Logo
শিরোনাম

ভোগাচ্ছে আটা-ময়দার বাড়তি দাম

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ অক্টোবর ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

রোকসানা মনোয়ার :  রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব আমদানির ওপর পড়ায় দেশীয় বাজারে শস্যজাতীয় পণ্যের সরবরাহ ও মজুদ কমে গেছে। এতে বাংলাদেশে আটার দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছরের একই মাসে আটার দাম ৬২ শতাংশ বেশি ছিল।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, আটার খুচরা মূল্য বেড়ে এ বছরের সেপ্টেম্বরে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা ১০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। ৪ অক্টোবর রাজধানীর খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি আটা ৫৪-৫৫ টাকা দরে বিক্রি করেন, যা এর আগের মাসের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি এবং এক বছর আগের একই সময়ের চেয়ে ৬২ শতাংশ বেশি।

আমদানিকারক ও প্রক্রিয়াজাতকারীরা বলছেন, গমের প্রধান উৎস ভারত, রাশিয়া ও ইউক্রেন। আন্তর্জাতিক বাজারে গমের মূল্যবৃদ্ধি, টাকার বিপরীতে ডলারের মান বৃদ্ধি এবং মজুদ কমায় বিস্কুট ও বেকারিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত গমের দামও বেড়েছে। এ ছাড়া আমদানি পণ্যের জন্য ঋণপত্র (এলওসি) খোলার ক্ষেত্রেও ব্যবসায়ীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

২০২২ সালের মে মাসে ভারত স্থানীয় বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য শস্যজাতীয় পণ্য রপ্তানি সীমাবদ্ধ করে। যার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশি বাজারেও। কারণ ২০২০ সাল থেকেই গমের জন্য বাংলাদেশের প্রধান উৎস ভারত। যুদ্ধের কারণে ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ভারত এ সিদ্ধান্ত নেয়।

অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কম হওয়ায় দেশের মোট বার্ষিক চাহিদার তিন-চতুর্থাংশই আমদানিনির্ভর। ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে আমদানি করা গম ১৫ অক্টোবরের মধ্যে বাংলাদেশে আসবে উল্লেখ করে আবুল বাশার চৌধুরী বলেন, গমের মজুদ, বিশেষ করে বেসরকারি খাতের মজুদ দেশে ইতিহাসে এখন সর্বনিম্নে। ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে আমদানি করা গম এলে সহজলভ্যতা বাড়বে। প্রায় ৫ লাখ টন গম নিয়ে ৬ থেকে ৭টি জাহাজ ইতোমধ্যে রওনা দিয়েছে।


আরও খবর



বেইলি রোড ট্র্যাজেডি : তদন্ত প্রতিবেদনে যা জানা গেল

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আলোচিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত সম্পন্ন করেছে ফায়ার সার্ভিসের গঠিত কমিটি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রতিবেদন জমাও দিয়েছে তারা।

ফায়ার সার্ভিসের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ভবনের নিচ তলায় থাকা চা চুমুক কফি শপের ইলেকট্রিক কেটলির শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এর মাত্র তিন থেকে চার মিনিটের মধ্যে পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। মূলত ভবনে লিকেজ থেকে সৃষ্ট গ্যাস জমে থাকার কারণেই আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট ওই তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, তদন্তে পাওয়া গেছে যে হোটেলে যেখানে বসে মানুষ খাওয়া দাওয়া করতো, সেখানেও রাখা ছিল সিলিন্ডার। ভবনের একটিমাত্র সিঁড়ি, সেটাও স্টোর রুম বানিয়ে রাখা হয়েছিল। সিলিন্ডারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভর্তি করে রাখা ছিল সেখানে। এ ছাড়া ভবনের রুফটপও উন্মুক্ত ছিল না। মসজিদের পাশাপাশি অফিসসহ আরও কিছু মালামাল ছিল সেখানে।

তদন্তে আরও উঠে আসে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) যে ধরনের নকশার অনুমোদন দিয়েছিল, সেটা পুরোটাই পাল্টে ওই ভবন নির্মাণ করেন মালিকরা। ২০০৩ এর আইন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস থেকে অগ্নিনিরাপত্তার কোনো ট্রেনিংই তারা নেননি। মোটকথা, যতগুলো অনিয়ম করা যায় সবগুলো অনিয়ম ওই ভবনে ছিল। ভেন্টিলেশন পর্যন্ত ছিল না ভবনটিতে।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডটি ঘটে। দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান ৪৬ জন। এ ছাড়া অন্তত ২২ জন গুরুতর আহত হন। ভবনের নিচতলা থেকে ছাদ পর্যন্ত অনেক রেস্তোরাঁ, কফি শপ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। বিশেষ করে রেস্তোরাঁর সংখ্যাই ছিল বেশি। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে রেস্টুরেন্টগুলোতে ভিড় হতো ভোজনপ্রেমীদের। কিন্তু, অগ্নিনির্বাপনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না ভবনটিতে।

ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, এ ধরনের ভবনে কমপক্ষে ৫০ হাজার গ্যালন পানি ধারণক্ষমতার ওয়াটার রিজার্ভার না থাকলে আমরা ছাড়পত্র দিই না। কিন্তু সেখানে পানির ক্যাপাসিটি মাত্র ১০ হাজার গ্যালন। পানি ছিল আরও কম।

ভবিষ্যতে এ ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ফায়ার সেইফটি প্ল্যান ২০০৩ এবং রাজউক থেকে অনুমোদন করা নকশা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি।


আরও খবর



কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের ১০ চুক্তি স্বাক্ষর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

দ্বৈতকর পরিহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়ে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও কাতার।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।

চুক্তিগুলো হলোউভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষাসংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকিসংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতাসংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দুদেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠনসংক্রান্ত চুক্তি।

আর সমঝোতা স্মারকগুলো হলোকূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।

এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক হয় তাদের। দুপুরে চামেলী হলে দুদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আমির।


আরও খবর



৩১ দিন পর মুক্ত জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ২৩ নাবিক

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

অবশেষে মুক্ত হয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটিতে থাকা ২৩ নাবিকই সুস্থ রয়েছেন।

জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ৩৫ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, অল্প কিছুক্ষণ আগে আমরা সুসংবাদ পেয়েছি। আমাদের জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২৩ নাবিকই অক্ষত অবস্থায় আমরা ফেরত পেয়েছি।আগামীকাল (রোববার) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।

জানা গেছে, জলদস্যুদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ নিয়ে একটি বিমান বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে জিম্মি জাহাজের ওপর চক্কর দেয়। এসময় জাহাজের ওপরে ২৩ নাবিক অক্ষত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর বিমান থেকে ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ সাগরে ফেলা হয়। স্পিডবোট দিয়ে এসব ব্যাগ জলদস্যুরা কুড়িয়ে নেয়। জাহাজে উঠে দাবি অনুয়ায়ী মুক্তিপণ গুনে নেয় জলদস্যুরা। তবে চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটি যথাসময়ে ছেড়ে দেয়নি দস্যুরা। পরবর্তীতে আশপাশে কেউ আটক করছে কি না, সেটি নিশ্চিত হয়ে জাহাজ থেকে দস্যুরা নেমে যায়।

মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সময় শনিবার মধ্যরাতে ২৩ নাবিক নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।

যদিও মুক্তিপণ কত এবং কীভাবে দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জাহাজের মালিকপক্ষের কোনো কর্মকর্তা।

কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান বলেন, সমঝোতার পর নাবিকসহ জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। জাহাজের চারপাশে একাধিক আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।

এর আগে গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।

কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন এমভি আবদুল্লাহ আগে গোল্ডেন হক নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেয়। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী এরকম মোট ২৩টি জাহাজ আছে কবির গ্রুপের বহরে।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।


আরও খবর



ঢাকাসহ ৬ বিভাগে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

সারা দেশে গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এর মধ্যে ঢাকাসহ দেশের ৬ বিভাগে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু (৩৬-৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৩৮-৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা আরও বিস্তার হতে পারে। শনিবার থেকে পরবর্তী ৩ দিন এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এ ছাড়া আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, সারা দেশে শনিবার তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এ পরিস্থিতি আগামীকাল রোববার (১৪ এপ্রিল) দিন ও রাতেও অব্যাহত থাকতে পারে।

তবে পরদিন সোমবার (১৫ এপ্রিল) সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আর বর্ধিত ৫ দিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এ সময় দেশের উত্তর পূর্বাংশে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

রাঙ্গামাটিতে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। আজ শনিবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আরও খবর



লাফিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা, মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ঈদুল ফিতর আর বাংলা নববর্ষ মিলিয়ে এবার দীর্ঘ ছুটি ছিল। এমন ছুটিতে গ্রামে যাওয়ার সুযোগ কে হাতছাড়া করে? তবে উসবেও আমাদের একমাত্র উকণ্ঠা হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। পৃথিবীর প্রত্যেক জনপদেই উসব পালিত হয়। কিন্তু কোনো নাশকতা ছাড়া শুধুমাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষ হতাহতের নজির বোধ হয় অন্য কোথাও নেই। 

ঈদের ছুটি কাটিয়ে শহরে ফেরার পথে বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। এর মধ্যে গাড়ির উচ্চগতি, ওভারটেক, ঝাঁকুনি কিংবা হার্ডব্রেক অবচেতনে ডেকে আনছিল মৃত্যুভয়। তবে শেষমেশ নিরাপদেই ফিরতে পেরেছি। তবে কারো কারো কপালে সে ভাগ্য হয়নি। এবারের ঈদযাত্রায়ও সড়ক দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে এসেছে প্রতিদিনই।

গত ১৬ এপ্রিল ফরিদপুরের কানাইপুরে বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাকের ধাক্কায় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিভিন্ন গাড়ির আরও ১৪ আরোহী নিহত হয়। দুর্ঘটনায় নিহতের এ তালিকায় যোগ হয়েছে তরুণ সংগীতশিল্পী মতিউর রহমান হাসান ওরফে পাগল হাসানের নাম। ১৮ এপ্রিল সকালে কনসার্ট থেকে ফেরার পথে সুনামগঞ্জের ছাতক পৌর শহরের সুরমা সেতুর কাছে বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সঙ্গীসহ নিহত হয়েছেন পাগল হাসান।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য বলছে, ঈদযাত্রা শুরুর দিন (৪ এপ্রিল) থেকে ১৮ এপ্রিল কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত ১৫ দিনে সড়কে ৩৯৯টি দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে দুটি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছে। সবমিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌ পথে ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও এক হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।

অন্যদিকে গত বছর ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ ও আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে। আর এসব দুর্ঘটনায় যথারীতি মোটরসাইকেলই শীর্ষে রয়েছে। এবারের ঈদে ১৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ২৪০ জন আহত হয়েছে; যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯.৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০.৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০.৩৭ শতাংশ প্রায়।

যদিও সব দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে আসে না। তাই প্রকৃত দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আট বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৬০ হাজার ৮৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় তিন হাজার ৮৬২ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে চার হাজার ৪৭৫ জনের। অর্থা শুধুমাত্র ঈদের মৌসুমেই সড়ক দুর্ঘটনায় ৭.৩৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য বলছে, গত ১১ এপ্রিল ঈদের দিনে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে ঈদের আগে-পরে ছয় দিন এবং ঈদের দিন মিলিয়ে সাত দিনে সারা দেশে মোট ১১৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২২ জন নিহত এবং আহত হয়েছে আরো অন্তত ১৯৫ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৬ শতাংশের বেশি জাতীয় মহাসড়কে, ৩৪ শতাংশের বেশি আঞ্চলিক সড়কে, ১৮ শতাংশ গ্রামীণ সড়কে এবং প্রায় ১১ শতাংশ শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমান সময়ে মোট দুর্ঘটনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ঘটে মোটরসাইকেলে। যার মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৫.১১ শতাংশ, মুখোমুখি সংঘর্ষে ২১.২৫ শতাংশ, অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে ধাক্কা বা চাপায় ২৩.৬২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই উঠতি বয়সী তরুণ।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। আর বর্তমান সরকারের সময়ে যে পরিমাণ নতুন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে তা অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। ১৯৭১ সালে মাত্র তিন হাজার ৬০০ কিলোমিটারের সড়ক দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশে বর্তমানে তিন লাখ ৭৫ হাজার কিলোমিটারে সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় ও আঞ্চলিক মিলিয়ে ২২ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক আছে।

এসব সড়ক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে হাইওয়ে পুলিশের ৭৩টি ইউনিটের প্রায় তিন হাজার সদস্য। ইতিমধ্যে দেশে অনেকগুলো মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস, আন্ডারপাস, ওভারব্রিজ নির্মিত হয়েছে। দুই লেনের মহাসড়ক চার লেনে পরিণত হয়েছে আর চার লেনগুলো আট লেনে পরিণত হবে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ফলে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এত এত অবকাঠামো উন্নয়ন, জনবল মোতায়েন এবং পরিবহন আইন সংস্কার সত্ত্বেও সড়কে শৃঙ্খলার অভাব রয়ে গেছে, যা রোজার ঈদ আর কোরবানির ঈদে প্রকট আকার ধারণ করে।

ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার কারণ বিশ্লেষণে দেখা যায়: ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ভাঙাচোরা সড়ক, অদক্ষ চালক, দুর্নীতি, ট্রাফিক তদারকির অভাব, অপ্রশস্ত সড়ক, বেপরোয়া গতি, মহাসড়কে মোটরসাইকেল, তিন চাকার গাড়ি চলাচল ইত্যাদি। পরিবহনের তুলনায় যাত্রী কয়েকগুণ বৃদ্ধি ও পরিবহন মালিকের অতিমুনাফার লোভে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালক রাস্তায় নামানো হয়। সড়ক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কর্তব্যে অবহেলা ও দুর্নীতি সড়ক শৃঙ্খলার অন্তরায়। এমনকি মহাসড়কে অনভ্যস্ত শহুরে সিটি বাসগুলো সড়কে চাপ তৈরি করে। আর অধিক ট্রিপ পাওয়ার আশায় বিরতিহীন ও বেপরোয়া গতিতে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

 


আরও খবর