চলতি বছরের
শুরুতেই চোখ রাঙাচ্ছে এডিস মশা। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কিউলেক্স মশার উপদ্রব। মশার
কামড়ে অতিষ্ঠ জনজীবন। কিন্তু মশা নিধনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিশেষ কোনো কার্যক্রম
নেই।
২০২৩ সালে
ঢাকা শহরে এডিস ও কিউলেক্স মশা উপদ্রব অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। গত বছর ঢাকায় ডেঙ্গু
আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসেবে লাখ ছাড়িয়েছে। আর এ রোগে মারা গেছেন দেড় হাজারের
বেশি। এবার বর্ষা মৌসুমে এডিস পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা।
কীটতত্ত্ববিদদের
দাবি, প্রকৃতপক্ষে গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সরকারের হিসাবের দ্বিগুণের বেশি
হবে। এবার এডিস মশায় আক্রান্তের হার আরও বাড়তে পারে। গত বছর যেসব স্থানে এডিস মশা ডিম
ছেড়েছে, সেসব স্থানে বৃষ্টির পানি জমা মাত্রই এডিস মশা জন্মাবে। এ ভয়াবহ পরিস্থিতি
মোকাবিলায় সিটি করপোরেশনকে আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। পাশাপাশি কোনো ভবনের ছাদ
বা আঙিনায় যাতে বৃষ্টির পানি জমা না থাকে, তা নাগরিকদের আগেই নিশ্চিত হতে হবে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, চলতি বছরের
গত ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ৩৪২ জন ডেঙ্গুরোগী
ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া ৫৯টি বেসরকারি হাসপাতালে ১১২ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের
প্রায় সবাই ঢাকার বাসিন্দা।
এর আগে
গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটিতে বর্ষা-পরবর্তী এডিস
মশার লার্ভা বা শূককীট জরিপ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা। এ জরিপে উত্তর
সিটির ৪০টি ও দক্ষিণের ৫৯টি ওয়ার্ডে মোট তিন হাজার ২৮৩টি বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে
প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে ডিএসসিসিতে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ ও ডিএনসিসিতে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ
বাড়ি ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকি পেয়েছে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা।
২০২২ সালের
বর্ষা-পরবর্তী জরিপে উত্তরে শতকরা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ ও দক্ষিণ সিটি এলাকায় ৪ দশমিক ১৮
শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা বা শূককীটের উপস্থিতি পাওয়া গিয়ে ছিল। সেই হিসেবে ২০২২
সালের বর্ষা-পরবর্তী সময়ের চেয়ে ২০২৩ সালে তা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।