বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু রোগের টিকার সফল পরীক্ষা
হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ও যুক্তরাষ্ট্রের
ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকরা এই টিকার
সফল পরীক্ষা করেছেন। টিকার নাম দেওয়া হয়েছে টিভি-০০৫ (টেট্রাভেলেন্ট)।
ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন—ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও
ডেন-৪। টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে, চারটি ধরনের
বিরুদ্ধেই এই টিকা কার্যকর। টিকার এই সফল পরীক্ষা নিয়ে একটি প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক
সাময়িকী ‘ল্যানসেটে’ বুধবার প্রকাশিত হয়েছে।
এই টিকা গবেষকদের একজন আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী মোহাম্মদ
শফিউল আলম বলেন,
এটি একটি আশাব্যঞ্জক ঘটনা। যেহেতু দেশে ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রকোপ চলছে,
তার মধ্যে এটি একটি আশার খবর।
বাংলাদেশে ডেঙ্গু টিকা টিভি-০০৫-এর দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা
শুরু হয়েছে ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ। শেষ হয় ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি।
এতে অংশ নেন ১৯২ জন। তারা সবাই স্বেচ্ছায় অংশ নেন।
প্রাপ্তবয়স্ক ১৮ থেকে ৫০ বছর (২০ জন পুরুষ ও ২৮ জন নারী), কিশোর ১১ থেকে ১৭ বছর (২৭ জন
পুরুষ ও ২১ জন নারী), শিশু ৫ থেকে ১০ বছর (১৫ জন পুরুষ ও ৩৩
জন নারী) এবং ছোট শিশু ১ থেকে ৪ বছর (২৯ জন পুরুষ ও ১৯ জন নারী)। চারটি বয়সের
শ্রেণিতে বাছাই করে টিকা বা প্লাসিবো করা হয়। অর্থাৎ প্রতি দলে ৪৮ জন করে
অংশগ্রহণ করেছিলেন। এসব ব্যক্তির কারও কারও আগেই ডেঙ্গু হয়েছিল, আবার কারও হয়নি। অংশগ্রহণকারীরা সবাই ছিলেন বাংলাদেশি। টিকার বেশির ভাগ
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল সামান্য।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম ছিল ফুসকুড়ি বা র্যাশ। ১৪৪ জন টিকাগ্রহণকারীর ৩৭ জনের (২৬%) এবং ৪৮ জন প্লাসিবো প্রাপকের মধ্যে ৬ জনের (১২%) ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছিল ফুসকুড়ি। টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জ্বর ছিল ৭ জনের (১৪৪-এর ৫%) ক্ষেত্রে এবং আরও ৭ জন গিঁটে ব্যথা (১০৮-এর ৬%) অনুভব করেছেন। টিকা গ্রহণের ১৮০ দিন পর সব অংশগ্রহণকারীর ( ১৪২ জন) মধ্যে বেশির ভাগ সেরোটাইপের (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪) বিপরীতে সেরোপজিটিভ দেখা গেছে।