একই দিনে দুই ভূমিকম্পের জেরে তুরস্ক ও সিরিয়া এখন মৃত্যুপুরী। সবশেষ মৃতের সংখ্যা সাড়ে চার হাজারের কাছাকাছি। এর ভেতর কেবল তুরস্কেই প্রাণ হারিয়েছে ২ হাজার ৯০০ জন, আর সিরিয়ায় মারা গেছেন ১৪শ'। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এ সংখ্যা ৮ গুণ বাড়তে পারে। দুই ভূমিকম্পের প্রথমটি ছিলো ৭ দশমিক ৮ মাত্রার যার ১০ ঘণ্টার ভেতর সাড়ে সাত মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে।
যে দিকে চোখ যায়, শুধুই ধ্বংসের ছবি। উপচে পড়ছে মৃতদেহ। ভূকম্পে তুরস্ক এবং সিরিয়ার ছবিটা ঠিক এরকমই। মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়া দুই দেশে ভূমিকম্পের পর থেকেই শুরু হয়েছে হাহাকার। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদ এবং প্রিয়জনদের খোঁজার আর্তি ।
ভূমিকম্প বিধ্বস্ত দুই দেশের হাসপাতালগুলোতে আহতদের আহাজারি। এক দিন আগেও যেগুলি বহুতল ছিল, সোমবারের ভূমিকম্পের পর তা কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তীব্র ঠান্ডার মধ্যে বহু মানুষকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হচ্ছে ।
এদিকে সোমবার ভোর রাতে ভূমিকম্প আঘাত হানার দশ ঘন্টার মধ্যেই শক্তিশালী আরেকটি ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়া। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক পাঁচ। কর্মকর্তারা এটিকে নতুন আরেকটি ভূমিকম্প বলে শনাক্ত করেছেন।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতাই বলেছেন, তুরস্কের ১০টি প্রদেশে ১৪ হাজার ৪৮২ জন আহত হয়েছেন এবং ৭ হাজার ৮৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদিকে ভূমিকম্পে মৃত মানুষের সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও ।
ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে। ভূমিকম্পে ঘরহারা মানুষেরা আশ্রয় খুঁজছেন সেখানে।
তুরস্ক-সিরিয়ার এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে এগিয়ে এসেছে বিশ্বের নানা দেশ। বিশেষজ্ঞ দল ও নানা সরঞ্জাম দিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তার চেষ্টা করছে তারা ।
স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে হতাহতদের স্মরণে সাতদিনে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা হয়েছে সব স্কুল।