কোনোভাবেই
নিয়ন্ত্রণে আসছে না, সবজির বাজার। টানা ৩ সপ্তাহ ধরে প্রায় সব ধরনের সবজি বিক্রি
হচ্ছে ৮০ টাকার উপরে। যা এ সপ্তাহেও অব্যাহত রয়েছে। ফলে ক্রেতা অস্বস্তি চরমে
ঠেকেছে। বিক্রেতারা জানান, শীতের সবজি না আসা পর্যন্ত বাজার চড়াই থাকবে। এদিকে দাম
বেঁধে দেওয়ার এক মাস পার হলেও বাজারে কার্যকর হয়নি তিন পণ্যের দাম, উল্টো দাম
বেড়েই চলছে আলু ও পেঁয়াজের।
রাজধানীর বাজারে কাঁচা পেঁপে ছাড়া সব ধরনের সবজি বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকার উপরে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন ৮০, ১০০ ও ১২০ টাকা এই ৩ দামেই বিক্রি হয়েছে বেশির ভাগ সবজি।
এর বাইরে সিমের কেজি বিক্রি হয়েছে ২শ’ টাকা এবং টমেটের কেজি বিক্রি হয়েছে
১৪০ টাকা দরে। এছাড়াও প্রতিকেজি দেশি কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকার উপরে।
সপ্তাহ
ব্যবধানে প্রায় ২০ টাকা বেড়ে সরু লম্বা বেগুন, কচুরলতি, কচুরমুখী ও করোল্লা বিক্রি
হয়েছে ১শ’ টাকার উপরে। ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে গোল বেগুন, গাজর ও
বরবটি। আর ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে ঢেঁড়স, পটল, ধুন্ধল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা,
শসা ও কাকরোলসহ বেশ কিছু সবজি। বাজারে যা নিয়মিত ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে।
বিক্রেতারা
জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই বাড়তি। তাই খুচরা বাজারে দাম
কমছে না। অন্যদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় সবজির
সরবরাহ কম। সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে সবজির সরবরাহে ঘাটতি থাকে। মৌসুম
পরিবর্তনের কারণে এমনটা হয়। সে হিসাবে নভেম্বর পর্যন্ত সবজির বাজার চড়া থাকতে
পারে। শীতের আগাম সবজি আসতে শুরু করলে সবজির দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেও জানান
তারা।
এদিকে, দাম
বেঁধে দেওয়ার একমাস পার হলেও বাজারে কার্যকর হয়নি ডিম আলু ও পেঁয়াজের দাম। উল্টো
তা বেড়েইে চলেছে। এদিন রাজধানীর বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১শ’
টাকার উপরে। যা এক মাস আগে ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকার মধ্যে। সে হিসেবে দাম নির্ধারণের
পর প্রতিদিন গড়ে কেজিতে ১ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে ভারতীয় পেঁয়াজ এক মাস
আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি দরে। যা এদিন বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকার উপরে।
অন্যদিকে
অস্বস্তি বিরাজ করছে আলুর বাজারেও। মানভেদে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০
টাকার মধ্যে। যা এক মাস আগে দাম নির্ধারণের সময় বিক্রি হয়েছিল ৪০ টাকা দরে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন বাজারে নতুন আলু আসার আগ পর্যন্ত দাম কমার কোনো সম্ভাবনা
নেই। এদিকে আলুর সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর না হলে আমদানি করার হুঁশিয়ারি
দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাজারে
তুলনামূলক ডিমের দাম কমলেও এখনো নির্ধারিত দাম কার্যকর হয়নি। তবে প্রান্তিক
খামারিদের উদ্যোগে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে গত সোমবার থেকে নির্ধারিত দামে ডিম
বিক্রি করছে ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এদিনও বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি
হয়েছে ১৫০ টাকা দরে যা নির্ধারিত দরের থেকে এখনো কিছুটা বেশি। এদিকে
বাণিজ্যমন্ত্রী এ সপ্তাহের মধ্যে আমদানিকৃত ডিম দেশে আসার কথা জানালেও এখনো তা
বাজারে এসে পৌঁছায়নি।
গত
সপ্তাহের দাম অব্যাহত আছে মাছের বাজারে। মাঝারি আকারের রুইয়ের কেজি বিক্রি হয়েছে
৪৫০, বড় কাতল ৫শ’, বড় পাঙ্গাশ আড়াইশ, চাষের কই (ছোট) ৩৭০, তেলাপিয়া ৩শ’
ও শিং মাছ ৬শ’, শোল মাছ ৮শ’, পাবদা ৬শ’
থেকে ৭শ’, ট্যাংরা মাছের কেজি আকার ভেদে ৮শ’ থেকে ১ হাজার, মলা মাছ ৬শ’,
বাইলা ১ হাজার টাকা, পোয়া মাছ ৪শ টাকা, মাঝারি আকারে বোয়াল ৭শ’
থেকে ৮শ’, গুড়ামাছ ৪শ’, ছোট চিংড়ি ৫শ’,
গলদা ৭শ’ এবং বাগদা ৮শ’ থেকে ৯শ’ও
রূপচাঁদা ১ হাজার টাকা দরে।
রাজধানীর
বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগির দাম। এদিন সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে
৩৩০, ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ২১০ এবং লেয়ার বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা দরে। তবে কিছুটা
বেড়ে গরুর মাংশ প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ৭৮০ টাকায়।