাত্রীদের তালিকা না পাওয়ায় ঘোষণা হয়নি ফ্লাইট শিডিউলও।


আরও খবর



ফের বাড়ছে হিট অ্যালার্টের মেয়াদ

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

দেশজুড়ে তাপপ্রবাহের প্রেক্ষিতে আবহাওয়া অধিদফতরের জারি করা হিট অ্যালার্ট বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার মেয়াদ আরও তিন দিন বাড়ছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে আবহাওয়া ও ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রধান ড. শামীম হাসান মিয়া গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান। শামীম হাসান বলেন, এ দফায় হিট অ্যালার্ট থেকে বাদ পড়তে পারে সিলেট। কারণ সেখানে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টির আভাস থাকছে।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাংলাদেশের কিছু জেলায় তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করে। এরপর গত তিন সপ্তাহে তাপপ্রবাহ প্রায় সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই চুয়াডাঙ্গায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর ঢাকায় এ বছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র গরমের কারণে সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গরমে হিট স্ট্রোকসহ নানা শারীরিক সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় কয়েকজনের মৃ্ত্যুর খবর এসেছে। এমন অবস্থায় তিন দফায় ৭২ ঘণ্টা করে হিট অ্যালার্ট বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করে আবহাওয়া অধিদফতর। গরমের তীব্রতা না কমায় আগামীকাল রোববার থেকে চতুর্থ দফায় নতুন করে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করতে যাচ্ছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত আজকের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বেড়ে যেতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলাসমূহের ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের ওপর দিয়েও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে এসব অঞ্চলের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে হতে পারে শিলাবৃষ্টিও। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।


আরও খবর



রাজপথে ফের মুখোমুখি হচ্ছে বড় দুই দল

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বিএনপিসহ বেশ কিছু বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাজনৈতিক উত্তাপ অনেকটা স্থিমিত ছিল। তীব্র তাপপ্রবাহে দেশ যখন পুড়ছে তখন নতুন করে রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে উত্তাপ। আবারও দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একই দিনে একই সময়ে কাছাকাছি স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এতে নতুন করে রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অনেকটা একতরফা নির্বাচনের পর রাজপথের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি তেমন কোনো বড় আন্দোলন কর্মসূচি দেয়নি। ভোটের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর আগামী শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীতে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। ওইদিন বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণার এক দিন পর রবিবার (২১ এপ্রিল) একই দিন একই সময়ে কাছাকাছি স্থানে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটি আগামী শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে গুলিস্তানে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

দেশের প্রধান দুটি দলের আবারও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অতীতের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় অনেকে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন।

গত নির্বাচনের আগে প্রায় এক বছর রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ছিল বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। তবে তাদের ডাকা কর্মসূচির দিনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে। বিরোধীরা এটাকে পাল্টা কর্মসূচি বললেও ক্ষমতাসীন দলের দাবি, জনগণের জানমাল রক্ষার জন্যই তাদের এই কর্মসূচি। যদিও এসব কর্মসূচি ঘিরে সংঘাতের ঘটনাও ঘটেছে। গত বছর ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে।

ঘোষণা দিয়েও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে না পারার হতাশা আছে বিএনপির মধ্যে। আগামী পাঁচ বছর অপেক্ষা ছাড়া দলটির সামনে আর কোনো পথ নেই। তবে টানা চার মেয়াদ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে মাঠের কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকার কৌশল নিয়েছে। সরকারকে চাপে রাখতে ধারাবাহিক কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।

অপরদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একচেটিয়া জয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করলেও বিরোধী দলের আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনটি পুরোপুরি স্বীকৃত না হওয়ায় অস্বস্তিতে রয়েছে। তবে বিরোধী দল যেন মাঠ দখল করতে না পারে সেজন্য তারা সক্রিয় থাকার কৌশল নিয়েছে। তাদের ভাষায়- বিএনপিকে তারা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবে না। এজন্য বিএনপি যখনই কর্মসূচি দেবে তখনই তারাও ঘোষণা দিয়ে মাঠ দখলে রাখবে।


আরও খবর



দুবাই বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা, দুর্বিসহ অবস্থা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ভারী বৃষ্টি ও তীব্র জলাবদ্ধতার কারণে পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক শহরগুলোর অন্যতম দুবাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত দুবাই বিমানবন্দর যেভাবে পানিতে তলিয়ে গেছে সেটি দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। শহরটির বহু বাড়ি ও শপিংমল হাঁটু পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। দুবাইয়ের মতো শহরে এ ধরনের চিত্র অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। দুবাই বিমানবন্দর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাতিল করতে হয়েছে শত শত ফ্লাইট। বিমানবন্দরের ভেতরে চরম এক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা বিমানবন্দরের পরে দুবাই বিমানবন্দরই হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর। গত বছর এই বিমানবন্দরটি ব্যবহার করেছে আট কোটি যাত্রী। বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কারণে বিমানবন্দরটি প্লাবিত হওয়ায় দুবাইগামী ও দুবাই ছেড়ে আসা ফ্লাইট কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। যদিও বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর থেকে সীমিত আকারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ঢাকার বাসিন্দা প্রসূন রায় গত তিন ধরে দুবাই বিমানবন্দরে আটকে আছেন। কবে ঢাকায় আসতে পারবেন সেটি নিয়ে অনিশ্চয়তা ভর করেছে তার মধ্যে। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আটবার তার ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ফ্লাইট কখন ছেড়ে যাবে সেটির কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না।

দুবাই থেকে মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ফ্লাইট ছিল প্রসূন রায়ের। কিন্তু তিনি বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ফ্লাইটে উঠতে পারেননি। মঙ্গলবার দুপুরে বিমানবন্দরে যাবার পর তিনি ১৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছেন। ফ্লাইটের কোনো নিশ্চয়তা না পেয়ে এন্ট্রি ভিসা নিয়ে তিনি শহরের ভেতরে গেছেন। কারণ, এয়ারপোর্টের ভেতরে কোনো হোটেলে কক্ষ খালি নেই।

তার বর্ণনা অনুযায়ী, হাজার হাজার যাত্রী দুবাই এয়ারপোর্টের ভেতরে আটকা পড়ে আছে। অনেকে স্লোগান দিচ্ছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ রাত-দিন কাজ করেও কূলকিনারা করতে পারছে না।

ট্রানজিট যাত্রী হিসেবে যারা বুধবার দুবাইতে অবতরণ করেছেন তাদের অভিজ্ঞতা ছিল দুর্বিষহ। অবতরণ করার জন্য বিমানগুলো আকাশে চক্কর দিলেও অবতরণের অনুমতি পাচ্ছিল না। বিমানবন্দরের বাইরে শত শত গাড়ি বিকল অবস্থায় পড়ে ছিল।

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় রেজাউল করিম নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, অনেকবার ফ্লাইট বাতিল হবার পর শেষ পর্যন্ত তিনি ঢাকা থেকে দুবাই পৌঁছেছেন। ঢাকায় তিনি ৩৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর দুবাইয়ের উদ্দেশে প্লেন ছেড়ে যায়।

তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আকিব ইরফানের। তার স্ত্রী দুবাই থেকে ঢাকা আসার কথা ছিল। এক দিন অপেক্ষা করার পর শেষ পর্যন্ত তিনি ঢাকার উদ্দেশে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটে উঠতে পেরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ফ্লাইট কনফার্ম না হলে কাউকে বিমানবন্দরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, ভেতরে যাত্রীদের এতো বেশি চাপ তৈরি হয়েছে যে আর যাত্রী ভেতরে নেওয়া সম্ভব ছিল না।

দুবাই বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন ব্রিটিশ টুরিস্ট অ্যান উইং, তার স্বামী ও তিন সন্তান। তারা লন্ডনের হিথ্রোতে যাবার জন্য অপেক্ষা করছেন। এটা খুব ভয়াবহ পরিস্থিতি। আমদের পশুর মতো করে রাখা হয়েছে। এটা খুবই অমানবিক, বলছিলেন অ্যান উইং। তিনি বলছিলেন, তার পরিবারের সদস্যদের কাছে কোনো খাবার নেই।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরে খাবার আনতে কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন। কারণ, বিমানবন্দর অভিমুখে সবগুলো সড়ক পানিতে ডুবে গেছে।

গত ৭৫ বছরের মধ্যে দুবাইতে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক মশিউর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাত ১টা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুরেও বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবারও শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা আছে বলে তিনি জানান। কর্তৃপক্ষ বলছে, ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৬০ মিলিমিটার।

দুবাইয়ের সাংবাদিক সাইফুর রহমান বলছেন, সেখানে তীব্র জলাবদ্ধতার কারণ হচ্ছে পানি নিষ্কাশনের অপ্রতুল ব্যবস্থা। তিনি জানান, শহরের কেন্দ্রস্থলে ড্রেনেজ সিস্টেম আছে, কিন্তু এর বাইরে ড্রেনেজ সিস্টেমের অবস্থা মোটেও ভালো নয়। তিনি জানান অল্প বৃষ্টিতেও অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় তীব্র জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।

দুবাইয়ে ভালো ড্রেনেজ সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য ২০২৩ সালে দেশটির সরকার প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। দেশটির সরকার বলছে, আগামী ১০০ বছরের কথা চিন্তা করে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সরকার এবং বেসরকারি খাত মিলে এই কাজ করবে।

দুবাইয়ের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা থাকলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না।

একটানা বৃষ্টি এবং তার ফলে সৃষ্ট বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ওমানে ২০ জন মারা গেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে জীবনযাত্রা অচল হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দুবাইতে আসা কিছু ফ্লাইট অবতরণ করতে পারলেও সার্বিকভাবে বিমানবন্দর অনেকটাই অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দরটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার এক নম্বর টার্মিনালে কিছু বিমান অবতরণ করা শুরু করেছে। কিন্তু দুবাই ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলোর আরও বিলম্ব হবে। এটা এখনো সাংঘাতিক একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়। আমার মনে হয় না কেউ তার জীবনে কখনো এ ধরনের অবস্থা দেখেছে, জানান দুবাই বিমানবন্দরের প্রধান পল গ্রিফিথস।

বিমানবন্দরের আশপাশের সড়কগুলো যানজটে স্থবির হয়ে আছে। কারণ, হাজার হাজার মানুষ বিমানবন্দরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।


আরও খবর



৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম কালবৈশাখীর রেকর্ড

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে সারা দেশে চলছে তীব্র দাবদাহ। সূর্যের জ্বলন্ত রশ্মিতে যেন টগবগে আগুন ঝরছে। নিজের উত্তাপ জানান দিচ্ছে শহর, গ্রাম, পথ-ঘাট, সড়ক-মহাসড়ক সবখানেই। পিচঢালা পথ যেন জ্বলন্ত চুলা। টানা ২৭ দিনের তাপপ্রবাহ ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এর সঙ্গে ভাঙল কালবৈশাখীর রেকর্ড। এই দাবদাহে ৪৩ বছরের মধ্যে চলতি মাসে সবচেয়ে কম কালবৈশাখী হয়েছে।

গত বছরের এপ্রিলে বজ্রঝড় হয়েছিল সাতটি। ২০২২ ও ২০২১ সালে হয় যথাক্রমে ৯টি ও আটটি। আর এ বছর মাত্র একটি।

এই এপ্রিল মাসে গত ৭৬ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে তাপপ্রবাহ ছিল। গণমাধ্যমকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. উমর ফারুক বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখেছি। এবারের মতো তাপপ্রবাহ টানা আগে হয়নি। এবার ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙে গেল।

এই তাপপ্রবাহের মাসে বজ্রঝড় বা কালবৈশাখীর সংখ্যা গেছে কমে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি ১৯৮১ থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের উপাত্ত তুলে ধরেছেন তার গবেষণায়। এই ৪৩ বছরে এপ্রিল মাসে ৩৬৫টি বড় বজ্রঝড় হয়। সবচেয়ে বেশি ঝড় হয়েছিল ১৯৯৭ সালের এপ্রিল মাসে, ১৪টি। আর ১৯৯৯ ও ২০০৯ সালে সবচেয়ে কম চারটি করে ঝড় হয় এপ্রিলে।

গত বছরের এপ্রিলে বজ্রঝড় হয়েছিল সাতটি। ২০২২ ও ২০২১ সালে হয় যথাক্রমে নয়টি ও আটটি। আর এ বছর মাত্র একটি।

দেশে সবচেয়ে বেশি বজ্রঝড় হয় মে মাসে। এর পর আছে জুন, সেপ্টেম্বর ও এপ্রিল মাস। কিন্তু এবার এই ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে মাত্র একটি বজ্রঝড় বা কালবৈশাখী হয়েছে। তাও হয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। সেটিও অস্বাভাবিক।

এপ্রিল মাসে ঝড় কমে যাওয়ায় অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহকেই কারণ মনে করেন বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক একেএম সাইফুল ইসলাম। তিনি জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) সঙ্গে যুক্ত।

তিনি বলেন, তাপমাত্রা বৈশ্বিকভাবে ১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। এ বছরের এপ্রিল ভারতে ১২২ বছরের মধ্যে ছিল সবচেয়ে বেশি উষ্ণ। আমাদের যে বায়ুপ্রবাহ তার সঙ্গে সীমান্তসংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উডিষ্যার সম্পর্ক আছে। এ সময় এসব অঞ্চলে সাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প বজ্র মেঘের সৃষ্টি করে। কিন্তু এবার ভারতের ওই সব অঞ্চলেও প্রচণ্ড গরম পড়েছে। আর্দ্রতাপূর্ণ জলীয় বাষ্প জড়ো হয়ে বজ্র মেঘ সৃষ্টি করেনি। তাতেই এ বিড়ম্বনা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এ অবস্থা দেখছি আমরা।


আরও খবর