Logo
শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বাড়ছে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

যুক্তরাষ্ট্রের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম যাতে বন্ধ না হয়, সেজন্য নির্ধারিত সময়সীমার আগেই সরকারি শাটডাউন এড়াতে কংগ্রেস দ্বারা পাস করা স্বল্পমেয়াদি তহবিল বিলে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর ফলে ফেডারেল এজেন্সিগুলো সচল থাকছে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। যেটিকে বিজয় হিসেবেই দেখছে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরা।

গত ১ অক্টোবর বিলটি পাস হওয়ায় শাটডাউনের সংকট এড়ালেও নির্বাচনকে ঘিরে মার্কিন রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে। ভোটকে ঘিরে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মাঝে মাথাচাড়া দিচ্ছে রাজনৈতিক নানা ইস্যু।

এরই মধ্যে এক টকশোতে ফ্লোরিডার কনজারভেটিভ রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ম্যাট গেটজ বলেছেন, চলতি সপ্তাহেই প্রতিনিধি সভার রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠদের নেতা হাউস স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থিকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করবেন। সরকারি শাটডাউন এড়াতে ম্যাকার্থিবিরোধী ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতাদের প্রায় সর্বসম্মত জোটকে ভোটদানে স্বাগত জানানোর পর এমন বক্তব্য সামনে এলো।

তবে ম্যাকার্থি মার্কিন স্পিকারশিপের বিরুদ্ধে গেটজের পদক্ষেপের বিষয়ে উদ্বিগ্ন নন টেলিভিশনের এক শোতে এমনটি জানিয়ে তিনি বলেছেন, আমি এ অবস্থা অতিক্রম করে ফেলব। তিনি (ম্যাট গেটজ) কিছু করার চেয়ে টিভি ইন্টারভিউ দেওয়ার ব্যাপারে বেশি আগ্রহী। তিনি আমাদের শাটডাউনের দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন।

রিপাবলিকান পার্টির এ নেতা আরো বলেন, শাটডাউনের ফলে ম্যাট গেটজের কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টে বসবাসকারী সেনা কর্মকর্তাদের বেতন বিলম্বিত হতে পারত।

এদিকে, রিপাবলিকান আইন প্রণেতাদের এমন দ্বন্দ্বে ক্ষুব্ধ বাইডেন। এ নিয়ে নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেছেন, রবিবার থেকে শুরু হওয়া অর্থবছরের সামগ্রিক ব্যয়ের সীমা নিয়ে কয়েক মাস আগে ম্যাকার্থির সঙ্গে তিনি যে চুক্তিটি করেছিলেন, সেটি তাদের মেনে চলা উচিত। রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা ওই চুক্তির ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল এবং তারপর থেকে তারা এটি আরো সীমিত করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

এর আগেও এক টেলিভিশন শোতে হোয়াইট হাউসের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থিকে নিয়ে তিনি বলেছিলেন, প্রায় এমন কোনো প্রতিশ্রুতি নেই, যা তিনি লঙ্ঘন করেননি।

হোয়াইট হাউসের ৪৩৫ সদস্যের মধ্যে ২২১ জন রিপাবলিকান এখনো ম্যাকার্থিকে স্পিকার হিসেবে সমর্থন করছেন। ম্যাট গেটজকে চেম্বারের আরেক নেতা হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য প্রয়োজন অন্তত ২১৮ সদস্যের সমর্থন, যেখানে তিনি অনেক পিছিয়ে আছেন।

সূত্র : রয়টার্স ও ভয়েস অফ আমেরিকা।


আরও খবর



প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে জাটকা নিধন

প্রকাশিত:রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

জাটকা রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের মাছ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নদীর অভয়াশ্রম এলাকা মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞা।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স, জনপ্রতিনিধি, জেলে নেতা ও জেলেদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন জেলা প্রশাসক ও মৎস্য অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসন।

এছাড়া নদী উপকূলীয় জেলেপাড়া ও মৎস্য আড়তগুলোতে জাটকা না ধরার জন্য সচেতনতামূলক সভা, লিফলেট বিতরণ ও ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।

এদিকে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার। মাছ ধরা বন্ধে নদীর সীমানায় বসানো হয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা টাস্কফোর্স এবং কোস্টগার্ডের ক্যাম্প। তবে এতেও থামছে না জাটকা নিধন।

অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে জাটকা মাছ নিধন। বিষয়টি শিকারও করেছেন জেলে ও মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতিরা। তবে মৎস্য কর্মকর্তা বলেছেন, অপপ্রচার চালাচ্ছেন জেলে ও আড়তদাররা।

দিনের আলোয় নদীতে মাছ ধরার দৃশ্য তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেলেও রাতের আঁধারে সরকার ঘোষিত অভয়াশ্রম থাকছে মৎস্য শিকারি জেলেদের দখলে। ভোরের আলোয় মেঘনা নদীর তীরে সারি সারি নৌকায় ভর্তি ভেজা জাল লক্ষ্য করা গেছে।

মেঘনা নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক জেলে নৌকায় ভেজা জাল পরিষ্কার করছেন। দূরে কিছু নৌকা তখনও মাছ ধরায় ব্যস্ত। কিছু নৌকা থেকে পাইকাররা মাছ উঠাচ্ছেন বাজারে বিক্রির জন্য।

উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের মালোপাড়া-সংলগ্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে জাটকা। দুপুরে আমিরাবাদ মৎস্য আড়তে গিয়ে একই চিত্র দেখার মেলে। আড়তে অসংখ্য পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতার কোলাহল। মাছ বেচাকেনার দামদরের কাজে ব্যস্ত সবাই। খানিকটা দূরে অপেক্ষমাণ কয়েকটি পিকআপ ভ্যান। সেসব ভ্যানে করে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাবে জাটকা ইলিশ।

মতলব উত্তরের জেলে ইসমাইল, মালেক বেপারী, আরশাদ প্রধান, রমিজ ছৈয়ালসহ একাধিক জেলে জানান, তারা মৎস্য অফিসে ইমান আলীর মাধ্যমে টোকেন নিয়েছেন। এ টোকেন দিয়ে তারা নদীতে মাছ ধরেন। টোকেন ছাড়া নদীতে মাছ ধরতে নামলে প্রশাসন তাদের জেল-জরিমানা করে।

উপজেলার ষাটনল এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা ফুলচান বর্মনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, জেলেদের পর্যাপ্ত সুবিধা ও বিকল্প কর্মসংস্থান দিতে না পারলে সরকারের উদ্দেশে বাস্তবায়ন হবে না।

উপজেলার এখলাসপুর, আমিরাবাদ, বাবুবাজার ও কালিরবাজার আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতিরা বলেন, মাছ না ধরলে মানুষ না খেয়ে মরবে। জেলেরা আছে খুবই অভাব অনটনে। জাল দিয়ে মাছ ধরে চলে তাদের সংসার। তাই আমরা সবকিছু ম্যানেজ করেই বাজার চালিয়ে যাচ্ছি।

অভিযোগের বিষয়ে ইমান আলী বলেন, টাকা নিয়ে টোকেন দেওয়ার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত জেলেদেরকে তাদের মতো করে নদীতে নামায় আড়তদাররা।

রাতে মেঘনা নদী জেলেদের দখলে থাকে আপনারা কি রাতে অভিযান করেন এমন প্রশ্নের জবাবে মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী বলেন, ফোর্স কম। তাই রাতে অভিযান পরিচালনা করতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। তারপরও আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।

মতলব উত্তর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, আমরা নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। যারা আইন অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। জেলেদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের নামে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা সঠিক নয়।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে মৎস্য বিভাগকে আরো আন্তরিক হতে হবে।


আরও খবর



সীমিত শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মাভাবিপ্রবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন

প্রকাশিত:সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :

টাংগাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলা শুভ নববর্ষ ১লা বৈশাখ-১৪৩২ পালন করা হয়েছে। 

এ উপলক্ষে সোমবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল আজীম আখন্দ-এর নেতৃত্বে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিন করে মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় সকল অনুষদের ডিনবৃন্দ, গ্রন্থাগারিক, শিক্ষার্থীকল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, অফিস প্রধান এবং অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়া নববর্ষ উপলক্ষে মুক্তমঞ্চে মাভাবিপ্রবি সাহিত্য সংসদের নববর্ষ বই মেলা, রোটারেক্ট ক্লাব অব মাওলানা ভাসানীর খেলাধুলা ও খাবারের দোকান, ধ্রুবতারার আয়োজনে পান্তা-ইলিশ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মাভাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটি ও মাভাবিপ্রবি ক্যারিয়ার ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

এতে অংশগ্রহণ করেন সীমিত সাধারণ শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থীরা।


আরও খবর



বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা সৌদির

প্রকাশিত:রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

পবিত্র হজ সামনে রেখে নিরাপত্তা ও বাড়তি ভিড় এড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ নিল সৌদি আরব। হজ মৌসুমে বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ ১৩টি দেশের ওপর ওমরাহ, ব্যবসা ও পারিবারিক ভিসার সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সৌদি আরব। খবর জিয়ো নিউজ

জানা যায়, ওমরাহ, ব্যবসা ও পারিবারিক ভিসার ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা জুনের মাঝামাঝি শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ওমরাহ ভিসাধারীরা ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সৌদি আরবে প্রবেশ করতে পারবেন। এই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, নাইজেরিয়া, জর্ডান, আলজেরিয়া, সুদান, ইথিওপিয়া, তিউনিসিয়া ও ইয়েমেন। সূত্র জানায়, সাময়িক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আইন অমান্যকারীদের সৌদি আরবে পুন:প্রবেশ ও অবস্থানে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।


আরও খবর



মিয়ানমারে ফের ভূমিকম্প, নিহত ছাড়াল ৩০০০

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৩ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৩০০০ ছাড়িয়েছে। শুক্রবারের (২৮ মার্চ) পর থেকে একের পর এক কম্পন অনুভূত হয়েছে দেশটিতে। বুধবার (২ এপ্রিল) রাতেও ৪.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছে।

শুক্রবারের জোরালো ভূমিকম্পের পর থেকে এখনও মাঝে মধ্যে কম্পন (আফটারশক) হয়ে চলছে মিয়ানমারে। বুধবার রাতেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে মিয়ানমারে।

ভারতের ভূবিজ্ঞান সর্বেক্ষণ সংস্থা (ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি) অনুসারে, কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৮। ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৫ কিলোমিটার গভীরে কম্পনটি অনুভূত হয়েছে। বুধবার বিকেলে ৪.৩ মাত্রার আরো একটি কম্পন অনুভূত হয়েছে মিয়ানমারে।

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার থেকে ৩০০০-এরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি চলছে। তার মধ্যে এই ভূমিকম্পে পরিস্থিতি আরো উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

দেশটির জান্তা-বিরোধী পিপল্‌স ডিফেন্স ফোর্স আগেই ভূমিকম্প পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল। বুধবার মায়ানমারের জুন্টা সেনাও সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে।

গত শুক্রবার সকালে প্রথমে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মায়ানমারের মাটি। তার পর থেকে পর পর ১৫ বার ভূকম্প-পরবর্তী কম্পন হয়েছে সে দেশে। ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ভেঙে পড়েছে বহু ভবন, রাস্তা, সেতু। আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ। খোঁজ মিলছে না ৪ শতাধিক মানুষের।

এরই মধ্যে বুধবার মিয়ানমারের এক হোটেলের ধ্বংসাবশেষ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এক যুবককে।

শুক্রবারের ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ডেও। দেশটির রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মীণাধীন ৩০তলা ভবন ভেঙে পড়ে। সেখানে বহু মানুষের মৃত্যুর কথা জানা গেছে।

উদ্ধারকারীদের ধারণা, এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। তাদের খুঁজে বের করার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল।


আরও খবর



আশার আলো দেখছেন রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত:শনিবার ০৫ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয়ে থাকা আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে আংশিক যাচাই-বাছাইয়ে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার। আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গার চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের অংশ হিসেবে ছবি ও নাম মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। ওই তালিকার বাকি সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই কাজও দ্রুত সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমার।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পের অধিকাংশ রোহিঙ্গা আশার আলো দেখছেন। দীর্ঘদিন পর নিজের জন্মভূমিতে ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন তারা। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার খবরে ইতোমধ্যে অধিকাংশ ক্যাম্পে হুলুস্থুল কাণ্ড বয়ে যাচ্ছে, অনেকে আনন্দ উল্লাসে মেতেছে। তবে উদ্বিগ্ন ও ভয়ের কারণও দেখছেন অনেক রোহিঙ্গা। এছাড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে জটিল সমীকরণও দেখছেন বিশ্লেষকরা।

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা ফয়েজ উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন পর একটা সুসংবাদ পেলাম। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আরাকানে ফিরে যেতে। আরাকান আমাদের দেশ আমাদের চিরস্থায়ী বসবাস সেখানে হবে৷ রোহিঙ্গা ফয়েজ উল্লাহ আরও বলেন, আমাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

রোহিঙ্গা বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, জন্মভূমি আরাকানে ফিরতে পারবো খবরটি শুনে খুব ভালো লেগেছে। জানি না কবে সেটি কার্যকর হবে। তবে দাবি থাকবে আরাকানে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জীবন জীবিকার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে আজকেই আমরা (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।

রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা সালাউদ্দিন বলেন, আরাকান আমাদের জন্মভূমি, সেখানে ফিরতে পারলে আমাদের সকলের জন্যে ভালো। কিন্তু এই প্রত্যাবাসন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কি না! সেটিও ভাবতে হচ্ছে। বর্তমানে আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের অনেক রাজ্য আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসন সঠিক প্রক্রিয়ায় হবে কি না সেটি নিয়েও ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।

উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় নাগরিকেরা জানান, অনেক হয়েছে এবার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। তাদের কারণে স্থানীয়রা অনেক হয়রানি, বিড়ম্বনা ও ঝুঁকির মধ্যে আছে। এসব রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের বনভূমি, কৃষিজমি, শ্রম বাজার নষ্ট হয়ে গেছে। বেড়ে গেছে খাদ্য পণ্যের দাম। রোহিঙ্গাদের বর্জ্যের কারণে শত শত একর কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে আছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা জন্মসনদ ও জাতীয়তা সনদ নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। স্থানীয় এবং দেশকে ঝুঁকিমুক্ত করতে রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এত সহজ হবে না। কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এই প্রক্রিয়াটি আলো'র মুখ দেখতে পারে। অধিকাংশ রোহিঙ্গা আরাকানে ফিরতে ইচ্ছুক। তবে কিছু এনজিও সংস্থার 'প্রেসক্রিপশন' এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থামিয়ে দিতে পারে। এতদিন রোহিঙ্গাদের ভুলভাল বুঝিয়ে কিছু এনজিও সংস্থা ফায়দা নিয়েছিল। কারণ রোহিঙ্গারা যতদিন বাংলাদেশে থাকবে, ততদিন তাদের (এনজিও) লাভ। দেশ এবং কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রক্ষায় দ্রুত সময়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হোক। তারা যতদিন থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকবে বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি।

বাংলাদেশের একজন সাবেক কূটনীতিক মুন্সী ফয়েজ আহমদ জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে, এখনই কোনো উপসংহারে পৌঁছানো উচিত হবে না বলে মনে করছেন তিনি। নিঃসন্দেহে এটি একটি পজিটিভ ডেভেলপমেন্ট। কিন্তু, এর মধ্য দিয়ে কনক্লুসিভ ডেভেলপমন্টে পৌঁছানো সহজ হবে না। কারণ রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি ও রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। সময়টা একটু জটিল। রাখাইন এখন প্রধানত আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। সেখানে জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। ফলে, জান্তার তৎপরতার পাশাপাশি অন্যদের সম্পৃক্ততা জরুরি। যেহেতু এক লাখ আশি হাজার রোহিঙ্গার একটা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিললো, আজ হোক কাল হোক প্রত্যাবাসনের জন্য একটা প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কাজ করবে এই স্বীকৃতি। তবে, রাখাইনে জান্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ ফিরে না পেলে, সেগুলো নিছকই দলিল হয়েও থেকে যেতে পারে। আর যদি জান্তা বাহিনী বা কেন্দ্রীয় সরকার কখনো নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়ও, স্থানীয় প্রশাসনে রাখাইনদের আধিপত্য থাকবেই। সেক্ষেত্রে, তাদের সঙ্গেও একটা বোঝাপড়া কিংবা আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন সাবেক এই কূটনীতিক।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। রাখাইনের পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থিতিশীল, যেখানে নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিবও বলেছেন, রাখাইনে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই প্রত্যাবাসনের কথা বিবেচনা করা হবে। এখন সেখানে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য বাড়িঘর নেই। দ্বিতীয়ত, যেসব এলাকায় রোহিঙ্গাদের বসতি ছিল, সেসব এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে? কখন, কীভাবে, কার ক্লিয়ারেন্সে তা সম্ভব হবে এসবই অনিশ্চিত।

সরকার প্রধানের দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সঙ্কট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমানকে এ তথ্য জানান মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ। বাংলাদেশ ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ছয়টি ধাপে ওই আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছিল।

প্রধান উপদেষ্টার দফতর বলছে, মিয়ানমার প্রথমবারের মতো ‘প্রত্যাবাসনের যোগ্য’ রোহিঙ্গাদের এমন তালিকা দিল, যা দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর থেকে কক্সবাজার ও উখিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বাঁশ আর প্লাস্টিকের খুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করে রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতেও সই করে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চলার এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের প্রতিশ্রুতিতে রোহিঙ্গারা আস্থা রাখতে না পারায় সেই চেষ্টা ভেস্তে যায়।

এরপর আসে কোভিড মহামারী; রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগেও ঢিল পড়ে। বিশ্বজুড়ে সেই সংকটের মধ্যেই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সামরিক জান্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আসে নতুন ধাক্কা।

এর মধ্যে চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের অংশ হিসেবে কয়েকবার রোহিঙ্গাদের ফেরানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের যুদ্ধের তীব্রতার মধ্যে প্রত্যাবাসনের আলোচনা কমে আসে। উল্টো রাখাইনে যুদ্ধের কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়।

এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে আরও ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া সব এলাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দখলে চলে যাওয়ার মধ্যে নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগেও ভাটা পড়ে ঢাকার।

এর মধ্যে গত ১৪ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গাদের কষ্ট নিজের চোখে দেখেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে তিনি সেদিন ইফতারও করেন।

প্রত্যাবাসনই যে রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান, সে কথা তুলে ধরে জাতিসংঘ প্রধান সেদিন বলেন, “শেষমেষ মিয়ানমারেই সমাধান পেতে হবে আমাদের। এখানে থাকা সব শরণার্থীর স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হব না।


আরও খবর