মাসখানেক উচ্চমূল্যেই একরকম স্থিতিশীল ছিল
মুরগি ও ডিমের বাজার। কিন্তু আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের সাধারণ মানুষের পুষ্টির
অন্যতম প্রধান এই দুই পণ্যের দাম। ব্রয়লার মুরগিতে কেজিতে বেড়েছে ৪০-৫০ টাকা, সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে
২৫-৩০ টাকা এবং লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। এ ছাড়া ডিমের দাম বেড়েছে ডজনে
১৫-২০ টাকা। সোমবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহেও বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, অথচ এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। আর ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকা। যা আগে ছিল ১৩০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৪০-৩৪৫ টাকা হয়েছে। আর লেয়ার মুরগির কেজি ৩০০-৩২০ টাকা হয়েছে। অনেকটা হুট করেই মুরগি ও ডিমের এ দাম বৃদ্ধি বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। দোকানে দোকানে দাম নিয়ে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতার বাগবিতণ্ডা।
হঠাৎ করে মুরগি ও ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে
চাইলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী কবীর হোসেন বলেন, গত এক মাস মুরগির বাজার
মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। কারণ বাজারে সরবরাহ ছিল বেশ ভালো। এখন দাম বৃদ্ধির প্রধান
কারণ হলো বিয়ে ও পিকনিক। কারণ এখন পিকনিক ও বিয়ের সিজন চলছে। পাইকারি বাজার থেকে
একবারে ৫০০ থেকে ১ হাজার মুরগি নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। অনেক ক্ষেত্রে তার চেয়েও
বেশি করে কিনছেন ক্রেতারা। এতে করে বাজারে হঠাৎ চাহিদা বেড়ে গেছে, কিন্তু সে তুলনায় সরবরাহ বাড়েনি। আগের মতোই আছে মুরগির সরবরাহ। এ জন্য
খুচরা বাজারেও মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। এতেই দাম বেড়েছে মুরগির।
মুরগি ও ডিম ব্যবসায়ীদের এসব যুক্তি মানতে
নারাজ ক্রেতারা। কারওয়ান বাজারে মুরগি কিনতে আসা আনিসুর রহমান বলেন, দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা
বিয়ে ও পিকনিকের কথা বললেও আসলে এগুলো তাদের অজুহাত। তারা একেক সময় একেক রকম
অজুহাত দিয়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়। দেশের মানুষকে ব্যবসায়ীরা জিম্মি করে ফেলেছে।
যখন যার মন চায় দাম বাড়িয়ে দেয়, অথচ যেন দেখার কেউ নেই।
সরকারের কোনো সংস্থার কঠোর মনিটরিং নেই বাজারে। এতে ব্যবসায়ীরা আরও বেপরোয়া হয়ে
যাচ্ছে, দফায় দফায় দাম বাড়াচ্ছে। আর আমাদের মতো সাধারণ
মানুষের দাম বৃদ্ধির চাপে চিড়েচ্যাপ্টা হওয়ার দশা। আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে,
আমরা আর পারছি না এই উচ্চ পণ্যমূল্যের চাপ নিতে।
কারওয়ান বাজারের ক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকায় কিনেছি। এখন বলছে ২১০ টাকা। ডিমের দাম চাচ্ছে ৫৫ টাকা হালি, যা ৪৫ টাকায় কিনেছি। এটা কীভাবে সম্ভব? এমন হলে গরিব মানুষ সংসার চালাবে কীভাবে?
অন্যদিকে পাড়া-মহল্লার মুদি দোকান থেকে ডিম কিনলে দিতে হচ্ছে তার চেয়েও কয়েক টাকা বেশি। কোথাও কোথাও ডিম ৫৭ টাকা হালিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ডিম একটু কমে, প্রতি হালি ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারভেদে হাঁসের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা।
অন্যদিকে বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে
প্রতি কেজি ২০০-২১০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম প্রতি কেজি ৩৪০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত।
দেশি মুরগির দাম হাঁকা হচ্ছে ৫০০-৫৬০ টাকা প্রতি কেজি।