Logo
শিরোনাম

বাংলায় ইসলাম প্রচারে সুফিদের অবদান

প্রকাশিত:রবিবার ২০ মার্চ ২০22 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

ইসলাম প্রচারমুখী ধর্ম। বিশ্বের যে প্রান্তেই ইসলামের পদচারণা হয়েছে সেখানেই ধর্মটি ধর্মান্তরিতদের মধ্যে দ্রুত সমপ্রসারিত হয়েছে। ঐতিহাসিক অবিভক্ত বাংলায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। উপনিবেশ আমলে ১৮৭২- সর্বপ্রথম লোকগণনায় দেখা গেল, সারা বাংলায় মুসলমানদের সংখ্যাভিত্তিক অনুপাত ৪৮ ভাগ। তথ্যটি তখন বিস্ময় সৃষ্টি করলেও তার যুক্তি প্রমাণভিত্তিক ব্যাখ্যা ছিল। সারা উপমহাদেশের মধ্যে বাংলায় অধিবাস ছিল সামাজিকভাবে বঞ্চিত নিগৃহীত অধিক মানুষের; তারাই ইসলামের উদার কল্যাণমুখী আবেদনে সাড়া দিয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিল। কেন এবং কীভাবে ব্যাপক ধর্মান্তরণ হয়েছিল তা ইতিহাসের এক চমকপ্রদ বিতর্কের বিষয়। যেমন পশ্চিমের অনেক গবেষক বলতে চেয়েছেন, ইসলাম বিস্তৃত হয়েছে মুসলিম শাসকদের তরবারির জোরে।  কিন্তু লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, দিল্লি আগ্রা ছিল দোর্দণ্ড মুসলিম প্রতাপের কেন্দ্র, কিন্তু যেখানে ধর্মান্তরিত মুসলমান মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশও ছিল না। অন্যদিকে তুলনামূলকভাবে বাংলায় মুসলিম শাসন ছিল দুর্বল। সেকারণে অধ্যাপক পিটার হার্ডি যথার্থই বলেছেন, Those who argue that Indian Muslims were forcibly converted generally failed to define either force or conversion&_ leaving us to presume that a society can and will change its religious identity simply because it has a sword at its neck
তাহলে বাংলায় ইসলাম-বিস্তৃতির ব্যাখ্যা কী? প্রথমত, ইতিপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে ইসলামের অন্তর্লীন মানবতাবাদী আবেদনের কথা। দ্বিতীয়ত এবং প্রধানত, এমন ইসলামের ধারক, বাহক প্রচারক সুফিদের অবদান। সুফিবাদী ইসলামের দুটো মৌল বক্তব্য বা ধারণা আছে। এক, ইন্নামাল আমানু বিন্নিয়্যাত। অর্থাৎ মনোবাঞ্ছার ওপর ধার্মিকতা বা ঈমান নির্ভরশীল। আরো উল্লেখ্য, এমন ইসলামে অন্তরের শুচিতা বড়; এবং তার সঙ্গে সংযোজিত হবে আবশ্যকীয় আচার-আনুষ্ঠানিকতা, তবে যা কখনই আচার-অনুষ্ঠানসর্বস্বতায় পর্যবসিত হবে না। দুই, মান আরাফা নাফসাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু- নিজকে জানলে স্রষ্টাকে চেনা হয়।

অনুপুঙ্খ বিচারে বাংলায় ইসলামের আবির্ভাব, প্রচার প্রসার মুসলিম রাজনৈতিক শক্তি থিতুকরণে পাটাতন হিসেবে কাজ করেছে। অন্যভাবে বললে ইসলামের গতিময় ব্যাপ্তি রাজশক্তি বিকাশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছিল। বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতাসর্বস্ব নয়, বরং অন্তর্লীন প্রণোদনায় প্রাণিত উদারপন্থী ইসলাম প্রচারিত হয়েছিল এমন ইসলামী মননসমৃদ্ধ সুফিকুল দ্বারা। তাদের মানবিক প্রণোদনা-উৎসারী ইসলামী আবেদন স্থানীয় বিভিন্ন ধর্মানুসারী মানুষের মধ্যে সহজ ক্রমবর্ধমান গ্রাহক পেয়েছিল। অতীতের আচার-অনুষ্ঠানক্লিষ্ট ধর্মে বীতশ্রদ্ধ স্থানীয় হিন্দু (নমশূদ্র), বিশেষ করে ধর্মের কারণে সমাজচ্যুত সংক্ষুব্ধ আমজনতা যেন উদারপন্থী মানবিক ইসলামের মধ্যে এক অচলায়তন ভাঙার ইঙ্গিত পেয়েছিল।

ইসলাম প্রচারধর্মী হলেও বাংলায় ধর্মটির প্রচারকৌশল পদ্ধতি যে মানবিক অনুভূতিসমৃদ্ধ ছিল তা বিশেষ আলোচনার দাবি রাখে। বাংলায় মুসলমানরা ক্ষমতা দখল করেছিল তেরো শতকের শুরুতে; কিন্তু সুফিবাদী ইসলামের আগমন হয়েছিল আট শতকেই। অর্থাৎ মুসলিম রাজনৈতিক বিজয়ের পূর্বসূরি হিসেবে কাজ করেছিল ধর্মবিজয়। এটাও তো বলা অত্যুক্তি হবে না যে, রাজনৈতিক বিজয়পূর্ব ধর্মবিজয় রাজনৈতিক বিজয়ের পথ সুগম করেছিল।
পারসিক সুফিদের ইসলাম প্রচার-কৌশলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল সংশ্লেষণমূলক (syncretic) দৃষ্টিভঙ্গি। ইসলাম গ্রহণের সময় স্থানীয় ধর্মান্তরিতদের ঐতিহ্যবিচ্যুত হতে হয়নি। কারণ ধর্মপ্রচারক সুফিরা তা করতে বলেননি। ফলে বাংলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ইসলাম হয়েছে সংশ্লেষণবাদী। সুতরাং স্থানীয়দের পক্ষে ইসলামে ধর্মান্তরণ সহজ হয়েছিল। উল্লেখ্য, খোদ আরবেই ইসলাম স্থানীয় অনেক ঐতিহ্যকে আত্মস্থ করে বিকশিত হয়েছিল। উপরন্তু লক্ষণীয়, বিশ্বের যে প্রান্তেই ইসলাম সমপ্রসারিত হয়েছে সেখানেই অভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। ধর্ম প্রচারের এমন পদ্ধতি নিঃসন্দেহে শুধু বিচক্ষণই নয়, মনস্তাত্ত্বিকভাবে মানবিকও বটে।

অন্যদিকে সুফি-সাধক পরিচালিত তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলায় ইসলাম প্রচারে পরিপূরক ভূমিকা পালন করেছিল। প্রথম প্রতিষ্ঠানটি ছিল লঙ্গরখানা। লঙ্গরখানায় ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সব অন্নহীন মানুষকে সমাদরে এবং বিনামূল্যে আপ্যায়িত করা হতো। অর্থের জোগান আসতো মুসলিম শাসকদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে। ব্যবস্থার ফলে সবচেবেশি উপকৃত হয়েছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদী সেন শাসনে (১১৬১-১২০৪) নিগৃহীত জাতিভেদ প্রথার শিকার হয়ে সমাজচ্যুত নমশূদ্ররা। জাত-পাতের পার্থক্যহীন সব মানুষের এমন সম্মিলন ছিল বাংলায় দৃষ্টান্তরহিত। বলা যায়, এক ধরনের সামাজিক বিপ্লবই ঘটে গিয়েছিল। আর এমন বিপ্লব যারা আস্বাদন করেছিল সেই স্থানীয়রা এমন এক উপলব্ধিতে প্রাণিত হয়েছিল যে, নতুন ধর্ম ইসলাম সামাজিকভাবে সমতাবাদী (socially egalitarian), যা বৌদ্ধ ধর্মে থাকলেও কট্টর হিন্দুত্বে ছিল না। কাজেই নিম্নবর্গের হিন্দু অভাজনদের কাছেই ইসলামের আকর্ষণ ছিল বেশি; এবং তারাই কালক্রমে মুসলমান সমাজের গরিষ্ঠ অংশ হয়েছিল। অবশ্য কিছু সংখ্যক বৌদ্ধও পরিস্থিতির চাপে মুসলমান হয়েছিল।

ইসলাম প্রচার-সহায়ক দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠানটি ছিল খানকাহ। লঙ্গরখানা ছিল সামাজিক ইসলামের বাস্তব দৃষ্টান্ত; আর খানকাহ তাত্ত্বিক ইসলামের প্রশিক্ষণকেন্দ্র। সুফিরা ছিলেন প্রশিক্ষক। লঙ্গরখানায় হার্দিকভাবে তৃপ্ত উন্নতজীবন প্রত্যাশী শোষিত-বঞ্চিত মানুষ খানকাহ- গিয়ে যে আগ্রহী ঐকান্তিক প্রশিক্ষণার্থী হবে সেটাই ছিল স্বাভাবিক। দুটো প্রতিষ্ঠানই তাদের ইসলামে দীক্ষা গ্রহণের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করেছিল। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বাংলায় সুফি-প্রয়াসলগ্ন ইসলাম-বিস্তৃতির বাস্তবানুগ ব্যাখ্যার জন্য একটি উদ্ধৃতির সাহায্য গ্রহণ করা যেতে পারেঃ The foremost consideration appears to be an intent to find a refuge where there would not be a social stratification and discrimination as these people had been going through under the Senna rule; and Islam appeared to be a refuge of such specification. Moreover, there had been clear material considerations uppermost in the psyche of the converts and the background to which was the way which the Sufis welcomed these people first by the Langerhans, and then Khanna (দ্রষ্টব্য Syed Anwar Husain, Human Rights in Bengal: Atash Dipankar to Sufis)

বাংলায় ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করা তৃতীয় প্রতিষ্ঠানটি ছিল দরগাহ। দরগাহে সমাবেশ হতো সব ধর্মের মানুষের, যে রীতি আজও চালু আছে। দেখা যায় যে, ক্রমাগতভাবে দরগাহ খানকাহ- স্থান দখল করে নিয়েছে। দরগাহ- এমন প্রাধান্যের সূচনা বাংলায় হুসেইন শাহী শাসনামলে (১৪৯৩-১৫৩৮) তবে দরগাহ- কিছু ইসলামি চেতনাপরিপন্থী আনুষ্ঠানিকতাও দৃশ্যমান হয়েছিল, যার রেশ আজও দেখা যায়।
বরেণ্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আবদুল করিম মন্তব্য করেছেন,  Bengal, not to speak of the big cities but even not a small city or a hamlet will be found where the Dervishes have not come and settled অর্থাৎ বাংলার বড়-ছোট সব শহর এমন কী গ্রামেও তারা পদার্পণ করেছিলেন, এবং স্থায়ীভাবে থেকে গিয়েছিলেন। কাজেই বাংলার সমগ্র ভূখণ্ড জুড়েই তারা ইসলাম প্রচার করেছিলেন। মুসলমান রাজশক্তি ইসলাম প্রচারে সুফিদের সহায়ক হয়েছিল, কিন্তু এমন শক্তির প্রভাবে ইসলাম বিস্তৃত হয়নি। বাংলায় ইসলামের আলো ছড়িয়েছিলেন সুফিরাই।


আরও খবর



হামলার আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল পারমাণবিক উপকরণ

প্রকাশিত:রবিবার ২২ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কথা নিশ্চিত করে ইরান জানিয়েছে, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানেও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে। তবে মার্কিন হামলার আগেই তিনটি পরমাণু কেন্দ্রের পারমাণবিক উপকরণ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই তিন পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো পদার্থ নেই, যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশ সময় রবিবার (২২ জুন) সকালে লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ইরানে চালানো এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান অংশ নেয়। এরপর ইরানের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়টি জানানো হয়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির উপ-রাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিনি বলেন, আগেই আমরা তিনটি পরমাণু কেন্দ্র আগেই খালি করে ফেলেছিলাম। আমরা বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়িনি।


আরও খবর



বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তার কারণ ছিল তিনি বিশ্বাসী ছিলেন

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

মাজহারুল ইসলাম মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক, গবেষক :

সমস্যাটা ধর্ম নয়, সমস্যাটা হল ধর্ম আপনার চিন্তাপ্রক্রিয়ার সামর্থ বা কগনিটিভ এবিলিটিকে গোলমেলে করে দিয়েছে কিনা। চিন্তাপ্রক্রিয়ার সামর্থ বা কগনিটিভ এবিলিটি দুই ভাবে এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। এক উয়োক সংস্কৃতি। বাংলাদেশের মেয়েদের ক্ষেত্রে যেমন হয়। একটি মেয়ের যত সমস্যা থাক, বিয়ে দিয়ে দিলে সেটা ঠিক হয়ে যাবে এটা হল সেই উয়োক সংস্কৃতির চিন্তা। যার অর্থ হল মেয়েটাকে মানুষ হিসাবে না ভেবে তাকে দেহসবর্স্ব একটি ভোগ্যবস্তু ভাবা। মেয়েটি নিজেও এটি ভাবা শুরু করলে তখন তার চিন্তাপ্রক্রিয়ার সামর্থ সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। জীবনের সব সমস্যাকেই সে বিয়েতে নিয়ে যায় এবং একটি মূল্যবান বর পাবার জন্য যা যা করা দরকার সে সেগুলো করতে থাকে। তার চিন্তা করার ক্ষমতাকে সে অবহেলায় হারায়। 

দুই হল জীবনে প্রথম আঘাত পেলে বা প্রথম কোন জটিল সামাজিক মানসিক সমস্যায় পড়লে সে যখন আর সেটা চিন্তা করে সেটার সমাধান করতে পারে না। তখন সে চিন্তা করা থামিয়ে দেয় এবং নিজেকে একটি মানসিক শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে। সেটা পশ্চিমা উয়োকিজম হতে পারে, সেটা কোন ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বা বাম ভাবধারার উয়োকিজম হতে পারে। এই উয়োকিজম হচ্ছে মনোবিদ্যাগতভাবে নার্সিসিজম। যেখানে মানুষ নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিয়োগ করে তার দল বা গোষ্ঠীর জন্য কি আচরণ করা অভিপ্রেত সেটা শিক্ষা করা এবং সেই আচরণ অনুসরণ করা নিজেকে মূল্যায়িত করা। এই ধরণের আচরণ বহুদিন অনুসরণের ফলে তার মস্তিস্কের সুক্ষ্ম চিন্তা করার ক্ষমতা ঝরে যায় যেটাকে নিউরোসায়েন্সের ভাষায় প্রুনিং বলে। 

আমাদের অবিবাহিত মেয়েদের জন্য বিয়ে যেরকম, সব চিন্তাগত সমস্যার সমাধান, পুরুষদের জন্য তেমনই হল ধর্ম। যেমন মানসিক সমস্যা থাকায় কোন মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হল, যখন তাকে নিয়ে স্বামী বিপদে, সে তখন ছুটে গেল হাদিসে কি বলা আছে। সেখানে বলা আছে স্ত্রীকে প্রহার করা যাবে। ব্যাস তার সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। এখন স্ত্রীর পাগলামি দেখা দিলে সে প্রহার করে। 

পশ্চিমা আধুনিক উয়োকিজম কিন্তু চিন্তাগতভাবে একই। সেখানে হাদিসের স্থানে আছে মিডিয়া ও পপুলার কালচার। মানুষ চিন্তা ভাবনা না করে কোন সমস্যায় কি করতে হবে সেটা সোপ অপেরা, নাটক, সিনেমা, টিভি, সামাজিক মাধ্যম থেকে অনুসরণ করে। প্রথা বা পারিবারিক বা সামাজিক মূল্যবোধের আর প্রচলন নাই।

ধর্ম বা আর্ট হিসাবে নাটক, নভেল, সাহিত্য, সিনেমার লক্ষ্য কিন্তু কোন ভাব বা ধারার অনুসরণকারী তৈরি করা নয়। সেটার লক্ষ্য চিন্তাশীলতার চর্চা। জীবনের জটিলতার সরল সূত্র আবিষ্কার করা এবং কিছু সাধারণ মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা যার ফলে সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং মানুষ মনে বিশ্বাস, ভালবাসা এবং আনন্দ বিরাজ করে।

চিন্তাপ্রক্রিয়ার সামর্থ কমে যাওয়া বা কগনিটিভ এবিলিটি ডিক্লাইনেশন কখনই আমাদের সেই পথে নিয়ে যাবে না। সেই কারণে একজন আধুনিক, শিল্পমনা বা ধার্মিক ব্যক্তিকে অবশ্যই জীবনের সুক্ষ্ম বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তায় সক্ষম হতে হবে। যারা জীবনের সুক্ষ্ম বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তায় সক্ষম নয়, তারা ধার্মিক নয়। জীবনের সুক্ষ্ম বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তায় যারা এলোমেলো, ধর্ম বা ঈশ্বর আর মহাবিশ্ব নিয়ে চিন্তা তারা কিভাবে করবে? এরা সবাই ভুয়া।

মানুষ হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের চিন্তাপ্রক্রিয়া ছিল অত্যন্ত পরিষ্কার। শুধু রাজনীতি নয়, দেশের মানুষ, সমাজ ও ধর্ম নিয়ে তার মনে ছিল স্বচ্ছ ধারণা। তাই নানা প্রলোভন ও আন্তর্জাতিক চাপ সত্বেও তিনি তাঁর বিশ্বাসে অটল ছিলেন। একজন প্রকৃত মুসলমান হল যাকে সবাই বিশ্বাস করে, যে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে বা যে দেশকে ইসলামী রাষ্ট্র বানায় সে নয়। এই কারণেই নানা ব্যর্থতা সত্বেও এমনকি দুর্ভিক্ষের বছরেও তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। 

বঙ্গবন্ধুর এই জনপ্রিয়তার কারণ ছিল শুধুই তিনি বিশ্বাসী ছিলেন বলে। যে কারণে তাকে হত্যাকারী সামরিক কর্তারা অন ক্যামেরা ইন্টারভিউতে বলেছিল যে তিনি এত জনপ্রিয় ছিলেন যে তাকে হত্যা করা ছাড়া কোন উপায় ছিল না।

সামনের নির্বাচনেও এই মুসলিম সমাজে মানুষ যাকে বিশ্বাস করে সে ভোট পাবে। যারা তাকে খুন করেছে তারা বা যারা বিদেশের কাছে দেশ বিক্রি করেছে তারা এই বিশ্বাসের ইসলামকে ধরতে পারে না। যেমন ধরতে পারেনি পশ্চিম পাকিস্তানীরা। কারণ তারা বিশ্বাসী ছিল না, তারা ছিল এক একজন শৃগালের মত ধূর্ত ও শঠ। 

লন্ডনে বসে যারা দেশের সামনের নির্বাচন ও রাষ্ট্র শাসনের দুরভিসন্ধি ও চক্রান্তে রত, তারা পাকিস্তানিদের অনুসারী যারা নিজেরাও শৃগালের মত ধূর্ত ও শঠ যেটা জাতির কাছে প্রমাণিত। যে যাই বলুক নির্বাচন বিশ্বাসের খেলা। মানুষ যাদের বিশ্বাস করে তারা জিতবে।


আরও খবর

অভিজাতরা কেন সালাফি হচ্ছে

শুক্রবার ২০ জুন ২০25




চালের খুচরা বাজার চড়া, দাম কম মুরগি ও ডিমের

প্রকাশিত:শুক্রবার ২০ জুন ২০25 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

রাজধানীর বাজারগুলোতে ইরি বোরোর নতুন চাল আসার পর চালের দাম কিছুটা কমেছিল। তবে সে স্বস্তি বেশি দিন টিকল না। ঈদের পর এখন খুচরা বাজারে চালের দাম ফের বাড়ছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মোকামগুলোতেই চালের দাম বেড়েছে। ঢাকার ব্যবসায়ীদের দাবি, চালকল মালিকরা ঈদের পরে কারবার চাঙ্গা হওয়ায় সঙ্গে এই দাম বৃদ্ধি করেছেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন মিলগেটে ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি চালের দাম ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

শুক্রবার (২০ জুন) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের আগের চেয়ে এখন প্রতি কেজি চাল ২ থেকে ৫ টাকা টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখন খুচরায় প্রতি কেজি মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা দরে। সরু চালের মধ্যে জিরাশাইলের কেজি ৭৪ থেকে ৭৮ টাকা এবং মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮০ টাকা। কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজিতে। এদিকে ছোট বাজারে ও পাড়ার মুদি দোকানে এ দাম আরেকটু বেশি।

ঢাকার বাজারে ঈদের পর থেকে বেশ স্বস্তিদায়ক মুরগি, ডিম ও সবজিসহ অন্যান্য বেশকিছু পণ্যের দাম। আবার এরমধ্যে মুদি পণ্যগুলো দামেও তেমন হেরফের হয়নি। কম দামে কেনা যাচ্ছে পেঁয়াজ আলুসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যও।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৫০ টাকায় নেমে এসেছে। আর ডিমের ডজন এখন ১২০-১৩০ টাকা। ঈদের পর রাজধানীর বাজারে এখনো ক্রেতা উপস্থিতি কম। আবার ঈদুল আজহার কোরবানি মাংসও রয়েছে বেশিরভাগ ঘরে। যে কারণে ডিম-মুরগির চাহিদা কম।

অন্যদিকে বাজারে পোটল, ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙের মতো বিভিন্ন সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে মিলছে। বড় বাজার, আবার ভ্রম্যমাণ দোকানে দাম আরো কম। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঈদের পর থেকে রাজধানীর বাজারে সবজির দাম নিম্নমুখী।


আরও খবর

কালো টাকা বৈধ করার পথ বন্ধ

রবিবার ২২ জুন ২০২৫




মেস থেকে মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত:শনিবার ২১ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

‎মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :‎

‎মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ২০২০–২১ সেশনের শিক্ষার্থী মো. জুনায়েদ হোসেনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী সন্তোষ পুরাতন পাড়ার একটি ছাত্রাবাস থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।‎

‎বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন জানান, সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তিনি ঘটনাটি জানতে পারেন এবং সঙ্গে সঙ্গে উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। কাগমারী পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ এসে মেসের রুম থেকে লাশ উদ্ধার করে এবং পরে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জুনায়েদ দীর্ঘদিন ধরে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন, যা তাকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

‎কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, প্রক্টর আমাকে ফোনে জানালে আমরা গিয়ে দরজা ভেঙে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা না গেলেও পুলিশ এটি আত্মহত্যা বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করা যাবে বলে জানায় তারা।

‎জুনায়েদের অকালমৃত্যুতে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। সহপাঠীরা গভীর কষ্ট ও বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, জুনায়েদ ছিলেন একজন অত্যন্ত ভদ্র, মৃদুভাষী ও শান্ত স্বভাবের তরুণ। তিনি কারও সঙ্গে কখনো তর্কে জড়াতেন না, সবসময় হাসিমুখে কথা বলতেন। বন্ধু ও সহপাঠীদের সঙ্গে ছিলেন আন্তরিক, সহযোগিতাপরায়ণ এবং বিনয়ী। 

‎মরদেহ উদ্ধারের পর তাঁর রুমে একটি দেয়ালে ইংরেজি ভাষায় লেখা একটি বাক্য পাওয়া যায়—"The world is a fine place and worth fighting for." (পৃথিবীটা একটা চমৎকার জায়গা এবং এর জন্য লড়াই করা মূল্যবান)। উক্তিটি বিখ্যাত আমেরিকান ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের। এই লাইনটিই হয়তো তাঁর মনের দ্বন্দ্ব এবং জীবনের প্রতি একধরনের উপলব্ধিকে প্রকাশ করে।

‎মো. জুনায়েদ হোসেনের বাড়ি গাজীপুর জেলার পূবাইল গ্রামে। তাঁর অকাল মৃত্যুতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গভীর শোক প্রকাশ করেছে।


আরও খবর



দেশে ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের করোনা শনাক্ত

প্রকাশিত:বুধবার ০৪ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫ |

Image

ফের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর আসছে। ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যা শনাক্তের হার ২২.৫০ শতাংশ। মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বের আক্রান্তদের মধ্যে এরই মধ্যে সুস্থ হয়েছেন দুজন। এ সময় কেউ করোনায় মৃত্যুবরণ করেননি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৩ জুন ঢাকা মহানগরে ২৯ জনের করোনা টেস্ট করা হয়েছে। তন্মধ্যে ৫ জনের পজেটিভ পাওয়া গেছে। রাজশাহীতে ১১ জনের করোনা টেস্ট করা হয়েছে। তন্মধ্যে ৪ জনের পজেটিভ পাওয়া গেছে।


আরও খবর

কালো টাকা বৈধ করার পথ বন্ধ

রবিবার ২২ জুন ২০২৫