Logo
শিরোনাম

বাংলাদেশে সুফিবাদ

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

অধ্যাপক . মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন

 

 সুফিবাদ একটি উদার, অসাম্প্রদায়িক, সহনশীল সার্বজনীন প্রেমময় মতবাদ। ব্যক্তিজীবনকে কলুষমুক্ত রাখা; সব ধরনের লোভ, স্বার্থপরতার ঊধর্ে্ব নিজের অবস্থান সংহত রাখা; পারিবারিক জীবনকে শান্তিময় রাখা এবং সামাজিক জীবনকে সুশৃঙ্খল সৌন্দর্যময় রাখার জন্য সুফিবাদের নৈতিক আধ্যাত্মিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। সুফিবাদ মানুষকে সত্যিকারের মানুষ তথা 'ইনসানে কামেল' বা পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। মানব হৃদয়কে প্রকৃত অর্থে এক প্রেমিক হৃদয়ে পরিণত করে সুফিবাদ। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সমাজজীবনে সভ্যতার

বিকাশে মতবাদের রয়েছে অনন্য অবদান।
অলি, সুফি, পীর, ফকির, দরবেশ, গাউস, কুতুব সাধক হিসেবে যারা আমাদের সমাজে পরিচিত; মূলত তাদের মাধ্যমেই সুদূর অতীত থেকে বাংলা ভূখণ্ডে শান্তির ধর্ম ইসলামের প্রচার-প্রসার বিস্তৃতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। সুফিবাদের মহান দীক্ষায় উজ্জীবিত হয়েই তারা আমাদের এতদঞ্চলে ইসলামের শান্তির সুবাতাস বইতে দিকপালের মতো অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। পারস্য সাহিত্য এবং ইরানি সুফিবাদের প্রভাবে প্রভাবিত অলি-আউলিয়াদের মাধ্যমে বিশেষ প্রক্রিয়া আমাদের দেশে প্রচারিত হয়। পারস্য সাহিত্যের ভাবধারার শ্রেষ্ঠ সম্পদ এই সুফিবাদে অভিব্যক্তি লাভ করেছে। উমর খৈয়্যাম, ফেরদৌসি, শেখ সাদি, জালালুদ্দিন রুমি, হাফিয শিরাযি, জামি_ সবাই সত্যের পথিক, সাধক, ভাবুক এবং সুফিবাদের প্রত্যক্ষ অনুশীলনকারী।

খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বাংলায় তুর্কি শাসন স্থায়িত্ব লাভ করলে উত্তর ভারতীয় সুফি মতবাদের ক্ষীণধারা অর্ধশতাব্দীর মধ্যেই প্রবল ভাব ধারণ করে একটি প্রকাণ্ড নদীতে পরিণত হয়। প্রধানত গঙ্গার উভয় কূল ধরে উত্তর ভারতীয় সুফি মতবাদ বাংলায় প্রবেশ করেছিল। উত্তর ভারতীয় সুফিদের মধ্যে বাংলায় সুফি ভাব ইসলাম প্রচারের জন্য যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি, তাদের মধ্যে খাজা মুইনুদ্দিন চিশতি, খাজা কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার খাকি, শেখ ফরিদুদ্দিন গান্জে শকর, নিযামুদ্দিন আউলিয়া, শেখ শরফুদ্দিন বু আলি শাহ কলন্দর, বদিউদ্দিন শাহে মদার, শেখ আহমদ সরহিন্দ মোজাদ্দেদে আলফেসানি প্রমুখ সমধিক প্রসিদ্ধ।

সুফিদের কয়েকটি দল পাক-ভারত উপমহাদেশে আগমন করেন মুসলিম সামরিক শক্তির আবির্ভাবের পূর্বে। বাংলাদেশেও তাদের আগমন হয় সেই যুগেই। প্রথম দলের সাফল্য দেশের বিস্তৃতির পরিপ্রেক্ষিতে সুফিদের সেই অনুপ্রবেশের ধারা অব্যাহত থাকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। মুসলিম শাসনামলে সেই ধারা শাসকশক্তি শরিয়তের সহযোগিতায় প্লাবিত করে দেয় সারা বাংলাদেশ। মুসলিম যুগে বঙ্গদেশ সুফি সাধকদের সংস্পর্শে ভালোভাবেই এসেছিল। বাংলার একটা বৈশিষ্ট্য আছে। বাংলার ভৌগোলিক সংগঠন হয়েছিল পলিমাটির স্তরে স্তরে। দিনে দিনে আমরা সেই স্তরের ইতিহাস আবিষ্কার করে বিস্মৃত হয়ে চলেছি। বাংলার ধর্ম সম্বন্ধেও সেই একই কথা। ধর্মতত্ত্বের বিশ্লেষণে স্তরের পর স্তরের ইতিহাস আবিষ্কৃত হবে। বিশুদ্ধ বৈদিক ধর্ম বাংলায় স্বীকৃত হয়নি। পুরোহিতের মন্ত্রে, পূজার উপকরণে এবং বরণ ডালায় কত সভ্যতার কত ভাবধারার মিলন মিশ্রণ! এসব সম্ভব হয়েছিল বাংলার উদার মানস ক্ষেত্রের জন্য।

বাংলায় মুসলিম রাজশক্তির অভ্যুদয়ের আগে দশম একাদশ শতাব্দীতে এবং দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথম পাদে যারা বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন, সেসব নিবেদিতপ্রাণ আত্মপ্রচারবিমুখ সুফি মুবালি্লগদের মধ্যে সর্বাগ্র গণ্য হলেন শাহ সুলতান মাহিসওয়ার (রহ.) তার পুরো নাম মির শাহ সৈয়দ সুলতান মাহমুদ বালখি মাহিসওয়ার (রহ.) বগুড়া জেলার মহাস্থানে তার পবিত্র মাজার অবস্থিত। তিনি ৪৩৯ হিজরি মোতাবেক ১০৪৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় আগমন করেন। শাহ সুলতান বালখি মাহিসওয়ার পরবর্তীকালে আরও অনেক অলি-দরবেশদের মাজার থাকায় পৌণ্ড্রবর্ধনের পরিবর্তে মহাস্থানকে 'মাস্তানগড়' অথবা 'মহাস্থান' নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সুফি মাহিসওয়ার মৎস্যাকৃতির বাণিজ্য জাহাজে সমুদ্রপথ অতিক্রম করে বাংলায় আগমন করে সন্দ্বীপে অবস্থান নেন। অতঃপর কিছুকাল পর সুদৃশ্য জনাকীর্ণ ঢাকার হরিরামপুর নগরে আসেন। তথাকার হিন্দু রাজা বলরামকে তিনি পরাস্ত করেন।তার অলৌকিকত্বে মুগ্ধ হয়ে রাজার মন্ত্রী ইসলাম গ্রহণ করে মাহিসওয়ার কর্তৃক সিংহাসনে আরোহণ করেন। তারপর তিনি বগুড়ায় আসেন এবং রাজা পরশুরাম কর্তৃক প্রদত্ত ভূমিতে আস্তানা গড়ে তোলেন। কিন্তু রাজা পরশুরাম সুফি মাহিসওয়ারের সঙ্গে বিবাদে এমনকি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন এবং নিহত হন। মাহিসওয়ার তার অলৌকিক শক্তি আর আত্মবিশ্বাস অসীম সৎ সাহসের অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে প্রবল ক্ষমতাধর অত্যাচারী রাজাদের পরাস্ত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। ইসলামের বিজয় নিশান ওড়াতে পেরেছিলেন। তার সততা, ন্যায় ধর্মপ্রবণতা বিজয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তার সম্পর্কে অনেক জনশ্রুতি এখনও স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে।

বাংলাদেশের সুফি-দরবেশদের মধ্যে চট্রগ্রামে সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি, অন্যতম

সিলেটের শাহজালাল ইয়ামেনি এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি ১২২৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় আগমন করেন। মরক্কোর তাঞ্জানিয়াবাসী বিখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতা ৭৪৫ হিজরি মোতাবেক ১৩৪৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলা পরিভ্রমণে এসে শাহজালালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তার মতে, শাহজালাল ইয়ামেনি ছিলেন তার সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ অলি। ইবনে বতুতার এই সাক্ষাতের পরের বছরই হজরত শাহ জালাল ইন্তেকাল করেন। দেশে ইসলাম বিস্তৃতির জন্য বাংলার মুসলমান এই স্বনামখ্যাত সুফি-দরবেশের কাছে প্রভূত পরিমাণে ঋণী। তিনি যে শুধু নিষ্ক্রিয় স্থাণুর মতো সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী ছিলেন তাই নয়, বরং তিনি একাধারে ধর্মপ্রচারক যোদ্ধা ছিলেন। খ্রিস্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীর দ্বিতীয় পাদে পূর্ববঙ্গ পশ্চিম আসাম একদিকে যেমন তার রণ-দুন্দুভি-নিনাদে মুখরিত হয়ে উঠেছিল, ঠিক তেমনি অপরদিকে তার প্রচার তৎপরতায় মেতে উঠেছিল। এই বিশাল ভূভাগে তিনিই সর্বপ্রথম উল্লেখযোগ্যরূপে সনাতন ইসলামের বীজ বপন করেছিলেন;

তাই এখনও বাংলার মুসলমানরা শত শত পল্লীগাথায় তার স্মৃতি রক্ষা করে চলেছেন। সিলেটের তদানীন্তন হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দের অমানুষিক অত্যাচারে বুরহানুদ্দিন নামক এক মুসলমান অত্যাচারিত হয়ে গৌড়ের সুলতানের শরণাপন্ন হলে সুলতান ফিরোজ শাহ দেহলভি রাজা গৌর গোবিন্দের শাস্তিদান মানসে সিকান্দার গাজিকে বিরাট বাহিনীসহ সিলেটে প্রেরণ করেন। এই বাহিনীর সহযোগী শক্তি হিসেবে শাহজালালও যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং রাজা গৌর গোবিন্দকে পরাজিত করেন। ফলে রাজা পলায়ন করেন এবং সিলেট সর্বপ্রথম মুসলমান কর্তৃক বিজিত হয়। শাহজালাল (রহ.) ধর্ম প্রচারে বাকি জীবন সেখানেই কাটিয়ে দেন। ইবনে বতুতা বলেন, এই পার্বত্যাঞ্চলের অধিবাসীরা শাহজালালের কাছ থেকে ইসলামের দীক্ষালাভ করেন এবং জন্য তিনিও তাদের মধ্যে বসবাস করেছিলেন।

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ইসলামের প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে হজরত সৈয়দ শাহ মাখদুম রুপোস প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে আছেন। রাজশাহী শহরের পাশে পদ্মা নদীর উত্তর তীরে দরগাপাড়া মহল্লায় তার পবিত্র মাজার অবস্থিত। তিনি সুলতান হোসেন শাহের রাজত্বকালে বাংলায় আগমন করেন এবং তৎকালীন মুসলিম সমাজে প্রচলিত ধর্মীয় কুসংস্কার, কুআচার অন্ধবিশ্বাসকে দূর করার অভিলাষে আত্মপ্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।
বাংলার দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ করে খুলনা যশোর এলাকায় পবিত্র ইসলামের প্রচার-প্রসারে অভূতপূর্ব অবদান রেখে যিনি ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন, তিনি হলেন হজরত খানে আযম খান জাহান আলি। বড়পীর আবদুল কাদের জিলানির বংশধর খান জাহান আলি (রহ.) সুদূর তুরস্ক থেকে প্রথমে দিলি্ল পরে গৌড়ে এসে

বসবাস করেন।
ছাড়াও আরও অনেক সুফি-সাধক বাংলায় আগমন করেন এবং পূর্বে সিলেট-চট্টগ্রাম থেকে পশ্চিমে বর্ধমানের মঙ্গলকোট এবং দক্ষিণে বাগেরহাট ছোট পাণ্ডুয়া থেকে উত্তরে দিনাজপুর জেলার কাঁটাদুয়ার পর্যন্ত সুবিশাল এলাকা ছিল তাদের কর্মক্ষেত্র।


লেখক গবেষক; শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


আরও খবর



৪০০ ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ |

Image

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজায় ৪০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। ইসরায়েলি সরকারি কার্যক্রমের সমন্বয়কারী সংস্থা ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দেয়।

এক এক্স বার্তায় সংস্থাটি জানায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত উত্তর গাজায় বিমান থেকে মানবিক সহায়তা দেওয় হয়েছে। পাশাপাশি ২২ ট্রাক ত্রাণ উত্তর গাজায় সরবরাহ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এপ্রিলে প্রতিদিন গড়ে ১৬৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল।

তবে ইসরায়েল যে সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। কারণ অবরুদ্ধ এলাকায় প্রতিদিন এক হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক দরকার।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা হামাসের নেই। অর্থাৎ এরকম কোনো ইঙ্গিত তিনি পাননি।

বর্তমানে গাজা উপকূলে সাময়িকভাবে জেটি নির্মাণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে এক হাজারের মতো মার্কিন সেনা কাজ করছে। মূলত গাজায় ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করতেই এমন জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

 


আরও খবর

চীন সফরে যাচ্ছেন পুতিন

বুধবার ১৫ মে ২০২৪




স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ঋষির দলের ভরাডুবি

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

যুক্তরাজ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন গত ২ মে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গত ৪০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে ঋষি সুনাকের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টি। তৃতীয় অবস্থানে থাকা রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্রেটিকের কাছে ভরাডুবি হয়েছে কনজারভেটিভের। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

এতে ১০৭ টি কাউন্সিলে ২৭,০০ কাউন্সিলর ও ১১ জন সিটি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার জন্য সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। নির্বাচিত ১১টি মেয়র আসনের মধ্যে ১০টি আসন হারিয়েছে কনজারভেটিভ। ১০টি আসনে মেয়র পদে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির কাছে হার মেনেছে কনজারভেটিভ, সুনাকের দলকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থান দখল করে নিয়েছে লিবডেম। ১১৪০টি কাউন্সিলর পদে জয় পেয়েছে লেবার। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পেয়েছে ৫২১টি, কনজারভেটিভ পেয়েছে ৫১৩টি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট পেয়েছে ২২৮টি, গ্রিন পার্টি ১২১টি, রেসিডেনস অ্যাসোসিয়েশন পেয়েছে ৪৮টি।

১১টি মেয়র পদের মধ্যে লেবার যে ১০টি এলাকায় জিতেছেগ্রেটার লন্ডন, পূর্ব মিডল্যান্ডস, গ্রেটার ম্যানচেস্টার, লিভারপুল সিটি অঞ্চল, উত্তর পূর্ব, সালফোর্ড, সাউথ ইয়র্কশায়ার, ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস, ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার এবং ইয়র্ক এবং উত্তর ইয়র্কশায়ার।

নির্বাচনী ফলাফলে হতাশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে লেবার পার্টির বড় জয় হলেও আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই প্রেক্ষাপট থাকবে না। বরং কনজারভেটিভকেই বেছে নেবে জনগণ। কনজারভেটিভ পার্টিকেই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।

অন্যদিকে লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার নির্বাচনী ফলে উচ্ছ্বসিত। তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে। কিয়ার স্টারমার জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলাফলই জনগণের আগাম বার্তা যে, তারা পরিবর্তন চায়।


আরও খবর

চীন সফরে যাচ্ছেন পুতিন

বুধবার ১৫ মে ২০২৪




বেড়েছে ঋণ পরিশোধের চাপ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ |

Image

উন্নয়ন সহযোগীদের দেয়া ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। গত মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরের ৯ মাসে শুধু ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদই ব্যয় বেড়েছে ১১৭ শতাংশ। সরকারের দেয়া উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি ঠিক রাখতে ব্যাপকভাবে বেড়েছে ঋণ নেয়ার প্রবণতাও। অর্থনীতিবিদদের মতে, ঋণ ব্যয়ে দূরদর্শিতা দেখাতে না পারলে সুদের জালে আটকে যাবে দেশের উন্নয়ন।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ খরচ ছাড়িয়েছে ১০০ কোটি ডলার। গত রোববার (২১ এপ্রিল) দেশের বৈদেশিক ঋণের হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ-এ ৯ মাসে বাংলাদেশকে কেবল সুদ বাবদ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করতে হয়েছে ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। গত অর্থবছর এ সুদ বাবদ গুনতে হয়েছে ৪৮ কোটি ৫৯ লাখ ডলার।

স্বাভাবিকভাবেই বছর ব্যবধানে বেড়ে গেছে সুদাসলে ঋণ শোধ বাবদ ব্যয়। ইআরডির তথ্য, গত নমাসে সব মিলিয়ে ২৫৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার সুদ ও আসল গুনতে হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৭৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাবদ খরচ আগের বছরের ‍তুলনায় বেড়েছে ৮৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে বিভিন্ন ঋণের আসল পরিশোধ করা হয়েছে ১৫১ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।

তবে এ সময়ে ঋণ প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতিও অনেক বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। ৭২৪ কোটি ২১ লাখ ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা। গত বছরের তুলনায় যা ১৩৫ শতাংশের বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩০৭ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে তৃপ্তির ঢেকুর না তুলে, তা যেন ব্যয় করা হয় লাভজনক প্রকল্পে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে অর্থব্যয়ে স্বচ্ছতা।

অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবীর বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া যাবে না। তাই যতটুকু ঋণ পাওয়া যাবে তার সঠিক ব্যবহার করতে হবে। অপচয় রোধ করতে হবে। না হলে সুদের জালে আটকে যেতে পারে বাংলাদেশের উন্নয়ন।

যে সব প্রকল্প দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করতে সহায়তা করার পাশাপাশি সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, এমন প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ নেয়ার তাগিদ দেন অর্থনীতিবিদরা।


আরও খবর



মে মাসেই আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

তাপপ্রবাহ শেষে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কার কথা বলছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ১০ দিনের মধ্যে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা নেই বললেও মে মাসের শেষে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ  বলেছেন, দেশে চলমান তাপপ্রবাহ মে মাসের ২ তারিখের আগে কমার সম্ভাবনা খুবই কম। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে মে মাসের ১৫ তারিখের পরে। ঘূর্ণিঝড় যদি বাস্তবে সৃষ্টি হয় তবে সেটির নাম হবে রিমাল। এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দেওয়া।

তিনি মার্কিন আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে বলেন, বর্ষার পূর্বে ঘূর্ণিঝড় মৌসুম মার্চ মাসে শুরু হলেও ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোন ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপও সৃষ্টি হয়নি। তাই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি যেহেতু মে মাসের ১৫ তারিখের পরে সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা সেহেতু সেটি খুবই শক্তিশালী হওয়ার আশঙ্কা আছে।

মে মাসের ৩ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি কেমন হবে ও কোন উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি সে সম্পর্কে অপেক্ষাকৃত সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন মোস্তফা কামাল পলাশ।

তিনি বলেন, আগামী মাসের ১৩ থেকে ১৪ তারিখের দিকে নিম্নচাপটি সৃষ্টি হতে পারে। এটি পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে ২০ থেকে ২৪ মে এর মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূণিঝড়টি সৃষ্টি হলে এটি অত্যন্ত শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, আগামী ১০ দিনের পূর্বাভাসে কোনো ঘূর্নিঝড়ের সম্ভাবনা নেই। তবে বর্ষা পূর্ববর্তী সময়ে সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকে। সে হিসেবে মে মাসের শেষের দিকে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে রবিবার (২৮ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুইদিন পর চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা কিছুটা কমে এসেছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহীতে গতকাল তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। একই দিনে ঢাকায় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সন্ধ্যার বুলেটিনে গতকাল বলা হয়েছে, সারাদেশে সর্বোচ্চ ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। সিলেটে ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে কোনো বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বিচ্ছিন্ন বৃষ্টি বা বজ্রঝড়ের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে অস্বস্তি অব্যাহত থাকতে পারে। এখনো সারা দেশে বৃষ্টি হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ৩০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত তাপ সতর্কতা বাড়িয়েছে কারণ চলমান তাপপ্রবাহ গতকাল থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এই মাসে এটি ৭ম তাপপ্রবাহ সতর্কতা।


আরও খবর



রাণীনগরে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :

নওগাঁর রাণীনগরসহ বিভিন্ন জেলায় চলছে দাবদাহ সেইসাথে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। বৃষ্টির প্রত্যাশায় রাণীনগরে ইসতিসকার নামাজ আদায় করলেন মুসল্লিরা। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৮টায় উপজেলা সদরের পূর্ব বালুভরা পাবলিক ঈদগাহ মাঠের আয়োজনে রাণীনগর শের-এ বাংলা সরকারি কলেজ মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন নওগাঁর ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদের খতিব মাওলানা মোস্তফা আল আমিন।

নামাজ শেষে বৃষ্টির আশায় করা হয় বিশেষ মোনাজাত। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আল্লাহর কাছে দাবদাহ ও প্রাকৃতিক দুর্ভোগ  থেকে মুক্তি চান মুসল্লিরা। একইসাথে, বৃষ্টির মাধ্যমে সারাদেশে শীতল স্পর্শ বুলিয়ে দেয়ার দোয়াও করেন তারা। নামাজে অংশ নেয়া মুসল্লিরা বলেন, বৃষ্টি না হওয়ার কারণে প্রকৃতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে বিপর্যয় নেমে এসেছে। এজন্য আল্লাহর রহমতের প্রাকৃতিক দুর্ভোগ থেকে মুক্তিসহ বৃষ্টি প্রার্থনা করেন তারা।  


আরও খবর