ডিমের
বাজারে অস্থিরতার পেছনে উৎপাদনকারী বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করে সংসদে দেওয়া এক
সংসদ সদস্যের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। তাদের
দাবি, ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এটি বন্ধ না হলে
ডিমের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি শিল্পখাতটি ধ্বংসের দিকে যাবে।
গত ১৯
জুন জাতীয় সংসদে একজন সংসদ সদস্য বাংলাদেশে ডিমের বাজার নিয়ে বক্তব্যে অভিযোগ
করেন– কাজী ফার্মস, প্যারাগন, সিপি–বাংলাদেশসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান, ‘মুরগির
ডিমের বাজারে সিন্ডিকেট করে ৫২ দিনে ৯৩২ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে।’
তিনি বাজার সিন্ডিকেটের হোতাদের কারাগারে পাঠানোরও কথা বলেন।
তার ওই
বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ডিম উৎপাদনকারীদের সংগঠন ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন। প্রতিবাদ
লিপিতে জানানো হয়, সংসদ সদস্যের বক্তব্যের তথ্য সম্পূর্ণ ভুল, ভিত্তিহীন ও
অবাস্তব।
ব্রিডার্স
অ্যাসোসিয়েশন বলছে, বাংলাদেশে ডিমের বাজারে ‘সিন্ডিকেট‘
কখনোই ছিল না এবং সিন্ডিকেট গঠন করাও সম্ভব নয়। কারণ হিসেবে তারা জানান, ডিম উৎপাদন
করেন লক্ষাধিক খামারি, যারা দেশের সর্বত্র, গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে আছেন। উৎপাদিত
ডিমের মাত্র শতকরা ১৫ ভাগ উৎপাদন করে বড় কোম্পানি প্রতিষ্ঠানগুলো। এই পরিস্থিতিতে
উল্লেখিত কোম্পানিগুলোর পক্ষে সিন্ডিকেট করে বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
কেননা চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে ডিমের দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে।
ব্রিডার্স
অ্যাসোসিয়েশন বলছে, সব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মোট ডিম উৎপাদন দৈনিক ৬০ লাখ। এই
হিসেবে ৫২ দিনের উৎপাদিত ডিমের পরিামাণ ৩১ কোটি ২০ লাখ। খামার পর্যায়ে প্রতিটি
ডিমের গড় বিক্রয়মূল্য ১০ টাকা ধরলেও মোট বিক্রয়মূল্য ৩১২ কোটি টাকা হয়। ব্রিডার্স
অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, বিক্রয়মূল্য থেকে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কোনো হিসাবেই ৯৩২
কোটি টাকা লুটে নেয়া সম্ভব নয়। সুতরাং সংসদ সদস্যের অভিযোগ ভুল ও অবাস্তব।
সংগঠনটির
দাবি, গত ৩০ বছরে কখনো ডিমের বাজারে সিন্ডিকেটের কথা শোনা যায়নি। অতি সম্প্রতি
একাধিক মহল থেকে বিশেষ উদ্দেশ্যে সুপরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেটে নিয়ে ব্যাপক
অপপ্রচার চালানো হচ্ছে; তাদের উদ্দেশ্য– পোল্ট্রি শিল্পকে দুর্বল ও দেশকে
আমদানি নির্ভর করা। এর অংশ হিসেবে দেশীয় উৎপাদন বন্ধ করে বিদেশ থেকে পোল্ট্রি খাদ্য
আমদানি করার কথা ভাবছে তারা।