Logo
শিরোনাম

ওয়াজ মাহফিলে এখন আবু যায়েদ সারুজির ছলচাতুরী

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ ডিসেম্বর 20২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

-- আমিনুল ইসলাম কাসেমী :

একসময় ফুটপাতে অষ্টধাতুর ডাক্তারদের লেকচার শোনা যেত। গ্রামের হাটবাজারে সবচেয়ে বেশী এসব ডাক্তারদের উপদ্রব দেখা যেত। মফস্বল শহরের কোর্ট- কাচারি চত্তর, রেল ষ্টেশন, বাস ষ্টপেজ ও লঞ্চ ঘাটে সেসব ফুটপাথ বক্তাদের দৌরাত্মও কম ছিলো না। ওরা একটা খালি বাক্স সামনে নিয়ে প্রচুর বাগাড়ম্বরতার মাধ্যমে শ্রোতাদেরকে প্রথমে চমতকৃত পরে ব্ল্যাকমেইল করে ফেলতো। বাক্স খালি কিন্ত ভাবখানা এমন যেন তার মধ্যে লুকিয়ে আছে ‘সাত রাজার ধন’। এভাবে সরল দর্শক শ্রোতাদের চোখে ধূলো দিয়ে কথার ছলচাতুরীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখতো  তারা। অবশেষে শুরু হয় সেসব হকার ডাক্তারদের অষ্টধাতু বেচা। নানান মিথ্যা  প্রলোভন আর ভূয়া আশ্বাসে তারা সরল মানুষকে গছিয়ে দিতো হাজার হাজার টাকার অষ্টধাতুর আংটি, তামার মাদুলি, ষাণ্ডার তৈল আর লজ্জাবতী গাছের শেকড়ের তাবীজ।

বর্তমান ওয়াজের ময়দানটাও ফুটপাতের সেই ষাণ্ডার তেল বিক্রির মজমার মত হয়ে  গেছে। আর বক্তাগণ সেসকল ফেরিওয়ালা লেকচারারদের থেকেও কয়েকধাপ এগিয়ে। ফুটপাতের ষাণ্ডার তেলের ডাক্তারগণ যে কায়দায় শ্রোতাদের ভেল্কিবাজি করে ঔষধ বিক্রি করে, সেই একই কায়দায় ওয়াজের ময়দানের শ্রোতাদের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে যাচ্ছে ওয়াজের ময়দানের বক্তারা। এদের কথার ভারসাম্যতা বলে কিছু নেই। যার যা ইচ্ছে সেটাই ডেলিভারি দিচ্ছে দেদারসে। তারা কখনো প্রতিভাত হচ্ছেন অভিনেতা – অভিনেত্রীর বেশে। কখনো মঞ্চে কাঁপাচ্ছে রাজনৈতিক নেতার মিথ্যার ফুলঝুরি ছড়িয়ে। কখনো চাপাবাজি করে বোকাসোকা শ্রোতাদের ধাঁধা লাগিয়ে দিচ্ছে। এমনসব কথা শ্রোতাদের সামনে উপস্থাপন করছে, যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। অবাস্তব, অসামাঞ্জস্য কথা। মানে সেই চাঁদে মানুষ দেখার মত আর পেঙ্গুইন পাখির ওড়ার মতো গালগপ্প।

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ স্বল্পশিক্ষিত ধর্মভীরু। ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক রাহবারদের সবচেয়ে বেশী মুল্যায়ন করেন তারা। দুনিয়ার কোন মানুষের কথা বিশ্বাস না করলেও ধর্মীয় নেতাদের কথা মনেপ্রাণে মেনে নেন। তারা যেটা বলেন কোন বাছ বিচার ছাড়াই গ্রোগ্রাসে গিলে নেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ধর্মীয় নেতাগণ যদি মিথ্যার আশ্রয় নেন, তারা যদি সাধারণ জনতাকে ঐন্দ্রজালিক কায়দায় ধোঁকায় ফেলে দেন তাহলে এর থেকে খারাপ কথা আর হতে পারেনা।

সবখানে এখন আবু যায়েদ সারুজির ছলচাতুরী

ওয়াজ মাহফিলে এখন ওয়াজ নেই। সবখানে এখন আবু যায়েদ সারুজির ছলচাতুরী। মিথ্যা চাপাবাজি আর হঠকারিতা। নিজের ব্যক্তিত্ব এবং কামালিয়্যাতের মিথ্যে পরিবেশনা। একেবারে সেই ফুটপথের লেকচারারদের মত অবস্হা। লজ্জাবতী গাছের শেকড়ের ব্যাপক কাস্টমার বাড়ানোর জন্য আজগুবি কথামালা।

বক্তাগণ ঠিক সেই মিশনেই নেমেছেন। নিজের জীবনের বানানো ঘটনা, জেলখানার মিথ্যা কেচ্ছা, আর নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য ফুলানো ফাপানো আজগুবি কথাবার্তা। দৈনন্দিন কতটা প্রোগ্রাম আসে, কত্ত মানুষ ফোন করে, ওয়াজের ভিউ কত, তার ওয়াজে লোক হয় কীরকম! অমুক জায়গায় এত্ত এত্ত মানুষ হয়েছিল। অমুক জায়গায় এত্ত টাকা হাদিয়া দিতে চেয়েছিল তারপরেও প্রোগ্রাম নেয়নি ইত্যাদি। আজকে তিনটে বা চারটে প্রোগ্রাম। আজ বেশী ওয়াজ করবো না কেননা গলার অবস্থা ভাল নয়। মানে আবোল- তাবোল কথা বলে সময় পার করে চলে যায়। আবার কেউ তো সময়ও দেয়না। এখন তিনি জেলখানা ফেরত এক চিড়িয়া। মানুষ দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছে। মঞ্চে উঠে হম্বিতম্বি করে টাকার বান্ডেল নিয়ে চস্পট দিচ্ছেন।

ওয়াজ মাহফিলের বারটা বেজে গেছে। লিল্লাহিয়্যাত, রুহানিয়্যাত কোনটাই বাকি নেই। শুধু ওয়াজের নামে বড় বড় জমায়েত হচ্ছে। অধিকাংশ মাহফিলগুলোতে একই অবস্থা। এক সময় মানুষ ওয়াজ মাহফিল থেকে চেতনা নিয়ে, রুহানিয়্যাত নিয়ে, আল্লাহর ভয়ে কান্নাওয়ালা চক্ষু নিয়ে বাড়ি ফিরত।

এখন সবকিছু ব্যতিক্রম। বিশেষ করে ইচড়েপাকা বক্তা এবং তাদের কিছু সাঙ্গপাঙ্গ আবিস্কার হওয়ার পরে ওয়াজের ময়দানটা এখন সার্কাসের মঞ্চ। ওই ইচড়েপাকা বক্তা জেলখানা যাওয়ার পূর্বে যেসব অশালীন মন্তব্য করেছিলেন, বিশেষ করে রাষ্ট্রের কর্ণধরদের ব্যাপারে অস্রাব্য মন্তব্যে জনমনে এবং আলেম সমাজে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। জেলখানা থেকে মুক্তির পরে আবারও লাগামহীন বক্তব্য শুরু করেছেন। যেটা স্পষ্টভাবে জাতিকে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছু নয়।

এজন্য এসব ভেল্কিবাজি বন্ধ করা দরকার। যে কায়দায় হোক ওয়াজের ময়দানে পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে সকলের। ওয়াজ মাহফিলের মত পবিত্র জায়গাতে আর মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবেনা। ওয়াজ কম হোক, কিন্তু যতটুকু হবে সেটা যেন লি ওয়াজহিল্লাহ হয় সেই চেষ্টা করতে হবে।

ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকদের একটু ঠিক হওয়া দরকার। সমস্যা হচ্ছে, আজকাল যেখানে সেখানে ওয়াজ মাহফিল এবং যেনতেন ব্যক্তি ওয়াজ মাহিলের আয়োজক। আগে ওয়াজ মাহফিল হত মাদ্রাসাকেন্দ্রিক, মসজিদ কেন্দ্রিক। কিন্তু এখন ওয়াজ মাহফিল পথেঘাটে, রাস্তা বন্ধ করে, বাজারের পট্টিতে, ফেরীঘাট, লঞ্চঘাটে। আর আয়োজক হল, বেনামাজী, বেশরা চলাফেরা মানুষগুলো। যাদের ধর্মীয় জ্ঞান নেই। শরীয়াতের উপরে চলেনা। ওরা চাঁদা তুলে ওয়াজ মাহফিল দেয়। আর বক্তা তালাশ করে ইউটিউব চ্যানেল দেখে। ইউটিউবে কার সুরেলা কণ্ঠ, কার চাপার জোর বেশী এধরনের বক্তা বাছাই করে। আবার টাকার খেলা চলে। অমুক বক্তা আনতে হবে। টাকা কত লাগবে? যত টাকা লাগুক অমুককে চাই। আর এই সুযোগ গ্রহণ করে কিছু ওয়াজ ব্যবসায়ী এবং গলাবাজ লোকেরা। ওরা গো ধরে বসে থাকে এত্ত টাকা ছাড়া যাওয়া যাবেনা। দাওয়াত দেওয়ার সময় এ্যাডভান্স এবং ষ্টেজে ওঠার আগে সমুদয় টাকা পরিশোধ চাই ইত্যাদি শর্ত- শরায়েত জুড়ে দেয়।

বড় আফসোস! জাতির জন্য। একটা বরকতময় অনুষ্ঠানকে কিছু অযোগ্য আয়েজক এবং অযোগ্য ও লোভী ওয়ায়েজগণ সর্বনাশ করে ফেলছে। বরকতি অনুষ্ঠানের পরিবর্তে এখন বেবরকতি কাজ চলছে। মাহফিলে আদ্যপান্ত কোন কাজই আর লিল্লাহিয়্যাত হচ্ছেনা। ঘরে ঘরে ওয়াজ মাহফিল কিন্তু শ্রোতাদের ফায়দা নেই। কোন পরিবর্তন আসছেনা কারো। বক্তাও যেমন  টাকার লোভে ওয়াজে আসছে, আয়োজকগণও লোক দেখানো আয়োজন করছে। বড় গ্যাদারিং করে নিজেদের কর্তৃত্ব জাহির করা যায় এমন চিন্তা- চেতনা নিয়েই ব্যস্ত সকলে।

শেষকথা, ওয়াজ মাহফিল নিয়ে আর ভেল্কিবাজি নয়। চাপাবাজ বক্তাদের অবসান হোক। সেই সাথে লোক দেখানো ওয়াজ মাহফিলগুলো বন্ধ হোক। ওয়াজ মাহফিল হোক আল্লাহর জন্য। বক্তা এবং স্রোতা সকলেই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করুক এমন কামনা – বাসনা রইল। আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখক, শিক্ষক ও কলামিস্ট


আরও খবর



গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একজন শিশু নিহত

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলায় প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশু আহত কিংবা নিহত হচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ এ কথা জানিয়েছে। খবর আলজাজিরার।

শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪ হাজার ৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৪ হাজারের বেশি শিশু রয়েছে।

গাজার সর্বশেষ পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে ইসরায়েলের হামলায় শিশুদের হতাহত হওয়ার এ মারাত্মক পরিসংখ্যান সামনে আনে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সমন্বয় দপ্তরও (ওসিএইচএ)।


আরও খবর



আরও ৫০ প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

দেশের চালের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চলছে কারসাজি। তাই মূল্য নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি পর্যায়ে আরও ৫০ প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, বেসরকারিভাবে আরও ৫০ আমদানিকারককে ৯১ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ৩৩ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। দ্রুত চালের বাজারের সংকট কাটিয়ে উঠতে আমদানি করা চাল ১৫ মে এর মধ্যে বাজারজাত করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বরাদ্দের অতিরিক্ত আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) জারি করতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো। আমদানি করা চাল স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠানের নামে পুনঃপ্যাকেটজাত করতেও নিষেধ করেছে মন্ত্রণালয়। এই চাল বস্তায় বিক্রি করতে হবে।

তাছাড়া আমদানিকৃত চালের পরিমাণ, গুদামজাত ও বাজারজাতকরণের তথ্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এর আগে গত ২১ মার্চ বেসরকারিভাবে ৪৯ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৩৪ হাজার মেট্রিক টন আতপ চালের আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার।


আরও খবর

কমেছে মুরগির দাম, চড়া সবজির বাজার

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪




নওগাঁয় নিরাপদ সড়কের দাবীতে চোখে কালো কাপড় বেঁধে সড়কে এক শিক্ষার্থী

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার দাবিতে চলমান এই তীব্র রোদ ও গরমকে উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছে ফাতেমা আফরিন ছোঁয়া নামের এক শিক্ষার্থী। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘন্টাব্যাপি শহরের তাজের মোড় ও ব্রীজের মোড় সড়কে চোখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান করে ঐ শিক্ষার্থী। সে নওগাঁ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী।

এসময় শিক্ষার্থী ফাতেমা আফরিন ছোঁয়ার হাতে থাকা পোষ্টারে লিখা ছিল “সড়কে নিরাপত্তা চাই, বাঁচার মত বাঁচতে চাই, দূর্ঘটনা এড়াতে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ চাই”। এসময় স্থানীয় পথচারীরা এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

পথচারী জুলফিকার রহমান বলেন, আমরা সড়কে কেউ নিরাপদ নই। বাসা থেকে বের হলে সুস্থ্যভাবে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারবো কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নাই। এক ছোট্ট শিশু শিক্ষার্থীর এমন উদ্যোগ সত্যিই আমাদের মুগ্ধ করেছে। সবারই উচিত নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোচ্চার হওয়া।

নিগার সুলতানা ও তানহা খাতুন নামের আরো দুই পথচারী বলেন, তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে বাচ্চাটির এমন প্রতিবাদ ও দাবী খুবই যোক্তিক। আমরা তার দাবীকে সমর্থন করছি। তাকে দেখে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে। প্রতিদিনই সড়কে তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। নিরাপদ সড়কের দাবীতে সবাই এক হয়ে আন্দোলন করতে হবে। শিক্ষার্থী ফাতেমা আফরিন ছোঁয়া জানায়, প্রতিদিন টিভি, পত্রিকাতে দেখি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর। রাস্তায় বের হলে বা স্কুলে যাওয়ার পথে আবার বাড়িতে মা-বাবার কাছে ফিরতে পারবো কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নাই। প্রতিদিন এত মৃত্যুর খবর দেখে খুবই কষ্ট পাই, ভয়ও লাগে। বেশ কয়েকদিন আগে নওগাঁ শহরের ইয়াদ আলীর মোড়ে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায় বাবা-মা। আর বেঁচে যায় তাদের ৫ বছর বয়সী এক শিশু। এখন ভাবুন সেই শিশুটির এখন কি হবে। সারা জীবনের জন্য শিশুটি বাবা-মার আদর-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে গেল। আমি চাই নিরাপদ সড়ক। নিরাপদে সড়কে চলাফেরা করতে চাই। সরকারের কাছে আকুল আবেদন নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

ফাতেমা আফরিন ছোঁয়ার বাবা সঙ্গীত শিল্পী খাদেমুল ইসলাম ক্যাপ্টেন বলেন, গত ১৮ এপ্রিল সুনামগঞ্জের ছাতকের সুরমা ব্রিজ এলাকায় জনপ্রিয় গানের গীতিকার, সুরকার শিল্পী মতিউর রহমান হাসান ওরফে পাগল হাসান মারা যায় সড়ক দূর্ঘটনায়। পাগল হাসান আমার সহকর্মী ও বন্ধু ছিলো। এর আগে ১৭ এপ্রিল নওগাঁ শহরের ইয়াদ আলীর মোড়ে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায় এনামুল হক ও বৃষ্টি আক্তার নামের দম্পত্তি আর বেঁচে যায় তাদের ৫ বছরের শিশু জুনাইদ ইসলাম। এই ঘটনাগুলো আমার মেয়ের মনে মারাত্মকভাবে দাগ কেটে যায়। আমার মেয়েটি এত মৃত্যুর খবর প্রতিদিন শুনে নিজেকে স্থির রাখতে পারছে না। যার কারণেই সে বলেছে, আব্বু আমি নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় দাঁড়াতে চাই। মেয়ের এই মহৎ ও যৌক্তিক চাওয়াকে না বলতে পারিনি। যার কারণে তাকে পুরো সমর্থন জানিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আজ আমার ছোট্ট মেয়েটা একাই যেভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিরাপদ সড়কের দাবি করছে ঠিক সেভাবে দেশের সবাই যদি এমন করে সচেতন হতো ও দাবিগুলো তুলে ধরতো তবে, প্রতিদিন এমন প্রাণহানির মত ঘটনা অনেকটাই কমিয়ে আসতো। আমরা নিরাপদ সড়ক চাই, সবাই যেন ট্রাফিক আইন মেনে চলে সেই উদ্যোগের বাস্তবায়ন চাই। আর তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগন, যানবাহন চালক ও মালিকদের একসাথে কাজ করার আহব্বান জানাচ্ছি। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি এ এস এম রায়হান আলম বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবীতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। পাশাপাশি যানবাহন চালক ও মালিকদের সচেতনও করছি। শিক্ষার্থী ফাতেমা আফরিন ছোঁয়ার এমন উদ্যোগ আমাদের মুগ্ধ করেছে। এমন দাবী ও সচেতনতাবোধ যদি সবার মাঝে জাগ্রত হতো তবে সড়ক দূর্ঘটনা অনেক কমিয়ে নিয়ে আসা সম্বব হতো। তার এমন উদ্যোগ ও দাবীকে সাধুবাদ জানাই।


আরও খবর



৫৪ জেলায় বইছে তাপদাহ

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

সবচেয়ে উষ্ণতম মাস এপ্রিল তাই দেশের প্রায় সবখানে এখন তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে অবস্থায় দেশের ৫৪ জেলায় বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ আগামী তিনদিন তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা দেখছে না আবহাওয়া অফিস

সোমবার সকালে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলামের দেওয়া পূর্বাভাসে তথ্য জানানো হয়েছে। রাঙামাটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্ব্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে

এদিকে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। তীব্র গরমে উপেক্ষা করেই কাজে বের হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ। এতে ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুন

আবহাওয়া অফিস বলছে, রংপুর ,নীলফামারী, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা,বরিশাল ,চট্টগ্রাম, সিলেটে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ পরবর্তীতে সারা দেশে বিস্তার লাভ করতে পারে কোনো কোনো জেলায় তাপমাত্রা  উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রির ওপরে

আবহাওয়াবিদ শাহীনুর ইসলাম জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে

তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার রংপুর, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

এদিকে গত চারদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু মাঝারি তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে মানুষ বাইরে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। সকাল ১০টার পর থেকে রোদের তাপে তেতে উঠছে চারপাশ। জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশিরভাগ দিনই ৩৮ ডিগ্রির ওপরে থাকছে

এছাড়া গত দুইদিনের প্রচণ্ড তাপদাহে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে  কুষ্টিয়ার জনজীবন। ঈদের পরদিন থেকে জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপদহের কারণে চরম বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তারা বলছেন, প্রচন্ড তাপদাহের কারণে তাদের রাস্তায় বের হয়ে কাজ কর্ম করতে চরম কষ্ট হচ্ছে

কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিস বলছে, কুষ্টিয়ায় সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে


আরও খবর



পাল্টা হামলার আশঙ্কা, উচ্চ সতর্কতায় ইরান

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এবারই প্রথমবারের সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালালো দেশটি।

এমন অবস্থায় ইসরায়েল এবার ইরানে পাল্টা হামলা চালাতে পারে। আর সম্ভাব্য সেই হামলার আশঙ্কায় উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ইরান। রোববার (১৪ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটির দোরসা জব্বারী তেহরান থেকে জানিয়েছেন, দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে ইরানের প্রতিক্রিয়া সুনির্দিষ্ট এবং সীমিত হবে বলে ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন এবং আজ আমরা বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিযান দেখেছি।

তিনি বলেছেন, আমি মনে করি- ইরানের কাছ থেকে দেশটির সবচেয়ে খারাপ প্রতিক্রিয়াটিই আমরা দেখেছি। এটি অবশ্যই পূর্ণ-মাত্রার কোনও আক্রমণ নয়। এবং অবশ্যই ইরান ঠিক কী করতে সক্ষম তার একটি প্রদর্শনও এটি। এগুলো এমন দৃশ্য যা আমরা আগে কখনও দেখিনি - ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ মিসাইল এবং ড্রোন ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির মতে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ইসরায়েলের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। তবে ইরানের এই দাবি অবশ্যই ইসরায়েল অস্বীকার করেছে।

আল জাজিরার দোরসা জব্বারী বলছেন, এখন এই হামলা-পাল্টা হামলার পরবর্তী পর্ব শুরু হবে। (ইরানের হামলার জবাবে) ইসরায়েলের জবাবও তাই হবে। এবং সেই কারণে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে এবং ইসরায়েলকে (পাল্টা হামলার বিষয়ে) হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেশটির একজন কমান্ডার বলেছেন, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের হামলার জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে।

তবে আপাতত ইসরায়েল ঠিক কী করবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে ইরানিরা... বর্তমানে পরিস্থিতি আরও খারাপ না করে তারা এই দ্বন্দ্বকে বজায় রাখতে সক্ষম হবে কিনা সেটিও বোঝার চেষ্টা করছে তারা।

এদিকে ইরানের সর্বশেষ এই হামলা ইসরায়েলের জন্য নতুন পরীক্ষা হয়ে সামনে এসেছে বলেও জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

অন্যদিকে জাতিসংঘে দেওয়া এক চিঠিতে ইরান বলেছে, তারা আর উত্তেজনা চাইছে না।

জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস এবং নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ভেনেসা ফ্রেজিয়ারকে দেওয়া এক চিঠিতে তেহরান জোর দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের ওপর তার হামলা ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরানের আত্মরক্ষার একটি আইনি এবং ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ।

এছাড়া গত ১ এপ্রিল দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইরায়েলের প্রাণঘাতী বিমান হামলার নিন্দা করতে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতার নিন্দাও করেছে জাতিসংঘে অবস্থিত ইরানি মিশন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের একজন দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে ইরান জাতিসংঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের নিহিত উদ্দেশ্য ও নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমাদের এই ধারাবাহিক অবস্থান এটিই পুনর্ব্যক্ত করে যে, দেশটি এই অঞ্চলে উত্তেজনা বা সংঘাত চায় না।


আরও খবর