শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টার :
নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ বুধবার দুপুরে এক স্কুল ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এনিয়ে গত ৭দিনে মহাদেবপুর থানা পুলিশ স্কুল ছাত্রীসহ মোট ৫ জন নারীর মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের পর স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করেছেন। একের পর এক অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় জন-সচেতনা ও পারিবারিক সচেতনার অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
সবশেষ বুধবার ১৫ মার্চ দুপুরে উদ্ধার করা হয় দিপ্তী রাণী (১৬) নামে এক স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর মৃতদেহ। নিহত দিপ্তী রাণী নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের কুঞ্জবন গ্রামের সুকুমার চন্দ্র মন্ডল এর মেয়ে ও কুঞ্জবন বন্দর কারিগরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী।
নিহত স্কুল ছাত্রীর পারিবারিক সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ৯টারদিকে দিপ্তী রাণী তার শোবার ঘরের টিনের চালার বাশের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। ঘটনাটি জানতে পেরে বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে মহাদেবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়ব্রত পাল, মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফ্ফর হোসেন এবং ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান পুলিশ।
আগের দিন মঙ্গলবার ১৪ মার্চ দুপুরে উদ্ধার করা হয় রেশমা বেগম (২৭) নামে এক গৃহবধূর মৃতদেহ। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়ন এর দক্ষিণ হোসেনপুর গ্রামের রাব্বি মন্ডলের স্ত্রী। নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে সকালে গৃহবধূ রেশমা বেগম কীটনাশক পান করেন। জানতে পেরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
মহাদেবপুর থানার এস আই আব্দুল খালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং প্রাথমিক সুরত হাল রিপোর্ট অন্তে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
এছাড়া সোমবার ১৩ মার্চ দুপুরে উপজেলা সদরের বালুকাপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় রঞ্জনী রানী (৬০) নামে এক গৃহবধূর মৃতদেহ। তিনি ওই এলাকার মৃত সন্তোষ চন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী। বাড়িতে একা থাকার সুবাদে তিনি তার শয়ন ঘরের তীরের সাথে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দেন।
রবিবার ১২ মার্চ বিকেলে উপজেলা সদরের লিচুতলা পূর্বপাড়া মহল্লায় নানা ফজলুর রহমানের বাড়ি থেকে মেরাজুম মনিরা মিম (১৮) নামে এক কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেন থানা পুলিশ। তিনি উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়ন এর মাদিশহর গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে এবং মহাদেবপুর উপজেলা সদরের জাহাঙ্গীরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের দ্বাদশ বর্ষের শিক্ষার্থী। সকালে মিম তার মায়ের সাথে নানা বাড়ি বেড়াতে এসে কাপড় কেনাকাটা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুপুরে নানার বাড়ির দোতলার একটি ঘরে গিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়।
এছাড়া শুক্রবার ১০ মার্চ মহাদেবপুর উপজেলা সদর ইউনিয়ন এর বকাপুর গ্রাম থেকে জিন্নাতুন খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেন থানা পুলিশ। তিনি ঐ গ্রামের এনামুল হকের স্ত্রী। পারিবারিক কলহের জের ধরে গৃহবধূ জিন্নাতুন তার শয়ন ঘরের টিনের চালের তীরের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানানো হয়। উপরোক্ত ঘটনায় থানায় পৃথক পৃথক ইউডি মামলা হয়েছে।