শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টারঃ
নওগাঁয় গভীর নলকুপ নিয়ে বিবাদে উজ্জল হোসেন হত্যা মামলায় ৫ সহোদর সহ ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো দু' বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এসময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বুধবার ২৩ নভেম্বর দুপুর ১২টায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত এর বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদ এ রায় প্রদান করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলে, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল বাকী এবং আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ-২।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সারঙ্গপাড়া মৌজায় সমবায় অফিস থেকে নিবন্ধিত গভীর নলকুপ পরিচালনা করতেন দূর্গাপুর গ্রামের নিহত উজ্জল হোসেন এর চাচা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। ২০১৩ ইং সালে ৯ মে ঐ নলকুপকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জেরে নলকূপটি দখলে নেওয়ার জন্য দূর্গাপুর গ্রামের কামরুজ্জামান, ওয়াহেদ আলী, সামসুজ্জামান, রকেট, ডাবলু, আব্দুল হামিদ, এনামুল, মোশারফ হোসেন, বজলুর রহমান, এমদাদুল হক, কারিমা বেগম, জলি আক্তার এবং জয়পুরহাট জেলার বাঁশকাটা গ্রামের মোছা. জীবন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে নলকুপ ঘড়ের দরজার তালা ভেঙে তারা ভেতরে প্রবেশ করে কৃষকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের রশিদ ছিড়ে ফেলেন এবং বাক্সে রাখা কৃষকদের নিকট থেকে আদায়কৃত ১৭ হাজার ৫শ' টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় উজ্জল হোসেন সহ কয়েকজন বাঁধা দিলে লাঠিসোটা ও লোহার রড দিয়ে মারপিট সহ মরিচের গুড়া মেশানো গরম পানি ছিটিয়ে দিলে উজ্জলের শরীর "পেটের বামপাশে" ঝলসে যায়। উজ্জল গুরুত্বর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে রাজশাহী মেকিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরদিন মারা যান উজ্জল।
এঘটনায় নিহতের চাচা মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিত্বে ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড রায় দেয় আদালত। এছাড়া প্রত্যেক ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দু' বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত। তবে মামলায় ৩ জন নারীর কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় ঐ ৩ জন নারীকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।
ন্যায় বিচারে আদালতের প্রতি সন্তুষ্ট প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাকী জানান, দেশে যে ন্যায় বিচার আছে তা এই রায়ের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে।
অপরদিকে, আসামী পক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশিদ-২ বলেন, এ মামলায় আমাদের বিপক্ষে যারা স্বাক্ষ্য প্রদান করেছেন তাদের প্রত্যেকের সাক্ষী হিসেবে জবানমন্দী ও জেরা এবং পুঙ্খানু-পুঙ্খ বিশ্লেষণে অবশ্যই আসামীদের বিপক্ষে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। তারপরও আসামীদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এতে করে আমরা ক্ষুদ্ধ, খুন্ন ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবে।