Logo
শিরোনাম

বাবা, আই মিস ইউ......

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২০ জুলাই ২০23 | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

নিউইয়র্কে দীর্ঘ যন্ত্রণাদায়ক কেমোথেরাপির পর তিনি ঢাকায় ফিরে এসেছেন। ফোন করে আমাকে তাঁর ওখানে ডাকলেন। বললেন, আমার সঙ্গে কিছু কথা আছে। 

তাঁর বাসায় লোক গিজগিজ করছে। সারা রাত তাদের সঙ্গে কাটালেন তিনি। তাঁর বাসার চারপাশে নিঃশব্দে ঘুরে বেড়ালাম, ভিড়ভাট্টা আমার ভালো লাগে না।

অতিথিরা চলে যেতে শুরু করলে তিনি আমাকে এক কোনায় ডেকে নিলেন। আমি একটু একটু কাঁপছি, মনে হলো তিনি সেটা লক্ষ করেননি। বললেন, আমার বোনেদের মিস করেন তিনি, তাদের আরও কাছে পেলে তাঁর ভালো লাগত। মনে মনে বললাম, আর কিছু কি বলার নেই বাবা! আমি অপেক্ষা করছি। তিনি আবার কথা বলতে শুরু করলেন, এখন খুব ধীরে কথা বলেন। বললেন, তাঁর পরিবার নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি চলে গেলে তাদের কী হবে। বললেন, ছোট দুই ছেলের ভবিষ্যৎ কী হবে? দুশ্চিন্তায় রাতে তাঁর ঘুম হয় না। তিনি থামেন। আমি অপেক্ষা করি। অনেকক্ষণ থেমে থাকেন তিনি। আমার হূৎস্পন্দন থেমে থাকে। আমি অপেক্ষা করে যেতে থাকি। তারপর বুঝতে পারি, ব্যাপারটা কী। তাঁর কথা আছে, তবে আমাকে বলার জন্য নয়। 

আমি ঘুরে দাঁড়িয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে থাকি, ধীর গতিতে। তখনো আশা, তাঁর হয়তো অন্য আর কিছু একটা বলার আছে। তিনি আর কিছু বলেন না। তাঁর থেমে যাওয়াটা কোনো বিরতি ছিল না। তাঁর সঙ্গে সেই শেষ দেখা।

শীত এসে পড়ছে। এখনো আমার বয়স উনিশ। সেদিন তাঁর জন্মদিন। তিনি তখনো নিউইয়র্কে। আমি ভিডিও কলে তাঁকে অভিনন্দন জানালাম। বিনা চুলে তাঁকে চিনতে কষ্ট হলো আমার। শীত দ্রুত চলে গেল। এসে পড়ল আমার বিশতম জন্মদিন। আমি কোনো আয়োজন করলাম না। বাবার এক বন্ধু দরজায় হাজির হলেন। হাতে কেক। কেকে হ্যাপি বার্থডে লেখা নেই। একটা প্লেইন চকোলেট কেক। তাতে লেখা: 

-'বাবা, আই মিস ইউ।’ 

আমার দিনটা আনন্দের হয়ে গেল। আমার এই ছোট্ট অদ্ভুত পরিবার নিয়ে আমি সব সময়ই সুখী। সেই বছরের মধ্য জুলাইতে একদিন আমার বোন আমাকে ঘুম থেকে তুলল। বলল, বাবা মারা যাচ্ছেন। তিনি নিউইয়র্কের একটা হাসপাতালের আইসিইউতে অচেতন শুয়ে আছেন। আর এক ঘণ্টা আছে। এক ঘণ্টা পর তাঁর শারীরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে। তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হবে। বাড়িজুড়ে অসহ্য নীরবতা। প্রায় এ রকমই একটা মুহূর্ত কি আমি আগে কাটিয়েছি! দুপুরের ঘুম আমি ঘৃণা করি।

লেখকেরা কষ্টের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে লেখেন, 

‘চোখের সামনেটা ঝাপসা হয়ে গেল,’ বা 

‘কীভাবে সময় কেটে গেল জানি না,’ বা মাঝে মাঝে লেখেন, ‘আমি কিছু অনুভব করলাম না।’ 

ওই একটি ঘণ্টা পেরোতে ঠিক একটি ঘণ্টাই ব্যয় হলো। ফোনটা পেল আমার বোন। সে বলল, বাবা আর নেই। আমার স্মৃতিতে কিছুই ঝাপসা হয়ে গেল না। এর পরের প্রতিটি মুহূর্ত আমি মনে করতে পারি। সবকিছুই আমি অনুভব করেছি। প্রতিটি মেসেজ, প্রতিটি ফোন কল মনে আছে আমার।

যেন আবার জন্ম হলো আমার। মৃত হয়ে জন্মালাম। শূন্য হয়ে জন্মালাম। পরের কয়েকটা দিন চলল প্রতিটি বন্ধু, প্রত্যেক পরিচিতজন এবং প্রত্যেক অপরিচিতের সঙ্গে দেখা করা। যতজন মেয়ে আমাকে ভালোবেসেছে, যারা কোনোদিন আমার কথা ভেবেছে বা ভাবেনি, সবাই এসে আমাকে খুঁজে নিয়েছে, সমবেদনা নিয়ে তাকিয়েছে আমার চোখের দিকে। সব স্নেহ নিংড়ে আমার চোখে তাকিয়েছে তারা, কিন্তু বিনিময়ে সেখানে দেখতে পেয়েছে কেবল শূন্যতা। এটা কোনো ক্ষত না, একটা সেপারেশন না, যেটা সারিয়ে তোলা যায়। এটা বরং ছড়িয়ে পড়ে, শরীরে দানা বাঁধে, হয়ে ওঠে ব্যক্তিগত এক ক্যানসার।

তখন খুব ভোর। আজ ওরা নিউইয়র্ক থেকে বাবাকে নিয়ে আসবে জানাজা আর দাফনের জন্য। সবাই নিঃশব্দে প্রস্তুত হচ্ছে। আমি ঘুম ভেঙে দেখলাম, আয়রন করা সাদা পাঞ্জাবি সুন্দর পরিপাটি ভাঁজ করা আমার বিছানার পাশে। 

আমার বোন বলল, আর আধা ঘণ্টার মধ্যে আমরা রওনা দেব। আমি কিছু বললাম না। তারা এখনই বেরোবে। আমার প্রস্তুত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি রুম থেকে বেরিয়ে এলাম। দেখে তারা হতবাক। কিছুক্ষণ কেউ কিছু বলতে পারল না।

- ‘তুমি কী সত্যি এটা পরে যেতে চাও?’

আমি কিছু বললাম না।

- ‘সবাই এটা নিয়ে কথা বলবে, বুঝতে পারছ! তোমার ভালো লাগবে না। সবাই ভাববে, সবাই মনে করবে তুমি...’

আমার আরেক বোন তাকে থামিয়ে দিল। এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল।

- ‘মোটু, তোর যা খুশি তুই পর। তোর যা ভালো লাগে। যা করলে বাবার ভালো লাগবে বলে তোর মনে হয়, তাই কর।’ 

বোনেরা আমাকে মোটু বলে, পটকা বলে। ছোটবেলায় গোলগাল ছিলাম, সেই ডাকনাম আজও থেকে গেছে।

বাবার মৃত্যু জাতীয় ঘটনা। পুরো দেশ শোক করছে। ক্যামেরা জ্বলে উঠছে। কোথাও নৈঃশব্দ্য নেই, এক মুহূর্তের নির্জনতা নেই। বাবাকে আমার শেষ বিদায় জানানোর মুহূর্তটি লাইভ সম্প্রচার হচ্ছে, সারা দেশবাসীর দেখার জন্য। আমার কিছুই যায়-আসে না। আমি এখানেই থাকতে চেয়েছি। 

তাঁর জানাজার সময় হয়ে এল। তাঁকে দাফন করার আগে শেষ মোনাজাত। সবার চোখ আমাদের ওপর নিবদ্ধ। ঈদগাহ মাঠে জনসমুদ্রের মধ্য দিয়ে তাঁর মরদেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছি আমি। আমি এখানেই থাকতে চেয়েছি। তাঁর জানাজার সময় হয়ে এল। তাঁকে দাফন করার আগে শেষ মোনাজাত। সবার চোখ আমাদের ওপর নিবদ্ধ। ঈদগাহ মাঠে জনসমুদ্রের মধ্য দিয়ে তাঁর মরদেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছি আমি। এই প্রথম যে তিনি আমাকে ছেড়ে যাচ্ছেন, তা নয়। কিন্তু এবারই প্রথম, আমি আমার কাঁধে বহন করতে পারছি তাঁর ভার। 

এবার আমি জানি, আমি কে। আমি তাঁর সবচেয়ে বড় ভক্ত। তাঁর সবচেয়ে কট্টর সমালোচক। আর তাঁর সবচেয়ে বড় ছেলে। আমি জানি, আমি কে।

- নুহাশ হুমায়ূন


আরও খবর

নির্বোধের মতো বিশ্বাস করোনা

রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আমি শেখাতে আসিনি, শিখতে এসেছি

রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩




ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ জাস্টিন ট্রুডোর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

ভারতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এক শিখ নেতাকে হত্যার গুরুতর অভিযোগ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি শিখ মন্দিরের বাইরে অজ্ঞাত মুখোশধারীদের গুলিতে নিহত হন শিখ সম্প্রদায়ের নেতা হারদ্বীপ সিং নিজ্জার।

হারদ্বীপ সিং ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক ছিলেন। তিনি ভারতে শিখদের আলাদা খালিস্তান রাষ্ট্রের দাবির আন্দোলনের অন্যতম বড় নেতাও ছিলেন।

ট্রুডো জানিয়েছেন, হারদ্বীপের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতের সংশ্লিষ্টতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছেন কানাডার গোয়েন্দারা।

তিনি আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলেছিলেন।

কানাডার আইনসভা হাউজ অব কমন্সে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ট্রুডো বলেছেন, কানাডার মাটিতে কানাডার নাগরিকের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনো বিদেশি সরকারের সংশ্লিষ্টতা অগ্রহণযোগ্য এবং এটি আমাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।

তিনি আরও বলেছেন, কানাডা হলো মৌলিক আইনের দেশ। যারা দ্বারা স্বাধীন, মুক্ত এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। ভারত অবশ্য আগেই শিখ নেতা নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

শিখ নেতাকে হত্যার অভিযোগ করার পাশাপাশি কানাডা পাভন কুমার রায় নামে এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কারও করেছে। প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর এমন বক্তব্যের পর কূটনীতিককে বহিষ্কারের খবর আসে।

এরআগে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, ৪৫ বছর বয়সী নিজ্জারের মৃত্যু একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ছিল।

গত ১৮ জুন সন্ধ্যায় প্রকাশ্য দিবালোকে সারের গুরু নানক শিখ গুরুদাওয়ারাতে নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করে দুই মুখোশধারী।

শিখ নেতা হারদ্বীপ সিং নিজ্জার। গত জুনে মুখোশধারীদরে গুলিতে নিহত হন তিনি। কানাডা দাবি করছে, তার হত্যাকাণ্ডর সঙ্গে ভারতের সংশ্লিষ্টতা আছে।

তিনি ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় একজন জনপ্রিয় শিখ নেতা ছিলেন এবং প্রকাশ্যে ভারতের পাঞ্জাবে স্বাধীন খালিস্তান রাষ্ট্রের দাবি জানাতেন। তার ভক্তরা জানিয়েছেন, স্বাধীন খালিস্তান রাষ্ট্র চাওয়ায় তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে ভারত এর আগে নিজ্জারকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। নয়াদিল্লির দাবি ছিল তিনি একটি সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী দল পরিচালনা করতেন। তবে নিজ্জারের সমর্থকরা দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে কখনো এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডের প্রমান পাওয়া যায়নি।

জাস্টিন ট্রুডো আরও জানিয়েছেন, এ ঘটনা সম্পর্কে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পাশপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককেও তিনি অবহিত করেছেন।

কানাডায় শিখ সম্প্রদায়ের প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ মানুষ বসবাস করেন।

গত কয়েকমাসের মধ্যে নিজ্জারসহ আরও দুজন শিখ নেতা নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক খালিস্তান লিবারেশেন ফোর্সের প্রধান অবতার সিং খান্ডা। যার যুক্তরাজ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। আর তৃতীয়জন হলেন পরমজিত সিং পাঞ্জওয়ার। তিনি পাকিস্তানের লাহোর শহরে গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। নিহত হওয়ার আগে ভারত তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল।

এদিকে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন ট্রুডো। ওই সময় তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠক হয়। মোদি ট্রুডোর কাছে অভিযোগ করেন, কানাডার মাটি ব্যবহার করে আলাদা খালিস্তান রাষ্ট্রের আন্দোলন চলছে। কিন্তু কানাডা সরকার তেমন কিছু করছে না।

সূত্র: বিবিসি


আরও খবর



উচ্চ সংঘাতপ্রবণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

সংঘাত, সহিংসতা, চরমপন্থার দিক থেকে এগিয়ে থাকা বিশ্বের ৫০ দেশের তালিকায় স্থান উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। তালিকায় ২২ তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। সংঘাতের মাত্রার দিক থেকে অতি উচ্চ, উচ্চ, অশান্ত নিম্ন এই চারটি ভাগে দেশগুলোর অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশকে দেখানো হয়েছে উচ্চ সংঘাতপূর্ণ দেশ হিসেবে। গত ১২ মাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

তালিকার ১ নম্বরে মিয়ানমার এবং ৫০ নম্বরে আছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের নামও এই তালিকায় আছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট বা এসিএলইডি এই তালিকা তৈরি করেছে। বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক সহিংসতার তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবছর এই তালিকা প্রকাশ করে তারা। এবারের তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে ২৪০টি দেশ ও অঞ্চলের তথ্যের ভিত্তিতে।

সহিংসতায় নিহতের ঘটনা, বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকি, সহিংসতাপ্রবণ এলাকার বিস্তার এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা এই চারটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে এসিএলইডি তাদের বার্ষিক কনফ্লিক্ট ইনডেক্স তৈরি করেছে। এই চার মানদণ্ডে স্কোরের ভিত্তিতে তালিকার দেশগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

তালিকায় অতি উচ্চ বা চরম সংঘাতপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১০টি দেশকে। তালিকার ক্রম অনুসারে এগুলো হলো ১. মিয়ানমার, ২. সিরিয়া, ৩. মেক্সিকো, ৪. ইউক্রেন, ৫. নাইজেরিয়া, ৬. ব্রাজিল, ৭. ইয়েমেন, ৮. ইরাক, ৯. গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও ১০. কলম্বিয়া।

উচ্চমাত্রার সংঘাতপূর্ণ ২০টি দেশের তালিকায় আছে ১১. ফিলিস্তিন, ১২. হাইতি, ১৩. আফগানিস্তান, ১৪. বুরকিনা ফাসো, ১৫. মালি, ১৬. ভারত, ১৭. সুদান, ১৮. গুয়াতেমালা, ১৯. পাকিস্তান, ২০. হন্ডুরাস, ২১. সোমালিয়া, ২২. বাংলাদেশ, ২৩. কেনিয়া, ২৪. ক্যামেরুন, ২৫. ইথিওপিয়া, ২৬. জ্যামাইকা, ২৭. ভেনিজুয়েলা, ২৮. ফিলিপাইন, ২৯. ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং ৩০. নাইজার।

অশান্ত বা নিম্ন সংঘাতপূর্ণ ২০টি দেশ ও অঞ্চলের তালিকায় আছে ৩১. দক্ষিণ সুদান, ৩২. তুরস্ক, ৩৩. পুয়ের্তো রিকো, ৩৪. মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ৩৫. বুরুন্ডি, ৩৬. উগান্ডা, ৩৭. মোজাম্বিক, ৩৮. দক্ষিণ আফ্রিকা, ৩৯. রাশিয়া, ৪০. লেবানন, ৪১. স্বোয়াতিনি, ৪২. ইন্দোনেশিয়া. ৪৩. ইসরায়েল, ৪৪. ইরান, ৪৫. বেনিন, ৪৬. ইকুয়েডর, ৪৭. চাদ, ৪৮. ঘানা, ৪৯. লিবিয়া, ৫০. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এই দেশগুলোর বাইরে অন্যান্য দেশ নিম্ন সংঘাতপূর্ণ এলাকা।

এসিএলইডি বলছে, এ বছর পুরো বিশ্বে সহিংস ঘটনা আগের বছরের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি। এসব ঘটনায় ১ লাখ ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। ১৬৭টি দেশে গত এক বছরে একটি হলেও রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।


আরও খবর

সন্ত্রাসীদের তালিকা করছে র‌্যাব

মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩




শামীম ওসমানের নেতৃত্বে বৃহত্তর সমাবেশের ডাক

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

বুলবুল আহমেদ সোহেল, নারায়ণগঞ্জ:

নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান চলতি মাসের ১৬ তারিখ বৃহত্তর সমাবেশের ডাক দিয়েছেন। ‘দেশ বাঁচাও’ স্লোগানে এই সমাবেশের ডাক দেন তিনি।শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় রাইফেলস ক্লাবে সমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীদের নিয়ে এক প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শামীম ওসমান।

তিনি বলেন, আমি দেখছি সম্প্রতি জাতিরন পিতার কন্য শেখ হাসিনাকে অশ্লীল ভাষায় গালি দেওয়া হচ্ছে। তারা অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে আন্দোলনের নামে মিছিল করছেন। তারা শুধু জাতির পিতার কন্যা শেখ হসিনাকেই নয় বরং বঙ্গবন্ধুকে পর্যন্ত নোংরা ভাষায় গালি দিচ্ছে, যা মেনে নেওয়ার মত না।

শামীম ওসমান বলেন, রাজনীতিতে কিছু হিসাব নিকাশের বিষয় আছে। আমি যে সব জানি তা না। তবে খোঁজ খবর রাখি। ওরা ষড়যন্ত্রের খেলায় মেতে উঠেছে। ওরা তারাই যারা স্বাধীনতার সময় ত্রিশ লাখ মানুষের জীবন নিয়েছিল। দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম নিয়েছিল। ওরা ইসলামের কথা বলে মানুষ জবাই করেছিল। আমরা কি এই জন্য মাঠে নামবো, না এই জন্য মাঠে নামবো না। নামবো স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির জানান দিতে। কী লজ্জা আমাদের? এই শহীদদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন দেশ রক্ষা করতে আমাদের এক হতে হয়। এই বয়সে মুক্তিযোদ্ধাদের রাস্তায় নেমে শ্লোগান দিতে হয়। সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা শ্লোগান দিয়েছিলেন, ‘বীর বাঙ্গালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’ আর আজকে আমাদের শ্লোগান ধরতে হয়, ‘বীর বাঙ্গালী ঐক্য গড়ো, বাংলাদেশ রক্ষা কর।

বিএনপির আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি অনেক লাফালাফি করছে। কেউ বলছে, সাত দিনের মধ্যে সরকার পতন করে ফেলবে। কেউ বলছে এক মাসের মধ্যে করবে। কারা সরকার পতন করবে আর করবে না, এটা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ফায়সালা। তবে আমি বলি, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাই হবেন সরকার প্রধান। আমরা যারা ৭৫ এর পরে রাজনীতিতে এসছি তারা শেখ হাসিনাকে মায়ের দৃষ্টিতে দেখি। ওরা আমাদের মাকে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করবে, এটাতো আমরা মেনে নিব না। এমন কর্মকান্ড আমরা মেনে নিতে পারি না।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি বলে পুলিশ নিয়ে চলি। আমি পুলিশের কাছে অনুরোধ করছি আপনাদের যত পুলিশ আছে, সব তাদের পক্ষে যান। সব নিয়ে ঘোষণা করেন পুলিশ আমাদের পক্ষে আছে, তারপর ২৪ ঘন্টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া করে দিব। আপনাদের স্মরণ থাকার কথা, আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন আপনাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মতিন চৌধুরী। নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন, আটকে দিয়েছিলাম। অনুমতি চেয়ে বলেছিলেন, আমি যাই। অনুমতি দেওয়ার পর চলে গিয়েছিলেন। আমাদের পুলিশ বাহীনি লাগে না।

অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণা হলে আমিও সমান, তুমিও সমান। তখন খেলবো। দেখা যাবে কতটুকু জোড় কার? আসলে খেলার আগে রিহার্সেল লাগে। আমাদের অনেক নেতাকর্মীদের শরীরে চর্বি জমে গেছে। আমি বিশ^াস করি আমসার সাথে যারা আছেন তারা ফিট আছেন। আমাদের মদ্যে কেউ আছেন যারা মনোনয়ন পাবার জন্য বলেন আপা আপা। কিন্তু মনোনয়ন পেলে আর কিছুই ঠিক থাকে না। এখানে আমরা যারা আছি সবাই কর্মী, কেউ নেতা না। আমরা মুজিব আদর্শের সৈনিক।  

সমাবেশের বিষয়ে তিনি বলেন, সেদিন নারায়ণগঞ্জের মানুষ দেখিয়ে দেবো নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাটি ছিল আছে এবং থাকবে। আপনারা ১৬ তারিখ দেখিয়ে দেবেন, আমরা এমন আওয়াজ তুলব, যা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। সেদিন আমি মন্ত্রীকে দাওয়াত করব আশা করি কোনো ব্যস্ততা না থাকলে উনি উপস্থিত থাকবেন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু, সাফায়েত আলম সানী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমানসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 


আরও খবর

আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে ছাড় নয়

মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩




মনোনয়ন কিনলেন ১৭ আওয়ামী লীগ নেতা

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক : নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছেন দুই উপজেলার ১৭ জন নেতা। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে এসব প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

এ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়েছেন প্রয়াত সংসদ-সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী, গোরুদাশপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আহমদ আলী, সদস্য মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ আলী, রাজশাহী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এস এম রফিকুল পারভেজ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রতন কোমার সাহা, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আরিফুল ইসলাম, সদস্য কে এম জাকির হোসেন, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এস এম আসাদ-উজ জামান, সহ-সভাপতি একে এম শাহজাহান কবির, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, জেলা বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, উপ-কমিটির সাবেক সদস্য সুব্রত কোমার কুন্ডু, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য মো আতিকুর রহমান, গুরুদাশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল কাদের।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যুতে আসন শূন্য হওয়ায় এখানে উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়েছে।


আরও খবর

আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে ছাড় নয়

মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩




দেশে ১১ বছরের গ্যাস মজুদ রয়েছে

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩ |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে ৮.৪৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে। যা দিয়ে আগামী প্রায় ১১ বছর সরবরাহ করা সম্ভব হতে পারে।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংসদে সরকারি দলের সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের টেবিলে উপস্থাপিত তারকা চিহ্নিত এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, দেশে এ যাবৎ আবিষ্কৃত ২৯টি গ্যাসক্ষেত্রের প্রাথমিক মোট মজুত ৪০.৪৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। এরমধ্যে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুদের পরিমাণ ২৮.৭৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত উত্তোলন করা হয়েছে ২০.৩৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। ফলে মজুত অবশিষ্ট রয়েছে ৮.৪৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলনের লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপের আওতায় বিভিন্ন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নতুন কোনো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত না হলে এবং বর্তমান হারে গ্যাস সরবরাহ করা হলে অবশিষ্ট মজুদ ৮.৪৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আগামী প্রায় ১১ বছর সরবরাহ করা সম্ভব হতে পারে।’

তিনি বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাস চাহিদা পূরণে সরকার ২০২৫ সাল নাগাদ ৪৬টি (অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার) কূপ খননের মাধ্যমে নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে ৭টি কূপ খনন কাজ শেষ হয়েছে এবং সম্প্রতি তিনটি নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে (টবগি-১, ভোলা নর্থ-২ এবং ইলিশা-১)। ২টি কূপ (বিয়ানীবাজার-১ এবং তিতাস-২৪) ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে ৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, দেশের সমুদ্র এলাকায় নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের লক্ষ্যে ২ডি মাল্টি ক্লায়েন্ট সাইসমিক জরিপ পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া গত ৭ জুলাই ‘বাংলাদেশ অফশোর মডেল পিএসসি ২০২৩’ অনুমোদিত হয়েছে। বর্তমানে দেশের অফশোর এলাকায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য নতুন বিডিং রাউন্ড আহ্বানের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।


আরও খবর

সন্ত্রাসীদের তালিকা করছে র‌্যাব

মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩