Logo
শিরোনাম

আমি শেখাতে আসিনি, শিখতে এসেছি

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী শিক্ষাবিদ :

 

কখনো কখনো নিজেকে চিনতে পারিনা | হ্যাংলা পাতলা একটা মানুষ এসেছিলাম এই বিশ্ববিদ্যালয়ে | তখন ভাবতাম, আমি শিক্ষক হিসেবে এসেছি | সময় যত গড়িয়েছে ততই বুঝেছি শিক্ষক হওয়া খুব কঠিন, বরং যতই দিন যাচ্ছে ততই বুঝতে পারছি আমি শেখাতে আসিনি, শিখতে এসেছি | আমি শিক্ষক হতে পারিনি, তবে ছাত্র হবার চেষ্টা করছি |

তখন চোখে চশমা ছিলোনা, এখন কানের উপর ভর করে দু'চোখে চশমা জায়গা দখল করে নিয়েছে | যখন চোখে চশমা ছিলোনা তখন ব্ল্যাকবোর্ড আর সাদা চক ছিল সম্বল | বই হাতে কখনো ক্লাসে ঢুকবোনা, নিজেই একটা বই হবার চেষ্টা করবো, এমন একটা চিন্তা নিয়েই আমার এখানকার যাত্রাটা শুরু হয়েছিল | জানিনা নিজে বই হতে পেরেছি কিনা, তবে যাদের ছাত্র হিসেবে পেয়েছি তারাই আমার কাছে এক একটা বই, এক একটা বিস্ময় হয়েছে | ওদের পড়াতে গিয়ে, নিজে শিখেছি | শিখতে গিয়ে বুঝেছি, শিক্ষক হওয়া হয়তো আর কখনো হয়ে উঠবেনা | অদ্ভুত মনে হলেও সত্য, এখনও শিক্ষক হতে পারিনি, তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি | হয়তো এই চেষ্টাটা আমৃত্যুই চলতে থাকবে, কিন্তু শিক্ষক হওয়ার পিপাসাটা কখনোই মিটবেনা |

গবেষণার কিছুই জানতাম না, এখনো জানিনা | এখনও গবেষণা শিখছি, আমার ছাত্ররাই আমাকে শেখাচ্ছে | ওদের নতুন নতুন চিন্তা, নতুন নতুন আইডিয়া, নতুন নতুন স্বপ্ন, আমাকেও বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে আগ্রহী করছে | ওদের মতো এতো মেধাবী আমি নই, ওদের চিন্তার গতির সাথে আমার চিন্তার গতি কখনোই পেরে উঠেনি, বরং ওদের চিন্তা আমার চিন্তাকে এগিয়ে নিয়েছে | আমার কাছে আমার ছাত্ররাই আমার শিক্ষক, আমি তাদের ছাত্র | আর শিক্ষকরা মেধাবী হলে গবেষণায় ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই | বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে মনে হয়েছিল, গতানুগতিক শিক্ষাদানের মধ্যেই বুঝি শিক্ষা বন্দি হয়ে থাকবে | কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ততই বুঝেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের চেয়েও বড় নতুন নতুন জ্ঞানের জন্ম দেওয়া | কিন্তু সেটাতে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কতটা এগিয়েছে, সেটা হয়তো ভাবনার বিষয় | সেখানে আত্মসমালোচনটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ | কিন্তু আত্মসমালোচনাতে আমরা ভয় পাই, যতটা সাহসী আমরা আত্মপ্রচারে | এর সাথে ক্ষমতার অসুখও এখন প্রায় সবার শরীরে বাসা বেঁধেছে | শরীরের রোগ সরানো যায়, মনের রোগ সারানোর কোনো ওষুধও নেই, চিকিৎসাও নেই |

তখন শুনেছি, গবেষণা করার পরিবেশ এই দেশে নেই | গবেষণা করতে দামি দামি যন্ত্রপাতি লাগে, অনেক অর্থের বাজেট লাগে | এতো অর্থ, এতো দামি যন্ত্রপাতি কেনার কি আমাদের সাধ্য আছে | এমন সময়টাতেই আমার ছাত্ররাই খুব কম বাজেটে আধুনিক যন্ত্রপাতি ডিজাইন করেছে, তৈরী করেছে | | গবেষণার অধরা স্বপ্ন ওদের সৃজনশীল সৃষ্টি দিয়েই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে | সেই ধারা এখনও অব্যাহত আছে | ওদের এখন দেখছি, মলিকুলার ডিনামিক্স, ডেনসিটি ফাংশনাল থিওরি, মেটল্যাবের মতো জটিল জটিল বিষয়গুলো কত সহজে সমাধান করছে | তখন আমি মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলোকে এলিয়ে নিচ্ছি, যদি চুলগুলো নড়াতে গিয়ে আমার ভোঁতা মগজটাই নতুন করে নড়েচড়ে উঠে !

ব্ল্যাকবোর্ড-চকের যুগ গেলো, হোয়াইট বোর্ড-মার্কার পেনের যুগ গেলো, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের যুগ গেলো, এখন এসেছে স্মার্ট বোর্ড | খুব আনস্মার্ট আর বোকা মানুষ আমি, স্মার্ট বোর্ডে পড়াতে গিয়ে যখন প্রায় প্রতিদিন খেই হারিয়ে ফেলি, তখন আমার এখনকার মেধাবী ও সম্ভাবনাময় ছাত্ররাই আমাকে শিখিয়ে দিচ্ছে কত সহজে স্মার্ট বোর্ড ব্যবহার করে সারা পৃথিবীর জ্ঞানভাণ্ডারকে হাতের নাগালে আনা যায় | ওদের কাছে শিখতে গিয়ে খুব আনন্দ পাচ্ছি, গর্বিত হচ্ছি, ওরাও আমার মতো বোকা একটা ছাত্র পেয়ে আনন্দ পাচ্ছে | শিক্ষার মধ্যেই তো আনন্দ, যে শিক্ষায় আনন্দ নেই, সেই শিক্ষা মূল্যহীন | বড় বড় মনীষীদের কথা | খুব ছোট একটা মানুষ আমি | কিন্তু যখন দেখছি আমার ছাত্ররা দেশ ছাড়িয়ে সারা পৃথিবী জয় করে চলেছে, তখন চোখে আনন্দ অশ্রু, গর্বিত বুক | সন্তানরা যখন এগিয়ে যায় বাবারা তখন সত্যিকার অর্থেই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হয়ে উঠে |

আমি ঝুলন্ত তারার মতো, কখনো কেঁদেছি, কখনো হেসেছি, কখনো অভিমান করেছি কিন্তু জীবনের সবচেয়ে পরম পাওয়াগুলো আমার প্রিয় সন্তানরাই দিয়েছে | আমি ঝুলন্ত তারা, যেদিন আকাশ থেকে খসে পড়বো, সেদিনও ওদের জীবনজয়ের জয়োধ্বনিগুলো কান পেতে শুনবো | আমার মতো একটা সাধারণ মানুষকে কেউ হয়তো মনে রাখবেনা, এটাই প্রকৃতির নিয়ম, সময়ের স্রোতে সব যে হারিয়ে যায়, তবে জীবনের অনেক না বলা কথা থেকে যাবে মহাকর্ষীয় তরঙ্গে তরঙ্গে |

আমি হয়তো মানুষ না, ছিলামও না, হয়তো আমি একটা চিত্রকরের কল্পনায় আঁকা ছবি | আমি কাঁদছিনা, আমি বৃষ্টিতে কল্পনায় হাটছি, বৃষ্টিতে কাঁদতে গেলে বৃষ্টি সেই কান্না খেয়ে ফেলে, হাসিমুখটা তখন বেরিয়ে আসে | হয়তো কান্না লুকিয়ে হাসির চেষ্টাটাই জীবন | জীবন খুব কঠিন একটা বিষয়, এর পরীক্ষাটাও কঠিন, কারণ জীবনের পরীক্ষায় পাশ-ফেল নেই |


আরও খবর

আমাদের মফস্বল সাংবাদিকতা ও কিছু কথা

মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বামী কত প্রকার? ---- স্বামীপেডিয়া

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪




প্রেসক্লাব ছাড়লেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

ব্যাটারিচালিত রিকশা চালুসহ ১২ দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত গণঅবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছেন অটোরিকশা চালকরা। এর ফলে প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে চলে যান তারা। এরপর থেকে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।

অটোরিকশা চালকদের গণঅবস্থান কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, সোমবার সকাল ১১টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন।

দাবি আদায়ে প্রেসক্লাব ছাড়াও আজ মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সড়ক, তিন রাস্তার মোড়, যাত্রাবাড়ী মোড় ও কামরাঙ্গীরচরে শত শত রিকশাচালক অবস্থান নেন। এতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অফিস ও জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষ বিপাকে পড়েন।

সম্প্রতি হাইকোর্ট এক আদেশে সারাদেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন।

রিটের প্রেক্ষিতে গত দুদিন ধরে সড়ক ও রেলপথ আটকে বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা। শুক্রবারও জুরাইনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে হয়েছে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছোড়া হয় টিয়ারশেল। রেললাইন অবরোধে, পদ্মা সেতু হয়ে রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে চার ঘণ্টা।


আরও খবর



আইপিএলের নিলামে ১২ বাংলাদেশির নাম

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

২০২৫ সালের আইপিএলের মেগা নিলামের জন্য চূড়ান্ত তালিকায় ১২ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) নিলামে উঠতে যাওয়া ক্রিকেটারদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে আইপিএল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে আইপিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল বাংলাদেশের ১৩ জনসহ সর্বমোট বিশ্বের ১ হাজার ৫৮৪ জন নিবন্ধন করে। যাচাই-বাছাই শেষে ৫৭৪ জনের নাম প্রকাশ করে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৩৬৬ জন ভারতীয় এবং ২০৮ জন বিদেশি।

আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশগুলো থেকেও ৩ জন ক্রিকেটার আছেন। নিলামে আছেন অভিষেক না হওয়া ৩১৮ জন ভারতীয়, অভিষেক না হওয়া ১২ জন বিদেশি ক্রিকেটার। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো ২০৪ জন ক্রিকেটার কিনতে পারবে, যেখানে বিদেশিদের জন্য জায়গা আছে ৭০টি।

বাংলাদেশের হয়ে আইপিএলে দীর্ঘদিন প্রতিনিধিত্ব করা সাকিব ও মুস্তাফিজ রয়েছেন ১২ জনের চূড়ান্ত তালিকায়। ৯ মৌসুম সাকিব আইপিএল মাতিয়েছেন। এর মধ্যে কলকাতার জার্সি গায়ে তুলেছেন (২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত) সাত মৌসুম। এ সময়ের মধ্যে ২০১২ ও ২০১৪ সালে কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে ২২ গজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সাকিব। বাকি দুই মৌসুম খেলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদে।

অন্যদিকে বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজ ২০১৬ সাল থেকেই আইপিএলের নিয়মিত মুখ। এই দু’জন ছাড়া আইপিএলে আগে খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে আছেন লিটন দাস। তিনি ২০২৩ সালে কলকাতার হয়ে এক ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন।

এ ছাড়া চূড়ান্ত তালিকায় থাকা অন্য ক্রিকেটাররা হলেন রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তাওহিদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, তানজিম হাসান, মেহেদি হাসান, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ। তাদের কারোরই আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তাসকিনের প্রতি আইপিএলের কয়েকটি দলের আগ্রহ থাকলেও কোনো না কোনো কারণে শেষ পর্যন্ত খেলা হয়নি।

প্রসঙ্গত, সৌদি আরবের জেদ্দায় আগামী ২৪ ও ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে আইপিএলের ১৮তম আসরের মেগা নিলাম।


আরও খবর

বাংলাদেশে আসবেন ফিফা প্রেসিডেন্ট

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪




বেতন পেলেন শ্রমিকরা, আগামীকাল খুলবে কারখানা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

টিএনজেড গ্রুপের পোশাক শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে টানা তিনদিন গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। এবার সরকারের সহায়তায় গ্রুপের পাঁচটি কারখানার তিন হাজার ৬২০ শ্রমিক এবং ১২০ জন স্টাফ বকেয়া এক মাসের বেতন পেয়েছেন। এতে খুশি শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে যথারীতি শনিবার (১৬ নভেম্বর) থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে।

টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক জানান, প্রথম দফায় শ্রমিকদের বকেয়া আট কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রমিকদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে এই বেতন পরিশোধ করা হয়। এর ফলে শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

বেতন পেয়ে কারখানার শ্রমিক রোকসানা আক্তার বলেন, আগামী রোববারের মধ্যে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বেতন পেয়ে গেছি। আমাদের মালিকপক্ষ কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। আমরা সবাই খুশি।

টিএনজেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়াতুল হক জানিয়েছেন, শনিবার থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে। তিনি আশা করছেন, শ্রমিকরা কাজে ফিরবেন এবং উৎপাদন শুরু করে মালিকপক্ষের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়তা করবেন।

টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেসিক ক্লথিং লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ শ্রমিকের অক্টোবর ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বকেয়া ছিল। এছাড়া এক্সপো কার্টুন ও এমএনএস ইয়ার্ণ ডায়িং কারখানায় স্টাফদের বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট বকেয়া রয়েছে।

এরপর ৯ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ভয়াবহ যানজট দেখা দেয় মহাসড়কে। সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন এবং পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়। টানা তিনদিনের বিক্ষোভের পর শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান ঘোষণা দেন যে, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে উদ্যোগ নেবে সরকার।

গত সোমবার রাতে শ্রম ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে টিএনজেড গ্রুপের ৩১ শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএ এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা চুক্তি সই হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয় যে, ১৭ নভেম্বরের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অক্টোবর মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে।

টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক বলেন, আমরা বড় বিনিয়োগ করেছি এবং ব্যাংকের সুদ পরিশোধে আমাদের অর্থ সংকট হয়েছে। এক্সপোর্ট বিপ্ল আপ ফান্ড থেকে শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার চেষ্টাও করেছিলাম, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকারের সহায়তায় নির্ধারিত সময়ের আগেই গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বেতন বাবদ ৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। শ্রমিকরা কোনো কাজ না করেই এই অর্থ পেয়েছেন। আগামী কিস্তির অর্থও তারা কাজ ছাড়াই পাবেন।

ব্যাংক লোন প্রাপ্তিতে জটিলতার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আমরা সাড়ে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছি। ব্যাংক ইন্টারেস্ট বাবদ দেড়শ কোটি টাকা পরিশোধ করেছি। ব্যাংক থেকে ৮ কোটি টাকার একটি লোন অনুমোদন করানো হলেও, টাকা না পাওয়ায় শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যা হয়।

হেদায়তুল হক আরও বলেন, আমাদের এক্সপোর্ট বিপ্ল আপ ফান্ড থেকে ১১-১২ কোটি টাকা তুলে শ্রমিকদের বেতন দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। আমাদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগিতা করলে এই সংকট হতো না। কয়েকবার তারিখ দিলেও তা রক্ষা করতে পারিনি।

শ্রম সচিব শফিকুজ্জামানের সহায়তায় শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়া অতিরিক্ত সচিব সবুর হোসেন, বিজিএমইএ’র রফিকুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীনের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।

তিনি বলেন, প্রায় শত কোটি টাকার ব্যক্তিগত সম্পত্তির দলিল নিয়ে সহযোগিতার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কিন্তু সচিব শফিকুজ্জামান ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেননি।

শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতায় শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকাগুলো সময় মতো পাবেন। আমরা আশা করি, শ্রমিকরাও এ পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারখানার উন্নয়নে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




৪০ টাকা দরে টিসিবির আলু বিক্রি শুরু

প্রকাশিত:বুধবার ২০ নভেম্বর ২০24 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

রাজধানীতে ট্রাক সেলের মাধ্যমে আজ বুধবার থেকে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করবে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। ট্রাকসেলে প্রতি কেজি আলুর দাম পড়বে ৪০ টাকা। তবে একজন ব্যক্তি ৩ কেজির বেশি আলু কিনতে পারবেন না। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে টিসিবি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিসিবি জানিয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সার্বিক নির্দেশনায় নিম্ন আয়ের এক কোটি উপকারভোগী কার্ডধারী পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্যাদি (ভোজ্যতেল ও ডাল) সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ওই কার্যক্রমের পাশাপাশি সাধারণ ভোক্তার কাছে ঢাকা মহানগরীতে ৫০টি ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২০টি ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্যাদি তেল, ডাল ও খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরবরাহ করা চাল বিক্রি করা হচ্ছে।

এতে বলা হয়, এই কার্যক্রমের সঙ্গে বুধবার (আজ) থেকে ঢাকা মহানগরীতে ভোক্তাদের জন্য জনপ্রতি ৩ কেজি করে আলু বিক্রি করা হবে। প্রতি কেজি আলুর দাম পড়বে ৪০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা ও প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকায় কেনা যাবে। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ২ লিটার তেল, ২ কেজি মসুর ডাল ও ৫ কেজি চাল কিনতে পারবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, আগামীকাল সকাল সাড়ে ৯টায় কারওয়ান বাজারে অবস্থিত টিসিবি ভবন থেকে আলু বিক্রির এ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

কৃষকের ২৮ টাকার আলু হাতবদলে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় : মুন্সীগঞ্জের হিমাগারগুলোয় সর্বকালের সেরা দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। আর বীজ আলুর মূল্য যেন লাগামহীন ঘোড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজি ওজনের বস্তার আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০০-৬০০ টাকা। অথচ তিন থেকে চার বছর আগে ৫০০-৬০০ টাকায় পাওয়া যেত পুরো ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা আলু। প্রতি কেজি বস্তার আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭০০-২৯০০ টাকা। যা আলুর মূল্যের সর্বকালের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড। অথচ এক সপ্তাহ আগে যাহা ছিল ২২০০-২৩০০ টাকা।

মৌসুমে সাধারণ চাষিদের হিমাগারে তেমন আলু না থাকায় এতে লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা।

বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে অসাধু সিন্ডিকেট। ফলে হিমাগার থেকে বের করার পর হাত বদলালেই বেড়ে যাচ্ছে আলুর দাম। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে উৎপাদক পর্যায়ে ২৮ টাকার আলু হাত বদলে ভোক্তার ব্যাগে উঠছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। ফলে ‘লাভের মধু’ খাচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। অথচ গত বছরের অক্টোবরের এ সময়ে খুচরা বাজারে আলুর দর ছিল ৪০ টাকা কেজি।

আলুর দাম বৃদ্ধির জন্য খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন পাইকারদের। আর পাইকাররা দুষছেন হিমাগার সিন্ডিকেটকে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাত বদলালেই বাড়ছে দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে সিন্ডিকেট। ফোনে ফোনে দাম বাড়াচ্ছেন মজুদদাররা। এ অবস্থায় বাজার মনিটরিং জোরদার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ভোক্তারা।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, মুন্সীগঞ্জে গত মৌসুমে ৩৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়। এতে ১০ লাখ টনেরও বেশি আলু উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর মধ্য নভেম্বর থেকে শুরু হবে চলতি বছরের আলু রোপণ মৌসুম। এ বছর ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হিমাগার থেকে খুচরা বাজারে পৌঁছানো পর্যন্ত ৫ ধাপে হাত বদল হয়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট অধিক মুনাফায় বিক্রি করায় আলুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি আলুর দরে বড় ফারাক, দেখলেই তা সহজেই বোঝা যায় বলে মন্তব্য করেন কৃষকসহ হিমাগার মালিকরা।

কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জে গত মৌসুমে বৃষ্টির কারণে দুই দফা আলু রোপণ করা হয়। এতে প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়ে ১৭ থেকে ১৮ টাকা। কৃষক সেই আলু পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছে ২৮ টাকা কেজি দরে; যা ৫০ কেজির এক বস্তা আলুর মূল্য দাঁড়ায় ১৪০০ টাকা। কিন্তু এখন সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ টাকা বস্তা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, এ বছর অন্যবারের তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার টন আলু কম সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে বর্তমানে জেলার ৬৪টি হিমাগারের ৫৪টিতে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি খাবার ও বীজ আলু মজুদ আছে। এখন মুন্সীগঞ্জের হিমাগারগুলোয় ৫১ হাজার ৮০০ টন খাবার আলু এবং ৬৪ হাজার ৫০০ টন বীজ আলু মজুদ আছে। গত বছর এ সময়ে হিমাগারগুলোয় ৪৭ হাজার টন খাবার আলু এবং ৫৯ হাজার ৫০০ টন বীজ আলু মজুদ ছিল। তারপরও আলুর দাম বাজারে বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর উপযুক্ত কারণ মূলত আমার জানা নাই, কেন পর্যাপ্ত আলু হিমাগারে থাকা সত্ত্বেও আলুর দাম বাড়ছে।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




জনস্বার্থে বন্ধ থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু করার নির্দেশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

দেশ ও জনগণের স্বার্থে বন্ধ থাকা সব বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সচল করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি অবৈধ ঘোষণা করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন।

এ সময় আদালত বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থে বন্ধ থাকা সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো দ্রুত যেন উৎপাদনে যেতে পারে, সে বিষয়ে পক্ষে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

কুইক রেন্টাল-সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলের শুনানি শেষে গত ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সিনথিয়া ফরিদ।

গত ২ সেপ্টেম্বর কুইক রেন্টাল-সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এর আগে, কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি এবং ক্রয় সংক্রান্ত ৬(২) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী।

রিটে বিবাদী করা হয়েছে, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে। আইনের ৬(২) এবং ৯ ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।


আরও খবর