মাসুদ উল হাসান :বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিন দিনের অবরোধের কারনে বকশীগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দূর পাল্লার বাস বন্ধ থাকায় দূর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে মালিকরা বলছেন অবরোধের কারনে যাত্রী সঙ্কট,তাই বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
জানা যায়,প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০-৩৫ টি যাত্রীবাহী দূর পাল্লার বাস বকশীগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চলাচল করে। এছাড়াও ভৌগলিক কারনে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা থেকে বেশ কয়েকটি বাস বকশীগঞ্জ হয়ে চলাচল করে থাকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হরতালসহ নানা কর্মসূচী দিচ্ছে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকার বিরোধী দলগুলো। এরই জেরে টানা ৭২ ঘন্টার অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। যে কারনে আতঙ্কে রয়েছেন পরিবহন মালিকরা। অবরোধের কারনে রাস্তায় গাড়ি বের করার সাহস পাচ্ছেন না তারা। ফলে বকশীগঞ্জ থেকে সকল ধরনের দূর পাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে জুরুরী প্রয়োজনে গন্তব্যে যেতে পারছেন না যাত্রীরা। অপরদিকে যাত্রী সংকটের কারণ দেখিয়ে ছাড়া হচ্ছে না কোনো বাস। বেশিরভাগ বাস কাউন্টার বন্ধ। তবে মালিকদের দাবি বাস বন্ধের কোন নির্দেশনা নেই। যাত্রী সঙ্কটের কারনেই বাস চলছে না।
বকশীগঞ্জ পুরাতন বাসস্ট্যান্ড জননী কাউন্টারের সামনে কথা হয় আইড়মারী গ্রামের মমতাজুর রহমান নামে এক যাত্রীর সাথে। তার ভাষ্য,ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন তিনি। তিনদিনের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। ঢাকায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছেন। কিন্তু ঢাকাগামী কোন গাড়ি পাচ্ছেন না।
ভোগান্তিতে পড়েছেন বগারচর ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরেজা বেগম। তিনি বলেন ডেংগু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তার বড় বোন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকায় যেতে পারছেন না তিনি ও তার পরিবারের লোকজন।
জানতে চাইলে প্রিয় এক্সপ্রেসের কাউন্টার ম্যানেজার বিপুল মিয়া বলেন, অবরোধের কারনে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে মালিক শ্রমিকদের অপূরনীয় ক্ষতি হয়। সেই আতঙ্ক থেকেই বাস ছাড়া হয়নি। এছাড়া অবরোধের কারনে যাত্রী নেই বললেই চলে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গাড়ি পাঠানো হবে।
জননী কাউন্টারের সুপারভাইজার মো.আসাদ বলেন,অবরোধে যাত্রীরাও আতঙ্কে আছে। আমাদের বাস চালানোর নির্দেশনা আছে। যাত্রী না থাকলে কেমনে যাব। লোকসান করে তো বাস চালাতে পারব না।
পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন,অবরোধের মধ্যে রাস্তায় গাড়ি চললে গাড়িতে আগুন ও ভাঙ্চুরের ঘটনা ঘটতে পারে বলে শঙ্কায় রয়েছেন মালিকরা। গাড়ি ভাঙচুর হলে বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলে অনেক মালিক নিঃস্ব হয়ে যায়। এছাড়াও এতে চালক ও হেল্পারের জীবনের শঙ্কাও থাকে। তাই যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যান চলাচল না করায় যাত্রীরা যেমন বিপাকে পড়েছেন তেমনি শ্রমিকরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
বকশীগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য জয়নাল আবেদীন বলেন,অবরোধকে ঘিরে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা কিছুটা আতঙ্কিত। তবে সেই কারনে বাস চলাচল বন্ধ নয়। যাত্রী না থাকায় লোকসানের ভয়ে মালিকরা গাড়ি পাঠাচ্ছেনা।