জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড়
দুই সরবরাহকারী দেশ সৌদি আরব ও রাশিয়া তেলের দৈনিক উত্তোলন হ্রাসের পর থেকে বিশ্ব
বাজারে বাড়তে শুরু করেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।
আন্তর্জাতিক
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে সরবরাহের সংকট ও ‘পরিকল্পিত’ কৌশলের কারণেই।
আন্তর্জাতিক বাজারে যে দামে তেল বিক্রি হয়েছে, তা ছিল চলতি ২০২৩ সালের মধ্যে
সর্বোচ্চ। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য
জানা গেছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের
তথ্যানুযায়ী, বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দুই বেঞ্চমার্ক
ক্রুড এবং ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারন্যাশনাল (ডব্লিউটিআই) উভয়ের দামই বেড়েছে।
প্রতি ব্যারেল (১৫৯ লিটার) ব্রেন্ট ক্রুড এইদিন বিক্রি হয়েছে ৯৩ দশমিক ৭০ ডলারে
এবং প্রতি ব্যারেল ডব্লিউটিআই এদিন বিক্রি হয়েছে ৯০ ডলারে।
বুধবারের
তুলনায় বৃহস্পতিবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেলে বেড়েছে ১ দশমিক ৮২ ডলার বা
শতকরা হিসেবে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
আর ডব্লিউটিআইয়ের দাম প্রতি ব্যারেলে বেড়েছে ১ দশমিক ৬৪ ডলার বা শতকরা হিসেবে ১
দশমকি ৮৫ শতাংশ।
বিশ্ব
বাজারে তেলের এই চাঙ্গাভাবে পশ্চিমা বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, তেলের এই দাম
বেড়েছে সৌদি ও রাশিয়ার ‘পরিকল্পিত’
কৌশলের কারণে।
অপরিশোধিত
জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষণকারী সংস্থা পিভিএমের কর্মকর্তা তামাস ভারগা
রয়টার্সকে বলেন, বাজারের এই চাঙ্গাভাব স্বাভাবিক নয়। এটা একটি পরিকল্পিত কৌশলের অংশ এবং
যারা এই কৌশল করছে, তারা আসলে বাজারের মানসিকতা নিয়ে খেলছে।
বাজার
বিশ্লেষণকারী অপর সংস্থা অ্যাগেইন ক্যাপিটালের কর্মকর্তা জন কিলডাফ রয়টার্সকে বলেন, অর্থনীতির
প্রাণচাঞ্চল্যের কারণে তেলের বাজারে এই চাঙ্গাভাব আসেনি, বরং
যেটাকে চাঙ্গাভাব বলা হচ্ছে, সেটা আসলে সরবরাহের সংকট।
কিলডাফ আরও বলেন, আর এই সংকটের জন্য দায়ী রাশিয়া ও সৌদি। এমন এক সময়ে তারা তেলের উত্তোলন
হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখন শীতের কারণে আর কিছুদিনের
মধ্যেই পশ্চিমা দেশগুলোতে তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারি,
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে ২০২২ সালের শুরুর দিকে অপরিশোধিত
জ্বালানি তেলের দামে উর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছিল। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে চীন,
ডলার সাশ্রয়ের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলো তেল কেনা কমিয়ে দেওয়ায় গত বছর
জুন মাস থেকে অপরিশোধিত তেলের বাজারে মন্দাভাব শুরু হয়।
কয়েক
মাস ধরে এই মন্দাভাব চলায় আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারী
দেশগুলো। তবে চলতি সপ্তাহে ফের বাড়তে শুরু করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।