বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা.
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন ,মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে গণস্বাস্থ্য নগর
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ও ডা.
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রধান চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মামুন
মোস্তাফী বলেন,
‘অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে
জানাচ্ছি আমাদের সবার প্রিয় বড়ভাই (ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী) আর আমাদের মাঝে নেই।
আপনাদের সবার প্রতি আমার নিবেদন, আপনারা সবাই তার জন্য প্রাণভরে দোয়া করবেন।
আল্লাহ যেন তাকে বেহশত নসিব করেন।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু
গণমাধ্যমকে বলেন,
‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টা ১৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। আমরা জানাজা-দাফনের বিষয়ে
আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবো।’
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম
আবদুল্লাহ বলেন,
ওনার দুইটা কিডনিই ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থা থেকে ফিরে আসা
ওনার জন্য কঠিন বিষয় ছিল।ওনার মৃত্যুতে আমাদের স্বাস্থ্যখাতে একটা শূন্যতা তৈরি
হবে, যা প্রায় অনেকটাই অপূরণীয়।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে গত বুধবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায়
রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি
চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রবিবার তার চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এর
প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মামুন মোস্তাফী।
৮২ বছর বয়সী জাফরুল্লাহ চৌধুরী অনেক বছর ধরে কিডনি জটিলতায়
ভুগছিলেন। সম্প্রতি তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো খারাপের দিকে যায়। এর মধ্যে
সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম
জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তার বাবা হুমায়ুন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন
পুলিশ কর্মকর্তা আর মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা–বাবার ১০ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ছিলেন সবার বড়।
১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে
ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড
হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালের নামেই
একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা
করে নাম ঠিক করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
হাসপাতালের পাশাপাশি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিও গড়েছেন
জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৮২ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ওষুধ নীতি প্রণয়নেও তার ভূমিকা
ছিল।