Logo
শিরোনাম

এবার ৩২ হাজার মণ্ডপে দুর্গাপূজা

প্রকাশিত:রবিবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সীমিত পরিসরে দুর্গাপূজা হলেও এবার উৎসবের রঙে ফিরছে। সারাদেশে এবার ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানান, গত বছরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার ঘণ্টা বাজবে ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে। ১ অক্টোবর শুরু হবে মূল পূজা, যা ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।

পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক বলেন, আমরা সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ—একথা বলা যাবে না। ঘটনা ঘটতে পারে, তবে আমরা এবার খুব সচেতন। সর্বোচ্চ সিসিটিভির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গ্রামে বিভিন্ন বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সেই মন্দিরগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ যেগুলো অস্থায়ী মন্দির। স্থায়ী জায়গায় না হয়ে মাঠে, ময়দানে বা বিভিন্ন রাস্তায় যেসব মণ্ডপ স্থাপন করা হয়, সেগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে আমাদের বেশি বেশি পাহারা দিতে হবে।

জে এল ভৌমিক আগামী নির্বাচনের আগেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই বার বার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে। ২০১৮ সনের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইশতেহারে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের কথা বলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগেই এটা করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার জানান, গত বছর সারাদেশে দুর্গাপূজার সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮ টি। এবার এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ১৬৮টি। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৪১টি, যা গত বছরের থেকে ৬টি বেশি।


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪




মেঘনায় ঢাকাগামী লঞ্চে আগুন

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ভোলা থেকে রাজধানী সদরঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ কর্ণফুলী-৩ এ আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে ৭ যাত্রী আহত হয়েছেন। অনেকে আতঙ্কে নদীতে লাফিয়ে পড়েন। পরে লঞ্চটি চাঁদপুরের হাইমচর সংলগ্ন আবাল বিল নামে একটি চরে নোঙর করা হয়।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে হাইমচর সংলগ্ন আবাল বিল চর এলাকার মেঘনা নদীতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

কর্ণফুলী-৩ লঞ্চের সহকারী মাস্টার মো. রইচ উদ্দিন সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কয়েক শ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটের দিকে লঞ্চটির ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ করে আগুন লেগে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে লঞ্চটি আবাল বিল চরে নোঙর করে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

সহকারী মাস্টার আরও জানান, আগুন লাগার পরই তা পুরো ইঞ্জিনরুমে ছড়িয়ে পড়ে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের সহায়তা চাওয়া হয়। চরে নামিয়ে দেওয়া যাত্রীদের কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ ঢাকায় নিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে লঞ্চটিতে থাকা মনিরুল ইসলাম রুবেল নামে এক যাত্রী জানান, আগুন লাগার খবরে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইঞ্জিনরুমসহ লঞ্চের নিচতলা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে।

ভোলা জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হোসাইন জানান, ঘটনাটি জানার পর তিনি কোস্টগার্ডকে বিষয়টি অবগত করেছেন। চাঁদপুরের একটি কোস্টগার্ড টিম ঘটনাস্থলে যাবে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ঘটনাস্থল ভোলার বাইরে, সেজন্য এখনো নিশ্চিত করে ঘটনার বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব না।


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪




লাফিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা, মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ঈদুল ফিতর আর বাংলা নববর্ষ মিলিয়ে এবার দীর্ঘ ছুটি ছিল। এমন ছুটিতে গ্রামে যাওয়ার সুযোগ কে হাতছাড়া করে? তবে উসবেও আমাদের একমাত্র উকণ্ঠা হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। পৃথিবীর প্রত্যেক জনপদেই উসব পালিত হয়। কিন্তু কোনো নাশকতা ছাড়া শুধুমাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষ হতাহতের নজির বোধ হয় অন্য কোথাও নেই। 

ঈদের ছুটি কাটিয়ে শহরে ফেরার পথে বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। এর মধ্যে গাড়ির উচ্চগতি, ওভারটেক, ঝাঁকুনি কিংবা হার্ডব্রেক অবচেতনে ডেকে আনছিল মৃত্যুভয়। তবে শেষমেশ নিরাপদেই ফিরতে পেরেছি। তবে কারো কারো কপালে সে ভাগ্য হয়নি। এবারের ঈদযাত্রায়ও সড়ক দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে এসেছে প্রতিদিনই।

গত ১৬ এপ্রিল ফরিদপুরের কানাইপুরে বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাকের ধাক্কায় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিভিন্ন গাড়ির আরও ১৪ আরোহী নিহত হয়। দুর্ঘটনায় নিহতের এ তালিকায় যোগ হয়েছে তরুণ সংগীতশিল্পী মতিউর রহমান হাসান ওরফে পাগল হাসানের নাম। ১৮ এপ্রিল সকালে কনসার্ট থেকে ফেরার পথে সুনামগঞ্জের ছাতক পৌর শহরের সুরমা সেতুর কাছে বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সঙ্গীসহ নিহত হয়েছেন পাগল হাসান।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য বলছে, ঈদযাত্রা শুরুর দিন (৪ এপ্রিল) থেকে ১৮ এপ্রিল কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত ১৫ দিনে সড়কে ৩৯৯টি দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে দুটি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছে। সবমিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌ পথে ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও এক হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।

অন্যদিকে গত বছর ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ ও আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে। আর এসব দুর্ঘটনায় যথারীতি মোটরসাইকেলই শীর্ষে রয়েছে। এবারের ঈদে ১৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ২৪০ জন আহত হয়েছে; যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯.৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০.৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০.৩৭ শতাংশ প্রায়।

যদিও সব দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে আসে না। তাই প্রকৃত দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আট বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৬০ হাজার ৮৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় তিন হাজার ৮৬২ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে চার হাজার ৪৭৫ জনের। অর্থা শুধুমাত্র ঈদের মৌসুমেই সড়ক দুর্ঘটনায় ৭.৩৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য বলছে, গত ১১ এপ্রিল ঈদের দিনে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে ঈদের আগে-পরে ছয় দিন এবং ঈদের দিন মিলিয়ে সাত দিনে সারা দেশে মোট ১১৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২২ জন নিহত এবং আহত হয়েছে আরো অন্তত ১৯৫ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৬ শতাংশের বেশি জাতীয় মহাসড়কে, ৩৪ শতাংশের বেশি আঞ্চলিক সড়কে, ১৮ শতাংশ গ্রামীণ সড়কে এবং প্রায় ১১ শতাংশ শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমান সময়ে মোট দুর্ঘটনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ঘটে মোটরসাইকেলে। যার মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৫.১১ শতাংশ, মুখোমুখি সংঘর্ষে ২১.২৫ শতাংশ, অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে ধাক্কা বা চাপায় ২৩.৬২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই উঠতি বয়সী তরুণ।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। আর বর্তমান সরকারের সময়ে যে পরিমাণ নতুন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে তা অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। ১৯৭১ সালে মাত্র তিন হাজার ৬০০ কিলোমিটারের সড়ক দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশে বর্তমানে তিন লাখ ৭৫ হাজার কিলোমিটারে সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় ও আঞ্চলিক মিলিয়ে ২২ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক আছে।

এসব সড়ক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে হাইওয়ে পুলিশের ৭৩টি ইউনিটের প্রায় তিন হাজার সদস্য। ইতিমধ্যে দেশে অনেকগুলো মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস, আন্ডারপাস, ওভারব্রিজ নির্মিত হয়েছে। দুই লেনের মহাসড়ক চার লেনে পরিণত হয়েছে আর চার লেনগুলো আট লেনে পরিণত হবে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ফলে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এত এত অবকাঠামো উন্নয়ন, জনবল মোতায়েন এবং পরিবহন আইন সংস্কার সত্ত্বেও সড়কে শৃঙ্খলার অভাব রয়ে গেছে, যা রোজার ঈদ আর কোরবানির ঈদে প্রকট আকার ধারণ করে।

ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার কারণ বিশ্লেষণে দেখা যায়: ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ভাঙাচোরা সড়ক, অদক্ষ চালক, দুর্নীতি, ট্রাফিক তদারকির অভাব, অপ্রশস্ত সড়ক, বেপরোয়া গতি, মহাসড়কে মোটরসাইকেল, তিন চাকার গাড়ি চলাচল ইত্যাদি। পরিবহনের তুলনায় যাত্রী কয়েকগুণ বৃদ্ধি ও পরিবহন মালিকের অতিমুনাফার লোভে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালক রাস্তায় নামানো হয়। সড়ক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কর্তব্যে অবহেলা ও দুর্নীতি সড়ক শৃঙ্খলার অন্তরায়। এমনকি মহাসড়কে অনভ্যস্ত শহুরে সিটি বাসগুলো সড়কে চাপ তৈরি করে। আর অধিক ট্রিপ পাওয়ার আশায় বিরতিহীন ও বেপরোয়া গতিতে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

 


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪




সূর্যোদয়ের ১৩ মিনিট পরই আরব আমিরাতে ঈদের জামাত

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ঈদ জামাতের সময়সূচি ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। দেশটির বিভিন্ন শহরে বা বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

তবে দেশটিতে প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সূর্যোদয়ের ১৩ মিনিট পর। এছাড়া অন্যান্য শহর বা স্থানে সূর্যোদয়ের সময় ভেদে ১৯ মিনিট পর পর্যন্তও ঈদ জামাতের সময়সূচী ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদন এবং সার্চ ইঞ্জিন গুগলের সূর্যোদয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই বিষয়টি সামনে এসেছে।

মূলত সোমবার আরব আমিরাতের আকাশে শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখা যায়নি। আর তাই আজ মঙ্গলবার ৩০ রোজা পালন শেষে আগামীকাল বুধবার দেশটিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে।

গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে এবং দেশটির জেনারেল অথরিটি অব দ্য ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এন্ডোমেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের নামাজের সময় ঘোষণা করেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে আরব আমিরাতের এই কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে সকল আমিরাতের (এবং কিছু প্রধান অঞ্চলের জন্য) ঈদের নামাজের সময়সূচী ভাগ করে দিয়েছে।

ঘোষণা অনুযায়ী, আবুধাবিতে ঈদের জামাত সকাল ৬টা ২২ মিনিটে, দুবাইয়ে ৬টা ২০ মিনিটে, শারজাহ ও আজমানে ৬টা ১৭ মিনিটে, রাস আল খাইমাহতে ৬টা ১৫ মিনিটে, ফুজাইরাহ ও খোরফাক্কানে ৬টা ১৪ মিনিটে এবং উম্মে আল কুওয়াইনে ৬টা ১৩ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া আল আইনে ৬টা ১৫ মিনিটে এবং জায়েদ সিটিতে বুধবার সকাল ৬টা ২৬ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত।

জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের তথ্য অনুযায়ী, উম্মে আল কুওয়াইন বুধবার সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টায়। অর্থাৎ সূর্যোদয়ের ১৩ মিনিট পর ৬টা ১৩ মিনিটে সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বুধবার সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৫ মিনিটে। এর ১৭ মিনিট পর ৬টা ২২ মিনিটে সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া একইদিন দুবাইয়ে সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০১ মিনিটে। এর ১৯ মিনিট পর ৬টা ২০ মিনিটে সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে শারজাহ ও আজমানের পাশাপাশি রাস আল খাইমাহ ও ফুজাইরাহ ও খোরফাক্কানেও সূর্যোদয়ের ১৭ মিনিট পর ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে রোজা শেষে ঈদের দিনকে ঘিরে আরব আমিরাতের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রবাসী বাঙালিরাসহ স্থানীয়রা ঈদ ঘিরে বিভিন্ন আয়োজন করেছেন।

 


আরও খবর

খরচ কমলো হজ প্যাকেজের

শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24




দাম কমল ২৩ ধরনের হার্টের রিংয়ের

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

দেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ২৩ ধরনের রিংয়ের দাম কমিয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী সর্বনিম্ন ২০ হাজার ও সর্বোচ্চ ৬৮ হাজার টাকায় পাওয়া যাবে রিং।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ও অন্যান্য দেশের হার্টের রিং উৎপাদনকারী কোম্পানির প্রতিনিধি এবং ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির হার্টের রিংয়ের দাম কমানো হয়েছে।

তবে সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে এই মূল্য নির্ধারণ করেছে অধিদপ্তর। নতুন করে হার্টের রিংয়ের দাম নির্ধারণ করায় রিং ভেদে দাম বেড়েছে ২ হাজার থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

ইউরোপীয় আমদানিকারকেরা রিং সরবরাহ বন্ধ রাখায় বাজারে সংকট তৈরি হয়েছিল বলে দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজেসের পরিচালক ও ডিজিডিএর বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ডা. মীর জামাল উদ্দিন।

তিনি বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে হার্ট রিংয়ের দাম কমানো হলে ইউরোপিয়ান রিং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতের দারস্থ হয়েছিল। রিটের মিমাংসা হওয়ার পরে তাদের প্যারেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা বসেছিলাম। ওই দামে রিং বিক্রি করলে তাদের ক্ষতি হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে। তাদের পক্ষে ওই দামে রিং সরবরাহ করা সম্ভব নয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, হার্টের রিংয়ের মূল্য হ্রাসে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ডিজিডিএ নতুন নির্ধারিত দামের সঙ্গে ২০২১ ও ২০২২ সালের রিংয়ের দামের তুলনা করেছে। সে হিসেবে রিংয়ের দাম কমেছে। তবে সেখানে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা দামের উল্লেখ নেই।

অধিদপ্তরটির পরিচালক (প্রশাসন) মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে রিংয়ের দাম কমানোর চেষ্টা করছিলাম। এর প্রেক্ষিতেই এটা করা হয়েছে। সবগুলো হাসপাতালে নতুন এই মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখতে হবে।

বাংলাদেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় বিভিন্ন দেশের তৈরি ২৬ ধরনের রিং ব্যবহার হয়ে থাকে। নতুন মূল্য তালিকায় এগুলোর দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মাস কয়েক আগে ৩টি স্টেন্টের দাম কমানো হয়েছিল, যেগুলো এখন অপরিবর্তিত রয়েছে।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ঔষধ প্রশাসন যখন রিংয়ের দাম নির্ধারণ করে দেয় তখন আমদানিকারকদের একটি বড় অংশ নতুন মূল্য নিয়ে আপত্তি তুলেছিলে। যা পরবর্তীতে আদালতেও গড়িয়েছিল। তবে এবার নতুন দাম নির্ধারণ করার পর এখন পর্যন্ত কোনো আপত্তি দেখা যায়নি।

কোন রিংয়ের কত দাম নির্ধারণ-

পোল্যান্ডের তৈরি অ্যালেক্স প্লাস ব্র্যান্ডের দাম ৬০ হাজার টাকা, অ্যালেক্স ব্র্যান্ড ৬০ হাজার টাকা, অ্যাবারিস ব্র্যান্ড ৬০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

জার্মানির করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর ব্র্যান্ডের দাম ৫৩ হাজার টাকা, করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর নিও ব্র্যান্ড ৫৫ হাজার টাকা, জিলিমাস ব্র্যান্ড ৫৮ হাজার টাকা করা হয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের ওরসিরো ব্র্যান্ডের দাম ৬৩ হাজার টাকা, ওরসিরো মিশন ৬৮ হাজার টাকা করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি জেনোস ডেস ব্র্যান্ডের দাম ৫৬ হাজার টাকা করা হয়েছে।

স্পেনের ইভাসকুলার এনজিওলাইটের দাম ৬২ হাজার টাকা করা হয়েছে।

জাপানের আল্টিমাস্টারের দাম ৬৬ হাজার টাকা করা হয়েছে।

নেদারল্যান্ডসের অ্যাবলুমিনাস ডেস প্লাসের দাম ৬৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।

ভারতে তৈরি মেটাফর ব্র্যান্ডের দাম ৪০ হাজার টাকা, এভারমাইন ফিফটি ব্র্যান্ড ৫০ হাজার টাকা, বায়োমাইম মর্ফ ৫০ হাজার টাকা, বায়োমাইম ৪৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাফিনিটি-এমএস মিনির দাম ৬০ হাজার টাকা, ডিরেক্ট-স্টেন্ট সিরো ৬৬ হাজার টাকা এবং ডিরেক্ট-স্টেন্ট ৩০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের তৈরি বায়োমেট্রিক্স নিওফ্ল্যাক্সের দাম ৬০ হাজার টাকা, বায়োমেট্রিক্স আলফা ৬৬ হাজার টাকা এবং বায়োফ্রিডম ৬৮ হাজার করা হয়েছে।


আরও খবর

তীব্র তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার উপায়

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪




অগ্নিনির্বাপন বিধিমালা মানছে না কেউ

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

সম্প্রতি ভয়াবহ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের মুখোমুখি হয়েছে দেশবাসী। কোনও ঘটনা থেকেই পরবর্তী দুর্ঘটনা রোধে তেমন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষকে। সর্বশেষ গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সমালোচনার পর নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। যথাযথ অগ্নিপ্রতিরোধব্যবস্থা না রাখায় রাজধানীর অনেক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে এসব সংস্থা। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা পাওয়ায় সিলগালাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে।

কোনও অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক হতাহত হওয়ার পর অভিযানে নামে সিটি করপোরেশন ও রাজউক। কয়েক দিন চলার পর এসব অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন বিভিন্ন ভবনে মার্কেটে অভিযান চালিয়েছে। অগ্নিকাণ্ড নীতিমালা যারা মানেনি, তাদের সতর্ক করে নোটিশ দিয়েছিল। কয়দিন পর অভিযান বন্ধ করে দেয়।

এবার আবার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন পর একযোগে আবার অভিযানে নামে বিভিন্ন সংস্থা। তিন দিন অভিযান চালিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আর কোনও সাড়াশব্দ নেই। এভাবেই একটা ঘটনা ঘটে আর সংস্থাগুলো তৎপর হয়; তা-ও খুব অল্প সময়ের জন্য।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, বিভিন্ন ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ আমলে নেয় না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টরা। রাজধানীতে দুর্ঘটনা ঘটলেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ভবন-মার্কেটের অনুমোদন না থাকা বা ঝুঁকিপূর্ণ থাকার বিষয়টি সামনে আনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

তারা বলছে, ফায়ার সার্ভিস সরেজমিনে অগ্নি-সতর্কতা নোটিশ দিলেও তা আমলে নিতে চান না অধিকাংশ মার্কেট দোকান মালিক প্রতিষ্ঠান ও ভবনের মালিকরা। নানাভাবে ম্যানেজ করে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা ছাড়াই ভবনগুলোয় কার্যক্রম রাখা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।

ফায়ার সার্ভিসের সূত্র বলছে, যথাযথ জবাবদিহি ও সতর্কতার অভাবেই ঘটছে ভয়াবহ এসব অগ্নিকাণ্ড। সংস্থাটি জানায়, তাদের কাজ হলো, কোনও ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা না রাখা হলে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নোটিশ দেওয়া। এরপরও যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ফের নোটিশ দেয় ফায়ার সার্ভিস।

তবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কেউ যদি নীতিমালা অমান্য করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার ফায়ার সার্ভিসের নেই। ফলে সংস্থাটি যেন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত চালাতে পারে, এ জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা উচিত।

২০২৩ সালে রাজধানীর ৫৮টি বিপণিবিতান পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস। পরিদর্শন শেষে তাদের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সব কটি বিপণিবিতানই অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ৯টি বিপণিবিতান অগ্নিকাণ্ডের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে ফায়ার সার্ভিস। বাকি ৪৯টির মধ্যে ৩৫টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৪টি মাঝারি মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ।

গত বছরের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন লেগে প্রায় পাঁচ হাজার দোকান পুড়ে যায়। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল পাশের মার্কেট মহানগর কমপ্লেক্স পর্যন্ত। এমন ভয়াবহু অগ্নিকাণ্ডের পরও ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এখনও সতর্ক হননি। টিন আর কাঠ দিয়ে তৈরি করা দ্বিতীয় তলাবিশিষ্ট ওই মার্কেটটিতে অগ্নিঝুঁকি নিয়েই ব্যবসা করে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেটিতে যেমন রয়েছে সরু পথ, তেমনি নেই কোনও ধরনের অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা। এ ছাড়া বঙ্গবাজারে এনেক্সকো টাওয়ারের বেসমেন্টে দোকান খুলে এখনও দেদার চলছে ব্যবসা।

শুধু মহানগর কমপ্লেক্স, এনেক্সকো টাওয়ারই নয়, সরেজমিনে দেখা যায়, অগ্নিঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছে রাজধানীর আরও কয়েকটি মার্কেট। এর মধ্যে রয়েছে নিউ মার্কেটের নূর ম্যানশন ও গাউছিয়া মার্কেট। দোকান খুলে ব্যবসা করছে নিউ মার্কেটের গ্লোব শপিং সেন্টারের আন্ডারগ্রাউন্ডেও।

জানতে চাইলে এনেক্সকো টাওয়ারে নিচতলার আকসান ফাহিম ফ্যাশনের ব্যবস্থাপক সোলেমান বাদশা  বলেন, এত বড় অগ্নিকাণ্ডের পরও অগ্নিঝুঁকি বিষয়ে কোনও প্রশিক্ষণ আমাদের দেওয়া হয়নি। অগ্নি প্রতিরোধের তেমন কোনও ব্যবস্থা আমরা পাইনি। আমি প্রতি মাসে সার্ভিস চার্জ দিচ্ছি। তাহলে আমি কেন সুবিধাটা পাচ্ছি না? আমরা সব হারিয়ে এখন নতুন দোকান শুরু করেছি। এসব দায়িত্ব তো মার্কেট সমিতির!

এ বিষয়ে এনেক্সকো টাওয়ারের পরিচালক আল-মামুন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর মার্কেটে অনেক কাজ করা হয়েছে। বসানো হয়েছে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। তবে আমাদের এখনও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আরও কী কী সুবিধা বাড়ানো যায়, মার্কেটকে কীভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সে জন্য আমরা কাজ করছি। সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আমাদের মার্কেট এসে ভিজিট করে গিয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে গেছে। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। প্রশিক্ষণের বিষয়ে যেটি বলা হচ্ছে, সেটিও আমরা দ্রুত ব্যবস্থা করবো।

শুধু কমিটির দোষ দিলেই হবে না মন্তব্য করে প্রশ্ন রাখেন তিনি, কতজন দোকানদার অগ্নি বিষয়ে সচেতন? কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করবে, অথচ সামান্য টাকা দিয়ে দোকানে একটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বসাবে না? সেটির ব্যবস্থা রাখবে না তারা?

রাজধানীর কয়েকটি মার্কেটের ব্যবসায়ীর ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যেও অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে আগ্রহ কম। এ বিষয়ে অনেকের জ্ঞান শূন্য। বছর পর বছর ব্যবসা করছে, অথচ অনেক দোকানমালিক ও কর্মচারীর অগ্নি প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোনও ধারণাই নেই। এমনই দুজন মহানগর কমপ্লেক্সের রিম গার্মেন্টসের মালিক মো. মামুন ও গাউছিয়া মার্কেটের ফিমা ফ্যাশনের পরিচালক নাসিরু উদ্দিন বাবু।

নাসিরু উদ্দিন বাবু বলেন, সব মার্কেটের একই অবস্থা। কোনও কিছু ঠিক নেই। প্রশিক্ষণ কারা দেবে? আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সব তো মার্কেট সমিতির কাজ।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া) শাজাহান শিকদার বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কাজ হলো কোনও ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা না রাখা হলে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নোটিশ দেওয়া। এরপরও যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ফের নোটিশ দেওয়া হয়। তবে কেউ যদি নীতিমালা না মানে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার নেই সংস্থাটির।

ফলে যেহেতু বাধ্যবাধকতা নেই, সেই সুযোগটাই নিচ্ছেন ভবনমালিকরা মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে অগ্নিনীতিমালা মানার উদাসীনতা রয়েছে। আমরা বারবার ভবন পরিদর্শন যাচ্ছি, নোটিশ দিচ্ছি; যারা না মানছে, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও ব্যবস্থা চাইলেও নিতে পারছি না। তবে মাঝেমধ্যে প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সেটিও অল্প সময়ের জন্য।

মানবাধিবার কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন তাদের ভূমিকা কি কেবল নোটিশ দেওয়া? বেইলি রোডের ভবনটিতে বাণিজ্যিক অনুমোদন নেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রভাবশালী মহলের চাপ ছিল বলে শোনা যাচ্ছে। যে কারণে ভবনটিকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বাণিজ্যিক ব্যবহার ও রেস্তোরাঁ পরিচালনা দুটি ভিন্ন ব্যবহার। যেখানে মাত্র একটি সিঁড়ি, এমন একটি ভবনে রেস্তোরাঁ চলতে পারার কথা নয়।

ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডে সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা প্রভাবশালী, তারা কি এতগুলো মানুষের জীবনের চেয়েও প্রভাবশালী? তারা কীভাবে দিনের পর দিন এগুলোর পুনরাবৃত্তি করছে? এত দুর্ঘটনার পরও কি রাষ্ট্রের টনক নড়বে না?

এদিকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বলছে, ইস্যু করার ক্ষেত্রে যেসব নথিপত্র প্রয়োজন হয়, তার ভিত্তিতেই ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়। পরে ব্যবসায়ীরা নিজেদের সুবিধামতো ব্যবসার শ্রেণি পরিবর্তন করলেও তা আর জানায় না।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার সময় ব্যবসায়ীরা যে ঠিকানা ও ব্যবসার শ্রেণি উল্লেখ করে, পরে তা পরিবর্তন করে ফেলে। নিয়মিত অভিযান চালালেও সব ক্ষেত্রে তা আমাদের নজরে আসে না।

ফায়ার ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শুধু ফায়ার সার্ভিস একা তা পারবে না। ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব কোনও আইন নেই। অগ্নিনীতিমালা তাদের সুপারিশ যেন মানতে বাধ্য হয়, সেই ক্ষমতা ফায়ার সার্ভিসকে দিতে হবে। যারা অনিয়ম করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থা যেমন সিটি করপোরেশন, রাজউক, এফবিসিসিআই, ব্যাংকসবাই যদি তাদের কাজটি যথাযথভাবে পালন করে, ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র, ব্যবসার লাইসেন্স ও ব্যাংকঋণ দেওয়ার আগে ভবন বা ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অগ্নিনীতিমালা মানছে কি না, এসব যাচাই-বাছাই করে তারপরই অনুমতি দিতে হবে। এককথায় ভবন মালিকদের নিয়মের জালে আনতে হবে। তাহলেই অগ্নিকাণ্ড কমানো সম্ভব।


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪