Logo
শিরোনাম

১৫০ কোটির ঘরে ‘রাধে শ্যাম’

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৫ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ |

Image

বলিউড ভেল্কি দেখিয়েই যাচ্ছে। ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ প্রথম দিনেই ১০ কোটি। প্রভাস-পূজা হেগড়ের প্রথম জুটি মাত্র তিন দিনে ১৫১ কোটি ব্যবসা করে ফেলল! সমালোচিত হয়েও প্রযোজক, পরিচালকের মুখে যুদ্ধ জয়ের চওড়া হাসি এনে দিয়েছে ‘রাধে শ্যাম’।

বলিউডের খবর, মুক্তির আগেই নাকি স্যাটেলাইট, ডিজিটাল সত্ত্ব বিক্রি করে ২০০ কোটি উপার্জন করে ফেলেছে এই ছবি।

প্রভাস সম্ভবত নিজেও বোঝেননি প্রথম ছবিতেই তার আর পূজার জুটি এত ভালো লাগবে দর্শকদের। ‘বাহুবলী’-এর পরে এই ছবিতে তিনি হস্তরেখাবিদ। এ ছাড়া, ছবিতে শোনা গেছে কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের কণ্ঠস্বর। ছবির শুট হয়েছে ইতালি, জর্জিয়া এবং হায়দরাবাদে।

১১ মার্চ মুক্তি পেয়েছে গুলশন কুমার এবং টি-সিরিজের ‘রাধে শ্যাম’। ইউভি ক্রিয়েশনের প্রযোজনায়, রাধা কৃষ্ণ কুমার পরিচালিত ছবির সম্পাদক কোটাগিরি ভেঙ্কটেশ্বর রাও। প্রযোজক ভূষণ কুমার।


সূত্র : আনন্দবাজার


আরও খবর



৩১ দিন পর মুক্ত জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ২৩ নাবিক

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

অবশেষে মুক্ত হয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটিতে থাকা ২৩ নাবিকই সুস্থ রয়েছেন।

জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ৩৫ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, অল্প কিছুক্ষণ আগে আমরা সুসংবাদ পেয়েছি। আমাদের জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২৩ নাবিকই অক্ষত অবস্থায় আমরা ফেরত পেয়েছি।আগামীকাল (রোববার) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।

জানা গেছে, জলদস্যুদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ নিয়ে একটি বিমান বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে জিম্মি জাহাজের ওপর চক্কর দেয়। এসময় জাহাজের ওপরে ২৩ নাবিক অক্ষত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর বিমান থেকে ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ সাগরে ফেলা হয়। স্পিডবোট দিয়ে এসব ব্যাগ জলদস্যুরা কুড়িয়ে নেয়। জাহাজে উঠে দাবি অনুয়ায়ী মুক্তিপণ গুনে নেয় জলদস্যুরা। তবে চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটি যথাসময়ে ছেড়ে দেয়নি দস্যুরা। পরবর্তীতে আশপাশে কেউ আটক করছে কি না, সেটি নিশ্চিত হয়ে জাহাজ থেকে দস্যুরা নেমে যায়।

মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সময় শনিবার মধ্যরাতে ২৩ নাবিক নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।

যদিও মুক্তিপণ কত এবং কীভাবে দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জাহাজের মালিকপক্ষের কোনো কর্মকর্তা।

কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান বলেন, সমঝোতার পর নাবিকসহ জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। জাহাজের চারপাশে একাধিক আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।

এর আগে গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।

কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন এমভি আবদুল্লাহ আগে গোল্ডেন হক নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেয়। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী এরকম মোট ২৩টি জাহাজ আছে কবির গ্রুপের বহরে।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।


আরও খবর



ঢাকায় এসেছেন টাইগারদের নতুন কোচ

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

টাইগারদের স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার নাথান কেলি নিয়োগ পেয়ে ঢাকায় পৌঁছেছেন। রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন তিনি।

গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিসিবির ক্রিকেট অপরারেশন্স ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফিস। সোমবার কেলি এসেছিলেন মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে শুরু হবে কেইলির অধ্যায়।

অস্ট্রেলিয়ার এই কোচ দুই বছরের চুক্তিতে জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করবেন। তিনি এর আগে পেশাদার ক্রিকেট ও রাগবিতে কাজ করেছেন। এছাড়া চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্রিকেট নিউ সাউথ ওয়েলসে ফিজিক্যাল পারফরম্যান্স কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। 


আরও খবর



আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অর্ধেকের বেশি আমানত কোটিপতিদের

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যত টাকা জমা আছে, তার অর্ধেকের বেশি কোটিপতিদের অর্থ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় মোট আমানতের পরিমাণ ৪৪ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৫৫ শতাংশের বেশি বা ২৪ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা কোটিপতিদের আমানত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব আমানতকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় এক কোটি থেকে শুরু করে দেড়শ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১০০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন এ রকম আমানত হিসাব রয়েছে ছয়টি। এই ছয় হিসাবেই রয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বশেষ আর্থিক অবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশে সরকারি, বেসরকারি ও বিশেষায়িত মিলিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৪০টি। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন তিনটি, বেসরকারি মালিকানাধীন ৩২টি ও বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পাঁচটি। এই ৪০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গত ডিসেম্বর শেষে গ্রাহক বা আমানতকারীর হিসাব ছিল চার লাখ ৩১ হাজার ২২১টি। এসব হিসাবের মধ্যে কোটি টাকার বেশি আমানত জমা আছে, এমন হিসাবের সংখ্যা পাঁচ হাজার ২৮৭। আর পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক কোটি টাকার কম আমানত রেখেছেন এমন আমানতকারীর হিসাব রয়েছে চার লাখ ২৫ হাজার ৯৩৪টি।

পরিসংখ্যান বলছে, গত ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যত আমানত ছিল, তার প্রায় ৫৫ শতাংশই রয়েছে মাত্র সোয়া এক শতাংশ আমানতকারীর হিসাবে। আর পৌনে ৯৯ শতাংশ আমানতকারীর হিসাবে ছিল মোট আমানতের সাড়ে ৪৪ শতাংশ। অর্থাৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চার লাখ ২৫ হাজার ৯৩৪ জন আমানতকারী মিলে জমা রেখেছেন ১৯ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। তার বিপরীতে মাত্র পাঁচ হাজার ২৮৭ জন আমানতকারী জমা রেখেছেন ২৪ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদেরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, দেশে বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। একশ্রেণির মানুষ রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে অর্থবিত্তের মালিক হয়ে উঠছেন। তার বিপরীতে উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তসহ বিপুল জনগোষ্ঠীর সঞ্চয়ে টান পড়ছে। দেশে বৈষম্য এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেটিকে চরম উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা। তাই বৈষম্য কমাতে ধনীদের ওপর কর বাড়ানোর প্রস্তাব করে আসছেন তারা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় যে আমানত রয়েছে, তার মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির আমানত যেমন আছে, তেমনি রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক আমানতও। ফলে কোটি টাকার বেশি আমানত যেসব হিসাবে রয়েছে, তার সবই ব্যক্তিশ্রেণির আমানত নয়, প্রাতিষ্ঠানিক আমানতও রয়েছে এর মধ্যে।

সরকারি পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে দেশের প্রকট বৈষম্যের তথ্য। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএসের তথ্য বলছে, দেশের সবচেয়ে বেশি ধনী ১০ শতাংশ মানুষের হাতেই এখন দেশের মোট আয়ের ৪১ শতাংশ। অন্যদিকে সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষের আয় দেশের মোট আয়ের মাত্র ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। এ তথ্য বিবিএসের খানার আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২-এ উঠে এসেছে।

একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈষম্যের নির্দেশক জিনি সহগ সূচক বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে দশমিক ৪৯৯ পয়েন্টে। কোনো দেশে এ সূচক দশমিক ৫০০ পয়েন্ট পেরোলেই সেই দেশকে উচ্চ বৈষম্যের দেশ হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ উচ্চ বৈষম্যের দেশের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ।


আরও খবর



গ্যাস-বিদ্যুৎ-সারের দাম বাড়ানোর সুপারিশ আইএমএফ'র

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

ভর্তুকি কমাতে আবারও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মিশন।

আইএমএফের ডেভেলপমেন্ট মাইক্রোইকোনোমিক্স ডিভিশনের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে এ সুপারিশ করেছে। এর আগের সফরেও একই সুপারিশ করে আসছিল সংস্থাটি।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অর্থবিভাগের বাজেট অনুবিভাগের সঙ্গে ভর্তুকি নিয়ে বৈঠক করে মিশনের একটি অংশ। এতে ভর্তুকি কমিয়ে আনতে পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য একটি পর্যায়ক্রমিক সূত্রভিত্তিক মূল্য সমন্বয় ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে আইএমএফ মিশন। তবে সার্বিক বাজেট ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে অন্যান্য খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনার জন্যও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে প্রতিনিধিদল।

এ প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আপাতত কৃষিতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিয়ে যাবে সরকার। তবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি কমাতে পর্যায়ক্রমে এসবের দাম বাড়ানো হবে।

এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে সরকার যে ব্যাংক একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে স্বাগত জানিয়েছে মিশন। তবে একীভূতকরণের পর ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা যেনো খারাপ না হয়ে যায়, এতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এজন্য তাড়াহুড়া না করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে একীভূকরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছেন প্রতিনিধিদলের কর্মকর্তারা।

এছাড়া ঋণ খেলাপিদের বিষয়ে বিশেষ ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রস্তুত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাংকখাতে সার্বিকভাবে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছে মিশন।


আরও খবর



নেশাগ্রস্ত স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

পুলক ঘটক, সিনিয়র সাংবাদিক :

নেশাগ্রস্ত ও বিকৃত স্বভাবের স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে গতকাল (১৭ এপ্রিল বুধবার) ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রিয়ন্তী সাহা নামে ১৯ বছর বয়সের এক তরুণী। অত্যাচারিত মেয়েটি স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স চায়। কিন্তু হিন্দু আইনে ডিভোর্স নেই। পরে “শ্বশুরবাড়িতে হামলা করার সময় চার বোতল ফেনসিডিলসহ” মেয়েটির স্বামী দীপকে প্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আচ্ছা বলুন দেখি, দীপ “ফেনসিডিলসহ শশুরবাড়িতে হামলা”র ঘটনাটি না ঘটালে আর কোন আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত? হিন্দু আইনে প্রিয়ন্তী সাহা প্রতিকার পাবে কিভাবে? প্রকৃত আইনে প্রতিকারের সুযোগ না থাকলে বিকৃত পন্থায় কিভাবে কি করতে হয় সে বিষয়ে আমাদের দেশের মানুষ সিদ্ধহস্ত। সবকিছুতেই বিকৃত পন্থার অনুশীলন!

শুরুতেই ঝরে গেছে মেয়েটির মধুময় দাম্পত্য জীবনের সকল সম্ভাবনা। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী মাত্র এক মাস আগে গরীবের মেয়ে প্রিয়ন্তীর বিয়ে হয়েছিল এক কোটিপতির নেশাগ্রস্ত ছেলে দীপের সাথে। বিয়ের প্রথম রাত থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ অনুযায়ী, দীপ তাকে জোর করে নেশা করাতো; এমনকি স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের গোপন মুহুর্তগুলো ফিল্মিং করে ফেসবুকে দিত। 

মেয়েটি ঐ স্বামীর সাথে সংসার করতে রাজি নয়। ছেলের কাকাও নেশাগ্রস্ত দীপের দুরাচারের কথা স্বীকার করেছে। এ পর্যন্ত এই তথ্যগুলি মিডিয়ায় এসেছে। এরপর দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব যখন দীর্ঘায়িত হবে, তখন হয়তো ছেলের পক্ষ থেকে মেয়েটির চরিত্রের দোষ ছড়ানো হবে। এসব নিয়ে সমাজে খোশগল্প হবে। কিন্তু এর স্থায়ী আইনগত সমাধান এবং এধরনের অবস্থার শিকার হওয়া মেয়েদের সুস্থ্য স্বাভাবিক দাম্পত্য ভবিষ্যৎ তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাববে না! 

আমরা যখন হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ ও মেয়েদের পুনঃবিবাহের আইন চাচ্ছি তখন আমাদের দেশের শিক্ষিত-অশিক্ষিত তথাকথিত প্রগতিশীল কিছু হিন্দু বলছে “হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের অবিচ্ছেদ্য বন্ধন।” হিন্দু বিয়ে ভাঙা সম্ভব নয়। মেয়েদের পুনরায় বিয়ে হতে পারে না। বাটপারদের এসব কথা বাস্তবসন্মত নয়, প্রিয়ন্তী ও দীপের ঘটনা তার প্রমাণ। এরকম প্রমাণ অসংখ্য। 

প্রিয়ন্তী নামক ১৯ বছরের এই মেয়েটির জন্য বাকি জীবন একাকি কাটানো কতটা ভাল এবং নিরাপদ? বর্তমান স্বামীর সাথে বৈধভাবে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে তাকে অন্য কোনো ভাল যুবকের সাথে বিয়ে দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ দিলে কি অধর্ম হবে? অথচ বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিবাহের বিধান নেই। ভারতের হিন্দু আইনে আছে; হিন্দু শাস্ত্রেও বিধান আছে। 

বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ না থাকা সত্ত্বেও এখন আইনকে পাশ কাটিয়ে বহু দম্পত্তি অবৈধপন্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে। অবৈধভাবে মেয়েদের নতুন করে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। জীবনের বাস্তবতায় যে বিষয়ের চাহিদা আছে বা অনিবার্যতা আছে, তাকে শুধু আইনগতভাবে বাঁধা দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যায় না। 

হিন্দু বাটপাররা অবৈধ বিবাহ বিচ্ছেদ, মেয়েদের অবৈধভাবে দ্বিতীয় বিয়ে দেয়া, অবৈধভাবে দাম্পত্য সম্পর্ক করা, অবৈধভাবে সন্তান উৎপাদন এবং সেই অবৈধ সন্তানের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা ইত্যাদি সব জিইয়ে রাখতে চায়। সব অবৈধকর্ম মানবে, কিন্তু বৈধ বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আইন প্রণয়ন মানবে না। ইংরেজদের ভগবান হিসেবে বিশ্বাস করে হিংরেজদের রেখে যাওয়া আইন মানবে! 

হিন্দুদের বড় বড় সংগঠন আছে। অথচ বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ ছাড়া হিন্দুদের কোনো সংগঠনের দাবিনামায় প্রিয়ন্তীর মতো বিড়ম্বিত জীবনের মেয়েদের মুক্তির জন্য বা নারী অধিকারের পক্ষে একটিও দাবি নেই। সবচেয়ে বড় বাটপার সেইসব হিন্দু, যারা নিজেদেরকে শিক্ষিত ও প্রগতিশীল দাবি করে; ইসলামী মৌলবাদের বিপক্ষে কথা বলে অথচ হিন্দু সমাজের সমস্যাগুলোর বিষয়ে নিরব থাকে। শুধু নিরব নয়, এরা কেউ প্রকাশ্যে, কেউ নিরবে এবং কেউ কেউ ইনিয়েবিনিয়ে ”হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” গল্পই চালিয়ে যাচ্ছে। 

মন্ত্র পরে নাকি নারী ও পুরুষের দুই আত্মা এক করে দেয়া যায়! দুই আত্মার বন্ধন হলেও সেটা আবার পুরুষের জন্য নয়। পুরুষ বিয়ে করে এক বউকে ঘরে পৌঁছে দিয়েই চাইলে এক ঘন্টার মধ্যে আবার আরেকটি বিয়ের জন্য দৌড় দিতে পারে। এক পিঁড়িতে বসেই একাধিক মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। আরও বহু নারীর সঙ্গে “জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” তৈরি করতে পারে। সবগুলো বিবাহবন্ধনে শুধু নারী আটকাবে, পুরুষ মুক্ত। হিন্দু আইনে পুরুষের জন্য যতখুশি বিয়ে করতে বাধা নেই। বিয়ে ছাড়াও যত্রতত্র গমণে পুরুষের বাধা নেই; কারণ পুরুষের জন্য “সতীত্ব” নয়। 

হিন্দু পুরুষের বহুবিবাহের সুযোগ বন্ধ করার কথা বললে জন্মজন্মান্তরের বন্ধনবাদী দাদারা হৈ হৈ করে বাধা দিতে আসে। বিবাহ বিচ্ছেদ আইনের দাবি জানালেও প্রগতিশীলতার মুখোশে প্রতিক্রিয়াশীল শয়তনরা আপত্তি করে। আমরা বহুবার শাস্ত্রবিধি দেখিয়ে বলেছি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিয়ে দেয়া সনাতন ধর্মে বৈধ। শাস্ত্রগ্রন্থে এর সুস্পষ্ট বিধান আছে; পৌরাণিক আমলে বিবাহ বিচ্ছেদের নজিরও আছে। একজনেরও সামর্থ্য হয়নি শাস্ত্র দেখিয়ে আমাদের দাবি ভুল প্রমাণ করার। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক কায়েমি স্বার্থ ও হীনমন্যতার ঊর্দ্ধে তারা উঠবে না। 

এরা গরু-বাছুর ও পণ্যসামগ্রির মতো মেয়েকে দান করার পক্ষে। শুধু দান নয়, এর নাম আবার “সম্প্রদান”! অর্থাৎ কোনও প্রকার শর্ত ছাড়া, সম্পূর্ণভাবে স্বত্ত্ব ত্যাগ করে ধর্মার্থে কন্যাদান। মেয়ে নাকি দানের বস্তু! দানের মধ্য দিয়ে মেয়ের উপর বাবার আর কোনও স্বত্ব থাকবে না; কন্যা দান করে বাবা পুণ্য অর্জন করবে। বাবার গোত্রেও মেয়েটির আর পরিচয় থাকবে না। একদম গোত্রান্তর! 

অনেকবার বলেছি, তোমরা একটি প্র্যাকটিক্যাল দৃষ্টান্ত আমাকে দেখাও যেখানে, বিয়ের মন্ত্রের মাধ্যমে মেয়েটির গোত্র বদলে গেছে। মেয়েটির শরীরে আর বাবা-মায়ের ডিএনএ নেই –পরীক্ষা করার পর দেখা গেছে বিয়ের পর মেয়েটির সঙ্গে তার স্বামীর অথবা তার শশুর- শাশুড়ির ডিএনএ মিলছে। একজনও ডিএনএ টেস্ট করে পরীক্ষা দিতে রাজি নয়। মেয়েকে দান করেছ, তার সাথে তোমার আর সম্পর্ক নেই! দান করে মেয়েকে কি পর করে দেয়া যায়? তুমি কি বিয়ে দেয়ার পর তোমার মেয়েকে ভিন্ন সম্পর্কে বউদি ডাকতে পারবে? তাহলে গোত্রান্তর কি আসলে মিথ্যা নয়? তোমার মেয়ের গোত্রান্তর হবে কেন বন্ধু? 

শাস্ত্রে কন্যাদানের বিধান আছে, আমরা তা অস্বীকার করছি না। যজ্ঞের পুরোহিতকে স্বালঙ্করা কন্যা দান করলে পুণ্য বেশি হয়। শাস্ত্রে তাই বলা আছে। কিন্তু উপযুক্ত ছেলের কাছে বিয়ে না দিয়ে পুরোহিতকে কন্যাদান করতে কেউ রাজি হয় না। শাস্ত্রে শিশু কন্যাদানকে আরও বেশি মহিমান্বিত করা হয়েছে। আট বছর বয়সী কন্যাদানে পুণ্য অনেক বেশি। অষ্টম বর্ষীয় কন্যার বুড়ো স্বামী মারা গেলে সেই বাচ্চা মেয়েটাকে স্বামীর চিতায় পুড়িয়ে মারলে আরও বেশি পুণ্য অর্জন করা যায়। শাস্ত্রে এসব আছে। কিন্তু সরকার আইন করে সতীদাহ ও বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করেছে। ভারতে পুরুষের বহুবিবহাও নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন কন্যাদানের মতো অসভ্যতা বন্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করার সময় এসেছে। মানুষকে উন্নত হতে হবে, আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞানবিজ্ঞানের সমান্তরালে চলতে জানতে হবে। 

আমি বহুবার শাস্ত্র দেখিয়ে বলেছি, কন্যাদান ছাড়াও বিয়ের বিধান আছে। শাস্ত্রে আট প্রকার বিয়ের বিধান আছে। প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর পারস্পরিক পছন্দে ও সন্মতিতে বিয়ের স্বীকৃতি শাস্ত্রে আছে। সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বিশেষ একটি শাস্ত্রের নির্দিষ্ট কোনো বিধান অনুসরণ করার বাধ্যবাদকতা নেই। 

সনাতন ধর্মে উদ্ভট প্রাচীন কিছু প্রথার নজির যেমন আছে তেমনি প্রথার বাইরে গিয়ে উন্নত হওয়ার তাগিদও আছে। সনাতন ধর্ম প্রগতিশীল। পরিবর্তন ও যুগধর্ম অনুসরণ সনাতন শাস্ত্রে অনুমোদিত। যারা সনাতন শাস্ত্রকে প্রতিক্রিয়াশীলতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নারীর জীবনকে দুর্বিষহ করতে চায় এবং হিন্দু নারীদের দাসীর মতো ব্যবহার করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই এবং জয় আমাদের প্রাপ্য।


আরও খবর