Logo
শিরোনাম

টয়লেটে বসে ফোন ব্যবহারে বাড়ছে প্রাণঘাতী রোগ

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

স্মার্টফোন এক মিনিট হাতে না থাকলে অনেকেই নিজেকে অসহায় মনে করেন! স্মার্টফোন ছাড়া এখন এক মিনিট কাটানোও কঠিন। অনেকেই টয়লেটে যান হাতে ফোন নিয়েই। তবে এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে মারাত্মক বিপদ, এমনই বলছে গবেষণা।

সম্প্রতি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। গবেষকরা দাবি করেছেন, ৫০ শতাংশের বেশি অস্ট্রেলিয়ার মানুষ ও ৮০ শতাংশেরও বেশি আমেরিকান টয়লেটে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন।

৬০ শতাংশের বেশি ব্রিটিশ নাগরিক টয়লেটে যান হাতে মোবাইল ফোন নিয়ে। ভারতীয়রাও দৌড়ে পিছিয়ে নেই। ৭০ শতাংশের বেশি ভারতীয় একই কাজ করেন। এর ফলে যেসব সমস্যার ঝুঁকি বাড়ছে সেগুলোরও তালিকা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। 

প্রায় ৮০ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ফোন নিয়ে যান টয়লেটে, এমনটিই জানাচ্ছে গবেষণা। সংখ্যাটি কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বর্তমান পরিস্থিতি।

এই বদভ্যাস কিন্তু শরীরের জন্য হতে পারে মারাত্মক। টয়লেট হলো জীবাণুর আঁতুরঘর। ই কোলি, সি ডিফিসিলের মতো মারাত্মক ধরনের জীবাণু থাকে টয়লেটে।

খুব সহজেই কিন্তু এই জীবাণুগুলো মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে টয়লেঠে মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে। ফোনে সহজেই এই জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে।

এই জীবাণুর কারণেই মূলত ফোন ব্যবহারের সময় গরম হয়ে যায়। জেনে নিন টয়লেটে ফোন নিয়ে যাওয়া কারণে কোন রোগ হতে পারে-

পাইলস হয়

পাইলস একটি গুরুতর ব্যাধি। এতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক। তবুও সচেতনতা নেই। তাই দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘক্ষণ বাথরুমে ফোন নিয়ে বসে থাকার কারণেও অনেকের অর্শ হয়। আর যাদের আগে থেকেই সমস্যা আছে, তাদেরও জটিলতা বাড়ে।

পেটের সমস্যা

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, টয়লেটে দর্ঘক্ষণ ফোন নিয়ে পেটের সমস্যাও বাড়ে। এক্ষেত্রে জীবাণুর সংক্রমণ অবশ্যই একটা কারণ।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়

টয়লেটে মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে যে জীবাণু সহজেই ছড়িয়ে পড়ে শরীরে। নানা ধরনের সংক্রমণ ঘটাতে পারে এই জীবাণু।

যদি কারও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয় তাহলে এসব সংক্রমণ প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে। তাই এখন থেকে টয়লেটে ফোন হাতে যাওয়ার আগে একবার নিজের স্বাস্থ্যের বিষয়ে ভাবুন।

বাথরুমে ফোন ব্যবহার করলে শুধু শারীরিক ক্ষতিই নয় সময়ও নষ্ট হতে পারেন। তাই এই অভ্যাস ছাড়ুন। চেষ্টা করুন নিজেকে এর থেকে মুক্ত করতে।


আরও খবর

শীতে সুস্থ থাকতে যা খাবেন

মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর ২০২৩

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১৬০০ ছাড়ালো

সোমবার ২৭ নভেম্বর ২০২৩




৯৫ শতাংশ বুকিং বাতিল ছাঁটাই শুরু

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা :  প্রকৃতিতে শীতের আমেজ ও বছরের শেষ সময় পর্যটন মৌসুমের শুরু হিসেবে ধরা হলেও কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের আগমন নেই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকায়। গত মাসের মধ্যবর্তী সময়ও জেলার যেসব পর্যটন কেন্দ্র সকাল-সন্ধ্যা কোলাহল মুখর ছিল, সেসব স্থান এখন নীরব।

গত অক্টোবরের ২৮ তারিখ থেকে অবরোধ-হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রায় ৯৫ শতাংশ বাতিল হয়েছে। অলস সময় পার করছেন জেলার দেড় শতাধিক হোটেল, গেস্ট হাউস, মোটেল, রিসোর্টের কর্মীরা। এতে প্রতিদিন কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমেদ। এতে মৌসুমের শুরুতেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

জেলার অন্যতম পর্যটন স্পটগুলো হলো কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর স্মৃতিসৌধ, মণিপুরী পাড়া, হামহাম জল প্রপাত, ছয়সিঁড়ি দীঘি, ক্যামেলিয়া লেক, পাত্রখোলা লেক, পদ্মছড়া লেক, বামবুতল লেক, হরিনারায়ন দিঘি, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে সবুজ চা বাগান, রাবার বাগান, বধ্যভূমি একাত্তর চত্বর, হাইল হাওর, বাইক্কা বিল, হাকালুকি হাওর, মুন ব্যারেজ।

সাধারণত বন্ধের দিন ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি ভিড় থাকে। গতকাল শুক্রবার ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জেলার বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট কোনো পর্যটক শূন্য দেখা গেছে। পর্যটন নগরীর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান খালি, দেশী- বিদেশি কোনো পর্যটক নেই। অথচ গত এক মাস আগেও পর্যটন কেন্দ্রগুলো মুখরিত ছিল।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মৌলভীবাজারের প্রায় দেড় শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টাহাউসে শতভাগ অগ্রিম বুকিং থাকত। চলতি বছরেও অগ্রিম বুকিং হয়েছিল। তবে অক্টোবরের ২৮ তারিখ থেকে অবরোধ-হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রায় ৯৫ শতাংশ বাতিল হয়েছে। দ্রুত এ অবস্থা থেকে উত্তরণ না হলে পর্যটনশিল্পে আবারও বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা করছেন তারা।

শ্রীমঙ্গল হোটেল প্যারাডাইজের স্বত্বাধিকারী হাজী আবুজার বাবলা জানান, নভেম্বর পর্যটনের ভরা মৌসুম। প্রতি বছর এ সময়ে পর্যটন স্পটগুলোতে উপচে পড়া ভিড় থাকে। কিন্তু হরতাল ও অবরোধের কারণে চলতি মৌসুমের তুলনায় ১০ ভাগ ট্যুরিস্টও নাই।

আবুজার বাবলা বলেন, এখন ক্ষতির মুখে আমরা। এই ক্ষতি কিভাবে পোষাব, বুঝতে পারছি না। কর্মচারী ও বিদ্যুৎ বিল, ব্যাংকের লোন, বাসা ভাড়া সব কিছু দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। এভাবে যদি চলে তাহলে হোটেল রিসোর্ট গুটিয়ে নিতে হবে।

কমলগঞ্জ অরণ্য বিলাস ইকো রিসোর্টের মালিক এহসান কবির সবুজ বলেন, করোনাভাইরাস, বন্যাসহ নানা কারণে কয়েক বছরে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার অতীতের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার আশায় ছিলাম। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে পর্যটক বলতেই নাই। এ অবস্থা চলতে থাকলে কর্মচারী ছাঁটাই করতে হবে, সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাশের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, লাউয়াছড়ায় ডাব বিক্রি করে সংসার চলে। এক মাস ধরে এ উদ্যানে কোনো ট্যুরিস্ট নাই। বেচা-বিকি নাই। দুরবস্থায় আছি। সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। একই ধরনের কথা জানান কসমেটিক ও চা-পাতা ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন।

পর্যটন সেবা সংস্থার সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট রয়েছে। সবগুলোই এখন ফাঁকা। প্রতিদিন প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান ছাঁটাই শুরু করেছে। অনেকের ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যদি ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই সমস্যা থাকে, তাহলে ধ্বংসের মুখে পড়বে হোটেল রিসোর্ট।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ম্যানাজার শাহিন আহমেদ বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেশি-বিদেশি পর্যটক বছরের এই সময়ে প্রতিদিন ৫০০-৭০০ ট্যুরিস্ট আসতেন, তখন টিকিট বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব আয় হত ৩৫-৪০ হাজার টাকা। এখন গড়ে ৮০-১২০ জন পর্যটক আসছেন সরকারের রাজস্ব আসছে ৩-৫ হাজার টাকা।

লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, এই মৌসুমে হাজার হাজার পর্যটক দেখা যেত। বর্তমানে হরতাল ও অবরোধের কারণে দেখা নাই। মানুষ নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে না, যানবাহন চলে না, তাই ভ্রমণে আসে না। প্রতি বছর যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হতো তা এখন হচ্ছে না।

ট্যুরিস্ট পুলিশ মৌলভীবাজার জোনের উপ-পরিদর্শক প্রবাণ সিনহা বলেন, নানা কারণে তুলনামূলকভাবে এবার পর্যটক অনেক কম। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপারে সোচ্চার। পর্যটকরা যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হয়, সে লক্ষ্যে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

 


আরও খবর

তিন শতাধিক পর্যটক আটকা সেন্টমার্টিনে

শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩




সব প্রস্তুতি সম্পন্ন অপেক্ষায় ইসি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

প্রধান প্রতিবেদক :দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল ও জোটের বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যেই কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, বাজেট, মাঠ প্রশাসনের শৃঙ্খলাবদ্ধকরণসহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন শুধু তপশিল ও ব্যালটের অপেক্ষা। এর আগে রেওয়াজ অনুযায়ী আগামী ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করবে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।

জানা গেছে, আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তার আগে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণের মধ্য দিয়ে ভোটের তপশিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এরই মধ্যে তপশিল ও ভোটের প্রায় সব প্রস্তুতিই সেরে নিয়েছে কমিশন। শুধু ব্যালট ছাপানোই এখন বাকি রয়েছে, যাকে ভোটের সর্বশেষ ধাপ বলা হয়ে থাকে। এটি সাধারণত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমার পরই ছাপানো হয়ে থাকে। সর্বশেষ গত শনিবার নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে প্রজেক্টরের মাধ্যমে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। ৪৪টি দলের মধ্যে ইসির ডাকে সারা দেয় ২৬টি দল।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের। বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) প্রথম দফার প্রশিক্ষণ এরই মধ্যে শেষ। আগামী শুক্র ও শনিবার হবে দ্বিতীয় দফার প্রশিক্ষণ। নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র কেনাকাটার কাজও শেষ। ব্যালট বাক্সসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। এরই মধ্যে ঢাকা বিভাগের সব জেলায় পুলিশি নিরাপত্তায় এসব পাঠানো হয়েছে।

ইসির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে। ১ নভেম্বর থেকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ক্ষণগননাও শুরু হয়ে গেছে। তপশিল ঘোষণার জন্য ইসির হাতে খুব বেশি সময় বাকি নেই। এ অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে এখনো কোনো ধরনের সমঝোতার সম্ভাবনা দেখা না গেলেও শেষ পর্যন্ত সংবিধানের পথেই হাঁটবে আউয়াল কমিশন। সেক্ষেত্রে কোনো দল নির্বাচনে না এলেও তাদের কোনো কিছু করার থাকবে না। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা মিলিয়ে ১০-১২ লাখের মতো জনবল বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

সিইসিসহ অন্য কমিশনাররা এরই মধ্যে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্বের কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। সর্বশেষ গত শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বর্তমান পরিস্থিতি নির্বাচনের সম্পূর্ণ অনুকূল না হলেও কিছু করার নেই বলে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন সিইসি। বলেন, চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কমিশনের সামর্থ্য ও ম্যান্ডেট কোনোটাই কমিশনের নেই। দলগুলোকেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংকট সমাধানের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্বাচনের পরিস্থিতি সব সময় শতভাগ অনুকূলে থাকে না। তবু সাংবিধানিক দায়িত্ব ও শপথের কারণে কমিশনকে ভোটের আয়োজন করতে হবে।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের জানুয়ারির ২৯ তারিখের মধ্যে যেভাবেই হোক না কেন নির্বাচন হতে হবে। তা না হলে একটি সাংবিধানিক গ্যাপ (শূন্যতা) তৈরি হবে। সেই গ্যাপ তৈরি হলে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। সেটি নির্বাচন কমিশন হতে দিতে পারে না।

ইসি ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। আইনি কাঠামোর সংস্কারও হয়েছে। যদিও এতে ইসির ক্ষমতা বাড়া বা কমা নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ। নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার ১০টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এসেছে। নতুন দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে। এবার ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ১০৩টি আর ভোটকক্ষের সংখ্যা ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪টি। তবে ভোট-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণসহ আরও কিছু কাজ চলমান রয়েছে। তপশিল ঘোষণার পর ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা, আসন অনুযায়ী ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ঠিক করার কাজ চলছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে পর্যবেক্ষক নিবন্ধনের প্রাথমিক ধাপ শেষ। দ্বিতীয় ধাপে আরও কিছু পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। চূড়ান্ত হয়েছে বিদেশি পর্যবেক্ষণ নীতিমালাও। একই সঙ্গে সংবাদ সংগ্রহে মোটরসাইকেলের অনুমতি দিয়ে সাংবাদিক নীতিমালাও সংশোধন করা হয়েছে।

সাধারণত নির্বাচনী কাজের জন্য প্রায় ১১ ধরনের সামগ্রীর প্রয়োজন পড়ে। এর মধ্যে ব্যালট পেপার, স্ট্যাম্প প্যাড, লাল গালা, মনোনয়ন ফরম, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, ব্রাশ সিল, অমোচনীয় কালির কলম, গানি ব্যাগ, হেসিয়ান ব্যাগ (বড়), হেসিয়ান ব্যাগ (ছোট) ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক রয়েছে। এরই মধ্যে ব্যালট বাক্স, বাক্সের ঢাকনা, বিভিন্ন ধরনের সিল, কালি ও ব্যাগ কেনার কাজ হয়ে গেছে। এবার ব্যালট বাক্স ও ঢাকনা দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকেই কিনেছে ইসি। ১ লাখ ৬১ হাজার রিম বা ৩২ লাখ ২০ হাজার দিস্তা কাগজ কেনা হয়েছে। এসব কাগজ দিয়ে তৈরি হবে ব্যালট পেপার, বিভিন্ন ধরনের খাম ও প্যাড। নির্বাচনের জন্য মোট ৮০ হাজার ব্যালট বাক্স কেনা হয়েছে যা এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে। আর তপশিল ঘোষণার পর ব্যালট পেপারের কাগজ সংগ্রহ ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর হবে মুদ্রণের কাজ।

নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সম্প্রতি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। সেখানে নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসাবও তুলে ধরা হয়। এবার প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং পোলিং কর্মকর্তাদের দুই দিনের সম্মানী ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগে নির্বাচনে এক দিনের ভাতা দেওয়া হতো। পাশাপাশি জ্বালানি খরচও এবার বাড়বে। নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন ৯ লাখের বেশি সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা। নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা, নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের ভাতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভাতা মিলিয়ে এবার প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এর বাইরে নির্বাচনী প্রশিক্ষণে খরচ হবে ১০০ কোটি টাকার বেশি। যদিও প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন মোট ৬ লাখ ৮ হাজার সদস্য। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ভোটকেন্দ্রে থাকেন পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। ভোটকেন্দ্রের বাইরে থাকে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ডের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হলে মোট খরচ আরও বাড়বে। সশস্ত্র বাহিনীকে সাধারণত মোতায়েন করা হয় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। তবে এবার সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। সেজন্য এ খাতে ব্যয়ও এখন পর্যন্ত ধরা হয়নি।

এবার প্রার্থীদের মনোয়নপত্র দাখিলে বাধাদান ঠেকাতে অনলাইনে জমা দেওয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে ই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে জামানতের টাকাও পরিশোধের সুযোগও থাকছে। ভোটকেন্দ্রের নাম ও ভোটার নম্বর খুঁজে পাওয়ার ভোগান্তি কমাতে বাংলাদেশ ইলেকশন অ্যাপ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করছে কমিশন। এই অ্যাপে ভোটারের তথ্যের পাশাপাশি রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, ডিসি, এসপি, ওসিসহ নির্বাচনের দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদের পরিচয়, ফোন নম্বর থাকবে।

ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ এবং সেটি সন্তোষজনক।

নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণের কাজ। ভোটের এক সপ্তাহ আগ পর্যন্ত ১০ লাখের মতো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া মাঠ প্রশাসনকেও প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছে ইটিআই। এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। শুক্র ও শনিবার বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দ্বিতীয় ধাপের প্রশিক্ষণ হবে।


আরও খবর

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে

বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩




বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেল

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী . এস জয়শংকর দুদেশের সম্পর্ককে একটি মডেল সম্পর্ক বলে মন্তব্য করেছেন

লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশন আয়োজিতহাউ অ্যা বিলিয়ন পিপুল সি দ্য ওয়ার্ল্ডশীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি কথা বলেন। খবর এএনআইয়ের

সাংবাদিক লিওনেল বারবারের সঞ্চালনায় লন্ডনের ওভার-সিস লিগ ক্লাবে আয়োজিত আলোচনায় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের এক প্রশ্নের জবাবে এস জয়শংকর মন্তব্য করেন

সাইদা মুনা তাসনিমের প্রশ্নটি ছিল: ভারতের কাছে তার পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে দেশটির নিরাপত্তা, আঞ্চলিক যোগাযোগ সমৃদ্ধি বিনিময়ের ক্ষেত্রে

সাইদা মুনা তাসনিমের প্রশ্নের উত্তরে জয়শংকর দুদেশের আঞ্চলিক বিরোধ নিরসনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কথা তুলে ধরে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো পুনর্গঠনে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের স্থল সীমানা নিয়ে বিরোধের মীমাংসা করেছি; যা আসলে একটি বিশাল ব্যাপার। আমাদের সমুদ্রসীমা নিয়ে মতবিরোধ ছিল। এটাও আমরা মীমাংসা করেছি। দুদেশের সীমানা নিয়ে এসব বিরোধ নিরসন অন্যান্য দেশ অঞ্চলের জন্য একটি ভালো উদাহরণ

এছাড়াও ভারত বাংলাদেশের মধ্যে সংযোগকারী দুটি প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত দশ বছরে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে সংযোগকারী দুটি রেললাইনের উদ্বোধন হয়েছে; একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রও উদ্বোধন হয়েছে আমরা আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশি বন্দর ব্যবহার করছি বন্দর দিয়ে বেশি যানবাহন আসায় তারা উপকৃত হচ্ছে

জয়শংকর উল্লেখ করেন, তাই বলা যায়, আজ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উপমহাদেশে আঞ্চলিক সহযোগিতা সুবিধার ক্ষেত্রে একটি মডেল সম্পর্ক হিসেবে দাঁড়িয়েছে

উল্লেখ্য, গত রোববার (১২ নভেম্বর) পাঁচদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ব্রিটেন গেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। ব্রিটেনের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও উন্নত করার লক্ষ্যেই তার সফর


আরও খবর

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে

বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩




অবরোধ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, যানবাহনে আগুন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

রোকসানা মনোয়ার:সারা দেশে আবারও বুধ, বৃহস্পতিবার পঞ্চম দফার অবরোধ ডেকেছে বিএনপি-জামায়াত। অবরোধকারীদের রাজপথে সেভাবে দেখা না গেলেও অবরোধের নামে গত কয়েক দিনে যাত্রীবাহী বাসসহ অসংখ্য যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছে তারা। এতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি তো হচ্ছেই, এই হরতাল-অবরোধ নিয়ে জনমনে তৈরি হয়েছে ত্রাস-আতঙ্ক। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতির মাঠে দাবি আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে অবরোধ একটি শক্তিশালী কর্মসূচি হলেও এখন সেটি রূপ নিয়ে অগ্নিসন্ত্রাসে। রাজনৈতিক মাঠের পাশাপাশি এই অগ্নিসন্ত্রাসরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক খাতকেও অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে।

দেশে মাস দুয়েকের মধ্যেই হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আজকালের মধ্যে ঘোষণা হবে নির্বাচনের তফসিল। এ অবস্থায় দেশের রাজনীতিকে সংঘাতের পথে হাঁটাতে চাইছে অবরোধ ডাকা রাজনৈতিক দল দুটো।

রাজধানীতে গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ আহ্বান করেও তা সফল করতে পারেনি রাজনীতির মাঠে প্রধানবিরোধী দল বিএনপি। তার জেরে পরদিন ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে দলটি। হরতালে জনগণের সাড়া না পেলেও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে দফায় দফায় অবরোধ ডাকছে দলটি, সঙ্গে চালাচ্ছে আগুন সন্ত্রাস।

প্রথম দফায় ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিন বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলে। তারপর শুক্র ও শনিবার বিরতি দিয়ে ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা অবরোধ ডাকে তারা। একদিনের বিরতি দিয়ে ৮ ও ৯ নভেম্বর দুদিনের জন্য তৃতীয় দফায় অবরোধ ডাকা হয়। এরপর শুক্র ও শনিবার বিরতি দিয়ে চতুর্থ দফায় ১২ ও ১৩ নভেম্বর অবরোধ ডাকা হয়। পঞ্চম দফায় আগামীকাল বুধবার ও পরদিন অবরোধ ডাকা হয়েছে।

সবচেয়ে ভয়ানক বিষয় হচ্ছে, অবরোধ মানেই এখন অগ্নিসন্ত্রাস, যানবাহনে আগুন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, ৩১ অক্টোবর অবরোধ শুরুর আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়েছে আগুন সন্ত্রাস। বিএনপি-জামায়াতের মহাসমাবেশের দিন (২৮ অক্টোবর) থেকে শুরু করে সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকাল পর্যন্ত ১৫৩টি অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১০৫টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৭৩টিই যাত্রীবাহী বাস।

সর্বশেষ গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শনিরআখড়া চৌরাস্তা সেতুর ওপর মৌমিতা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। সোমবার ভোর ৪টায় ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডের উত্তর দিকে নতুন বাস টার্মিনালের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা সাউদিয়া পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে যায় বাসের আসনগুলো। এ সময় বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা চালকের সহকারী লাফিয়ে নেমে প্রাণ বাঁচান।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানিয়েছে, ১২ থেকে ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট (অবরোধের দুদিন) পর্যন্ত অবরোধের নামে মোট ১৪টি আগুন সন্ত্রাসের খবর পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৮টি, ঢাকা বিভাগে (নারায়ণগঞ্জ, সাভার, ফরিদপুর) ৩টি, বরিশাল সদরে ১টি, রাজশাহী বিভাগের নাটোরে ১টি, রংপুর বিভাগের দিনাজপুর একটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১১টি বাস, ১টি ট্রাক, ২টি নছিমন পুড়ে গেছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বিডিটুডেসকে বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত হরতাল-অবরোধে পরিবহন খাতে ক্ষতি হয়েছে ২১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অবরোধে প্রতিদিনই পরিবহন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, বাসে আগুন দেওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মালিকরা। সরকারের কাছে আমরা ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছি। যারা রাজনীতির নামে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে, তাদের দ্রুত শাস্তি চাই আমরা।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারির মধ্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ছয় দফা অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর একমাসের মধ্যে ২৪ দিন বিএনপির অবরোধ ছিল। সঙ্গে ছিল জামায়াত ইসলামী। ওই সময় হরতালও পালন করা হয়। এসব কর্মসূচি চলাকালে কমপক্ষে ১২৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। নিহতদের বেশির ভাগই ছিল পরিবহন শ্রমিক।

ওই বছর ২৬ নভেম্বর শুরু হওয়া প্রথম দফা অবরোধের তৃতীয় দিন রাজধানীর শাহবাগে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা ছোড়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে তা ছড়িয়ে পড়ে। ১২ বছরের শিশুকেও প্রাণ দিতে হয়েছে গুলিবিদ্ধ হয়ে। এভাবে ২০১৪ ও ২০১৫ সালেও অবরোধের নামে সহিংসতা চালায় বিএনপি-জামায়াত।

২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি রাতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যেই সহিংসতা ও নাশকতায় প্রাণহানি ঘটে ২৮ ব্যক্তির। তাদের মধ্যে ১১ জন পরিবহন শ্রমিক, ছয়জন রাজনৈতিক কর্মী ও বাকিরা যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও অবরোধের নামে আগুন-সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে।

এদিকে অবরোধ ডাকা রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক তৎপরতা নেই। তারপরও অবরোধ ডাকা হচ্ছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। যানবাহনে চড়তে গিয়ে যাত্রীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় গণপরিবহনে সংকট তৈরি হয়েছে। পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে অবরোধে। অবরোধের প্রভাবে বাজারে নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে।

কক্সবাজার ও সুন্দরবনের মতো পর্যটনকেন্দ্রেও ধস নেমেছে ব্যবসায়। পর্যটকদের অনেকে কর্মসূচি বাতিল করছেন। ভরা মৌসুমে বিদেশ থেকেও পর্যটকরা আসার সাহস পাচ্ছে না। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানও বাতিল হচ্ছে আতঙ্কের কারণে। এমন পরিস্থিতিতে সচেতন নাগরিকরা প্রশ্ন করছেন, এভাবে আগুন সন্ত্রাসের নামই কি রাজনীতি?

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম গণমাধ্যমকে এরই মধ্যে অবরোধ কর্মসূচির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি। আমরা অবরোধ চাই না। অবরোধ অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। হরতাল বা অবরোধে দিনে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, এখনকার রাজনৈতিক কর্মসূচি সংকটময় অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেই। সামষ্টিক অর্থনীতির কোনো সূচকই ইতিবাচক অবস্থায় নেই। তাই সচল অর্থনীতির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার।

 


আরও খবর

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে

বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩




১৩৭ জন বর্তমান এমপি মনোনয়ন পাচ্ছেন না

প্রকাশিত:বুধবার ০১ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ |

Image
সদরুল আইন, প্রধান প্রতিবেদক :আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের খসড়া মনোনয়ন এখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেবিলে।
বিএনপির নির্বাচনে আসবে এটি মাথায় রেখেই এই খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এর মধ্যে ৫০ টি আসন মহাজোটের শরিকদের দিয়ে বাকি ২৫০ টি আসন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জন্য রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে শরিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আরও অন্তত ১০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টি আসন শরিকদের জন্য আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এই খসড়া তালিকা এখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত করবেন। তিনি এখানে যেকোনো নাম সংযোজন বা বিয়োজন করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এখন যে খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে সেই খসড়া তালিকায় অন্তত ১৩৭ জন বর্তমান এমপিকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেই প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদের মধ্যে কয়েকজন আছেন বয়স্ক জনিত, বার্ধক্যজনিত বা অসুস্থতার কারণে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না।
তবে বেশিরভাগই অজনপ্রিয়, নির্বাচনী এলাকায় বিতর্কিত এবং এলাকায় ইতিবাচক অবদান রাখতে পারেননি বলে তাদেরকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।

আরও খবর