Logo
শিরোনাম

পুলিশ দেখে আহত বউকে ফেলে রেখে পালালেন স্বামী

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০৫ জুন ২০২৩ | ১৮৮জন দেখেছেন

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টার :

নওগাঁয় ট্রাফিক পুলিশের চেক পোস্ট দেখে পালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের উপর ছিচরে পরলো মোটরসাইকেল। 

মহূর্তের মধ্যেই পড়ে যাওয়া চালক ওঠেই  সড়কের ধারে গর্তে পরে থাকা বউ কে উদ্ধার না করে উল্টো পড়ে যাওয়া মোটরসাইকেলটি তুলেনিয়ে বউকে ঘটনাস্থলে রেখেই মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে গেলেন স্বামী। 

এমন দৃশ্য দেখে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন এগিয়ে এসে আহত (হাতে ও পায়ে আঘাত প্রাপ্ত)  অবস্থায় ঐ নারীকে উদ্ধার পূর্বক পরবর্তীতে স্বামীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে একটি অটো চার্জার যোগে স্বামীর বলা ঠিকানা (স্থানের) উদ্দশ্যে ঐ নারীকে পাঠিয়ে দেন স্থানিয়রা। বউকে ফেলে রেখে মোটরসাইকেল নিয়ে স্বামী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চৌমাশিয়া (নওহাটামোড়) বাজারে। 

স্থানিয়রা জানান, নওগাঁর জনগুরুত্বপূর্ণ ত্রি-মুখি চৌমাশিয়া (নওহাটামোড়) বাজারে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশ চেক পোস্ট বসিয়ে তাদের দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন।

আনুমানিক দুপুরের পূর্ব মহূর্তে নওগাঁর দিক থেকে মহাদেবপুর অভিমুখি আসা একটি মোটরসাইকেল চালক ঘটনাস্থলে পৌছে ট্রাফিক পুলিশের চেক পোস্ট দেখতে পেয়ে এসময় দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালাতে গিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি পড়ে ছিচরে যায় এবং মোটর সাইকেল চালক (২৮) পড়েন এক সাইডে এবং মোটরসাইকেলের পেছনে বসা আরোহী নারী (২৪) সিটকে পড়েন সড়কের অপর সাইডে গর্তে। এসময় মোটরসাইকেল চালক দ্রুত সময়ের মধ্যেই ওঠে এসে পড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল টি তুলেনিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। এমন দৃশ্য দেখে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন এগিয়ে এসে গর্তে পড়ে যাওয়া নারীটিকে উদ্ধার করেন। হাতে ও পায়ে আঘাত প্রাপ্ত নারীর বরাতদিয়ে ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন জানান, মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাওয়া চালক যুবক ও নারীটি স্বামী স্ত্রী। মোটরসাইকেলটি তাদের এক আত্বীয়ের কাছে থেকে নিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী দু' জন অপর এক আত্বীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এখানে এসে হঠাৎ সামনে পুলিশের চেক পোস্ট দেখতে পেয়ে বে-কায়দায় পড়ে দ্রুত গতীতে পালাতে গিয়ে এ-বিপত্তি ঘটে। 

যেহতু মোটরসাইকেলটি অন্যের এজন্য তার স্বামী স্ত্রীকে রেখেই মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যান।

পরবর্তীতে নারীটি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে স্বামীর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে একটি অটো-চার্জার যোগে স্বামীর দেওয়া (ঠিকানা) গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে চলে যান। বউ কে ফেলে রেখে স্বামী মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উপস্থিত লোকজনের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে, স্থানিয়রা তাদের নাম বা পরিচয় জানাতে পারেন নি।


আরও খবর



পাংশায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ৬৮জন দেখেছেন

Image

রাজবাড়ী প্রতিনিধি :  রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার যশাই ইউনিয়নের চর লক্ষীপুর গ্রামে বজ্রপাতে আব্দুল খালেক মোল্লা (৬০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত কৃষক ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মৃত সৈয়দ আলী মোল্লার ছেলে। শনিবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে দশটায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে হাসান আলী (৩২) বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার সময় আমার বাবা খাবার খেয়ে মাঠে ধান কাটতে যায়, আগে থেকেই কাটা ধানগুলো মহিষের গাড়িতে সাজাতে থাকে এ সময় বৃষ্টি শুরু হয় এবং বিদ্যুৎ চমকাতে থাকে ভয়ে আমার বাবা ও মহিষের গাড়িওয়ালা দুজনে মহিষের গাড়ির নিচে পালায় তখনই বজ্রপাতে আমার বাবার মৃত্যু হয়।


আরও খবর



হাতিরঝিলের চাইতেও নান্দনিক হবে ধোলাইখাল

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০১ জুন ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ৫৩জন দেখেছেন

Image

বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে প্রাচীন ঢাকাকে সুরক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নৌ যোগাযোগের সুবিধার জন্য প্রথম মোগল সুবাদার ইসলাম খান খনন করেন ধোলাইখাল। সেটা ১৬০৮-১৬১০ খ্রিস্টাব্দে। বাবুবাজার থেকে খালটি জিন্দাবাহার, গোয়ালনগর, নবাবপুর, নারিন্দা হয়ে লোহারপুলের নিচ দিয়ে মিশেছিল বুড়িগঙ্গায়। এটি ছিল শহরের যোগাযোগের অন্যতম জলপথ। তবে ঢাকার কলেবর যত বেড়েছে, যত আধুনিকতার পথে হেঁটেছে, তত একটু একটু করে হারিয়েছে ধোলাইখাল। দখল হতে হতে খালটি এখন প্রায় অদৃশ্য। মাত্র ৫ শতাংশ টিকে থাকলেও সেটুকুও অস্তিত্ব হারানোর পথে। এবার ধোলাইখাল জলাধারকে সুন্দর ও নান্দনিক করার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, ধোলাইখালের আয়তন ১৬ দশমিক শূন্য ৬১ বিঘা। এর মধ্যে জলাধার হবে প্রায় ১৪ বিঘা। জলাধারটি ১৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন করা হচ্ছে। গত এপ্রিলে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছরের এপ্রিলে কাজ শেষ হওয়ার কথা। জলাধারকে কেন্দ্র করে ১ হাজার ৯৬৮ ফুটের হাঁটাপথ, ২ হাজার ১৫৫ ফুটের বাইসাইকেল লেন এবং ৬০ হাজার বর্গফুট জায়গা সবুজায়ন করা হবে। থাকবে দুটি এম্ফিথিয়েটার। মাসুদ হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও চারু এন্টারপ্রাইজ জে ভি নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এর কাজ করছে।

২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে খালের মালিকানা বুঝে পায় সিটি করপোরেশন। এর পরপরই খাল দখল, উদ্ধার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করে সংস্থাটি। ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের এই খাল কাগজপত্রে ১০০ ফুটের বেশি প্রশস্ত হলেও বাস্তবে টিকে আছে ২৫-৩০ ফুট।

গত শতকের আশির দশকে রায় সাহেব বাজার মসজিদের পাশে ছিল নৌকার ঘাট। ৯০ সালেও মানুষ নৌকা দিয়ে ঘাটে আসত। যতীন্দ্রমোহন রায়ের ঢাকার ইতিহাস বইয়ে এই খালের বিবরণ দেওয়া হয়েছে, এই খাল বালু নদী হইতে বহির্গত হইয়া ঢাকা ফরিদাবাদের নিকটে বুড়িগঙ্গার সহিত মিলিত হইয়াছে। এই খালের একটি শাখা ঢাকা শহরের মধ্য দিয়া বাবুবাজারের নিকটে বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রবেশ লাভ করিয়াছে।

ধোলাইখালের দুটি অংশ। একটি অংশ বুড়িগঙ্গা থেকে সূত্রাপুর, গে-ারিয়া, ওয়ারী হয়ে দয়াগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ৫.১০ কিলোমিটার দীর্ঘ। দ্বিতীয় অংশ দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতু থেকে ধোলাইখালের আগের অংশের সঙ্গে মিশেছে-এই অংশ ১.৯৭ কিলোমিটার। লোহার পুল থেকে অর্থাৎ জহির রায়হান অডিটোরিয়াম থেকে শুরু করে কেশব ব্যানার্জি রোড-সংলগ্ন এবং মিল ব্যারাকের পাশ ঘেঁষে খালের যে উন্মুক্ত অংশ আছে, সেটুকুও আবর্জনায় ভরাট; আর দুই পাশের ভরাট জায়গাও দখল হয়ে যাচ্ছে দ্রুত। খালের সামান্য যে পানি তা-ও নোংরা, দূষণে দুর্গন্ধময়।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ধোলাইখাল সেটা তো এখন নামে আছে, বাস্তবে নেই। এক সময় এখানে বিল ছিল, নৌকাবাইচ হতো। কিন্তু সেই খাল বা বিল আর নেই। প্রথমে ছোট ছোট টং বসিয়ে ব্যবসা করেছিল অনেকে। সেখানে এখন গড়ে উঠেছে বড় বড় অট্টালিকা। এসব অবৈধভাবে বিভিন্ন সময় দখল করে নিয়েছে।

 


আরও খবর



পেটব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি

পেটে থেকে ১৫টি কলম বের করলো চিকিৎসকরা

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ২৮৮জন দেখেছেন

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টার :

অবিস্বাস্য হলেও সত্য, একজন মানুষ এর পেটের ভেতর থেকে একে একে ১৫টি কলম বের করলেন চিকিৎসকরা। যে ব্যক্তির পেটের ভেতর থেকে কলম গুলো বের করা হয়, সেই ব্যাক্তি একজন মানসিক রোগী। মানসিক রোগী হওয়ায় আলাদা কোন দিন বা সময় তিনি রাস্তায় ঘোরাফেরা করতে খাদ্যভেবে কলম খেয়ে ফেলেছিলেন বলেই ধারনা  করছেন চিকিৎসকরা। 

সম্পতি সিরাজগঞ্জ এর শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এর সার্জারি বিভাগে এন্ডোস স্কপির মাধ্যমে পেটের ভেতর থেকে একে একে বের করে আনা হয় মোট ১৫ টি কলম। বর্তমানে সেই মানসিক রোগী সুস্থ্য রয়েছেন।

মানসিক রোগীর পেটের ভেতর থেকে কলম বের করার সত্যতা নিশ্চিত করে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ এর সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৬ মে পেটে প্রচন্ড ব্যথা হওয়ায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়। মানসিক ঐ রোগী হলেন, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার খুকনি গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান এর ছেলে আব্দুল মোতালেব (৩৫)। হাসপাতালে নেওয়ার পর পরিক্ষার এক পর্যায়ে তার পেটের ভেতর অনেকগুলো কলম দেখা যায়। 

তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং গত ২৫ মে কোনো অপারেশন না করে এন্ডোস স্কপির মাধ্যমে এক এক করে পেট থেকে বের করে আনা হয় ১৫টি কলম।


এসময় ডাঃ জাহিদ আরো বলেন, আব্দুল মোতালেব একজন মানসিক রোগী। এজন্য সে বিভিন্ন সময় খাদ্য ভেবে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া কলম খেয়ে ফেলেছিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ও সুস্থ আছেন। এছাড়া তাকে মানসিক চিকিৎসা দেওয়ার পস্তুতি চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।


আরও খবর

একদিনে করোনায় মৃত্যু ২

শুক্রবার ০২ জুন 2০২3




খালি পেটে গ্রিন টি নয়

প্রকাশিত:রবিবার ২১ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০৫ জুন ২০২৩ | ৯৫জন দেখেছেন

Image

গ্রিন টি শরীরের জন্য কতটা স্বাস্থ্যকর, তা আলাদা করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। গ্রিন টির গুণের শেষ নেই। ওজন কমানো থেকে ত্বকের যত্ন নেওয়া গ্রিন টি নানাভাবে শরীরের যত্ন নেয়। ইদানীং গ্রিন টি খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। গ্রিন টি খেলে শরীরের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু গ্রিন টি খাওয়ার সময় কয়েকটি বিষয় একটু মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।

পরিমাণ মতো গ্রিন টি খান গ্রিন টি শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর মানেই ঘন ঘন সেটি খাবেন, সেটা ঠিক নয়। অতিরিক্ত খেলেই যে বেশি উপকার পাবেন, তা কিন্তু নয়। বরং গ্রিন টি যদি বেশি পরিমাণে খান, তা হলে সমস্যা আরও বেশি। অতিরিক্ত গ্রিন টি খেলে অনিদ্রা, হজমজনিত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সঠিক সময়ে খান গ্রিন টি শুধু কফি নয়, গ্রিন টিতেও ক্যাফিন রয়েছে ভরপুর পরিমাণে। ফলে ভুলেও রাতে গ্রিন টি খাবেন না। এর ফলে পেট গরম থেকে অনিদ্রাসহ নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। একই কারণে রাতে কফি খেতেও বারণ করা হয়।

খালি পেটে গ্রিন টি নয় সকালে ঘুম থেকে উঠেই গ্রিন টির কাপে চুমুক দেন অনেকেই। এই অভ্যাস কিন্তু আদতে ভুল। কারণ খালি পেটে কখনো গ্রিন টি খেতে নেই। গ্রিন টিতে ট্যানিন থাকে, যা পেটে এসিড তৈরি করে। ফলে গ্যাস, বদহজমের ঝুঁকি থেকে যায়। তাই খালি পেটে ভুলেও গ্রিন টি নয়।

তথ্য সূত্র : রিমিস ড্রিম


আরও খবর



রোহিঙ্গারা কেড়ে নেওয়া গ্রাম ফেরত চান

প্রকাশিত:বুধবার ১০ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ১১৭জন দেখেছেন

Image

রোহিঙ্গা ক্যাম্পজুড়েই এখন মিয়ানমারে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে। কিন্তু দুই বারের ব্যর্থতার পরে এবারও প্রত্যাবাসন সফল হবে কিনা, তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা। তারা তাদের নিজ দেশে ফেরত যেতে আগ্রহী। তবে পুর্নবাসন ক্যাম্পে নয়, ফিরে পেতে চান তাদের গ্রাম ও ভেটেমাটি। খবর বিবিসির।

টেকনাফের নেসার পার্ক এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবু শামার বাসাটি আর দশটি ঘরের মতোই বাঁশের বেড়া আর ছাদে মোটা ক্যানভাস কাপড় দিয়ে তৈরি। ১০ ফুট বাই ১০ ফুট সেই ঘরের দরজার সামনে বসে তার সঙ্গে কথা বলার সময় একটু পর পর আসা বাতাসে ঘরের ছাদ নড়াচড়া করছিল। এখানে এভাবে থাকতে কষ্ট হয়, বাড়ির কথা মনে পড়ে - বলছিলেন আবু শামা। কিন্তু মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ যেসব কথা বলে তাদের নিয়ে যেতে চাইছে, তাতে তিনি যাবেন না।

আঞ্চলিক রোহিঙ্গা ভাষায় আবু শামা বলেন, ‘’তারা আমাদের নিয়ে ক্যাম্পে রাখবে। সেখানে তারা এই রকম ছোট ছোট ঘর বানিয়েছে। আমাদের নাগরিকত্ব দেবে না, অতিথির মতো একটা কার্ড দেবে। সেখানে গেলে তো আমাদের সেই ক্যাম্পেই আটকে রাখা হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরিবেশ দেখাতে বাংলাদেশ থেকে যে বিশ জনকে গত শুক্রবার মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে ছিলেন আবু শামা। সেখানে পরিবেশ ঘুরে দেখে তার কাছে স্বস্তিকর মনে হয়নি। কারণ তার মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গিয়ে তাদের আবার আটকে রাখার একটা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে জমি-জমা, নাগরিকত্ব দেয়ার যেসব কথা বলছে, তাতেও তিনি কোন ভরসা পাচ্ছেন না।

এমনকি তাকে নিজের ফেলে আসা গ্রামেও যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। দূর থেকে তিনি শুধুমাত্র দেখতে পেয়েছেন যে একসময় যেখানে তার গ্রাম ছিল, সেই কাউয়ার বিল এখন ফাঁকা মাঠ। ঘাস-জঙ্গল গজিয়ে গিয়েছে।

একই রকম বক্তব্য মিয়ানমার ঘুরে আসা আরেকজন রহিমা বেগমেরও। মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই ১১ সন্তানের মা-হওয়া রহিমা বেগম বলছেন, ‘’তারা যদি আমাদের নিয়ে ক্যাম্পেই রাখে, তাহলে তো আমরা এক ক্যাম্প থেকে আরেক ক্যাম্পে গিয়ে পড়লাম। এখানে তাও তো ভালো, কেউ ভয়ভীতি দেখায় না।‘’ রহিমা বেগমের ছয় সন্তান মারা গেছে। জীবিতদের মধ্যে এক মেয়ে এখনো মিয়ানমারে রয়েছে, বাকি চারজন তার সঙ্গেই থাকে। এদের সবাইকে নিয়ে তিনি ক্যাম্পের একটি কক্ষে থাকেন। এই ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তিনি মিয়ানমারে যেতে চান। কিন্তু সেজন্য তার রয়েছে আলাদা দাবি।

রহিমা খাতুন বলেন,‘‘ আমাকে আমার বাড়িতে যেতে দিক। আমাকে কোন রেশন, কোন টাকাপয়সা দেওয়া লাগবে না। আমাদের ঘরবাড়িও আমরাই তৈরি করে নেবো। খালি আমাদের সেই গ্রামে গিয়ে নিরাপদে বসবাসের সুযোগ দিক আর নাগরিকত্ব দিক, তাইলেই হবে। মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপের ফ্র্যাংকপুরে তার একটি ছোট ভিটে-বাড়ি ছিল, বাড়িতে গাছপালা, গরু-ছাগল ছিল। কিন্তু এখন সেখানে আর কোন ঘরবাড়ি নেই। পুরো জায়গাটি জঙ্গলের মতো হয়ে রয়েছে বলে তিনি দেখতে পেয়েছেন।

মংডু শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে অনেকটা বাংলাদেশের গুচ্ছগ্রামের আদলে মডেল ভিলেজ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে চার হাজার রোহিঙ্গা থাকতে পারবে, এমন ১৫টি মডেল ভিলেজ তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যেই এরকম দুটি গ্রাম তৈরি করা হয়েছে, যা প্রতিনিধি দলকে দেখানো হয়।

মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথমে তাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট (এনভিসি) দেওয়া হবে। পরবর্তীতে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মোহাম্মদ সলিম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’আমাদের গ্রামগুলোয় সেনাবাহিনী ও পুলিশের ব্যারাক, ফাঁড়ি ও চৌকি তৈরি করা হয়েছে। আর আমাদের থাকার জন্য কিছু জায়গায় ক্যাম্পের মতো করে শেড তৈরি করা হয়েছে। একটা রুম আর একটা টয়লেট। তারা যদি আমাদের সত্যিই নিয়ে যেতে চায়, তাহলে আমাদের গ্রামেই আমাদের থাকার সুযোগ করে দিক। আমাদের মেহমান করে না নিয়ে নাগরিকত্ব দিয়ে দিক।

উখিয়ার ইউনুস মাঝি বলছেন, ''এর আগে দুইবার আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। শেষবার মেরে কেটে ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে। আবার গিয়ে আবার মারধর খেয়ে ফেরত আসতে চাই না। তারা যদি নিতেই চায়, অন্যসব জাতির মতো আমাদেরও সমান অধিকার দিয়ে, নাগরিকত্ব দিয়ে নিয়ে যাক।

মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের মধ্যে নানারকম মত থাকলেও বাংলাদেশের কর্মকর্তারা আশা করছেন, প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া এবার শুরু করা যাবে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) কমিশনার মিজানুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘’মিয়ানমারের সদিচ্ছা রয়েছে বলে আমরা দেখতে পেয়েছি। বাংলাদেশের কাছে রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান হচ্ছে প্রত্যাবাসন। আমরা চাই সেটা যেন টেকসই হয় এবং স্বেচ্ছামূলক হয়। 

রোহিঙ্গাদের দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, যে সংকট দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হয়েছে, সেটা তো একদিনে সমাধান হবে না। আস্তে আস্তে সবকিছুর সমাধান হবে।

রোহিঙ্গা নেতারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, প্রতিনিধি দলের অসন্তোষের বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শনিবার কয়েকজন রোহিঙ্গা সদস্যকে কক্সবাজারে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে কথা বলে নিজ দেশে ফিরে যেতে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। তারা এই রোহিঙ্গা সদস্যদের বলেছেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতেই হবে, যদিও কাউকে জোর করে মিয়ানমারে পাঠানো হবে না।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আট লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠিয়েছিল।

এরপর মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি ফিরতি তালিকা পাঠানো হয়। ওই তালিকা থেকে পরিবার ভিত্তিক প্রত্যাবাসনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৪০ জনকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে ৭১১ জন রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমার সম্মতি দিলেও বাকি ৪২৯ জনের ব্যাপারে তাদের আপত্তি ছিল। গত মার্চে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল এসে এদেরসহ মোট ৪৮০ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই করে দেখেছে।

২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের মুখে আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা সে দেশের রাখাইন প্রদেশ থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। আগে আসা রোহিঙ্গা মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন প্রায় সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে।


আরও খবর

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় তেজ

রবিবার ০৪ জুন ২০২৩