Logo
শিরোনাম

বাংলায় ইসলাম প্রচারে সুফীদের ভূমিকা

প্রকাশিত:রবিবার ২০ মার্চ ২০22 | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

মুসলিম বণিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমেই সর্বপ্রথম বাংলাদেশে ইসলামের সূচনা হয় এবং প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠা লাভ করে আলেম ও সুফি সাধকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঐকান্তিক নিষ্ঠার ফলে। আরব, ইয়েমেন, ইরাক, ইরান, খোরাসান, মধ্য এশিয়া ও উত্তর ভারত থেকে আলেম ও সুফীগণ বাংলায় আগমন করেন। ইসলাম প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে তারা এক অবিস্মরণীয় অবদান রাখেন। তাঁদের চারিত্রিক মাধুর্যে উজ্জীবিত হয়ে হিন্দু ও অন্যান্য সম্প্রদায় দলে দলে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয়।

স্বাভাবিক কারণেই তৎকালীন হিন্দু ও অন্য শাসকবর্গ ইসলাম প্রচারকদের উপর ক্ষেপে উঠেন এবং সুফীদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালাতে থাকেন। কাজেই প্রচার কাজে নিয়োজিত সুফীগণ ও তাদের শিষ্যদের সমভিব্যাহারে সমস্ত রাজাদের বিরুদ্ধে অসি চালনা করতে হয়েছিল। এ ময়দানে অনেকে হয়েছেন শহীদ আবার অনেকে হয়েছেন গাজী।

বাংলায় মুসলিম বিজয়ের পূর্বে যে সকল সুফীগণ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এদেশে আগমন করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হচ্ছেন:

শাহ মুহাম্মদ সুলতান রুমী: বাঙ্গালার সুবাদার শাহসুজার সনদপত্রে উল্লেখিত হয়েছে যে, শাহ মুহাম্মদ সুলতান রুমী ১০৫৩ সালে তাঁর মুরশিদ সৈয়দ শাহ সুখখুল আনাতিয়াসহ ময়মনসিংহ জেলার মদনপুরে আসেন। মদনপুরেই তাঁর মাযার বিদ্যমান।

শাহ সুলতান বলখী মাহী সাওয়ার: তিনি প্রথমে ঢাকার হরিরামপুর নগর এবং পরে বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে ইসলাম প্রচার করেন। মৎস্যাকৃতি নৌকায় সমুদ্রপথে বাংলায় আগমন করার কারণে তিনি মাহী সাওয়ার ওলী নামে খ্যাত।

বাবা আদম শহীদ: রাজা বল্লাল সেনের শাসনামলে (১১৫৮-৭৯) তিনি ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণার আবদুল্লাহপুর গ্রামে ইসলাম প্রচার করতে আসেন। যুদ্ধে তিনি শহীদ হন এবং এখানেই তাঁর মাযার অবস্থিত।মাখদুম শাহ দৌলা শহীদ: ইয়ামেনের অধিবাসী মাখদুম শাহ দৌলা এক বোন, তিন ভাগিনা ও বহু শিষ্যসহ পাবনা জেলার শাহজাদপুর অঞ্চলে আগমন করেন। ইসলাম প্রচারের এক পর্যায়ে স্থানীয় হিন্দু রাজার সাথে এ দরবেশের যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে মাখদুম শাহসহ ২১ জন মুজাহিদ শহীদ হন। এরপর সমগ্র বগুড়া অঞ্চলে ইসলাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

শাহ নেয়ামতুল্লাহ বুতশিকন: মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার বহু আগে শাহ নিয়ামতুল্লাহ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসেন। ঢাকা নগরীর সন্নিহিত এলাকায় তিনি ইসলাম প্রচার করেন। একদা হিন্দুরা তাঁর ইবাদতে বিঘ্ন ঘটালে তিনি ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে হিন্দুদের মূর্তির প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করতেই মূর্তিগুলো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। এরপর হিন্দুরা দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করে। ঢাকার দিলকুশায় তাঁর মাযার অবস্থিত।

সৈয়দ নাসিরউদ্দীন শাহ আউলিয়া: তিনি দিনাজপুর জেলার প্রাচীনতম ইসলাম প্রচারক। ওই অঞ্চলে তিনি সৈয়দ নেকমদ’বা নেকবাবা বলে পরিচিত।

জালালুদ্দীন তাবরিযী: পারস্যের তাবরিজ নগরে জন্মগ্রহণকারী জালালুদ্দীন তাবরিজী সুলতান গিয়াস উদ্দীন খিলজীর শাসনামলে তৎকালীন বাংলার রাজধানী মালদহ জেলার লাখনৌতি নগরে উপনীত হন এবং রাজধানী থেকে ১৭ মাইল দূরে পান্ডুয়ায় আস্তানা স্থাপন করেন। বাংলার উচ্চশ্রেণীর হিন্দু ও বৌদ্ধসমাজ তাঁর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়। মুসলিম বিজয়ের পূর্বে আরো যে সকল সুফী এদেশে আগমন করেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মাখদুম শাহ, গজনবী, বায়েজীদ বোস্তামী, শায়খ ফরিদ উদ্দীন শকরগঞ্জ প্রমুখ।

মুসলিম বিজয়ের পর যে সকল সুফী-আলেমগণ ইসলাম প্রচারের জন্য এদেশে আগমন করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন:

শেখ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা: বুখারার অধিবাসী সুফী শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামা বিহারের মানের হয়ে বাংলার সোনারগাঁও আসেন সুলতান বুগরাখান ও সুলতান রুকনউদ্দীন কায়কাউসের শাসনামলে। তিনিই প্রথম এদেশে বোখারী শরীফ নিয়ে আসেন। সোনারগাঁও-এ তিনি ইসলামী শিক্ষার কেন্দ্র গড়ে তোলেন। ১৩০০ সালে ইন্তেকালের পর সোনারগাঁও-এ তিনি সমাধিস্থ হন।

শরফুদ্দীন এহিয়া মানেরী: বিহারের অধিবাসী মানেরী ১৫ বছর বয়সে শায়খ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামার সাথে সোনারগাঁও-এ আসেন। মানেরী ছিলেন সোনারগাঁও শিক্ষা কেন্দ্রের জ্ঞানের নিদর্শন।

মাওলানা আতা: ১৩০০ থেকে ১৩৫০ সালের মধ্যে মাওলানা আতা দিনাজপুরে ইসলাম প্রচার করেন। ১৩৬৩ সালে নির্মিত একটি গৃহের শিলালিপিতে তাঁকে ইসলামের বিশেষ পন্ডিত এবং সত্য ও ধর্মের প্রদীপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

হযরত শাহাজালাল ইয়ামেনী: পূর্ববাংলায় ইসলাম প্রচারের প্রধান পথিকৃত এই সনামধন্য সুফী দরবেশ ১৩০৩ সালে রাজা গৌড়গোবিন্দকে পরাজিত করে সিলেট অধিকার করেন। এই যুদ্ধে তাঁর সিপাহসালার ছিলেন সৈয়দ নাসির উদ্দীন। মুসলিম আনুমানিক ১৩৪৭ সালে সিলেটেই ইন্তেকাল করেন। বিশ্ব পর্যটক ইবনে বতুতা বলেন, বাংলার অধিকাংশ লোক তাঁর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। সিলেটে তাঁর মাযার অবস্থিত।

সাইয়েদ আহমদ কল্লা শহীদ: তিনি শাহজালালের অন্যতম শিষ্য ছিলেন। পরগনায় ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে হিন্দু রাজা আচক নারায়ণের সাথে যুদ্ধে শহীদ হন। ভক্তরা তাঁর কর্তিত মস্তকের সন্ধান পেয়ে তা আখাউড়ার খড়মপুর গ্রামে সমাধিস্থ করেন। আর একারণেই তিনি কল্লা শহীদ নামে পরিচিত।

শাহ মাখদুম রূপোশ: বর্তমান রাজশাহী জেলার পূর্বনাম ছিল মহাকাল গড়। ১২২৫ সালে বাগদাদ থেকে ইসলাম প্রচার করতে এসে তিনি মহাকাল গড় জয় করেন এবং এখানে ইসলাম প্রচার করেন। ১৩০৩ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন।

শেখ নূর কুতুবুল আলম: তিনি ছিলেন বাংলার ইলিয়াছশাহী বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা সুলতান গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের সহপাঠী। তিনি তৎকালীন অবৈধ, কুখ্যাত রাজা গণেশের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেন।

খাজা খানজাহান আলী: সর্বজনমান্য দরবেশ হিসেবে সুপরিচিত খানজাহান আলীই দক্ষিণ বঙ্গজয়ের কৃতিত্বের অধিকারী। পরবর্তী ইলিয়াস শাহী বংশের শাসনামলে তিনি দক্ষিণবঙ্গ জয় করেন।

এ দরবেশ শাসনকর্তা বাগেরহাট শহর নির্মাণ করেন, এবং ঐ অঞ্চলের নামকরণ করেন খলিফতাবাদ, বহু রাস্তা, দীঘি, মসজিদ, শিক্ষালয় এবং বাগেরহাটের ষাট গুম্বুজ মসজিদ তিনিই নির্মাণ করেন।

শাহআলী বাগদাদী শাহআলী বাগদাদী বাংলায় আসেন ১৪৮৯ সালে। দিল্লী হয়ে প্রথমে তিনি ফরিদপুর আসেন। পরে তিনি ঢাকার আশে-পাশে ইসলাম প্রচার করেন। ঢাকার মিরপুরে তাঁর মাজার রয়েছে।

মুসলিম বিজয়ের পর আরও যারা ইসলাম প্রচার করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন,

উলুগ-ই-আজম হুমায়ন জাফরখান বাহরাম: তিনি দিনাজপুরের দেবীকোট অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করেন। পীর বদরুদ্দীন ইসলাম প্রচার করেন দিনাজপুরের হেমতাবাদ নামক স্থানে।

সৈয়দ জালালুদ্দীন বুখারী: ইসলাম প্রচার করেন রংপুর জেলার মাহীগঞ্জে। ৪০ জন ইসলাম প্রচারকের একটি দল দিনাজপুর অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করেন, যাদেরকে চিহিল গাজী বলা হতো।

খাজা চিশতী বেহেশতী আকবরের শাসনামলে ঢাকায় ইসলাম প্রচার করতে আসেন। ঢাকার হাইকোর্টের পার্শ্বে তার সমাধি রয়েছেন। এরা ব্যতীত আরো রয়েছেন সায়্যিদ আব্বাস আলী মক্কী, শাহ সুফী শহীদ, শায়খ আবদুল্লাহ কিরমানী, মাওলানা তাকিউদ্দীন আরাবী, শাহতুর্কান শহীদ, পীর বদর আলম, শেখ রোজা বিয়াবানী, আখি সিরাজউদ্দীন উসমান, শেখ আলাউল হক, শাহ আফজল মাহম্মুদ শায়খ জালাল হালবী, শাহ সুলতান আনসারী, শাহ চাঁদ আওলিয়া।

হাজী শরীয়াতুল্লাহ (রহ.) ১৭৮০ সালে মাদারীপুর মহকুমার শামাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইংরেজ শাসন ও তৎকালীন হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন পরিচালনা করেন। তিনি ইসলামের সংস্কার করেন এবং ভন্ডপীর ও বেদাতীদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন। তাঁর পরিচালিত আন্দোলন ফরায়েজী আন্দোলন নামে পরিচিত।

মাওলানা আবুবকর সিদ্দিক (রহ.) ১৮৪১ সালে কলকাতার হুগলী জেলার ফুরফুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সুফী ফতেহ আলীর নিকট তিনি বয়াত গ্রহণ করেন। মাওলানা আবুবকরের সংস্কার ছিল বহুমুখী ও গঠনমূলক।

মাইজভান্ডারী দরবার শরীফের প্রতিষ্টাতা শাহসূফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারীর। কথিত আছে, তার পুর্বপুরুষ সৈয়দ হামিদ উদ্দীন গৌড়ি ১৫৭৫ সালে ইসলাম প্রচার মানসে চট্টগ্রামে আগমন করেন। এবং পটিয়া থানার কাঞ্চননগরে বসতি স্থাপন করেন। তার এক পুত্র সন্তান সৈয়দ আবদুল কাদের ফটিকছড়ি থানার আজিম নগরে ইমামতির দায়িত্ব নিয়ে বসতি স্থাপন করেন। তার প্রপৌত্র মওলানা সৈয়দ মতি উল্লাহর পবিত্র ঔরসে  শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী ১৮২৬ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক বাংলা ১২৩৩ সনের ১ মাঘ রোজ বুধবার জোহরের সময় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার মাইজভান্ডার শরীফ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মাওলানা শাহসুফ সৈয়দ মতিউল্লাহ এবং মাতার নাম সৈয়দা খাইরুন্নেসা বেগম।

মাওলানা নেছার উদ্দীন (রহ.) বরিশালের বর্তমান পিরোজপুর জেলার ছারছীনা গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি ফুরফুরার আবু বকর সিদ্দিকের শিষ্য ছিলেন। বাংলায় ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে তাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি। তিনি হাজার হাজার মসজিদ, মাদরাসা ও খানকা প্রতিষ্ঠা করেন।

মাওলানা সৈয়দ এছহাক (রহ.) বরিশালের চরমোনাইতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চরমোনাইতে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলাম প্রচার করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত চরমোনাইতে বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইসলামী সম্মেলন অুনষ্ঠিত হয়ে থাকে। এছাড়া বাংলায় ইসলাম প্রচারে আরো যাদের অবদান রয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, মাওলানা আবদুল্লাহাহিল কাফি (রহ.), মাওলানা সামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.), মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী হুযুর (রহ.), কিশোরগঞ্জের মাওলানা আতাহার আলী (রহ.), চট্টগ্রামের খতীবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ (রহ.), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাওলানা তাজুল ইসলাম (রহ.), সিলেটের মাওলানা সৈয়দ আবদুল করিম শায়খে কৌড়িয়া (রহ.) প্রমুখ।


আরও খবর



১৫০ উপজেলায় মনোনয়নপ্রত্যাশী ১৮৯১

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মোট ১৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তারা।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৮ মে এই ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ছিল।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান পদে মোট ৬৯৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ জন এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষে এমন তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্তি সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

নির্বাচন কমিশন এ বছর উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের অনলাইনে মনোনয়ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। সে কারণে মনোনয়নপত্র দাখিলে কোনো প্রকার সহিংসতা বা অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের এই কর্মকর্তা।

তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ এপ্রিল এবং মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১৭ এপ্রিল।

এবার চার দফায় নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন হবে আগামী ২১ মে। সারাদেশে মোট ১৬১টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে এ ধাপে। আগামী ২৯ মে তৃতীয় এবং ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আরও খবর



করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার অ্যাস্ট্রাজেনেকার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

করোনাভাইরাসের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এক আইনি লড়াইয়ে সম্প্রতি এমনটাই স্বীকার করে নিয়েছে ব্রিটিশ-সুইস ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এক বছর ধরে ভ্যাকসিনের ক্ষতিকারক প্রভাব মামলায় জর্জরিত রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এত দিন কোম্পানি বলে এসেছিল যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় তৈরি করা এই কোভিড ভ্যাকসিন ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু দাবি উঠেছিল যে এই ভ্যাকসিনের জন্যই কয়েকজনের মৃত্যু এবং কেউ কেউ গুরুতর অসুস্থতার মুখে পড়েছেন। অ্যাটর্নিদের মতে, কিছু পরিবার টিকা দেয়ার একটি বিধ্বংসী প্রভাবের মুখোমুখি হয়েছিল। সবটা দেখে শুনে অবশেষে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে যে তার কোভিড ভ্যাকসিন খুব বিরল ক্ষেত্রে হলেও, টিটিএস-এর কারণ হতে পারে।


টিটিএস কী


টিটিএস-এর সম্পূর্ণ রূপ হলো থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম (টিটিএস)। এটি একটি খুব বিরল সিন্ড্রোম, যা রক্ত
​​জমাট বাঁধা (থ্রম্বোসিস) এবং কম প্লেটলেট সংখ্যা (থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া) দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। এটিকে ভিআইটিটি নামেও অভিহিত করা হয়, যার পূর্ণ রূপ 'ভ্যাকসিন-ইনডিউসড ইমিউন থ্রম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া'। রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার ফলে থ্রম্বোসিস হতে পারে, যা প্রভাবিত রক্তনালীতে রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দেয়। থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া শরীরে রক্তের প্লেটলেট সংখ্যা কম হওয়ার সময় ঘটে। সাধারণত, প্লেটলেটগুলো অতিরিক্ত রক্তপাত রোধ করতে রক্তের জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। আর সেই প্লেট সংখ্যা কমে গেলে ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক।

 

গত বছর, জেমি স্কট, দুই সন্তানের পিতা, ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল এবং বায়োটেকনোলজি কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার অভিযোগে, স্কট উল্লেখ করেছিলেন যে তিনি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে করোনা রুখতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেয়ার পর থেকেই চরম বিপদের মুখে পড়েছিলেন। এর ফলে তার রক্ত জমাট বেঁধেছে এবং মস্তিষ্কে রক্তপাত হচ্ছে। এমনকি হাসপাতাল নাকি তার স্ত্রীকে জানিয়েছিল যে স্কট বেঁচে থাকতে পারবেন না। আর অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে এই দাবিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে এত দিন ধরে। এর আগে, ২০২৩ সালের মে মাসে স্কটের আইনজীবীর কাছে এক মেইল পাঠিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছিল, জেনেরিক লেভেলে এই টিকার কারণে টিটিএস-এর ঘটনা ঘটেছে, এটা স্বীকার করি না আমরা।

যাইহোক, এত দিন পর কোম্পানির স্বীকারোক্তি তাকে বিরাট ক্ষতিপূরণের মুখে ফেলে দিতে পারে। কারণ এরই মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে মোট ৫০টিরও বেশি মামলা করা হয়েছে। করোনার টিকা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সকলেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।


আরও খবর



তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে সারাদেশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই রোদ আর গরমে। প্রখর রোদে পথ-ঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন খেটে খাওয়া শ্রমিকরা।

দেশের চার জেলায় এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। বয়ে যাওয়া এ দাববাহ আগামী কয়েকদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এছাড়া সারা দেশে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ।

তবে দেশের দক্ষিণপূর্ব অঞ্চলের তুলনায় পশ্চিমাঞ্চলে এ তাপপ্রবাহ বেশি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসময় আবহাওয়া নিয়ে ভালো কোনও খবর নেই সংস্থাটির কাছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গরম আরও বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা বাড়লেও রাতে অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি, বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। যা ছিল সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এ তাপমাত্রা বেড়ে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।


আরও খবর



মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থা

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সতর্ক করে বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের দলের এই অবস্থানের কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে প্রথম পর্যায়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরো আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি। নির্বাচন কমিশনে সময় শেষ হয়ে গেলে কেউ প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে পারেন না।

 এই বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে দলে। সময় মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেওয়া হবে।

চূড়ান্ত পর্যায়েও কেউ প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল, সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।


আরও খবর



তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ |

Image

দেশজুড়ে বইছে তাপপ্রবাহ গরমে নাকাল জনজীবন মাঝেমধ্যে গায়ে বাতাস লাগলেও তা যেন আগুনের হলকা অনেক বেশি উত্তাপ অনুভূত হওয়ায় হাঁসফাঁস অবস্থা জনজীবনে তাপমাত্রার এমন অবস্থা সহসাই পরিবর্তন হচ্ছে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চলমান তাপপ্রবাহ আরও তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুরো এপ্রিলজুড়েই তাপমাত্রা ভোগাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরও বাড়ার আশঙ্কায় সারাদেশে জারি করা হয়েছে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার বার্তা দিয়েছে সংস্থাটি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, জলীয়বাষ্প বেশি থাকার কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে। একইসঙ্গে সমুদ্রের লঘুচাপটি পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করার গরম প্রভাব দেখা যাচ্ছে ভূপৃষ্ঠে। এর আগে দেশে ১৫ থেকে ১৩ দিন পর্যন্ত লাগাতার তাপপ্রবাহ থাকার রেকর্ড থাকলেও এবার চলতি মাসের ১৯ দিনই টানা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়ায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস বলছে, এপ্রিলজুড়েই তাপমাত্রা ওঠা-নামা করবে ৩৬ থেকে ৪২ ডিগ্রির মধ্যে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় গরম অনুভূত হবে এর চেয়েও বেশি। এসময় কোথাও কোথাও বৃষ্টি সাময়িক স্বস্তি দিলেও দাবদাহ থেকে যাবে মে মাস পর্যন্ত।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, হিট অ্যালার্ট তিনদিনের জন্য জারি করা হয়েছে। এই সময় সবাইকে গরম থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকতে হবে। তবে সারাদেশে হিট অ্যালার্ট জারি থাকলেও কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে।

টানা চারদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা গতকাল পর্যন্ত এ মৌসুমের সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এসময়ে রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।


আরও খবর