Logo
শিরোনাম

রেলের অনলাইনে টিকিট বিক্রি : এবং সহজ ডট কম

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ এপ্রিল ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

পার্থ সারথী দাস : দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। এর বাইরে প্রায় সব টিকিট কাউন্টারেই বিক্রি হতো। এবার ঈদযাত্রা সামনে রেখে প্রথমবারের মতো আন্তঃনগর ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে।

গত ৭ এপ্রিল থেকে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয় ওইদিন ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের টিকিট শেষ হয়ে যায় প্রায় দুই ঘণ্টায়। সংশ্লিষ্ট সার্ভারে জটিলতা তৈরি হয় পরের দিন, টিকিটপ্রত্যাশীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এবার ট্রেনের টিকিট পাওয়ার যুদ্ধটা প্রকাশ্যে রেল স্টেশনের কাউন্টারে দেখা গেলো না। দেখা গেছে অন্তর্জালে। কাউন্টারের সামনে আগের মতো সেই নাভিশ্বাস ভোগান্তি দেখা যায়নি। অবশ্য ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির তৃতীয় দিনে সার্ভার জটিলতা দেখা যায়নি, শত নেতিবাচক অবস্থার মধ্যে হঠাৎ এটি যেন স্বস্তিদায়ক হয়ে উঠে যাত্রীদের জন্য। তবে প্রতিদিনের মতো হাজার হাজার মানুষ টিকিট পাননি-যারা পেয়েছেন, যেন লটারি পেয়েছেন, তারা মনে করেছেন নসিব ভালো, তাই পেয়েছেন।

 

ঈদযাত্রার টিকিট কিনতে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে রাতজাগা টিকিটপ্রত্যাশী চোখে পড়েনি। আগাম টিকিট বিক্রির প্রথম দিনে প্রথম মিনিটেই সার্ভারে ঢোকার চেষ্টা করেন প্রায় ১২ লাখ টিকিটপ্রত্যাশী। অথচ টিকিট দেয়ার সক্ষমতা ছিল মাত্র ২৫ হাজার ৭৭৮টির। তার মানে, চাহিদার সঙ্গে প্রত্যাশার ফারাকটি আকাশ-পাতাল ব্যবধানের। প্রত্যাশার সঙ্গে তাই সার্ভার কোনো সময় কাজই করে না!

 

অনলাইনে হোক বা কাউন্টারে হোক, ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের আন্তঃনগর ট্রেনে বাংলাদেশ রেলওয়ের দৈনিক সক্ষমতা রয়েছে প্রায় ২৬ হাজার টিকিট বিক্রির। বিশেষ ট্রেন চলাচল করলে তা বেড়ে হয় ২৮ হাজারের মতো। আগাম টিকিট বিক্রির তৃতীয় দিন ৯ এপ্রিল  প্রথম দুই ঘণ্টায় ১ কোটি ৩০ বার প্রবেশ করার চেষ্টা করেছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। ওইদিন বিশেষ ট্রেনসহ অন্যান্য ট্রেনের ১৯ এপ্রিলের প্রায় ২৮ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। সার্ভারে ঢোকার চেষ্টার প্রবণতা থেকেই বোঝা যায়- ট্রেনের টিকিটপ্রত্যাশীর চাপ প্রবল থেকে আরও প্রবলতর হচ্ছে।

 

এবার ঘরে, অফিসে, দোকানে, মাঠে বসে বার বার সার্ভারে ঢোকার এই চেষ্টা চলেছে। পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছে-বিপুল সংখ্যক টিকিটপ্রত্যাশী ট্রেনের টিকিট পাননি। যে পেয়েছে সে আনন্দে ভেসেছে, যারা পায়নি তারা মন মলিন করে হয়তো বাসের বা লঞ্চের বা বিমানের টিকিট বা ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া করার জন্য ছুটেছে। কারণ ঈদে তো পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়িতে যেতে হবে।

 

এবার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নিজে কেন সার্ভার স্থাপন করে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাহলে তো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর ভর করতে হতো না, সার্ভার হয়তো আরও সক্ষম হতো, সার্ভার বিকল হয়ে তা জনভোগান্তির কারণ হতো না।  আর কেন-ই-বা টিকিটের সংখ্যা বাড়াচ্ছে না। ট্রেন, বগি আরও বাড়ছে না কেন-এসব প্রশ্ন সাধারণ যাত্রীদের।

 

এ বিষয়গুলোর স্পষ্ট জবাব হলো, বাংলাদেশ রেলওয়ে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তব করতে যত গুরুত্ব দিচ্ছে, যাত্রীসেবা বাড়াতে সে তুলনায় খুব কমই গুরুত্ব দিচ্ছে। ঈদ সামনে রেখেই শুধু টিকিট বিক্রির ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটু তৎপরতা দেখানো হয়। টিকিট বিক্রির ব্যবস্থাপনা আধুনিক ও আরও সহজ করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের উদ্যোগ বাস্তবায়নে গভীর নীরবতা দেখা যায়। কারণ এই সংস্থার মহাপরিচালক পদ বার বারই বদল হয়, বহু কর্মকর্তা আবার আমলাতান্ত্রিক ভয়েনেতিয়ে পড়েন। কাজেই যেভাবে চলে আসছিল তাতেই চলে যাওয়া নিরাপদ মনে করেন তারা। তবে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটাকে এগিয়ে নিতে দলবদ্ধ আন্তরিক শক্তি সেখানে সঞ্চারনশীল অবস্থায় নেই।

 

এ কারণে হুট করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, হুট করে নির্দেশ দেয়া হয়, অংশীজন বিশেষ করে যাত্রীদের মতামতের প্রতিফলন ঘটে না তাতে। তার ফলে যাত্রীসেবার বহু দূরে অবস্থান করছে গণমানুষের পরিবহন ট্রেন। ট্রেন গণপরিবহন হলেও দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে কমপক্ষে (গত ২৬ মার্চ পর্যন্ত) ট্রেন টিকিটের নিবন্ধিত গ্রাহক প্রায় ১৪ লাখ। এসব যাত্রী ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন। এবার অনলাইনে টিকিট বিক্রি হওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানুষদের একটি অংশ টিকিট নিতে পারছেন-তাদের একটি ক্ষুদ্র অংশ সে অধিকার ভোগ করতে পারছেন। গত  ১ মার্চ থেকে রেলে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিবন্ধিত হয়ে টিকিট কেনার ব্যবস্থা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। দেশের মানুষের একটি অংশ এখন ই-মেইল আইডি বোঝেন না, টিকিট কাটার অ্যাপ বোঝেন না। অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারেননি তারা।

 

ফলে অনলাইনে টিকিট কেনার গ্রাহক সুবিধার আওতায় আসতে পারছেন না। এই অবস্থায় আন্তঃনগর ট্রেনে টিকিটের একটি অংশ কাউন্টারে বিক্রি করার সুবিধা চালু করার পক্ষে কেউ কেউ বলছেন। এখানে উল্লেখ্য, নিবন্ধিত একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কাটতে পারবেন। ১৪ লাখ নিবন্ধিত গ্রাহক ধরে নিয়ে গ্রাহকের নিজের বা স্বজনদের মাধ্যমে টিকিট কাটলে ট্রেনে চড়ার সুযোগ মিলবে খুব কম মানুষেরই। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রির বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের কথা হচ্ছে, ঈদযাত্রার টিকিটের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার দুর্ভোগ কমানোর জন্য আর কালোবাজারি বন্ধে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু জানা গেছে, এখনো কালোবাজারি হচ্ছে। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন রেলস্টেশনের কাউন্টারের অবস্থা তথৈবচ। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, পুলিশ, রেল কর্মচারীসহ অন্যান্যদের নিয়ে স্থানে স্থানে চক্র গড়ে উঠেছে।

 

বিষয়টি অনেকের কাছে অজানা থাকতে পারে। তা হলো-বাংলাদেশ রেলওয়ে এক যুগেরও বেশি সময় আগে নিজে সার্ভার স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছিল। বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি আমদানিও করেছিল। সেই সব যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি বাংলাদেশ রেলওয়ের নিজস্ব তথ্য প্রযুক্তি বিভাগও নেই। আমদানি করা সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করার লোক রেলওয়েতে নেই। তাই পরের ওপর ভর করে চলে। পরের প্রতিষ্ঠানের লাভ করিয়ে দিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট নীতি বাস্তবায়নকারীদের কোনো তুলনা হয় না। এবার শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থায় লাভ নেবে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডট কম, সিনেসিস ও ভিনসেন মিলে গঠিত যৌথ কোম্পানি। কাউন্টারের বিক্রিত প্রতি টিকিটে ২৫ পয়সা পায় সহজ।

 

অনলাইনে কেনা প্রতি টিকিটে যাত্রীর দেয়া ২০ টাকা সেবা ব্যয় বা সার্ভিস চার্জের সাড়ে ৬ টাকা পায় প্রতিষ্ঠানটি। অনলাইনে টিকিট বিক্রি বাড়ায় প্রতিষ্ঠানটির বেশি লাভ হচ্ছে। এই টাকা গ্রাহককেই দিতে হচ্ছে। অথচ নিজের সক্ষমতা থাকলে বাংলাদেশ রেলওয়ের আয়ে এটি যোগ হতো। ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) নামের প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে প্রথম দিকে ২০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করার ব্যবস্থা চালু করা হয়। তখনো অনলাইনে অব্যবস্থাপনা ছিল। এখন বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেনের টিকিট বিক্রির অপারেটর সহজ-সিনোসিস-ভিনসেন্ট জেভি। এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের চুক্তি স্বাক্ষর হয় প্রায় এক বছর আগে।


সংশ্লিষ্ট অনেকের কাছে শোনা গেছে, রেল মন্ত্রণালয়ের কারও কারও স্বার্থ বাড়াতে সহজকে কাজ দিতে অতি আগ্রহী ছিলেন, তারা এজন্য অনলাইনে শতভাগ টিকিট বিক্রির বিষয়ে এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন-এই প্রবণতা যাত্রীবান্ধব নয়। এ বিষয়টি বিশেষজ্ঞ ও রেল সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ, হতাশা বাড়িয়ে দেয়। রেলওয়ের উচিত- নিজেদের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ চালুসহ এ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা চালু করা। সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশ চাইছেন তার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েকেও যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় হাতে নেই বললেই চলে।

 

বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে এই তথ্য জানা গেছে যে, সারা দেশে ৫৪ জোড়া বা ১০৮টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এ সব ট্রেনে  প্রায় এক লাখ ২০ হাজার আসনের টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা আছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে বিক্রি করা হয় দিনে প্রায় ২৬ হাজার (ঈদের বিশেষ ট্রেন ছাড়া)। ২০২২ সালে ঈদযাত্রা উপলক্ষে অর্ধেক টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়েছিল। ওই সময় সার্ভার বিকল হয়েছিল। এবার ঈদযাত্রার আগাম টিকিট বিক্রির শুরু থেকেই অন্তর্জাল (ভার্চুয়াল) যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ছে। ঈদযাত্রার  ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির শেষ দিনে, তার আগের দিনে টিকিট প্রত্যাশীর চাপ সবচেয়ে বেশি চাপ পড়বে অন্তর্জালে। তখন পরিস্থিতি কি হবে-তা ভাবতেই উদ্বেগ, কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে।

 

জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন বলছে, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জনসংখ্যার প্রায় ৩১ শতাংশ। এই অবস্থায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আরও বাড়লে টিকিট বিক্রির সঙ্গে যুক্ত বেসরকারি ব্যবস্থা কি চাপ সামাল দিতে পারবে? নাকি অতীতের মতো জটিলতা তৈরি হবে-এসব প্রশ্ন এখন সঙ্গত কারণেই উঠে আসছে। প্রতিটি ট্রেনে শোভন শ্রেণির (নন-এসি) আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা হবে আসনবিহীন, তাদের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ট্রেন ভ্রমণ করতে হবে। দাঁড়িয়ে যাবার টিকিট স্টেশনের কাউন্টার থেকে কেনার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের অতীত ও এখনকার অক্ষমতাপ্রসূত অব্যবস্থাপনার প্রতিফলন দেখা যায় ঈদযাত্রায়। ট্রেনের ছাদে শত-শত যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে বসে বসে, ট্রেনের ভেতরে একজনের ঘাড়ে আরও কয়েকজন নিঃশ্বাস ফেলে ফেলে অস্বস্তিতে বাড়ি যান। এই অবস্থা থেকে দ্রুত পরিত্রাণের সুযোগ নেই। এজন্য সময় লাগবে।

 

নতুন ট্রেন পরিচালনা করতে হলে অন্যান্য সব ট্রেনের বিলম্ব ঘটাতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রুটে। কারণ ট্রেন পরিচালনার জন্যও যথেষ্ট সক্ষমতা নেই বাংলাদেশ রেলওয়ের। সিঙ্গেল রেলপথ ডাবল করা হচ্ছে বিভিন্ন রুটের-এসব উদ্যোগ সময়মতো বাস্তবে দৃশ্যমান করাও সম্ভব হচ্ছে না। এসব যত দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে ততোই সুফল মিলবে। আগে বাংলাদেশ রেলওয়েতে বিনিয়োগ কম ছিল। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে সরকার রেলে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এই বিনিয়োগের ফলে অবকাঠামো উন্নয়নের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগসহ বিভিন্ন প্রকল্প মেয়াদ ও খরচ বাড়ানোর চক্রে ঘুরছে। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে ট্রেন আরও বাড়ানো যাবে, যাত্রীদের আসনও বাড়বে।

 

বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হলেও কাউন্টারে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে লোকাল ও মেইল ট্রেনের। তবে এখানেও নতুন ব্যবস্থাপনা নেই। টিকিট কালোবাজারি হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন রেলস্টেশনে। শক্তিশালী কালোবাজারি চক্র ভাঙতে বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বাহিনীর অনেকেই জড়িত, কারণ সেখানে তারা কাঁচা টাকার গন্ধে যাত্রীস্বার্থ ও দায়িত্ববোধের বিষয়টি বেমালুম ভুলে যান। এ ব্যাপারেও রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের শক্ত পদক্ষেপ আমরা দেখতে চাই।


লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক



আরও খবর



তীব্র গরম উপেক্ষা করে রমনায় মানুষের ঢল

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

পয়লা বৈশাখকে বরণ করতে রাজধানীর রমনা পার্কে মানুষের ঢল নেমেছে। দলে দলে আসছেন নারী-পুরুষ ও শিশু। শাহবাগ ও মৎস্য ভবনের সামনের দুটি গেট দিয়ে তারা পার্কে ঢুকছেন। সবাইকে রমনায় প্রবেশের আগে আর্চওয়ে দিয়ে তল্লাশি করে প্রবেশ করাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। শাহবাগ ও মৎসভবনের মাঝে ওভারব্রিজের পশ্চিম পাশে আরেকটি গেট করা হয়েছে। সেটি দিয়ে পার্কে প্রবেশকারীরা ঘোরা শেষে বের হচ্ছেন। তবে বের হওয়া মানুষের চেয়ে প্রবেশের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি।

শাহবাগ থেকে মৎস্যভবন রাস্তার দুইপাশের ফুটপাত ধরে শত শত মানুষ হাঁটছেন। তাদের সবার পরনে কম বেশি বৈশাখের পোশাক। হাঁটার ফাঁকে ফাঁকে কেউ কেউ ছবি তুলছেন। নিজেকে সেলফিবন্দি করতে ভুলছেন না তারা। কেউ আবার রোদের তীব্রতা থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য সাথে ছাতা নিয়ে এসেছেন।

আজ আবহাওয়ার তথ্য বলছে, ঢাকায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সেদিকে খেয়াল নেই পয়লা বৈশাখ উদযাপনকারী মানুষজনের। রমনায় প্রবেশের পর লোকজন পুকুরপাড়ের ধার ধরে কেউ বসে গল্প করছেন, কেউ আবার নতুন তৈরি পুকুরের কোল ঘেঁষে কংক্রিটে বাঁধানো পাড়ে হেঁটে সময় কাটাচ্ছেন।

তবে প্রচণ্ড রোদ থাকায় বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। গরম থেকে রেহাই পেতে তৃষ্ণা নিবারণের জন্য কেউ কেউ আইসক্রিম এবং ঠান্ডা জাতীয় বরফ শরবত কিনে খাচ্ছেন।

শাহবাগের শিশু পার্কের বিপরীতে রমনার প্রধান গেট। তার পাশের ফুটপাতে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বসে আছেন আনিস আহমেদ। এসেছেন পুরান ঢাকা থেকে। তিনি বলছিলেন, অনেক কষ্টে ঢুকেছিলাম ভেতরে, কিন্তু এত মানুষ! হাঁটার মতো পরিবেশ নেই। বাধ্য হয়ে এখানে বসে আমরা বিশ্রাম নিচ্ছি।

খিলগাঁও এলাকা থেকে এসেছে নবীন ও আয়েরা। তারা দুজন স্কুলপড়ুয়া। সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে তারা। এখন রমনা পার্কটা ঘুরে দেখার জন্য মৎস্য ভবনের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে।

তাদের মতে, রমনা পার্কে অন্য দিন আসাটা আর আজকে আসাটা এক নয়। কারণ হিসেবে তারা বলছে, বৈশাখের আমেজে আজ রমনা পার্ক সেজেছে। হাজার হাজার মানুষ প্রবেশ করছে এতে। ফলে অন্যরকম একটি দেখার দৃশ্য।

তীব্র গরমের হাঁপিয়ে ওঠা মানুষজনকে পুলিশের পক্ষ থেকে পানি সরবরাহ করতেও দেখা গেল। পার্কজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে তারা বেশ তৎপর।

রমনার বটমূলে কোরাস গান গেয়ে সূর্য ওঠার মুহূর্তে বৈশাখকে বরণ করা হয়। এই আয়োজনে শতাধিক শিল্পী অংশ নেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। সেটি শাহবাগ ও ঢাকা ক্লাব হয়ে আবারও চারুকলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেয় কয়েক হাজার মানুষ।


আরও খবর



ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাসের এক চির ভাস্বর অবিস্মরণীয় দিন।

১৯৭১ সালের এই দিনে কুষ্টিয়া জেলার তদানীন্তন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। এ অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে পঠিত হয় ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রণীত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। এ দিন থেকে স্থানটি মুজিবনগর নামে পরিচিতি লাভ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা ও স্বদেশ ভূমি থেকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ও নির্দেশিত পথে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তৎকালীন পাকিস্তানের শাসকচক্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বেআইনিভাবে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ১৯৭১র ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ন্যায়-নীতি বর্হিভূত এবং গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়ারলেসের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১০ এপ্রিল মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকার মুক্তাঞ্চলে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এক বিশেষ অধিবেশনে মিলিত হন এবং স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করেন।

 এই অধিবেশনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন ও বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকারী উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এবং এ.এইচ.এম কামারুজাজামানকে স্বরাষ্ট্র এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দিয়ে গঠিত হয় বাংলাদেশ সরকার। মেহেরপুর হয়ে ওঠে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাজধানী। মুজিবনগর সরকারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার দুঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান বিমান বাহিনী বোমাবর্ষণ ও আক্রমণ চালিয়ে মেহেরপুর দখল করে। ফলে, সরকারের প্রতিনিধিগণ ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় এবং সেখান থেকে কার্যক্রম চালাতে থাকে। দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয় এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

নবজাত রাষ্ট্রের এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জনগণকে তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের মাধ্যমে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা লাভের লক্ষে অদম্য স্পৃহায় মরণপণ যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত সৃষ্টি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকার পরিচালনায় নবগঠিত এই সরকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এই সরকারের যোগ্য নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় মুক্তিযুদ্ধ দ্রুততম সময়ে সফল সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়।

 এই সরকার গঠনের ফলে বিশ্ববাসী স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামরত বাঙালিদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। অবশেষে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্ব ও অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত দিনটিকে বরাবরের মতো স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সবার সাথে একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো যথাযথ মর্যাদা এবং গুরুত্বের সাথে স্মরণ ও পালন করবে।


আরও খবর



কমেছে মুরগির দাম, চড়া সবজির বাজার

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

তীব্র গরমে সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। প্রতি কেজিতে ২০ টাকা কমে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে চলতি সপ্তাহে সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর শেওড়াপাড়া ও তালতলা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। বাজারগুলোতে সোনালির কেজি ৩৭০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা, লেয়ার ৩৫০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তীব্র গরমের কারণে মুরগি মরে যাওয়ার শঙ্কায় কম দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান শেওড়াপাড়ার মুরগি বিক্রেতা মো. মিলন। তিনি বলেন, এ সময়ে দাম কমার কথা না, গত সপ্তাহেও ২৩০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গরমে হিট স্ট্রোক করছে মুরগি। তাই ক্ষতি এড়াতে ছোট ছোট মুরগি কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

শুক্রবার বাজারে সব ধরনের সবজি গত সপ্তাহের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখীর কেজি ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, শসা ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপের কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা, সজনে ১৬০ টাকা এবং কাঁচা আম প্রকারভেদে ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি মুলা ৫০ টাকা, শিমের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ব্রোকলি ৪০ টাকা, পাকা টমেটোর কেজি প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা এবং গাজর ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ২০ থেকে ৬০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

লাল শাক ১০ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, আলু ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৫০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে এক ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকা, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সপ্তাহ ব্যবধানে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের শিং (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙাশ ২১০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৬০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম মাছ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার ২০০ টাকা, মেনি ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, আইড় মাছ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, বেলে ৭০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


আরও খবর

দাম বাড়ল জ্বালানি তেলের

সোমবার ০৬ মে ২০২৪




বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ |

Image

 বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশিত বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়।

২০২৩ সালে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।

এতে বলা হয়, গত বছর বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বেশ কিছু বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, সরকারের নির্যাতন বা নিষ্ঠুরতা, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি, কঠোর ও জীবনের জন্য হুমকি এমন কারাগার পরিস্থিতি।

এছাড়া নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর সমস্যা, রাজনৈতিক ও অন্যান্য বন্দি, সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও অযৌক্তিক গ্রেপ্তার, মতপ্রকাশ সীমিত করার জন্য ফৌজদারি মানহানি আইনের ব্যবহার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও ইন্টারনেট ক্ষেত্রে স্বাধীনতার ওপর গুরুতর বিধি-নিষেধের কথা বলা হয়েছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক দায়মুক্তির অসংখ্য তথ্য পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের চিহ্নিত করতে এবং শাস্তি দেওয়ার জন্য বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি।

বাংলাদেশে মানবাধিকারের সমস্যা হিসেবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং সংস্থার স্বাধীনতায় উল্লেখযোগ্য হস্তক্ষেপের কথা বলা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

এছাড়া সংগঠন, অর্থায়ন বা বেসরকারি ও নাগরিক সমাজ সংস্থাগুলো পরিচালনায় সুযোগ অত্যন্ত সীমিত করে আইন প্রণয়নসহ চলাচলের স্বাধীনতার ওপর বিধি-নিষেধ; অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পরিবর্তন করতে নাগরিকদের অক্ষমতার কথা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ওপর গুরুতর ও অযৌক্তিক বিধি-নিষেধ, সরকারি খাতে বড় ধরনের দুর্নীতি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ওপর গুরুতর বিধি-নিষেধকেও সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বাল্যবিবাহ, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, যৌন সহিংসতা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার, কুয়ার বা ইন্টারসেক্স (এলজিবিটিকিউআই) ব্যক্তি, ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রমিকদের সংগঠনের স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য বিধি-নিষেধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।


আরও খবর



সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরল ঢাবি

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

সারা দেশে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ সহনশীল পর্যায়ে আসায় বুধবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্লাস ও পরীক্ষা যথারীতি সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে। গত সোমবার ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, তীব্র তাপপ্রবাহ (হিট ওয়েভ) সহনশীল পর্যায়ে আসায় ৮ মে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা যথারীতি সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে সব ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ২১ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস চলবে। তবে চলমান পরীক্ষা সরাসরি নেওয়া হবে। তাপপ্রবাহ সহনশীল পর্যায়ে আসায় সশরীরে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাবি কর্তৃপক্ষ।


আরও খবর