Logo
শিরোনাম

চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে দিয়ে চলছে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ |

Image

লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি

লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতাল টি অব্যবস্থাপনার মধ্যে দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। রোগীদের অভিযোগ তাদের কে সঠিক সময় চিকিৎসা দিচ্ছেন না হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক নার্স গান। তাছাড়া অভিযোগ উঠছে রোগীদের ওয়াশরুমের কোন সঠিক ব্যবস্থা নেই। মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগীরা তারা টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন না। হাসপাতালটির ডক্টরস কোয়ার্টারে থাকেন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। এ বিষয়ে লালপুরের সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার রমজান আলীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ উঠছে একবারে নিম্নমানের খাবার পাচ্ছেন তারা হাসপাতাল থেকে। দীর্ঘদিন যাবৎ এই ১০০ শয্যার হাসপাতালে যে কমিটি রয়েছে প্রায় এক বছর যাবত কোন মিটিং হয়নি। এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তিনি এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না ‌। এছাড়াও উক্ত হাসপাতালে কেউ কেউ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা না দিয়ে শুধুমাত্র হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন তাও আবার কয়েকদিন বাদে এসে একদিন স্বাক্ষর করার অভিযোগ উঠছে। তবে হাসপাতাল সূত্রের অনেকেই জানিয়েছেন এই বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ওকে সোনা গরম আছে তাও তারা সঠিক জানিনা। অপরদিকে হাসপাতালে কর্মরত প্রায় ৩৫ জন মাস্টাররোল কর্মচারী তাদের সম্মানী ভাতা প্রায় দুই বছর যাবৎ না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এখানে অর্থোপেডিক ও সার্জারি বিভাগে র চিকিৎসকের সেবায় কিছুসংখ্যক রোগীরা মোটামুটি সেবা পাচ্ছেন মর্মে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী একথা নিশ্চিত করেন। তবে অন্যান্য গুরুতর রোগীরা এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে তাদেরকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ অথবা ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ প্রদানের অভিযোগ উঠছে। প্রায় ১৮ লাখ মানুষের বসবাস লালমনিরহাট জেলায় তাদের জেলা সদরে হাসপাতালটির অব্যবস্থাপনা দেখে হতাশ স্থানীয় সচেতন মহল।


আরও খবর



যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ’র নতুন নিষেধাজ্ঞায় পড়তে যাচ্ছে ইরান

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। জবাবে ইসরায়েলও প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুঁজছে, সাজাচ্ছে নানা পরিকল্পনা।

এরই মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইসরায়েল অবশ্য আগেই ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে- সপ্তাহান্তে ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার পর তারা এখন ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের দিকে নজর দিচ্ছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, তিনি আগামী দিনগুলোতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা করছেন। অন্যদিকে ইইউয়ের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, তার ব্লক এটি নিয়ে কাজ করছে।

ইসরায়েল অবশ্য ইতোমধ্যেই তার মিত্রদের প্রতি তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। মূলত ইরানের এই ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ গত বছরের অক্টোবরে শেষ হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার জন্য একটি বিস্তৃত চুক্তির সাথে যুক্ত ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে এবং বিভিন্ন সময়ে নতুন নিষেধাজ্ঞাও যুক্ত করেছে।

সোমবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেছেন, ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে।

সিরিয়ার রাজধানীতে তেহরানের কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে শনিবার গভীর রাতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়। যদিও বেশিরভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারপরও উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি হতে পারে বলে ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে।

মূলত গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ইসরায়েলে রাতারাতি ৩০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে তেহরান। এর বেশিরভাগই ইরানের অভ্যন্তর থেকে নিক্ষেপ করা হয়।

তবে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রবাহিনী।

নজিরবিহীন সেই হামলার জবাবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল শুধুমাত্র কূটনৈতিক ভাবে আক্রমণ চালিয়েই পাল্টা জবাব দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৩০টিরও বেশি দেশকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া ইরানের প্রধান সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি - ইসলামী বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনোনীত করার আহ্বানও জানিয়েছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনোনীত করলেও যুক্তরাজ্য এখনও তা করেনি।

এমন অবস্থায় মঙ্গলবার বক্তৃতাকালে মার্কিন অর্থমন্ত্রী ইয়েলেন বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে, আমি পুরোপুরি আশা করি, আমরা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আগে থেকে বলি না। তবে ইরানের সন্ত্রাসী অর্থায়ন ব্যাহত করার সমস্ত বিকল্পই আমার টেবিলে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইরানের তেল রপ্তানি এমন একটি সম্ভাব্য ক্ষেত্র যা আমরা টার্গেট করতে পারি। তার ভাষায়, স্পষ্টতই, ইরান এখনও কিছু পরিমাণ তেল রপ্তানি চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা হয়তো আরও কিছু করতে পারি।

ইয়েলেন বলেন, ইরানকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই আর্থিক নিষেধাজ্ঞাগুলোকে ব্যবহার করছে। পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি এবং সংস্থাকে লক্ষ্য করে আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়ন করার এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করার কাজ করছে।

ইরানের ওপর বিদ্যমান মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইতোমধ্যে দেশটির সাথে প্রায় সমস্ত আমেরিকান বাণিজ্য নিষিদ্ধ করেছে।

এদিকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন কর্মসূচির পাশাপাশি বিপ্লবী গার্ড এবং ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে লক্ষ্যবস্তু করবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, আমাদের মিত্র এবং অংশীদাররা শিগগিরই তাদের নিজস্ব নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করবে।

অন্যদিকে ইইউর শীর্ষ কূটনীতিক জোসেফ বোরেল বলেছেন, কিছু সদস্য দেশ ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়ানোর জন্য বলেছে। তিনি বলেন, তিনি নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করার জন্য ইইউয়ের কূটনৈতিক পরিষেবার কাছে অনুরোধ পাঠাবেন।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এই ইতিবাচক প্রবণতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

এদিকে ইসরায়েলে ইরানের সর্বশেষ হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের উত্তেজনা এড়াতে বিশ্বনেতারা সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি ফোন কলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে চলমান পরিস্থিতিতে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।

ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তিনি (সুনাক) জোর দিয়ে বলেছেন, উত্তেজনার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি কারও স্বার্থে ভালো কিছু নয় এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তাহীনতাকে আরও গভীরে নিয়ে যাবে। জয়ের জন্য মাথা ঠান্ডা রাখার সময় এখন।


আরও খবর



বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে একক প্রার্থী দিতে আ’লীগের সভা

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ |

Image

জামালপুর প্রতিনিধি:

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দল থেকে একক প্রার্থী দিতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ। সেই লক্ষে শনিবার দুপুরে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামীলীগ কতৃক আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নূর মোহাম্মদ এমপি। সভায় দলের ৭ জন নেতা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়ে বক্তব্য রাখেন। যারা প্রার্থী হতে চান তারা হলেন এমপি’র ছোট ভাই ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তার,উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহীনা বেগম,সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ফড়িং, উপদেষ্ঠা সমাজসেবক এমদাদুল হক এমদাদ,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবু জাফর,সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয় ও সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম সওদাগর। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহীনা বেগমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবুল তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আগা সাইয়ুম,বগারচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি গাজী হোসেন আলী, কামালপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাসান জুবায়ের হিটলার, নিলাক্ষিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম খোকা,মেরুরচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আলী,যুবলীগ নেতা মারুফ সিদ্দিকী, ছাত্রলীগের আহবায়ক রাজন মিয়া ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক আরিফুজ্জামান প্রমূখ। 

বক্তারা বলেন,দীর্ঘ ৩৫ বছরেও আওয়ামীলীগের কোন প্রার্থী বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হতে পারেনি। তাই এবার সকল ভেদাভেদ ভুলে জনপ্রিয় একজনকে একক প্রার্থী করতে হবে,তাহলেই দলীয় প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে। 

এমপি নূর মোহাম্মদ বলেন,যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা সকলেই দলের নিবেদিত। সকলেই উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার মত যোগ্য প্রার্থী। তাই আমি প্রত্যাক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কারো পক্ষে অবস্থান নিতে পারি না। যারা প্রার্থী হয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে বসে আপনারাই ঠিক করেন কে হবেন প্রার্থী। তখন দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের পক্ষে কাজ করবে। তাহলে দীর্ঘদিন পরে হলেও জয় নিশ্চিত হবে। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান যিনি আছে তিনি অবশ্যই শক্তিশালী প্রার্থী। তাকে পরাস্ত করতে হলে অবশ্যই দলের একক প্রার্থী থাকতে হবে।


আরও খবর



হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে খামারের শত শত মুরগি

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

বছর ১৭ আগে মুরগির খামার শুরুর পর ভালোই চলছিল বরিশালের আমানতগঞ্জের সেলিনা হোসেনের। কিন্তু ব্যবসায় বিপত্তি শুরু হয় করোনা মহামারীকালে। এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান। সম্প্রতি বয়ে চলা তাপপ্রবাহ ও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে তার প্রায় ৭০০ মুরগি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বামীহারা এ খামারি। 

সেলিনা হোসেন বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনের উৎস আমার এ মুরগির খামার। করোনার সময় একবার বড় লোকসান হয়। অনেক মুরগি মারা গিয়েছিল তখন। অনেক কষ্টে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। ৮০০ ব্রয়লার মুরগি তুলেছিলাম। কিন্তু এবার সব শেষ। বিদ্যুৎ যায় আসে। যে গরম পড়ছে তাতে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয়। টিনে পানি দিতে হয়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে আরো বেশি স্ট্রোক বেড়েছে। ওষুধ খাইয়েছি, তবু মুরগিগুলোকে রক্ষা করা যায়নি। আবার মুরগি ওঠানোর ক্ষমতা আমার নেই।

সেলিনার মতো অন্য খামারিদের একই হাল। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। অনেক খামারি লোকসান গুনে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে হিটস্ট্রোকে মুরগি মারা গেলেও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে তাদের কাছে কেউ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারিদের। 

খামারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকে পোলট্রি খাতে দুর্ভোগ যেন কাটছেই না। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পোলট্রিখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার গুটিয়ে নেন বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্রায় ৪০ শতাংশ খামারি। এছাড়া খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি এখন পোল্ট্রি খাতের অন্যতম নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে খামারগুলোয় ব্যাপক হারে ব্রয়লার মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে ডিম উৎপাদনও। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য খামারিরা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পাঁচদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়াচ্ছে, আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকালও চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাট ও কুষ্টিয়ায়ও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। এ তাপপ্রবাহ আরো বেড়ে সামনে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বেশি শঙ্কায় রয়েছেন পোলট্রি খামারিরা।

বরিশালে গত কয়েক দিনে ৬১৭টি খামারে প্রায় পাঁচ হাজার ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পোলট্রি মুরগির খামার মালিকদের সংগঠনের নেতা কালাম শিকদার। তিনি জানান, জেলায় ১ হাজার ৬০৮টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ৬১৭টি, লেয়ার ৫৩৫টি ও সোনালি মুরগির ৪৫৬টি। মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে পোলট্রি খামারে দেখা দিয়েছে হিটস্ট্রোক। তাপপ্রবাহ থেকে মুরগি বাঁচাতে অনেক খামারে বৈদ্যুতিক পাখা সংযুক্ত করলেও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও কাজে আসছে না। ফলে পোলট্রি খামারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

তীব্র গরমে খামারে মড়ক লাগলেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, গরমের সময় খামারে বারবার পানি স্প্রে ও টিনের চালে ছালার চট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শসহ একাধিক গাইডলাইন দেয়া হয়েছে বিভাগের প্রত্যেক মাঠ কর্মকর্তাকে। তারা খামারিদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে গরমে মুরগির মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয়নি এখনো। 

চট্টগ্রামের খামারিরা জানিয়েছেন, ওষুধ ও পানি স্প্রের মাধ্যমে হিটস্ট্রোক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও প্রতিনিয়ত ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। আবার লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ। 

বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটনের খামারে দেড় কেজির বেশি মুরগি ছিল প্রায় চার হাজার। কিন্তু গত দুদিনের গরমে প্রায় এক হাজার মুরগি মারা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট মুরগি মারা যায় কম। কিন্তু এক কেজি ওজনের বেশি মুরগি প্রচুর মারা যাচ্ছে। আমার বড় মুরগির খামারে গত দুদিনে ২৫ শতাংশই মারা গেছে। আশপাশের সবার ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে। যত ভালো খামার ব্যবস্থাপনাই থাকুক এ গরমে মুরগি মারা যাবেই। তবে এ বছর মৃত্যুটা বেশি। 

একই কথা জানান রাউজান উপজেলার অর্ণব পোলট্রি ফার্মের স্বাত্বাধিকারী দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে আমার খামারের বেশকিছু মুরগি মারা গেছে। আরো কিছু মুরগির অবস্থা সংকটাপন্ন। লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমে গেছে। স্যালইন, ভিটামিন সি খাওয়ানোর পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্প্রে করে খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অন্যদিকে গরমের কারণে ভূগর্ভস্থ পানিও তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে পানিরও সংকট আছে। এভাবে গরম পড়তে থাকলে খামার রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। কম দামে তখন বিক্রি করে দিতে হতে পারে।

চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় চার হাজার ব্রয়লার ও পাঁচ শতাধিক লেয়ার মুরগির খামার আছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মুরগি খামারের উপপরিচালক মো. আলমগীর বণিক বার্তাকে বলেন, অনেক বেসরকারি পর্যায়ের খামারে গরমের কারণে মুরগি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে সরকারি খামারগুলোয় এখন কোনো মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। খামারগুলোয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।

যশোরে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ। আগের দিন ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে ১০ হাজারের মতো মুরগি মারা গেছে। শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম বলেন, প্রচণ্ড গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে। আমার খামারে ৭০০ মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১ হাজার ৫৩৪টি। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। কয়েক দিন ধরে যশোরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগির হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।

তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় রংপুরের খামারিরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। লোডশেডিং তাদের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জেলায় লেয়ার মুরগির খামার আছে দেড় শতাধিক এবং ব্রয়লার চার শতাধিক। 

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গরমে সাধারণত ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে সহনীয় ধরা হয়। এর ওপরে গেলে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বলা হয়, যা সব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। হিটস্ট্রোকসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ মুহূর্তে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ আরো বেড়েছে খামারিদের। এ গরম চলতে থাকলে মুরগির মৃত্যু আরো যে কত বাড়বে তা নিয়েই আতঙ্কিত তারা।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশি ছিল। কিছু স্থানে হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমেনি। আগামী দুদিন তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয় বেশি গরম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করছে। এর সঙ্গে নগরায়ন ও গাছপালা কেটে ফেলার কারণে খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া।

পোলট্রি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুরগির বাচ্চার তাপমাত্রা সহ্যক্ষমতা বেশি থাকে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসে। এ কারণে বড় আকারের মুরগি হিটস্ট্রোকে বেশি মারা যায়। 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, অতিরিক্ত গরমে তুলনামূলক ব্রয়লার মুরগি বেশি মারা যায়। কারণ তাদের সহ্যক্ষমতা কম। গরমে ব্রয়লার মুরগি খাবার কমিয়ে দেয়। সে কারণে তার খাবারে এনার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। টিনের চালে পানি বা ভেজা বস্তা দিতে হবে যেন শেড ঠাণ্ডা থাকে।


আরও খবর



নারীর জীবনে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের পানিতে দ্রুত লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে এর প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি, জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশেষ করে নারীর স্বাস্থ্য জীবন-জীবিকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য

গত কয়েক দশকে উপকূলীয় এলাকায় পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে যে উষ্ণায়ন, পরিবেশের বিপন্নতা তার প্রভাব প্রথম এসে পড়ে নারীর ওপর। পানির স্তর নিচে নেমে যায়, নদীর পানি লবণাক্ত হয়ে যায়, নদী শুকিয়ে যায়, দুই-একটি নলকূপে, যেখানে মিষ্টি পানি ওঠে সেখানেও পানির জন্য হাহাকার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা না হলে কলসি নিয়ে পানির খোঁজে দীর্ঘপথ হাঁটা। জ্বালানির জন্য কাঠ সংগ্রহ করতে নারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বনের ভেতরে যেতে হয়। শুধু খাওয়ার পানিই নয়, সংসারে সব কিছুর জন্য যে পানি, সেই পানি সংগ্রহ করার দায়িত্বও নারীর। তাই সেই বিপর্যয় মোকাবিলায় নারীকে সামনে দাঁড়াতে হয়

পশুর নদী অববাহিকায় সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) এর গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, অঞ্চলের মানুষ ভূগর্ভস্থ পানি অন্যান্য খাবার থেকে দৈনিক ১৬ গ্রামের বেশি লবণ গ্রহণ করছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় অনেক বেশি। ২০০৯-১০ সালে খুলনার দাকোপ উপজেলার ১৩-৪৫ বছর বয়সী ৩৪৫ জন অন্তঃসত্ত্বা নারী নিয়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত নোনাপানি গ্রহণের ফলে নারীদের উচ্চ রক্তচাপ, জরায়ুর প্রদাহ, গর্ভকালীন খিচুনি, গর্ভপাত, এমনকি অপরিণত শিশুও জন্ম নিয়েছে

বিষয়ে অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) এর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসি বেগম বলেন, দীর্ঘদিন অতিরিক্ত নোনাপানি গ্রহণ ব্যবহারের ফলে গর্ভকালীন সময়ে নারীদের উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায় এর ফলে জরায়ুর প্রদাহ, গর্ভকালীন খিচুনি, গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে পাশাপাশি অপরিণত শিশু জন্মের আশঙ্কাও থাকে এই লোনাপানি ব্যবহারের ফলে

এর সমাধান হিসেবে তিনি বলেন, গর্ভাবস্থায় নারীদের লোনাপানি গ্রহণ ব্যবহার কমাতে হবে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যায়, নদীর পানি লবণাক্ত হয়ে যায়, নদী শুকিয়ে যায়। এগুলো রোধ করতে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। মানুষের সুস্থতার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন রোধের কোনো বিকল্প নেই

ছাড়া দীর্ঘদিন লবণাক্ত পানি ব্যবহারের ফলে চুল ত্বকের ক্ষতি হয়। রং কালো হয়ে যায় দ্রুত বার্ধক্য চলে আসে। উপকূলের নারী শিশুদের চিংড়িপোনা ধরার জন্য ভাটার সময় ভোরে দিনের বেলায় প্রায় - ঘণ্টা  লবণাক্ত পানিতে থাকতে হয়। এর ফলে প্রজনন স্বাস্থ্যসহ নারী অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন। লবণাক্ত পানির কারণে নারীরা এখন জরায়ু ক্যানসারের মতো জটিল রোগে ভুগছেন। 

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে প্রতিবছর যে কয়েক লাখ নারী জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকিতে থাকেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ উপকূলীয় অঞ্চলের নারীরা। নারীদের জরায়ুসংক্রান্ত অসুখের তীব্রতা লবণাক্তপ্রবণ গ্রামগুলোতে বেশি। সে জন্য অল্প বয়সেই এলাকার নারীরা জরায়ু কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন। 

জাতিসংঘ জনসংখ্যা কর্মসূচির (ইউএনএফপিএ) প্রতিবেদন অনুসারে, অন্তঃসত্ত্বা স্তন্যদাত্রী নারী এবং কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। ছাড়া শুধু স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে সেখানে পুরুষের তুলনায় নারীর মৃত্যুঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি। ১৯৯১ সালের বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড়ে নিহত লাখ ৪০ হাজার মানুষের মধ্যে ৭৭ শতাংশ ছিলেন নারী। ২০০৪ সালের সুনামিতে নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী। ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের পর মায়ানমারের ৮৭ শতাংশ নারী তাদের কাজ হারান। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় আক্রান্তদের (নিহত আহত) ৭৩ শতাংশই ছিলেন নারী


আরও খবর



আগামী সপ্তাহে আবারও তাপপ্রবাহের শঙ্কা

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

গত দুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে দেশের অনেক জেলাতেই তাপপ্রবাহ কিছুটা কমার পাশাপাশি বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে।

শনিবার দেশের তিনটি বিভাগে (খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর) মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। তবে আগামী সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারও তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে গতকাল সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হয়েছে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক ছিল। তবে পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাট জেলার ওপর দিয়ে গতকালও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়।

চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলা এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল বিভাগ এবং খুলনা বিভাগের বিভিন্ন অংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ রবিবার ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আজ থেকে দেশের কিছু স্থানে যে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে, তা শেষ হওয়ার পরই বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী ভারতের ওপর দিয়ে আবারও তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার জোরালো আশঙ্কা রয়েছে।

আজ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি। সোমবার ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি হ্রাস পেতে পারে।


আরও খবর